©কাজী ফাতেমা ছবি
জরাজীর্ণতায় আচ্ছন্ন আমার স্বজন কিছু
আহা বয়স আর বার্ধক্য যে নিয়েছে তাদের পিছু,
অচিরেই হারাবো হয়তো কাউকে, হয়তো আমিও যেতে পারি আগে,
মৃত্যুকে কী কেউ আজও আনতে পেড়েছে বাগে?
তবুও চোখ ফেটে যায় কষ্টে, বুক ফেটে যায় দেখলে জরাজীর্ণ মুখগুলো
অথচ এই সংসার এই উঠোনে কী দাপট তাদের,
কর্ম করেছেন নৈমিত্তিক উড়িয়ে ধুলো;
সবই শেষ হয়ে যায়, সব কিছুরই ঘটে যায়/যাবে ইতি,
কে বাড়াতে পেরেছে অনন্তকাল জীবনের সাথে সম্প্রীতি!
মুখগুলো চোখের আয়নায় উঠে ভেসে,
একদিন আমাদের দেখলে উনারা সুখে উঠতেন হেসে,
কী খাওয়াবেন বলে কী ব্যস্তই না হতেন একেকজন স্বজন
আমরা যাবো বেড়াতে, করতেন কত রান্নার আয়োজন,
আজ দেখতে গিয়ে তাদের, শুধু দেখেছি অশ্রজলের ধারা,
তুমুল কষ্ট তুফান ভিতরবাড়ীকে দিয়ে যায় নাড়া।
অসুখে ভোগে, বিছানায় ধরাশায়ী কেউ,
কারো জীবন পথে অভাব অনটনের ঢেউ,
কেউ বেঁচে আছেন জরায় আচ্ছন্ন হয়ে, ধুকে ধুকে,
আর কেউ ভালো থাকার মন্ত্র যাচ্ছে নিত্য ফুঁকে।
আমাদের নানাবাড়ী, দলবেঁধে বেড়ানোর দিনগুলো সেই,
মামাতো ভাইবোনেরা সবাই মিলে দিন কয়েক কেটে যেতো কত আনন্দেই;
হই হুল্লোড়, রাতে হারিকেনের আলোয় পেপারের বিড়ি,
আহা দিনগুলো আমাদের.... দূরত্ব যেন আজ পর্বত গিরি;
উঠোন জুড়ে আমরা খেলায় মগ্ন, পড়াশুনার চিন্তা শূন্য,
মামা মামীরা আমাদের পেয়ে হতেন কতই না ধন্য।
আজ এখানে আমি সমুদ্দুর এপারে, আর স্বজন'রা ওপারে,
হয় না দেখা কত বছর, কত সহস্র দিন, দুঃখ বাঁশি মন সেতারে;
হঠাৎ দেখতে পেয়ে হৃদয় আজ কষ্টে ভারী, বুকে ব্যথার পাথর,
কী জরাজীর্ণ মুখগুলো, দেখেই হয়ে পড়েছি বিষাদে কাতর।
(২৮-১০-২০২০)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:০৫