somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোহিঙ্গা; শিঁকড়হীন ভাসমান শেঁওলা।

২৫ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাগরে ভাসছে সহজ সরল পাঁচার হওয়া মানুষ, নারী- শিশু-যুবাপুরুষ; যারা স্বপ্নের মালয়েশিয়া পাড়ি জমাতে দালালদের প্ররোচনায় উত্তাল সাগরপথে ঝাঁপ দিয়েছিলো কিন্তু আর কিনারা হয়নি, সাগর থেকে সাগরে ভেসে বেড়াচ্ছে দুইমাস ধরে। অসহায় ভাসমানদের নিয়ে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, মায়ানমার নিষ্ঠুর কানামাছি ভোঁভোঁ খেলছে, নামমাত্র খাদ্যপানীয় ধরিয়ে দিয়ে আশ্রয়প্রার্থী ট্রলারগুলোকে আবার অথৈ পাথারে ঠেলে দিচ্ছে, বিশ্ববিবেক তাকিয়ে দেখছে দক্ষিন এশীয় আঞ্চলিক রুটে আন্তর্জাতিক মাফিয়াচক্রের দ্বারা নিষ্ঠুরভাবে প্রতারিত অসহায় রুগ্নক্লিষ্ট কঙ্কালসার সর্বহারা মানুষগুলোর নিশ্চিত সলিলসমাধি। অবশেষে তীব্র সমালোচনার মুখে মায়ানমার ৭০৬যাত্রীকে তীরে তুলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করেছে, তাদের নৌবাহিনী বিশেষ কৃতিত্বের সাথে ৭০৬জন বাঙ্গালীকে ক্ষনিক আশ্রয় দিয়েছে সমুদ্র উপকুলের এক মানবিক সাহায্যহীন অস্থায়ী ক্যাম্পে, ক্ষুধার তাড়নায় একবোতল বৃষ্টির পানির জন্য দলবেঁধে ক্যাম্পের বাহিরে জড়ো হওয়া পত্রিকার পাতার ছবি আমারও চোঁখ এড়িয়ে যায়নি। বিজিবিকে জানানো হয়েছে অতিদ্রুত তাদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হউক। কী সুন্দর মানবিক সহযোগীর সুমিষ্ট ত্বরিত আহ্বান। অথচ আন্তর্জাতিক মহলের পীড়াপীড়ি স্বত্ত্বেও মায়ানমারের জাতিগত ধারাবাহিক দাঙ্গায় বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে ক্যাম্পে আশ্রয়প্রাপ্ত ৫লাখ রোহিঙ্গা ফেরত নেয়ার ইস্যুতে আঞ্চলিক বা দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় ইয়াঙ্গুনকে আজও বসানো সম্ভব হয়নি। সবচেয়ে আশ্চর্য কথা, মায়ানমার জান্তা সরকার, এমনকি কথিত শান্তিতে নোবেলজয়ী সুচি কখনোই এই ইস্যুতে ন্যুনতম বিবৃতি বা রোহিঙ্গা শব্দটি পর্যন্ত উচ্চারন করেনি, তাদের ভাষায় রোহিঙ্গা মানে বাঙ্গালী বা কালা। বৌদ্ধ মৌলবাদী রাষ্ট্র মায়ানমার ছলে বলে দাঙ্গার কবলে ফেলে কৌশলে তাদের সীমান্তের এপারে ঠেলে দিচ্ছে, আর বাংলাদেশে দিনের পর দিন তাদের অনাকাঙ্খিত চাপ বাড়ছেই। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশ কেন তার পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক আভ্যন্তরীন সমস্যার জের টানবে? গত পাঁচদশকেও বৌদ্ধ রাষ্ট্রটির কাছে থেকে বাংলাদেশ এই ব্যাপারে কোন কুটনৈতিক সদুত্তর পায়নি। তাই ঢাকা থেকে সাঁফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে, আগে পরিচয় নিশ্চিত হয়েই প্রত্যাবর্তনের কাজ শুরু করতে চায়। তাহলে রোহিঙ্গাদের নৃতাত্ত্বিক পরিচয় জানাটাও জরুরী, মুলত এই রোহিঙ্গা কারা?

অষ্টম শতাব্দীতে আরবদের আগমনের মধ্য দিয়ে আরাকানে মুসলমানদের বসবাস শুরু হয়। আরব বংশোদ্ভূত এই জনগোষ্ঠী মায়্যু সীমান্তবর্তী অঞ্চলের চেয়ে চট্টগ্রাম সংলগ্ন মধ্য আরাকানের নিকটবর্তী ম্রক-ইউ এবং কাইয়্যুকতাও শহরতলীতেই বসবাস করতে পছন্দ করতো। এই অঞ্চলের বসবাসরত মুসলিম জনপদই পরবর্তীতে রোহিঙ্গা নামে পরিচিতি লাভ করে।

রোহিঙ্গা আদিবাসী জনগোষ্ঠী পশ্চিম মায়ানমারের আরাকান রাজ্যের একটি উলেখযোগ্য নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী। এরা ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত। রোহিঙ্গাদের আলাদা ভাষা থাকলেও তা অলিখিত। মায়ানমারের আকিয়াব, রেথেডাং, বুথিডাং মংডু, কিয়ক্টাও, মাম্ব্রা, পাত্তরকিল্লা এলাকায় এদের বাস। বর্তমানে প্রায় ১০,০০,০০০ রোহিঙ্গা মায়ানমারে বসবাস করে। মায়ানমার ছাড়াও ৬ লক্ষের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এবং প্রায় ৫লাখ সৌদিআরবে বাস করে বলে ধারনা করা হয় যারা বিভিন্ন সময় বার্মা বা আজকের মায়ানমার সরকারের বিভিন্ন সময়ের সঙ্ঘঠিত দাঙ্গা, জাতীগত নীপিড়ন, উচ্ছেদ, নির্যাতনের কারণে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। জাতিসংঘের তথ্যমতে, রোহিঙ্গারা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী।

ইতিহাস ও ভূগোল বলছে, রাখাইন প্রদেশের উত্তর অংশে বাঙালি, পার্সিয়ান, তুর্কি, মোগল, আরবীয় ও পাঠানরা বঙ্গোপসাগরের উপকূল বরাবর বসতি স্থাপন করেছে। তাদের কথ্য ভাষায় চট্টগ্রামের স্থানীয় উচ্চারণের প্রভাব রয়েছে। উর্দু, হিন্দি, আরবি শব্দও রয়েছে। রাখাইনে দুটি সম্প্রদায়ের বসবাস ‘মগ’ ও ‘রোহিঙ্গা’। মগরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী, দস্যুবৃত্তিতে মগদের কুখ্যাতির জন্যই "মগের মুল্লুক" কথাটি বাংলাদেশে পরিচিত। এক সময় তাদের দৌরাত্ম্য ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছেছিল। মোগলরা তাদের তাড়া করে জঙ্গলে ফেরত পাঠায়।

তবে ইতিহাস এটা জানায় যে, ১৪৩০ থেকে ১৭৮৪ সাল পর্যন্ত ২২ হাজার বর্গমাইল আয়তনের রোহিঙ্গা স্বাধীন রাজ্য ছিল। মিয়ানমারের রাজা বোদাওফায়া এ রাজ্য দখল করার পর বৌদ্ধ আধিপত্য শুরু হয়।

ম্রক-ইউ রাজ্যের সম্রাট নারামেখলার (১৪৩০-১৪৩৪) শাসনকালে বাঙ্গালীদের আরাকানের বসবাসের প্রমাণ পাওয়া যায়। ২৪ বছর বাংলায় নির্বাসিত থাকার পরে সম্রাট বাংলার সুলতানের সামরিক সহায়তায় পুনরায় আরাকানের সিংহাসনে আরোহন করতে সক্ষম হন। যে সব বাঙ্গালী সম্রাটের সাথে এসেছিল তারা আরাকানে বসবাস করতে শুরু করে। সম্রাট নারামেখলা বাংলার সুলতানের দেওয়া কিছু অঞ্চল ও আরাকানের ওপর সার্বভৌমত্ব অর্জন করে। সম্রাট নারামেখলা পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং বাংলার প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ আরাকানে বাংলার ইসলামী স্বর্ণমূদ্রা চালু করেন। পরবর্তীতে নারামেখলা নতুন মূদ্রা চালু করেন যার একপাশে ছিল বার্মিজ বর্ণ এবং অপরপাশে ছিল ফার্সী বর্ণ। বাংলার প্রতি আরাকানের কৃতজ্ঞতা ছিল খুবই অল্প সময়ের জন্য। ১৪৩৩ সালে সুলতান জালালুদ্দিন মুহাম্মদ শাহের মৃত্যু হলে সম্রাট নারামেখলার উত্তরাধিকারীরা ১৪৩৭ সালে রামু এবং ১৪৫৯ সালে চট্টগ্রাম দখল করে নেয়। ১৬৬৬ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম আরাকানের দখলে ছিল। বাংলার সুলতানদের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পরেও আরাকানের রাজাগণ মুসলিম রীতিনীতি বজায় রেখে চলে। বৌদ্ধ রাজাগণ নিজেদেরকে বাংলার সুলতানদের সাথে তুলনা করতো এবং মুঘলদের মতোই জীবন যাপন করতো। তারা মুসলিমদেরকেও রাজদরবারের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিত। ১৭ শতকের দিকে আরাকানে বাঙ্গালী মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। তারা আরাকানের বিভিন্ন কর্ম ক্ষেত্রে কাজ করতো। যেহেতু রাজাগণ বৌদ্ধ হওয়ার পরেও বাংলার সুলতানদের রীতিনীতি অনুযায়ীই রাজ্য পরিচালনা করতো, তাই আরাকানের রাজদরবারে বাংলা, ফার্সী এবং আরবি ভাষার হস্তলিপিকরদের মধ্যে অনেকেই ছিল বাঙ্গালী। কামেইন বা কামান নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী যারা মায়ানমার সরকারের নৃতাত্ত্বিক জাতিসত্ত্বার মর্যাদা পেয়েছে তারা আরাকানের মুসলিম জনগোষ্ঠীরই একটা অংশ ছিল।

১৫৫৪ সালের আরাকানের মুদ্রা যা বৃহত্তর বাংলায় ব্যবহৃত হত। মায়ানমারের আরাকান রাজ্যের (রাখাইন) রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আধুনিক লিখিত ভাষাই হল রোহিঙ্গা ভাষা। এটি ইন্দো-ইউরোপীয়ান ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত যার সাথে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার বেশ মিল রয়েছে, কিন্তু কিছুতেই পুরোপুরি বাংলা নয়। রোহিঙ্গা গবেষকগণ আরবি, হানিফি, উর্দু, রোমান এবং বার্মিজ স্ক্রীপ্ট ব্যবহার করে সফলতার সাথে রোহিঙ্গা ভাষা লিখতে সক্ষম হয়েছেন। সম্প্রতি একটি ল্যাটিন স্ক্রীপ্টের উদ্ভাবন হয়েছে যা ২৬টি ইংরেজি বর্ণ এবং অতিরিক্ত ২টি ল্যাটিন বর্ণ, Ç (তাড়নজাত R -এর জন্য) এবং Ñ (নাসিকা ধ্বনি-র জন্য) সংযোগে সৃষ্ট। রোহিঙ্গা ধ্বনি সঠিকভাবে বোঝার জন্য ৫টি স্বরধ্বনি (áéíóú) ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি আই.এস.ও দ্বারা স্বীকৃত।

১৭৮৫ সালে বার্মিজরা আরাকান দখল করে। এর পরে ১৭৯৯ সালে পঁয়ত্রিশ হাজারেরও বেশি মানুষ বার্মিজদের গ্রেফতার এড়াতে এবং আশ্রয়ের নিমিত্তে আরাকান থেকে নিকটবর্তী চট্টগ্রাম অঞ্চলে চলে আসে। বার্মার শোসকেরা আরাকানের হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে এবং একটা বড় অংশকে আরাকান থেকে বিতাড়িত করে মধ্য বার্মায় পাঠায়। যখন ব্রিটিশরা আরাকান দখল করে তখন যেন এটি ছিল একটি মৃত্যুপূরী। ১৭৯৯ সালে প্রকাশিত "বার্মা সাম্রাজ্য"তে ব্রিটিশ ফ্রাঞ্চিজ বুচানন-হ্যামিল্টন উল্লেখ করেন, "মুহাম্মদ(সঃ) - এর অনুসারীরা", যারা অনেকদিন ধরে আরাকানে বাস করছে, তাদেরকে "রুইঙ্গা" বা "আরাকানের অধিবাসী" বলা হয়।

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় কৃষিকাজের জন্য আরাকানের কম জন অধ্যুষিত এবং উর্বর উপত্যকায় আশপাশের এলাকা থেকে বাঙ্গালী অধিবাসীদের অভিবাসন করার নীতি গ্রহণ করেছিল ব্রিটিশরা। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলাকে আরাকান পর্যন্ত বিস্তৃত করেছিল। আরাকান ও বাংলার মাঝে কোন আন্তর্জাতিক সীমারেখা ছিল না এবং এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে যাওয়ার ব্যাপারে কোন বিধি-নিষেধও ছিল না। ১৯ শতকে, হাজার হাজার বাঙ্গালী কাজের সন্ধানে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আরাকানে গিয়ে বসতি গড়েছিল। এছাড়াও, হাজার হাজার রাখাইন আরাকান থেকে স্বেচ্ছায় বাংলায় চলে আসে। আমাদের 'প্রাক্তন প্রভুরা' মিয়ানমারের ১৩৯টি জাতিগোষ্ঠীর তালিকা প্রস্তুত করলেও তার মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এটা ব্রিটিশদের স্বভাবজাত ডিভাইড এন্ড রোল নীতির ইচ্ছাকৃত সুদুরপ্রসারী ছকের অংশও হতে পারে। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি মিয়ানমার স্বাধীনতা অর্জন করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু হয়। সে সময়ে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্বও ছিলো এবং কয়েকজন পদস্থ সরকারি দায়িত্বও পালন করেন বলেও জানা যায়। কিন্তু ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইন সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলে মিয়ানমারের যাত্রাপথ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। রোহিঙ্গাদের জন্য শুরু হয় দুর্ভোগের নতুন অধ্যায়। সামরিক জান্তা তাদের বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে। তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। ধর্মীয়ভাবে নামাজ আদায়ে বাধা দেওয়া হয়। হত্যা-ধর্ষণ হয়ে পড়ে নিয়মিত ঘটনা। সম্পত্তি জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়। বাধ্যতামূলক শ্রমে নিয়োজিত করা হতে থাকে। তাদের শিক্ষা-স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নেই। বিয়ে করার অনুমতি নেই। সন্তান হলে নিবন্ধন নেই। জাতিগত পরিচয় প্রকাশ করতে দেওয়া হয় না। সংখ্যা যাতে না বাড়ে, সে জন্য আরোপিত হয় একের পর এক জন্মনিয়ন্ত্রন বিধিনিষেধ। মিয়ানমারের মূল ভূখণ্ডের অনেকের কাছেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী 'কালা' নামে পরিচিত। বাঙ্গালী ও ভারতীয়দেরও তারা 'কালা' বলে। এ পরিচয়ে প্রকাশ পায় সীমাহীন ঘৃণা।

যুদ্ধ পরবর্তী অবস্থায় ১৯৪৭ সালে নিগৃহিত রোহিঙ্গারা মুজাহিদ পার্টি গঠন: করে যারা ইসলামী জিহাদি আন্দোলন সমর্থন করতো এবং পার্টির লক্ষ্য ছিল আরাকানে একটি স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। তারা জেনারেল নে উইনের নেতৃত্বে ১৯৬২ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পূর্ব পর্যন্ত অত্যন্ত সক্রিয় ছিল। নে উইন তাদেরকে দমনের জন্য দুই দশকব্যাপী সামরিক অভিযান পরিচালনা করেন। উল্লেখযোগ্য একটি অভিযান ছিল "কিং ড্রাগন অপারেশন" যা ১৯৭৮ সালে পরিচালিত হয়। এর ফলে অনেক মুসলমান প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে এবং শরনার্থী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। বাংলাদেশ ছাড়াও উল্লেখযোগ্য সংখ্যার রোহিঙ্গারা পাকিস্তানের করাচীতে চলে যায়। এরপরও, বার্মার মুজাহিদরা আরাকানের দূর্গম এলাকায় এখনও সক্রিয় আছে।

প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে বার্মা শাসন করছে মায়ানমারের সামরিক জান্তা। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য এরা বার্মিজ জাতীয়তাবাদ এবং থেরাভেদা বৌদ্ধ ধর্মীয় মতবাদ ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে থাকে যার ফলে তারা রোহিঙ্গা, চীনা জনগোষ্ঠী যেমন - কোকাং, পানথাইদের(চীনা মুসলিম) মত ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বাকে ব্যপকভাবে নির্যাতন করে থাকে। কিছু নব্য গণতন্ত্রপন্থী নেতা যারা বার্মার প্রধান জনগোষ্ঠী থেকে এসেছেন তারাও রোহিঙ্গাদের বার্মার জনগণ হিসেবে স্বীকার করেন না। বার্মার জান্তা সরকার রোহিঙ্গা ও চীনা জনগোষ্ঠীর মত ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বাদের বিরুদ্ধে দাঙ্গার উসকানি দিয়ে থাকে এবং সভ্যদুনিয়াকে অজ্ঞাতে রেখে অথবা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এ কাজ তারা অতি সফলতার সাথেই করে যাচ্ছে।

রাখাইনে ২০১২ সালের দাঙ্গা হচ্ছে মায়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলিম ও বৌদ্ধ রাখাইনদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের ঘটনাপ্রবাহ। দাঙ্গা শুরু হয় জাতিগত কোন্দলকে কেন্দ্র করে এবং উভয় পক্ষই এতে জড়িত হয়ে পরে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বলা হয় "বিশ্বের সবচেয়ে কম প্রত্যাশিত জনপদ" এবং "বিশ্বের অন্যতম নিগৃহীত সংখ্যালঘু"।১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনের ফলে তারা নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হন। তারা সরকারি অনুমতি ছাড়া ভ্রমণ করতে পারে না, জমির মালিক হতে পারে না এবং দুইটির বেশি সন্তান না নেওয়ার অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে হয়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অনুসারে, ১৯৭৮ সাল থেকে মায়ানমারের মুসলিম রোহিঙ্গারা মানবাধিকার লংঘনের শিকার হচ্ছে এবং তারা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে:
রোহিঙ্গাদের চলাচলের স্বাধীনতা ব্যপকভাবে নিয়ন্ত্রিত এবং তাদের অধিকাংশের বার্মার নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে। তাদের উপর বিভিন্ন রকম অন্যায় ও অবৈধ কর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের জমি জবর-দখল করা, জোর-পূর্বক উচ্ছেদ করা, ঘর-বাড়ি ধ্বংস করা এবং বিবাহের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও উত্তর রাখাইন রাজ্যে গত দশকে বাধ্যতামূলক শ্রমিকের কাজ করা কমেছে তারপরও রোহিঙ্গাদের রাস্তার কাজে ও সেনা ক্যাম্পে বাধ্যতামূলক শ্রমিকের কাজ করতে হচ্ছে।

১৯৭৮ সালে মায়ানমার সেনাবাহিনীর 'নাগামান' ('ড্রাগন রাজা';) অভিযানের ফলে প্রায় দুই লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। সরকারিভাবে এই অভিযান ছিল প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং যে সব বিদেশী অবৈধভাবে মায়ানমারে বসবাস করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এই সেনা অভিযান সরাসরি বেসামরিক রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলছিল এবং ফলে ব্যাপক হত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগ ও মসজিদ ধ্বংসেরও ঘটনা ঘটে।

১৯৯১-৯২ সালে একটি নতুন দাঙ্গায় প্রায় আড়াই লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। তারা জানায় রোহিঙ্গাদের বার্মায় বাধ্যতামূলক শ্রম প্রদান করতে হয়। এছাড়া হত্যা, নির্যাতন ও নিত্যধর্ষণের স্বীকার হতে হয়। রোহিঙ্গাদের কোনো প্রকার পারিশ্রমিক ছাড়াই কাজ করতে হতো।

বৌদ্ধ মৌলবাদী সামরিক শাসিত মায়ানমার রাষ্ট্রটির কাছে রোহিঙ্গাদের অপরাধ-
রোহিঙ্গারা সংখ্যালঘু,
রোহিঙ্গারা মগ নয় মুসলিম,
রোহিঙ্গারা বার্মিজভাষী নয় বাংলাঘেষা,
রোহিঙ্গারা সাদা নয়, ভারতীয় শ্যামকালো,
সর্বোপরি রোহিঙ্গারা মিত্রশক্তিকে সমর্থন ও সহযোগীতা করেছিলো।

কী বিচ্ছিরি দস্যু বিবৃতি মগের মুল্লুক বলেই সম্ভব। ধর্মবিশ্বাস, মাতৃভাষা, গাত্রবর্ণবৈষম্যে কাউকে ১২০০বছরের উত্তরাধিকার নাগরিকত্ব হারাতে হবে, জন্মভুমি হারাতে হবে, সম্ভ্রম হারাতে হবে, নিকটজন হারাতে হবে, তারপর একদিন চরম অনিশ্চয়তায় সর্বশেষ রোহিঙ্গাব্যক্তিটি নিজেও হারিয়ে যায়। কারন রোহিঙ্গারা হেরে যাওয়া সংখ্যালঘু, অথচ এই পৃথিবী শুধুই জয়ীদের জন্য। এই একতরফা রোহিঙ্গা নিধন চলবে রাখাইন রাজ্যকে পুরো মগের মুল্লুক বানানোর আগপর্যন্ত, যতোদিন না পঁচিশলক্ষ। রোহিঙ্গা দাঙ্গা, হাঙ্গামা, হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, লুট, উচ্ছেদ, পাঁচার কিংবা বিদেশের জঙ্গলে গণকবর বা ভুমধ্যসাগরে বেঘোরে সলিল সমাধিতে পরিসমাপ্তি হয়।

মায়ানমারের আভ্যন্তরীন জাতিগত সঙ্কট বাংলার ঘাঢ়ে কেন? রোহিঙ্গারাতো বাংলাদেশী নয় আর বাংলাও শুধু বাংলাদেশের একক ভাষা নয় কিংবা ইসলামও বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেনা; তাহলে, এ দায় মায়ানমারের, মায়ানমারকে যেকোনভাবেই হোক রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করানো উচিৎ।

২০০৫ সালে, জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে, কিন্তু রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বিভিন্ন ধরণের মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগে সে উদ্যোগ ভেস্তে যায়, তারপর থেকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আরকোন আন্তর্জাতিক উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। অপরদিকে বাংলাদেশ অনির্দিষ্টকালের অনিশ্চিত অন্ধকারে থেকেই ৬লক্ষ রোহিঙ্গা সমস্যা বয়ে চলেছে।

রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের মুলধারার জনপদের সাথে মেশার সুযোগ পায়না, কর্মহীন সর্বহারা মানুষগুলো তাই বেঁচে থাকার তাগীদে প্ররোচিত হয়ে যায় আন্তর্জাতিক মাফিয়া চক্র দ্বারা। জড়িয়ে পড়ে অপরাধ জগতের বিভিন্ন কর্মকান্ডে, অবৈধ মাদক ইয়াবা পাঁচার শ্রমিক, অবৈধ অস্ত্রের মজুদ, জঙ্গি প্রশিক্ষণ, মানবপাঁচারকারী দালাল, মুক্তিপণ আদায়ে অপহরণকারী হিসাবে; এমনকি অসাধুপথে বাংলাদেশী পাসপোর্ট বাগিয়ে বিদেশে গিয়েও বিভিন্ন অপরাধ করে দেশের সুনাম খোয়াচ্ছে। রোহিঙ্গা সমস্যা যেনো বাংলার নিত্য সমস্যার মাঝে গোঁদের উপর বিষফোঁড়া। যার সর্বশেষ কীর্তি সাগরপথে ডিঙ্গি নৌকাসম ট্রলারে অবৈধ পথে মালয়েশিয়া যাত্রা এবং পাঁচার হবার অভিজ্ঞতা লাভ। রোহিঙ্গাদের সাথে পাঁচার হয়েছে, কক্সবাজারের স্থানীয় এবং উত্তরের রংপুর দিনাজপুর যশোর পঞ্চগড়ের বহু যুবক যুবতি, যাদের অনেকের খোঁজ আজও মেলেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সাগরে ভাসমান অভিযাত্রীদল কিছু ইন্দোনেশিয়ায় আশ্রয় পেয়েছে। বাকিদের উদ্ধারে তুরস্ক সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ রোহিঙ্গা ধুয়া তুলে মায়ানমারকে অভিযুক্ত করে বাংলাদেশ সরকারের তৎপরতাও উল্লখ্য নয়, অবৈধ পথে পাঁচার হওয়ার দায় আমাদের রাষ্ট্রও এড়াতে পারেনা, কারন তারা বাংলাদেশ উপকুল থেকেই স্বদেশী দালালদের প্ররোচনায়, সথানীয় প্রশাসন এবং কোস্টগার্ডের অসাধু কর্মকর্তাদের অবৈধ সহযোগীতায়ই যাত্রা শুরু করেছিলো।: আগেতো সাগরে ভাসা সকল ঘরের ছেলেদের ঘরে ফিরিয়ে আনতে হবে, হোকনা তাতে দুইচারহাজার অতিরিক্ত রোহিঙ্গা সংযুক্তি, যেহেতু আগে থেকেই ছয়লক্ষ রোহিঙ্গা সমস্যা সামলে আসছে। আর এতোটুকু মানবতা, এতোটুকু উদারতা দেখাতে, এইটুকু মানবিক আশ্রয় দিতে আমাদের কার্পণ্য করা উচিৎ হয়নি। তারপর সময়োচিত সিদ্ধান্ত নেয়া যেতো।

সরকার ভালো একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, রোহিঙ্গাদের সীমান্ত জেলা কক্সবাজার থেকে সরিয়ে নোয়াখালীর প্রত্যন্ত চরে স্থানান্তর করতে যাচ্ছে। সেই সাথে আরেক শরণার্থী অবাঙ্গালী বিহারীদের বেলায়ও অনুরূপ সিদ্ধান্ত নিলে শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে অপরাধকান্ড কমে আসতে পারে।

সেই সাথে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে জোর তদবির চালাতে পারে রোহিঙ্গাদের তাদের স্বদেশভূমিতে ফিরে যেতে। অথবা সার্কভুক্ত দেশসমুহের মাঝে আনুপাতিকহারে অস্থায়ীভিত্তিতে স্থানান্তর করা যতোদিন না রোহিঙ্গা সমস্যা স্থায়ী সমাধান হয়।

সর্বশেষ অবস্থা হলো রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশী বাঙ্গালীদের মুলধারায় মেশার সুযোগ করে দেয়াসহ পরবর্তী প্রজন্মকে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব প্রদান এবং বিনিময়ে আরাকান তথা রাঁখাইন রাজ্যের আনুপাতিক হারে ভূমি দাবী করা। যা হবে বাংলাদেশ মানচিত্রের দক্ষিণপুর্বাঞ্চলিয় নতুন সংযোজন। আর সেই দাবী আদায়ের নেতৃত্বে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি ও সাহসী সর্বশক্তি নিয়োগ করলেও, জয়বাংলার লোক হিসেবে ভবঘুরের সমর্থণ সশ্রদ্ধ নমঃশিরে বহাল থাকিবে বহমানকাল।।

তথ্যসুত্রঃ উইকিপিডিয়া এবং অন্যান্য।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৩:০১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×