somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বলিষ্ঠ জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশে জামায়াতে ইসলামী প্রশ্নের যেরকম মীমাংসা প্রয়োজন

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৪:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জামায়াতে ইসলামীর প্রসঙ্গ টেনে যত কথা আনতে পারি পোস্টে শেষতক রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমাদের ন্যায্য অবস্থান কি সেটা নির্ণয় করেছি।

সেই অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন বা দ্বিমত থাকলে তার প্রশ্ন ও উত্তর কেবলমাত্র ওই পোস্টে।

এখানে শুধুমাত্র থাকবে পূর্বোল্লেখিত অবস্থানের প্রেক্ষিতে জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে বাংলাদেশের নাগরিকের অবস্থান কি হওয়া স্বাভাবিক তা নিয়ে।

নাগরিক হিসেবে নির্ণীত অবস্থান মেনে নিলে বাংলাদেশের অভ্যুদয় নিয়ে তার নাগরিকের মনোভাব থাকবে দৃঢ়। যে যুদ্ধজয় দিয়ে দেশের অভ্যুদয়, তা তার কাছে অবিসংবাদিত, অস্তিত্বের প্রশ্নে অবিচ্ছেদ্য। সে জয়ের গর্ব ও গরিমা তাদের অবস্থান। যুদ্ধজয়ের চিহ্নের তারা দাবীদার। তার বিরুদ্ধ বা দ্বিধান্বিত অবস্থান কোনভাবে তার দেশের পক্ষের অবস্থান নয়। রাষ্ট্র সে অবস্থান অনুযায়ী পদক্ষেপ নিশ্চিত না করলেও নাগরিকের দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে না।

আগেই উল্লেখ করেছি, যুদ্ধজয়ের পর নীতি বা প্রাপ্য, যেকোন বিচারে একটি জাতি কতগুলো চিহ্নের দাবীদার। এই চিহ্নসমূহে ছাড় দেয়া বিতর্কিত। আদায়ের পদক্ষেপ নেয়া স্বাভাবিক।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান স্ব-স্বীকৃত। তাদের দাবী, তারা সে সময়ে একটি অবস্থান নিয়েছিল। এখন বাংলাদেশের রাজনীতিরই তারা একটি অংশ। আরেকটি প্রশ্ন যুদ্ধাপরাধের। তারা সেসময়ে তাদের অবস্থান স্বীকারের পাশাপাশি তদানুযায়ী স্বজাতঘাতী কর্মকাণ্ড অস্বীকার করে।

এটা স্ববিরোধিতাপূর্ণ। যুদ্ধে স্বজাতঘাতী কর্মকাণ্ড ঘটেছে। আর আমরা তাদের অবস্থান তাদের কাছ থেকেই জানি। কার্যকারণ ও ক্রিয়ার সংযোগ এখানে না ঘটানোর কোন কারণ নেই। এখানে তারা দুই ভাবে বিচার্য।

প্রথমটি, ব্যাক্তিগত পর্যায়ে যুদ্ধাপরাধীর বিচার। এটি একটি বিজয়ের চিহ্ন ও বিজয় পরবর্তী অবধারিত কাজ। দ্বিতীয়টি হল, ৭১ এ দলের স্বজাতিবিরোধী অবস্থানের জন্য জবাবদিহি। এটাকে বিজয়ের চিহ্ন হিসেবে দেখলে কেবল হবে না। দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য এটি অবশ্য পালনীয়। দেশের স্বার্থের বিরোধী একটি অবস্থান একসময়ে নিয়েছিল বিধায়ই এখন বাংলাদেশের অবস্থানের প্রেক্ষিতে তাদের সার্বিক যাচাই-বাছাই প্রয়োজন। সেটা কেবল তাদের নিজস্ব ক্ষমাপ্রার্থনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে না। এখানে প্রয়োজন রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পদক্ষেপের মাধ্যমে আগা গোড়া পরিশোধন।

দেশটির জন্য আরও বেশি জরুরি যুদ্ধের বিতর্ক নিয়ে রাজনীতির অবসান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মিত্রশক্তি কেবল নাৎসী দল নিষিদ্ধ করে নি। নাৎসী আদর্শ নিষিদ্ধ করেছে। অর্থাৎ আদর্শ বা নীতিটার বিলোপ বেশি জরুরি। আমি আগের পর্বে বলেছি, যুদ্ধরতদের নীতি প্রতিষ্ঠার একমাত্র ইতিহাসসিদ্ধ মাপকাঠি যুদ্ধজয়। যুদ্ধজয়ের অর্থ যুদ্ধজয়ীর নীতির প্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধপরাস্তের নীতির বিলোপ। এটা নিশ্চিত না করার অর্থ বিজয়টা ফিরিয়ে দেয়া। বাংলাদেশের অভ্যুদয় যেহেতু একটি যুদ্ধ ও তার বিজয় দিয়ে, এখানে যুদ্ধপরাস্ত-নীতির বিকাশের সুযোগ দেয়াটা বাংলাদেশের জন্য শুধু বিজয় ফিরিয়ে দেয়া নয়, বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়ে বিতর্কের সুযোগ রেখে দেয়া।

অভ্যুদয়ের ব্যাপারে অবস্থান দৃঢ় করা উন্নত ও শক্তিশালী জাতি হিসেবে প্রকাশের জন্য জরুরি। বলিষ্ঠ জাতি হিসেবে প্রকাশের অভিলাষ থাকলে বাংলাদেশ একটি রাষ্ট্র হিসেবে এসকল অবস্থান ও পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে। না থাকলে বিতর্ক বিকাশের সুযোগ অব্যাহত রাখবে এবং তার নাগরিককে জাতিগতভাবে দুর্বল থেকে দুর্বলতর করবে। ফলাফল আমি ইতিহাসের প্রেক্ষিতে দেখতে পছন্দ করি। কালের প্রেক্ষিতে দেখলে এমন দুর্বল অবস্থানের ফলাফল বাংলাদেশ নামক দেশটির বলিষ্ঠভাবে এগিয়ে যাবার জন্য ঋণাত্মকভাবে কাজ করবে।

তথাপি, রাষ্ট্র সে অবস্থান নিশ্চিত না করলেও নাগরিকের দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে না। দেশের প্রতি দেশের নাগরিক একাত্ম ও দায়িত্বপূর্ণ থাকবে। তার দেশের জন্য এটা তার বাধ্যতামূলক দেয় কর। আমরা যদি মানি, ১৯৭১ সালে একটি যুদ্ধজয়ের মাধ্যমে যে দেশের অভ্যুদয়, সে দেশ ও আমরা যে দেশে বসবাস করি, সে দেশ একই দেশ, তবে নাগরিক দায়িত্ববোধ থেকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের এই অবস্থান ও তদানুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নাই।





২৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×