somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সকল বাব-মা কি এমন হয় ? [আপনি একটু মিলিয়ে নিন আপনার বাবা মায়ের সাথে]

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার পরিবার মানে আমার বাবা আর মায়ের ঝগড়া । অবশ্যই সেটা বরাবরের ন্যায় এক তরফা । আমি অনেক ছোট তখন থেকেই দেখতাম কোন না কোন পরিবারের ভিতরে কোন না কোন সমস্যা আছেই । আমাদের আশে পাশের বাসা গুলোতে গৃহকর্তা আর গৃহ কর্ত্রীর ভিতরে নানান বিষয়ে ঝগড়া হয় ।

আমি জানি না ঠিক কি কারণে তাদের ভিতরে এই ঝগড়া হয়ে থাকে ।তবে আর কারোও পরিবারের খোঁজ খবর না রাখলেও আমার বাবা মায়ের ঝগড়া আমি দেখেছি ।

আমার বাবা সেখানে নীরবতা পালন করেন । আর যদি তিনি নীরবতা পালন না করতেন তবে হয়তো আরও বড় মাপের ঝগড়া দেখতে পারতাম।যাই হোক আমার বাবা বরাবরই চুপ চাপ মানুষ । আমার বাবা মায়ের এই ঝগড়া ঝাটির প্যাঁচাল যে জন্য শেয়ার করলাম । এই ব্লগে অনেক সিনিয়র বড় ভাই এবং বড় আপু আছেন তারা ইতিমধ্যে বিবাহিত জীবন পার করছেন । তাদের জন্যই শুধু আমার এই শেয়ার করা ।

ঝগড়া শুরু হতো আমার বাবা যখন বাজার করে ঘরে ফিরবেন ঠিক তখন থেকে । কিন্তু আমার মা টেনশনে থাকেন আমার বাবা বাজারে গেলে । অথছ আমাকে এসে বলবে এই মানুষরে বাজারে পাঠালে কি যে করে ? বাজারের সবার সাথে মনে হয় গল্প করে । ঐ কয়টা বাজার করতে এতক্ষন সময় লাগে ?

এবার বাজার করে আসার পর ঃ গুড়া মাছ ! !!! আমার মাথা ব্যথা দেখে গেলো আর উনি নিয়ে আসছেন গুড়া [ছোট ছোট মাছ] মাছ । আমি পারবো না এই মাছ পরিষ্কার করতে । আমার বাবা তখন গাই গুই করে নিজের কেনা মাছের
গুনাগুণ বর্ণনা করবেন । সব সময় তো এমন মাছ পাওয়া যায় না । বিলের মাছ । মজা লাগবে খেতে । আগে কত খেয়েছি এই মাছ । কি দিন যে এলো ছেলেদের দেখাতে পারলাম না । এই মাছটুকু
তাই কত টাকা দিয়ে কিনতে হোল । বাজারে যাওয়ার উপায় আছে ???

যদি বড় মাছ নিয়ে আসেনঃ আমার মা বলবেন দেখেছিস ফরহাদ । সেই সকালে বাজারে গেছে ।ঘরে আসলো পাক্কা দুই ঘণ্টা পর । নিয়ে আইছে দেখ
। আমি এই লোকটারে বলি একটু গুড়া মাছ নিয়ে আসতে । গুড়া মাছের পিয়াজ দিয়ে চচ্চড়ি হোলে একটু ভাত খেতে পারি । আর
উনি নিয়ে আসছেন এই মাছ । পারবো না কাটতে ।তোরা বাপ ব্যাটা মিলে কর । আমি নেই এর ভিতরে ।

গরুর মাংস কিনে আনলেঃ শুধু মাংস !!! ওরে বাবা এটা কি এটা তো হাঁটুর হাড় । এটার ওজনই
তো আধা কেজি । এই মানুষটা এখনও বাজার করা শিখলো না । আমি এতো বার বার বলে দিলাম
ফরহাদ হাড্ডি ছাড়া মাংস খায় না । সিনার অংশ থেকে নিয়ে আসতে । উনি এনেছেন রানের মাংস । আমার বাবা বেশি কিছু বলবেন না । আমাকে বলবেন
ফরহাদ তোর মাকে বল একদিন বাজার করে দেখতে ।
কেমন লাগে............... ব্যস হয়ে গেলো । তার পর আমার বাবা চুপ করে পেপার পড়বেন । আর আমার মা যা বলার বলে যাবেন ।

সিজনের প্রথমে কোন ফল আনলেঃ (আমার মা ব্যগের ভিতর উকি দিয়ে )ও আম । কত করে নিয়েছে ? আমার বাবা বলবে এখনও আমের সিজন আসেনি, একটু বেশিই নিয়ে ফেললো । আর আজ
বেতন পেলাম , দেখলাম ব্যাংকের সামনে এক লোক ঝুড়িতে করে বিক্রি করছে । সবাই কম বেশি কিনছে । আমিও ভাবলাম ভাবলাম কেজি দুই নিয়ে যাই । ।
ফরহাদ আম খেতে পছন্দ করে।
আমার মা এবার শুরু করে দিবেন ।বলি টাকা কি গাছে ধরে ???? যে এতো দাম দিয়ে সিজনের প্রথমেই আম খেতে হবে ? বাজারে আমদানি বাড়ুক । একটু কম হোক আমের দাম তখন খাবো । সংসার চালাতে হয় আমাকে ।উনি তো বেতনের টাকা হাতে দিয়েই আরামে ঘুরে বেড়াবেন । যত জ্বালা তো সব আমার ।
এদিকে আমি বুঝি মাস শেষ হোলে দুধের দাম , ডিশের বিল , ফারুকের জন্য ঢাকায় টাকা পাঠানো , ফরহাদের বিল । ওহ আর পারা যায় না ।

সিজনের প্রথমে কোন ফল
ঘরে না আনলেঃ আমাকে বলবে মা বাবা হয়তো খবর দেখছেন । (ব্লু টুথ সিস্টেমে কথাঃ মা বাবাকে কিছু বলতে চাইলে আমার নাম ধরে বলবে । বাবা যদি মাকে কিছু বলতে চায় তবে আমাকে বলবে অবশ্যই মাকে শুনিয়ে) ।আম বাজারে উঠছে সেই কবে । দেখ তোর বাবার কি কোন খেয়াল আছে । যে ঘরে একটা ছোট ছেলে আছে । বলি ফল টল কি কেনা ভুলে গেলো নাকি ?নাকি সিজনের শেষে যখন ২ টাকা কেজি ফলের দাম হবে তখন আনবে ।

গোসল শেষে ঃ দেখা গেলো আমার বাবা আমার লুঙ্গি পরে ঘুরে বেরাচ্ছে । আমার মা তো হেসেই খুন । দেখ দেখ ফরহাদ । এই লোকের মাথা খারাপ হয়ে গেছে । কার লুঙ্গি পরে না পরে হুঁশ করে না । আমার বাবা এবার হয়তো খেয়াল করে , একটা হাসি দিয়ে বলবেন । তোকে তখন বললাম এক কালারের কিনিস না । দেখতো কেমন শুধু উল্টা পাল্টা হয়ে গেলো ।

আমার মা আমার পক্ষ নিয়ে বলবেন , নিজের যে চোখে সমস্যা সেটা স্বীকার করবে না । ওর টা ছোট ছোট চেক আর তোমারটা বড় চেক । আর কালার কোথায় এক হোল । এই মানুষ বুড়া হোলে যে কি করবে , আল্লাহই জানেন।পাগল করে ছাড়বে সবাইকে ।

তাছাড়া এমন অনেক সময় গেছে যখন তারা ব্লু টুথ সিস্টেমে কথা বলতেন। হয়তো দুজনের ভিতর মন কষাকষি চলছে কথা বন্ধ,,,,,,,,,,, বাবা বাজারে যাবেন তখন মাকে শুনিয়ে আমাকে বলবেন ফরহাদ ঘরে পান আছে ?? কিংবা মা বাবাকে শুনিয়ে আমাকে বলবে ফরহাদ পান তো আছেই ঘরে সেদিনই তো এক পন আনা হয়ছে ।
....................................................................................


পরিশেষে আমার ভাইয়া থাকে ঢাকা । আমার ভাইয়ার জন্য আমার মায়ের ভালোবাসার কথা না বলেই আর পারবো না ।

এটা শুধু আমার মায়ের কথা না ।যারা মা-বাবা থেকে দূরে থাকে তাদের বাবা-মাও ঠিক এমনটি করেন ।

হয়তো আমাদের আজ একটু ভালো মন্দ অনেক কিছু রান্না হয়ছে । আমার কিন্তু তখন কখন খাবো কখন খাবো অবস্থা । খেতে বসলাম । খাচ্ছি । আর কোন
চিন্তা ভাবনা আমার মাথায় নেই ।

এমন মুহূর্তে হঠাৎ খেয়াল করলাম আমার মা কেন জানি খাবার নাড়া চাড়া করছেন । ঠিক মতো গালে তুলছেন না । আমার মা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলবেন আমার বড় ছেলেটা কি খাচ্ছে ?
কি করছে ? আল্লাহই জানেন ।

ভাইয়াকে ফোন দিয়ে মার কানে ধরিয়ে দেব । কি খাওয়া দাওয়া করছো ? আমার ভাইয়ের কথা শুনছি আমি । ভাইয়া বলে না মা । IDB থেকে ক্লাস করে আসলাম এখন । বুয়া আসেনি আজ ।

আমরা তিন জন ডাল আর আলু
ছানা করছি ,ডিম ভাজবো । তোমরা এখনও খাওনি ? ফরহাদ
কি লেখা পড়া করে ? নাকি সারাদিন ঘুরে বেড়ায় ?

আমার মায়ের কথা বলার ভাষা তখন হারিয়ে যায় । কি বলবে ? যে বাবা আজ আমরা পোলাও খাচ্ছি ? আমার মা আর বলতে পারে না । ফোন রেখে । ঐ
অবস্থায় হাত ধুয়ে সোজা নিজের রুমে ।

আমার বাবা আর আমি রোবটের মতো খেয়ে যাচ্ছি । কারোও মুখে কোন টু শব্দটি নেই ।

এই হচ্ছে মা । মা । মা ।

এটা শুধু ফরহাদ আর ফারুকের মা না । সবার মা এমন চিন্তা করেন । আমরা কি এই কি এই মাকে কষ্ট দিতে পারি , মিথ্যে কোন সুখের আসায় ?

সবার কাছে আমার এই টুকু দাবী থাকলো । নিজের মা বাবা কে ভালবাসতে যেন এতো টুকু কার্পণ্য
না করি ।

সবাই ভালো থাকবেন ।





সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×