somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা সবাই ফকির!!!

০৯ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা সবাই ফকির! এই কথাটি শুনে হয়তো অনেকেই অবাক হবেন যে সবাই আবার ফকির হয় কিভাবে আসুন নীচে লেখাটির মাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কার করি।

একটা বিষয় হয়তো আপনারা লক্ষ্য করে থাকবেন, একজন ফকির কিন্তু অন্য ফকিরের নিকট ভিক্ষা চায় না কারণ সে জানে অন্য ফকিরের নিকট চেয়ে কোন লাভ নেই কারণ সেও তারই মতো একজন ফকির মাত্র। এই সহজ বিষয়টি আমরা সাধারণ মানুষেরা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছি! ধনী-গরীব উভয়েই আল্লাহর নিকট ফকির।

মুসমানদের দায়িত্ব একটাই আর তারা এই একটা দায়িত্ব পালনের জন্যই দুনিয়াতে এসেছে সেটি হচ্ছে, মহান আল্লাহকে একত্ববাদরে স্বীকৃতি দিয়ে একমাত্র তারই ইবাদত করা। পৃথিবীতে আগত সকল নবী-রাসূলদের দায়িত্বও ছিল এই একটিই এক আল্লাহর একত্ববাদের দিকে মানুষকে আহবান এবং একমাত্র তারই ইবাদত করার আহবান।
"আমার ইবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি।" (কুরআন ৫১:৫৬)
এই আয়াতটির অর্থ সহজে আমরা পড়ে ফেললাম কিন্তু এর ব্যাখ্যা কিন্তু অতি গভীর। ইবাদত করার শর্ত কি? ইবাদত করার প্রথম শর্তই হচ্ছে মহান আল্লাহকে একমাত্র "রব্ব" হিসেবে মেনে নেওয়া। সূরা ফাতিহাতে আমরা পড়ি "আলহামদু লিল্লাহি "রাব্বি"ল আলামিন" এখানে রব্ব শব্দটি রয়েছে। আরবি রব্ব শব্দটির তিনটি অর্থ আছে এবং তিনটি অর্থ মহান আল্লাহর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অর্থগুলো হল: ক) মালিক, মনিব খ) মুরব্বী, প্রতিপালক, পর্যবেক্ষক ও সংরক্ষণকারী গ) শাসক, আইন-দাতা, পরিচালক ও ব্যবস্থাপক। "তাওহীদ বা একত্ববাদ" আল্লাহর ইবাদত করার মূল কথা। তাই আল্লাহর ইবাদত করার আগে আমাদের একত্ববাদ বিষয়টি পরিস্কার থাকতে হবে। মহান আল্লাহকে একমাত্র "রব্ব" মেনে নিয়ে করা ইবাদত করাই আমাদের প্রধান কাজ। মহান আল্লাহ "রব্ব" হিসেবে আমাদের যে কাজগুলো যেভাবে করতে বলেছেন সে কাজগুলো সেভাবে করার নামই ইবাদত। যেমন: নামায বা সালাত পড়া, রোজা রাখা, যাকাত দেওয়া, হজ্জ্ব করা, হালাল অর্থ উপার্জন করা, অন্যায়াভাবে অন্যের সম্পদ কেড়ে না নেওয়া, সুদ না খাওয়া, ভাগ্য গণনা না করা, মানুষকে তার প্রাপ্য অধিকার দেওয়া, মানুষের সাথে উত্তম ব্যবহার করা, পিতা-মাতার সেবা করা, ওজনে সঠিক দেওয়া, খাদ্যে ভেজাল না দেওয়া, আল্লাহর আইন কে মেনে নেওয়া প্রভৃতি ( ইবাদত বিষয়টি অনেক বড় আমি সংক্ষেপে কিছু তুলে ধরলাম)।

মহান আল্লাহর কোন সমকক্ষ কেউ নেই। সকলেই তার মুখাপেক্ষী। পৃথিবীতে যত মানুষ আছে সবাই মহান আল্লাহর নিকট ফকির। আমাদের মাঝে যখন কেউ সমস্যায় পড়ে বা কোন কাজে সাফল্য চায় তখন দেখা যায় বিভিন্ন মাজারে দৌড়াদৌড়ি করতে। বিভিন্ন মানুষের কাছে দোয়া চায়। আমরা কি একটিরারও ভেবে দেখেছি আমরা যাদের কাছে চাই তারাও আমাদের মতই মানুষ। তারাও আল্লাহর নিকট মুখাপেক্ষী। কাজেই অন্য মানুষের কাছে চাওয়া এবং বিভিন্ন মাজারে দৌড়াদৌড়ি করা শির্ক। শির্ক মানে ইবাদতের ক্ষেত্রে অংশীদার বানানো। মানুষের যাবতীয় সমস্যা পূরণ করতে পারেন একমাত্র আল্লাহ, মাজারে যার কবর তার বিন্দু মাত্র ক্ষমতা নেই। কারণ, তারাও আমাদের মতই আল্লাহর নিকট ফকির। নবী-রাসূলদরেও ক্ষমতা নেই যে তারা আমাদের সমস্যা পূরণ করে দিবেন কারণ তারাও মহান আল্লাহর নিকট ফকির।

দুনিয়ার সকল কিছুর মালিক আল্লাহ। গাছ যে আমাদের অক্সিজেন দেয় তার মানে এই না যে গাছটি অক্সিজেন এর সৃষ্টিকর্তা। আল্লাহ গাছটিকে এইভাবে তৈরী করেছেন বলেই গাছ অক্সিজেন তৈরী করছে। মানুষ যে সকল জিনিস তৈরী করে তা কিন্তু এমন নয় যে সে জিনিসটি সৃষ্টি করল। বরং ব্যাপারটি এমন যে, জিনিসগুলো দুনিয়াতেই দেওয়া ছিল মানুষ আল্লাহ প্রদত্ত ব্রেইন খাটিয়ে তা তৈরী করে এবং একটি বাহ্যিক রূপ দান করে। এরজন্যই কুরআনের শুরুই হয় সূরা ফাতিহার "আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন" বলে যার অর্থ "সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য"

আমরা নিঃস্ব, ক্ষমতাহীন, ফকির মহান আল্রাহ তা'আলার নিকট। আমরা যা কিছুই করি না কেন আমাদের ক্ষমতা সীমিত। মরে গেলেই সব শেষ। কতগুলো সময় আর দিনের সমষ্টি নিয়ে আমি, আমরা, আপনারা। সময় শেষ হয়ে গেলেই আমরা বিদায় নিব। এই লেখাটি পড়তে পড়তেই আমরা কিছু সময় হারিয়ে ফেল্লাম। আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে গেল। তাই জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত আল্রাহর ইবাদত করাই আমাদের একমাত্র কর্তব্য। অবিশ্বাসীরা জীবনের অর্থ বুঝতে পারবে দুইটি সময়ে ক) মরণের সময় খ) জাহান্নামে যখন পতিত হবে। তারা তখন আল্লাহর নিকট প্রর্থনা করবে আমাদের একটিবার সময় দেওয়া হোক আমরা দুনিয়ায় ফিরে যাই, ইবাদত করে আসি। কিন্তু মহান আল্লাহ তাদেরকে সে সুযোগ দিবেন না। কারণ সময় একবার আমাদের জীবনে ছিল, যে তার সময়ের মূল্য দিয়ে আল্লাহর ইবাদত করবে তারাই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবে।

মহান আল্লাহ আমাদের ঈমানকে দৃঢ় করুন, আমাদের সঠিক বুঝ দান করুণ, বিভ্রান্ত হওয়ার হাত থেকে হিফাজত করুন। আমীন।



৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×