somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশু-কিশোরদের কাছে হয়ে উঠুন জনপ্রিয় লেখক

০৩ রা আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শিশু-কিশোরদের জন্য মজার মজার ছড়া, গল্প, কবিতাসহ ভৌতিক, সায়েন্স ফিকশান কতো কিছু তো লিখছেন। বইমেলা কিংবা অন্য সময়ে আপনার বই বেরোচ্ছে, এ তো ভারী আনন্দের খবর। আর এ আনন্দের খবর আরো আনন্দের হয়ে উঠতো যদি আপনার মজার লেখা এবং সুন্দর বইটি শিশুরা পড়তে পারতো। শিশু-কিশোরেরা কি তাহলে শিশুতোষ বই পড়ে না, অবশ্যই পড়ে। তবে ঠিক শতকরায় কতজন, তা হিসেব করতে গেলে মন খারাপের একটা তথ্য ভেসে ওঠবে আমাদের সামনে। তাই মন খারাপের কথা না বলে, চলুন আমরা মন ভালো করার কিছু কথা জেনে নিই।
অধিকাংশ শিশু-কিশোরেরা পাঠ্যবইয়ের কবিতা, গল্প, সহপাঠের কয়েকটি নীতি গল্প ছাড়া আর বেশি পড়ার সুযোগ পায় না। যদিও বর্তমানে স্কুলে স্কুলে লাইব্রেরী আছে, কিন্তু নেই বই সরবরাহের ব্যবস্থা। আর শিক্ষকেরা তো বাচ্চাদের সিলেবাস এর পড়া ছাড়া অন্যসব পড়ার ক্ষেত্রে তেমন উৎসাহ দেন না। ফলে প্রতিবছর এতো এতো শিশু সাহিত্য প্রকাশিত হচ্ছে কিন্তু শিশু-কিশোরদের নাগালের বাইরে রয়ে যাচ্ছে।
এখন আসি আমরা যারা শিশু সাহিত্য নিয়ে কাজ করি, তারা কি করতে পারি। তারা একটু ভিন্ন কাজ করতে পারি। আর সে ভিন্ন কাজটা হলো শিশুদের কাছে যাওয়া। যেসব ছেলেমেয়েরা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ে, তাদের আমরা আমাদের সুন্দর বইটি পড়তে দিতে পারি। সিলেবাসের বাইরের কোন বই পেলে তাও আবার উপহার হলে দেখবেন ছেলেমেয়েরা লুফে নিবে, কাড়াকাড়ি করবে, আপনার বইটা আনন্দ নিয়ে পড়ে শেষ করবে। যাদের জন্য রান্না করলেন, তারা যদি খুব তৃপ্তি নিয়ে, আনন্দ নিয়ে খায়; মা হিসেবে নিশ্চয় আপনার খারাপ লাগবে না।
এখন আসি, এতো এতো বাচ্চা, এতো বই পাবো কই? প্রকাশক তো বই-ই দেয় না! সৌজন্য কপি যে পঁচিশটা পায়, তাও আবার বন্ধুবান্ধব নিয়ে যায়। এখন উপায়? উপায় একটা আছে। আমাদের দেশে এতো এতো ছেলেমেয়ে তাহলে একজন শিশু সাহিত্যিকের ২০০ বই বিক্রি হতে কেন ফেসবুকের ইনবক্সে ইনবক্সে টোকা মারতে হয়? তার কারণ তারা শিশুদের বই বড়দের পড়তে অনুরোধ করে, বড়রা সেসব বই পড়েন না, শিশুরা বঞ্চিত হয়। অবশ্যই এ নিয়ে শিশুরা একটা আন্দোলন করতেই পারে, সেই আন্দোলন হলো তাদের মজার মজার বইগুলো না পড়েত দেওয়া।
সমস্যার সমাধান পরে জানাচ্ছি, তার আগে আসি আমাদের দেশের লেখকদের আসল সমস্যাটা কি? আমাদের দেশে যারা লিখেন, তারা লেখাটাকে শখ হিসেবে নেন, আনন্দের জন্য লিখেন কিংবা অবসরে সময় কাটানোর জন্য লিখেন। কেউ দায়বদ্ধতা থেকে লিখেন না। সেই দায়বদ্ধতা হতে পারে- আথিকভাবে স্বচ্ছলতা, সাহিত্য উৎকর্ষ এবং পাঠকের জন্য। যারা তরুণ লেখক, তারা লিখতে গিয়ে প্রথমে হোঁচট খায় বই প্রকাশ নিয়ে। কোন রকম বই প্রকাশ হলে দায়িত্ব শেষ। এ বই কে পড়লো, এ বই লেখককে কী দিলো, এ বই সাহিত্যের জন্য কী লাভ হলো- সেসব হিসাবের ধারে কাছেও কেউ নেই। অবশ্যই একজন সচেতন প্রতিশ্রুতিশীল লেখক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সেসব রাখা দরকার। নিজের বর্তমান অবস্থা থেকে উন্নতির জন্য তার সাহিত্য মানের পাশাপাশি চারপাশ সম্পর্ক ভালো ধারণা থাকা দরকার।
এবার আসি ভিন্ন কাজটা কি অর্থাৎ সমাধান
প্রথম কাজ> আপনার শিশু-কিশোর উপযোগী বইটি ভালোভাবে প্রকাশ করা।
দ্বিতীয় কাজ> আপনার প্রকাশকের কাছ থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী কিছু বই কিনে নিতে পারেন।
তৃতীয় কাজ> আপনি যে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়তে পড়াশোনা করেছেন, সেই স্কুল গুলোতে প্রধান শিক্ষকের অনুমতিক্রমে ছাত্র-ছাত্রীদের ফ্রি বইটি পড়তে দিবেন। খুব সম্ভব হলে তাদের বলবেন, তারা যেন পড়ে পরের দিন বা এরপরে আপনাকে জমা দিয়ে দেয়। আপনি দুইদিন পরে আপনার গ্রামের অন্য একটা স্কুলে এই বইগুলো পড়তে দিতে পারেন। তারপর তাদের কাছ থেকে নিয়ে অন্য স্কুলে দিবেন। বড়জোড় একমাসের পরিশ্রম, একটা থানা বা উপজেলায় আপনি এ কাজটা করতে পারেন। এক্ষেত্রে দাঁড়িকমা প্রকাশনী সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোন লেখক যদি এমন উদ্যোগ নিতে চাই, প্রকাশনী থেকে ফ্রি বই প্রকাশ করে লেখককে প্রয়োজন অনুযায়ী বই দিয়ে সাহায্য করবে।
আমার লাভ? হ্যাঁ লাভের কথা বলছি। একটা থানা বা উপজেলায় কমপক্ষে বিশ-পঁচিশ হাজার ছেলেমেয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে পড়ে। আপনি যদি তাদের আপনার বইটি পড়াতে পারেন, তাহলে ঐসব ছেলেমেয়ে আপনার পাঠক হয়ে যাবে। আপনার পরবর্তী বই কমপক্ষে দশ হাজার কপি বিক্রি হবে। ফেসবুকের লাইক কমেন্টস ও ফ্রেন্ডদের অনুরোধ বা তেল মাখামাখি করতে হবে না। আপনি হয়ে যাবেন, আসল দুনিয়ার সেলিব্রেটি লেখক। দশ হাজার বই বিক্রি হলে আপনি যদি দশ টাকা করে রয়্যালিটি পান, তাহলে একটা বই প্রকাশ করে পাবেন, এক লক্ষ টাকা। যখন সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারবেন, বই প্রকাশে কোন ঝামেলা থাকবে না, ভালো বই কিনে পড়তে পারবেন, তখন আপনার লেখা হবে আট দশ জনের চেয়ে আলাদা।
লেখক: আবদুল হাকিম নাহিদ,
সম্পাদক, সাপ্তাহিক কিশোর শিখা ও প্রকাশক দাঁড়িকমা প্রকাশনী
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:২৬
১০টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×