somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুটো অ্যানিমেশন ফিল্ম: আপ ও হাউ টু ট্রেইন ইয়োর ড্রাগন

০৯ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বর্তমান সময়ে অ্যানিমেশন সিনেমা দর্শক তালিকা এবং সিনেমা শিল্পের এক বিশাল জায়গা দখল করে আছে। সিনেমায় সাফল্যের সব্বোর্চ্চ স্বীকৃতি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস বা অস্কার প্রতিযোগিতায় অন্যান্য ক্যাটাগরীর পাশাপাশি অ্যানিমেশন শর্ট এবং ফিচার ক্যাটাগরীতেও পুরস্কার প্রদান করা হয়। অ্যানিমেশন সিনেমার ইতিহাস কিন্তু মোটেও নতুন নয়। সেই ১৯৩০ সাল কিংবা তার আগে থেকেই শর্ট ফিল্ম নির্মান হচ্ছে, এবং সেরা শর্ট তালিকায় অস্কার পুরস্কারের জন্য প্রতিযোগিতা করছে। দুটো অ্যানিমেশন ফিল্ম - আপ এবং হাউ টু ট্রেইন আপ আ ড্রাগন ।

আপ:

এখন পর্যন্ত দুটো অ্যানিমেশন মুভি মাত্র অস্কার প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ মুভির তালিকায় অন্যান্য সিনেমার সাথে লড়াই করেছে। এদের একটি হলো ১৯৯১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্ট আর অন্যটি হলো গত বছর মুক্তি পাওয়া আপ। আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী কোরালাইন কে হারিয়ে সেরা অ্যানিমেশন ছবির অস্কার জিতে নিয়েছে আপ। পিক্সার অ্যানিমেশন স্টুডিওর নির্মিত এই মুভি পিট ডক্টারের পরিচালনা। পিট এর আগে পিক্সার থেকেই নির্মিত আরেকটি মুভি মন্সটারস ইনকর্পোরেশন সিনেমা সাফল্যের সাথে পরিচালনা করার পর এটি তার দ্বিতীয় মুভি। আপই পিক্সার এর প্রথম মুভি যার থ্রি-ডি ভার্সনও নির্মান করা হয়েছে।

আপ একটি অ্যাডভেঞ্চার মুভি। এর কাহিনী আবর্তিত হয়েছে কার্ল ফ্রেডেরিকসনকে ঘিরে। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় কার্ল তার সহধর্মিনীকে খুজে পায় এই অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়তা থেকেই। তাদের একটা স্বপ্ন ছিল - প্যারাডাইস ফলস দেখতে যাবার। বেলুনবিক্রেতা কার্ল সারা জীবন চেষ্টা করেছে প্রয়োজনীয় অর্থ সঞ্চয়ের কিন্তু বুড়ো বয়সে দক্ষিন আফ্রিকার টিকেটটা কাটার পরেই তার স্ত্রী অসুস্থ্য হয়ে পড়ে এবং মারা যায়। একাকী কার্ল আরো বিপদে পরে যায় যখন ল্যান্ড ডেভেলপাররা তার আশেপাশের জমি কিনে নিয়ে তাকেও জমি বিক্রয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করে এবং একদিন আইনের সহায়তা নেয়। কিন্তু জেদী কার্ল তার স্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূরনের জন্য তার ছোট্ট ঘরটিতে বেধে দেয় অসংখ্য বেলুন, উড়ে চলে তার বাড়ি। কিন্তু ঘটনাক্রমে সঙ্গী হয় খুদে দু:সাহসী রাসেল। তাদের এই অভিযানে আরও অংশ নেয় উড়তে অক্ষম পাখি কেভিন, ডাগ নামের কথা বলা একটি কুকুর।

পিক্সার স্টুডিও অ্যানিমেশন সিনেমা তৈরীতে বেশ সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে । এটি তাদের দশম ছবি, এবং অস্কারে পূর্নদৈর্ঘ্য অ্যানিমেশন ক্যাটাগরী চালু করার পরে তাদের নির্মিত সাতটি ছবিই অস্কার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে এবং এদের মধ্যে পাচটিই অস্কার জিতে নিয়েছে। দুটো ক্যাটাগরীতে অস্কার জিতে নেয়া আপ মুভিটির সাফল্য বোঝা যায় এর সমালোচকদের মন্তব্য থেকে - রোটেন টম্যাটোস নামের সিনেমা রিভিউ প্রতিষ্ঠানের মতে গত ২০০৯ সালে সবচে' বেশী পজিটিভ মন্তব্য পেয়েছে এই মুভি। সারা বিশ্বে প্রায় সাড়ে সাতশ মিলিয়ন ডলার আয়করা এই মুভি কিন্তু পিক্সারের সবচে' বেশী উপাজর্নকারী মুভি নয়, ফাইন্ডিং নিমো কে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি এই সফল মুভিটিও।

হাউ টু ট্রেইন ইয়োর ড্রাগন

সাম্প্রতিক সময়ের সবচে' সাড়া জাগানো অ্যানিমেশন মুভির নাম হাউ টু ট্রেইন ইয়োর ড্রাগন। ড্রিমওয়ার্কস অ্যানিমেশন কতৃক নির্মিত এই মুভিটিরও একটি ত্রিমাত্রিক ভার্সন মুক্তি দেয়া হয়েছে। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে টপচার্টে অবস্থান করা এই মুভিটির পরিচালক ডিন ডিব্লয় এবং ক্রিস স্যান্ডার্স। দুজনে এর আগেও একসাথে অ্যানিমেশন মুভি পরিচালনা করেছেন।

হাউ টু ট্রেইন ইয়োর ড্রাগন মুভিটি বর্তমান সময়ের নয়। অনেকটা রূপকথার কোন সময়ের কাহিনী এটি যার মূল চরিত্র হিকাপ। সে বার্ক দ্বীপের ভাইকিং দের রাজার ছেলে। ভাইকিংদের নিয়ম অনুযায়ী তাকে একটি ড্রাগন হত্যা করতে হবে। তাদের গ্রামের পাশেই বসবাস ড্রাগনদের, যারা মাঝে মধ্যে তাদের পশু খেয়ে যায়। একদিন হিকাপ একটি ড্রাগনকে গুলি করে কিন্তু কেউ তার কথা বিশ্বাস করে না। তাই সে একাই বনে যায় এবং আহত ড্রাগনকে খুজে পায়। কিন্তু হত্যা করার বদলে তাকে মুক্তি দেয়। হিকাপকে বলা হয়েছিল ড্রাগন খুব হিংস্র প্রানী কিন্তু তার বিশ্বাস হয়নি। তাই সে আবার সেই ড্রাগনটিকে খুজে বের করে যে কিনা আহত হবার কারণে উড়তে সক্ষম নয়। হিকাপ তার সাথে বন্ধুত্ব করে এবং একটি কৃত্রিম লেজ বানিয়ে দেয়। অথচ এর পাশাপাশি চলে তার ড্রাগন হত্যার প্রশিক্ষন কারন খুব শীঘ্রই তাকে বেরোতে হবে ড্রাগনদের সাথে যুদ্ধ করতে, অন্যান্য গ্রামবাসীদের সাথে, তার বাবার নির্দেশানুযায়ী।

৯৮ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই মুভিটি ২০০৩ সালে প্রকাশিত একই নামের গল্প অবলম্বনে নির্মিত। মুভি সমালোচকদের পজিটিভ মন্তব্যের জোরে এটি এখনই আগামী অস্কার প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রোটেন টম্যাটোস এর মতে ১৪০ টি সিনেমা রিভিউর মধ্যে ৯৮ শতাংশই একে ভালো এবং সাফল্যজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন। মার্চের ২০ তারিখে মুক্তি পাওয়া এই মুভি এর মাঝেই একশ মিলিয়ন ডলার উপার্জন করে নিয়েছে।

পুরানো সিনেমাপোস্ট
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×