somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওয়েস্টার্ণ সিনেমা - ওপেন রেঞ্জ

১৫ ই মে, ২০১৩ রাত ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একটা সিনেমা দেখার পর একটু সময় নিয়ে চিন্তা করতে হয়। চিন্তার গতি প্রকৃতি বিভিন্ন রকম হতে পারে। এর মাঝে - নির্মাতা কেন এরকম একটি চলচ্চিত্র নির্মান করেছেন - সেই ভাবনাটা একটু বেশী গুরুত্ব পায় আমার কাছে। সব চলচ্চিত্র নিয়ে ভাবতে হয় না - কিছু চলচ্চিত্রে ভাবনার কোন বিষয়ই থাকে না; কিছু চলচ্চিত্র নির্মাতার উদ্দেশ্য স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তোলে, নির্মাতার উদ্দিষ্ট বিষয়বস্তু নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা যেতে পারে সেক্ষেত্রে। ওপেন রেঞ্জ সিনেমায় নির্মাতার উদ্দেশ্য মোটাদাগে খুব স্পষ্ট নয়, ফলে সিনেমা সম্পর্কে সামান্য চিন্তা ভাবনা করার অবকাশ পাওয়া যায়। সে ভাবনা থেকে সিদ্ধান্তে আসা গেল - কতগুলো মানুষের আদর্শগত সিদ্ধান্ত ও অবস্থানকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ওপেন রেঞ্জ সিনেমায়। হয়তো দুইশত বছর আগের সময়কে তুলে ধরে বর্তমান সময়ের মানুষকে কিছু বলা নির্মাতা কেভিন কস্টনারের উদ্দেশ্য ছিল।

পরিচালক হিসেবে কেভিন কস্টনারের সাথে পরিচয় অল্প কিছুদিন আগে, কস্টনারের প্রথম ফিচার ফিল্ম 'ড্যান্সেস উইথ ওলভস' এর মাধ্যমে। ওয়েস্টার্ন সিনেমার একটি ভিন্ন রূপ চিত্রায়িত করেছেন কেভিন কস্টনার - ড্যান্সেস উইথ ওলভস এবং ওপেন রেঞ্জ সিনেমায়। ওপেন রেঞ্জ সিনেমার গল্প শুরু হয় চারজন ক্যাটলমেনের একটি দলকে দিয়ে, তাদের দুজন বয়স্ক, একজন যুবক, অন্যজন কিশোর। তারা ওপেন রেঞ্জারস, গরুর পাল নিয়ে খোলা জমিতে ঘুরে বেড়ায় তারা, পরিশ্রমী নির্বিবাদ নিঃসঙ্গ জীবন তাদের। ডেন্টন ব্যক্সটার নামে আধিপত্যবাদী এক র‌্যাঞ্চার - যুবক মোজ-কে হত্যা করে, কিশোর বাটনকে গুলি করে ফেলে রেখে যায়। ঠিক প্রতিশোধ নয়, বরং ব্যাক্সটার এবং তার দলকে শায়েস্তা করার জন্য দায়িত্বশীল বয়স্ক দুজন, বস স্পিয়ারম্যান এবং তার দশ বছরের সঙ্গী কর্মচারী চার্লি ওয়েইট, শহরে আসে। ফলে সব কিছু ছাপিয়ে তাদের লালিত মূল্যবোধই স্পষ্ট হয়ে ওঠে ছবিতে। দুশো বছর পরে কি এই মূল্যবোধের কোন ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়?


২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ওপেন রেঞ্জ-কে অথেনটিক ওয়েস্টার্ণ সিনেমা বলা হচ্ছে। দুশো বছর আগের সত্যিকার জীবনযাত্রা ফুটে উঠেছে এই সিনেমায়। সবুজ ঘাসে ঢাকা বিস্তীর্ণ ভূমি, গরুর পাল, কাউবয়দের সংগ্রামী জীবন, গানহ্যান্ড, দারিদ্র্য ইত্যাদির দারুন চিত্র পাওয়া যায় ওপেন রেঞ্জ সিনেমায়। অভিজ্ঞ লোক বস স্পিয়ারম্যানের নির্দেশনা এবং সততা, চার্লি ওয়েইট এর ক্ষিপ্রতা, বুনো স্বভাব, ডেন্টন ব্যাক্সটার এর আধিপত্য-নিষ্ঠুরতা, স্যু বারলো'র সেবাসুলভ মনোভাব ইত্যাদি ওয়েস্টার্ণ যুগের নিষ্ঠুরতার স্বাভাবিক চিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। ব্যতিক্রম আছে এর চিত্রায়নেও, সিনেমার একটি বড় অংশ জুড়ে বৃষ্টি, যা বাস্তবতাকে আরও সুদৃঢ়ভাবে উপস্থাপন করে। আর, ছবির গানফাইট দৃশ্যটি এর নামকেই প্রতিফলিত করে - ওপেন রেঞ্জ। আট-দশ জন গানম্যানের সাথে দুইজন মুখোমুখি, শহরের অধিবাসীদের ভূমিকাও চমৎকার।


বস স্পিয়ারম্যান চরিত্রে অভিনয় করেছে দ্য গডফাদার চলচ্চিত্রের টম হেগান-খ্যাত রবার্ট ডিউভ্যাল। বয়স্ক এই অভিনেতা দুর্দান্ত ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন সিনেমায়। চার্লি ওয়েইট চরিত্রে আছেন পরিচালক কেভিন কস্টনার। কিছুটা গম্ভীর, অসামাজিক কিন্তু ক্ষিপ্র গানম্যানের চরিত্রে তার অভিনয় দায়িত্বশীল। স্যু চরিত্রে অ্যানি বেনিং আকর্ষনীয় ও কামনীয়রূপে উপস্থাপিত হয়েছেন। চমৎকার লোকেশনে দারুন সিনেমাটোগ্রাফি আর সেই সাথে ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর - সব মিলিয়ে বেশ উপভোগ্য 'ওপেন রেঞ্জার'। বড় কোন পুরস্কার স্থান পায় নি এই ছবির ঝুলিতে, কিন্তু 'টাইমআউট লন্ডন' এর সেরা ৫০ ওয়েস্টার্ণ সিনেমার তালিকায় ৪৮ নম্বর অবস্থান দখল করতে পেরেছে এই ছবিটি।

বাংলা সিনেমা: জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×