somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছবি ব্লগঃ পাহাড় ডাকে আজ আমায়

১০ ই জুন, ২০১০ সকাল ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাহাড়ের সাথে নিবিড় সম্পর্ক আমার সেই ছোট বেলা থেকে। পাহাড়ের দেশে বেড়ে উঠা বলেই হয়তো। গুটি গুটি পায়ে ছোট ছোট পাহাড়ের চুঁড়ায় উঠে নিজেকে বিজয়ী ঘোষনা করে দুই হাত দুইদিকে প্রসারিত করে নিজের অস্তিত্বের জানান দিতাম। চট্টগ্রাম শহর ঘিরে থাকা পাহাড় গুলো যেন খুব কাছের বন্ধু আমার। কিশোর বয়স পার করে উচ্চশিক্ষার্থে পাড়ি দিলাম আরেক পাহাড় ঘেরা শহর সিলেটে। আর তারুণ্য-যৌবনদীপ্ত উদ্দীপনার সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে সিলেটের পাহাড় গুলো। আমার সাথে ছিল সমতল এলাকার কয়েকটা মানুষ। যারা জীবনে পাহাড় দেখেনি। ছোটখাট বালির টিবি দেখলেই দৌড়ে উপরে উঠে গিয়ে "আমি রাজা আমি রাজা" বলে চিৎকার করতে থাকে। তাই কারনে অকারনে বার বার ছুটে গেছি পাহাড়ের কোলে। সবচেয়ে বেশি হতবাক হয়েছিলাম প্রথমবার যেবার জাফলং-ভোলাগঞ্জ গেলাম। এত অসাধারন সুন্দর পাহাড়ে ঘেরা একটা জায়গা। মনটা খারাপ হয়ে গেল এক অদ্ভুত বুক ভরা অভিমানে। এত এত কাছের এই সৌন্দর্য, ছুঁয়ে দেখতে ভারতের ভিসা লাগবে। সৌন্দর্য্যে যতটা মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেয়, নিশ্চিত দেশ ভাগের লাইনটা ঠিক ততটাই পীড়া দেয় সবাইকে। সুযোগ হয়েছিল কয়েকদিন আগে আরো একবার যাওয়ার। যথারীতি ছবি তুলেছি বেশ কিছু। আসুন ছবিতে ছবিতে একবার ঘুরে দেখে আসি অপরূপ সেই সৌন্দর্য্য।

জাফলং : ১


জাফলং : ২


জৈন্তাপুর : ১


জৈন্তাপুর : ২


জৈন্তাপুর : ৩


ভোলাগঞ্জ : ১


ভোলাগঞ্জ : ২


ভোলাগঞ্জ : ৩


ভোলাগঞ্জ : ৪


ভোলাগঞ্জ : ৫


অনেক পাহাড়ের গল্প হলো। প্রকৃতির গল্প হলো। সৌন্দর্য্যের গল্প হলো। এবার আসুন অন্যরকম একটা গল্প শুনি। এই গল্প পাথরের গল্প। পাথরের সাথে দিন রাত কাটানো মানুষের গল্প। এইটাকে একটা সিরিজ বলা যেতে পারে। যদিও একি ধরনের একটা সিরিজে রঙিন এবং সাদাকালো ছবি মিশিয়ে ফেলা আমার পছন্দ না। তাও ছবির ধরনের উপর নির্ভর করে অপছন্দের কাজটা করলাম।

নাহ, প্রকৃতি একে উদাস করে দেয়নি। এই উদাস চাহনী ক্লান্তির বহিঃপ্রকাশ। রোদ-বৃষ্টিতে মাখামাখি হয়ে ছোট ছোট হাত দুটোও হয়তো হয়ে গেছে এই পাথরগুলোর মতন ধাতব।


এই পরিবারটার ভবিষ্যত কি? কেউ কি আমায় বলতে পারেন? ছোট ছোট দুটো ছেলেকে নিয়ে দিনভর চলছে পাথর সংগ্রহের কাজ। ছেলেগুলো বড় হওয়া পর্যন্ত এখানে পাথর থাকবে কিনা কে জানে? যদি না থাকে তাহলে কোমর ধরে যাওয়া পরিশ্রম করে বেড়ে উঠা ছেলেটি কি করবে ঠিক জেনে নেয়া হয়নি।


একটু বিশ্রাম নেয়া। আসলে একটু দম নিয়ে নেয়া। পেছনে আকাশে মেঘের ঘনঘটায় কাজের কোন বিগ্ন ঘটবে না। বরং তীব্র রোদের চেয়ে এই বেশ ভালো, এই ধরনের অভিব্যক্তিই যেন ফুটে উঠেছে লোকটির চাহনীতে।


নতুন জামা কাপড়ের কেনাকাটা চলছে। তবে সময় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই কাজটাও চলছে পাথরের মাঝে। পাথর আর জীবন এখানে এক সুতোয় গাঁথা।


অবশেষে একটু সময় পাওয়া গেছে। এই সুযোগে রান্না চড়ে গেছে। পেট পুঁজোতো করতে হয়, জীবনের যেকোনো বাঁকেই।


সারাদিনের অল্প কিছুটা সময় পাওয়া যায় হয়তো নিজেদের মত করে। সেই সময়টাও পাথরের উপর বসে পাথুরে জীবনের দোলাচালের গল্প চলে। এই টুকুতেও হয়তো লুকিয়ে আছে অন্যরকম ভালোবাসার গল্প, যা আমাদের অজানা।


অবশেষে আবারো অপেক্ষমান। দূরে যেই নৌকাগুলো দেখা যাচ্ছে সেগুলোরই কোনো একটির অপেক্ষায়। আবারো শুরু হয়ে যাবে পাথরের সাথে জীবনের অন্যরকম আতাত। এরই নাম পাথুরে জীবন।


সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১০ সকাল ১১:৩৫
৬৫টি মন্তব্য ৬৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×