somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেন এই অবস্থা!!??

১৯ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লিখা টা ফেসবুকে পড়ে ভাল লাগল। তাই কপি করে দিলাম।

#কপি_পেস্ট
ওয়ালমার্ট থেকে সাধারনত জিনিসপত্র কিনি।
ওয়ালমার্টের সুবিধা হলো তিনমাস পর্যন্ত ফেরত দেয়া
যায়। আপনি ব্যাবহার করা জিনিস, প্যাকেট ছাড়া,
রিসিপ্ট ছাড়া নিয়ে যাবেন একটা কথাও বলবেনা- এক
মিনিটের ভেতর টাকা ফেরত নিয়ে হেটে চলে আসবেন।
এরকম সুবিধা আমেরিকার প্রায় সব স্টোরেই। মানুষ কি
এর অপব্যবহার করে? আমার কথাই বলি শুধুমাত্র পছন্দ না
হলে সহজে ফেরত দিতে পারবো এই বিবেচনায় যে কোন
জিনিস কেনার সময় সবার আগে আমি ওয়ালমার্টে খুজি।
এখন পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েকটা জিনিস ফেরত
দিয়েছি- তার বিকল্প আবার ওয়ালমার্ট থেকেই কেনা।
এই উদাহরন দিলাম নিউমার্কেটের সাথে তুলনা করতে।
আমার মনে আছে নিউমার্কেটে দোকানে টাকা পে
করার পরে দোকানে থাকা অবস্থায়ই আপনি চাইলে আর
চেঞ্জ করতে পারবেন না। বদমাশ ফাজিল লোকে ভরা
দোকান গুলো- কোনভাবে জোড় করে মিথ্যা বলে
বিক্রি করতে পারলেই আপনাকে আর চিনে না। অসততার
উদাহরন বাংলাদেশের দোকান গুলো।
.
এতো গেল গরীবের দোকানগুলো। এবার বলি ব্রান্ড শপ
গুলোর কথা। এসি রুমে সুন্দর সেলসম্যান আর বাহারি
নামের আড়ালের ডাকাতের দল। আপনি কি জানেন
আমেরিকা থেকেও বাংলাদেশে কাপড়ের দাম অনেক
ক্ষেত্রে সমান বা বেশি? ওয়ালমার্ট, জেসি পেনি,
কোহল, মেসি যেকোন জায়গা থেকে আপনি বিশ ডলারে
ভালো জিন্স কিনতে পারবেন এই আমেরিকায় বসে।
১০-১৫ ডলারে শার্ট-শর্টস-টিশার্টস, ৩০ ডলারে ফর্মাল
শার্ট। কিপ ইন মাইন্ড ঢাকা শহরের ব্রান্ড শপের
প্রোডাক্ট গুলো থেকে এগুলো অনেক হায়ার
কোয়ালিটির। এগুলোও কিন্তু মেইড ইন বাংলাদেশ
ট্যাগ লাগানো। ঢাকা শহরের কোন লো কোয়ালিটির
ব্রান্ড শপেও দুই হাজার টাকার নিচে জিন্স পাবেন না
(৩০ ডলার) উদাহরন স্বরুপ এলিফেন্ট রোডে গেলেই হবে,
ভাল গুলোতে তো পাচ হাজার টাকা মে বি। একজন
সাধারন ইঞ্জিনিয়ার এখানে ৭ হাজার ডলার মাসে
ইনকাম করে শুরুতে। ৩০ ডলারের ২৫০ খানা শার্ট সে
কিনতে পারবে তার টাকায়। বাংলাদেশের একজন
ইঞ্জিনিয়ার আয় করে মাসে ৩০ হাজার টাকা (৩৫০
ডলার), ১০ টা ড্রেস শার্ট কিনতে সব টাকা শেষ হয়ে
যাবে। ঈদের বাজারে দেখলাম তিনহাজার -পাচহাজার
টাকার নিচে মেয়েদের ড্রেসই নেই। বাংলাদেশের
থেকে আমেরিকায় প্রোডাক্ট এনে টাকার মুল্যেও কম
দামে বিক্রি হয়- মানুষের আয় ব্যায়ের কম্পেরিজন আর
ক্রয়ক্ষমতা বাদই দিলাম।
.
এপেক্স বাটায় যান দুই হাজার টাকা লাগবে ভালো
একটা স্যান্ডেল কিনতে। ছয় মাসে ছিড়ে যাবে।
আমেরিকা এসে মাত্র ৪০ ডলারে স্কেচারসের
একজোড়া জুতা কিনেছি। দেড় বছরে এই একজোড়া জুতা
সব সময় পড়েছি- একটা সুতোও এখনো ছেড়েনি।
বাংলাদেশের প্রোডাক্টের কোয়ালিটি আর দামের
সাথে তুলনা করেন। ওয়ালমার্টের সস্তা ১০ ডলারের যে
জুতা- তাও এপেক্সের ২০০০ টাকার জুতার চেয়ে টেকসই
এবং সুন্দর।
.
মানুষ কষ্ট করে টাকা আয় করে নিজের ইচ্ছেমতো খরচ
করার অধিকার সে রাখে। আমার যতদুর আইডিয়া ওপার
বাংলার লোকদের কাছ থেকে শুনে, ইন্ডিয়ায়ও
জিনিসের দাম বাংলাদেশ থেকে অনেক কম। আর এখন
যাতায়াত সহজ, কয়েক হাজার টাকায়ই ইন্ডিয়া ঘুরে
আসা যায়, ভিসা পাওয়াও আগের থেকে সহজ- মানুষ
কেনো উচ্চমুল্যে লো-কোয়ালিটির জিনিস কিনবে
ঢাকার বাজারে?
.
স্টেইক চিনেন? ঢাকার রেস্টুরেন্টে গুলোর নতুন
বড়লোকি আইটেম। জিনিসটা কি- গরুর কাচা মাংসের
একটা কাট। আমেরিকানদের খাবার- এরা জাস্ট লবন
ছিটিয়ে গ্রিল করে খেয়ে ফেলে সস দিয়ে। বড় বড় চেইন
হাউজ যেমন টেক্সাস রোড হাউজে আপনি ১০ (৮০০ টাকা)
ডলারে স্টেইক খেতে পারবেন সাথে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই-
ওকরা ফ্রাই, ব্রেড, নানা রকম সস থাকবে ফ্রি।
বাংলাদেশের সস্তা গরুর মাংসের স্টেইক ঢাকায় তো
বিক্রি হয় ১০০০ টাকার বেশি করে। ম্যাকডোনাল্ডসের
সবচেয়ে ভালো বাংগার, সাথে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আর কোক
সহ ৫ ডলার (৪০০) টাকা। এর সাথে ঢাকা শহরের কোনায়
কাঞ্চিতে গজিয়ে ওঠা রেস্টুরেন্ট গুলোর তুলনা করুন।
এখানের পিজ্জা হাট বা ডমিনোসে ৮ (৬০০ টাকা)
ডলারে চারজন খাওয়ার মত লার্জ তিন টপিং এর পিজা
পাওয়া যায়। ঢাকা শহরের পিজ্জার দোকানের দামের
সাথে মিলান কোয়ালিটি না হয় নাই ধরলাম- সবচেয়ে
বড় কথা অধিকাংশ পিজ্জার ছবি দেখলে সেসব
পিজ্জাই মনেহয় না। বেশিরভাগই কোনরকম মোটা ভারী
নান রুটির ওপরে সামান্য চিজ দেয়া একটা অদ্ভুতদর্শন
জিনিস।
.
সরাসরি ডলারে কনভার্ট করেও বাংলাদেশের জিনিস
পত্রের দাম (সবজি বাদে) আমেরিকার সাথে পাল্লা
দিয়ে চলে। যেখানে একজন লেবার মিনিমাম মজুরি
পায় ঘন্টায় ৮ ডলার (৬৫০) টাকা। বাংলাদেশের একজন
লেবার কি ঘন্টায় ৫০ টাকা আয় করে? ক্রয় ক্ষমতা
হিসাব করলে বাংলাদেশে জিনিসের দাম পৃথিবীর
সবচেয়ে বেশি আমার মনে হয়। আর ভেজাল, পচা-বাসি
খাবার, দুইনম্বরি, বাটপাড়ি, জোচ্চুরি আর কোয়ালিটির
কথা না হয় বাদ থাকুক।
.
বাংলাদেশ থেকে এবছর প্রায় দেড় লাখ মানুষ নাকি
ইন্ডিয়ায় ঈদের শপিং করতে গেছে। বেশ কয়েকটা
রিপোর্ট পড়লাম ঢাকা শহরে ঈদের বাজার মন্দাভাব
নিয়ে। দেশ ছেড়ে বিদেশে আসলে একটা সুবিধা হচ্ছে
অন্য ভাবে চিন্তা করার অভ্যাস হয়। বাংলাদেশে
থাকলে এই জিনিসটা নিয়ে রিএক্ট করতাম। মানুষকে
দোষ দিতাম। কিন্তু এখন ভাবি মানুষকে দোষ দিয়ে
লাভ নেই। ক্রিকেট খেলার বাইরে বাংলাদেশিদের
সামান্যতম দেশপ্রেম নেই। আর ক্যাপিটালিসিস্টিক
মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ক্রেতা সবসময় সস্তা জিনিস
খুজবে এটাই স্বাভাবিক। মানুষ যেখানেই সস্তায় পাবে
ভাল জিনিস, সেখানেই যাবে। আমেরিকায় বিভিন্ন
উৎসব উপলক্ষে স্পেসিফিক জিনিস গুলোতে বিশাল ছাড়
থাকে। এখন বাবা দিবস উপলক্ষে, সামার বার বি কিউ
উপলক্ষে নানা জিনিস এ প্রচুর ছাড়- আর বঙ্গদেশে ঈদ
পুজায় জিনিসের দাম দশগুন বেড়ে যায়। সো মানুষ যদি
সস্তায় ইন্ডিয়ায় জিনিস কিনতে যায়- আমি দোষের
কিছু দেখি না। আপনার কোয়ালিটি নেই- চুরিবাটপারি
জোচ্চুরি করেন- দাম রাখেন আকাশ ছোয়া, এইবার মারা
খান।
.
বাংলাদেশের টিভি অলরেডি ইন্ডিয়ার দখলে, ভিসা
ওপেন করলে মানুষ ম্যাচের কাঠিও ইন্ডিয়া থেকে
কিনবে। এতে কারোই লাভ নেই। টাকা গুলো ইন্ডিয়ায়
যাচ্ছে। বাট মাসে বিশহাজার টাকা ইনকাম করা
লোকটা যখন ঢাকা শহরের জ্যাম আর বৃষ্টি আর গরমে
সিদ্ধ হয়ে মার্কেটে গিয়ে দেখে একটা শার্টের দাম
দুইহাজার টাকা, যেটা ইন্ডিয়ায় ৫০০ টাকা- এই সব
ইকোনমিক্স তার কাছে গিয়ে বলার ট্রাই করে দেখতে
পারেন।

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:০৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৪–৫ আগস্ট : রাষ্ট্রক্ষমতার মুখোশ খুলে দেওয়া রাত ও দিন

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০১

৪–৫ আগস্ট : রাষ্ট্রক্ষমতার মুখোশ খুলে দেওয়া রাত ও দিন

৪ আগস্ট রাত — আশ্বাসের আড়ালে ছদ্ম-অভ্যুত্থানের নীরব নকশা
৪ আগস্ট সন্ধ্যায় কোটা-আন্দোলনের বিশৃঙ্খলাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে যখন রাষ্ট্রজুড়ে উত্তেজনা,... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে এমপি হওয়ার মতো ১ জন মানুষও নেই

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৪



দলগুলোতে মানুষই নেই, আছে হনুমান।

আমেরিকায় যদি ট্রাম্প ক্ষমতায় না'আসতো, বাংলাদেশে হ্যাঁ/না ভোট দিয়ে ইউনুসকে দেশের প্রেসিডেন্ট করে, দেশ চালাতো প্রাক্তন মিলিটারী অফিসারেরা ও বর্তমান জামাতী অফিসারা মিলে। দুতাবাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

=চলো দেখি সূর্য উদয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫০


শীত কুয়াশা ফুটো করে,
সূর্য যখন উঠে নীলে
দেয় ছড়িয়ে সোনা আলো,
দেখলে মনে শান্তি মিলে।

একটি সকাল ফের পেয়ে যাই
নিঃশ্বাস নিয়ে বাঁচি সুখে,
পাই প্রেরণা সূর্যের কাছে
আলোর শক্তি তুলি বুকে।

দেখবে নাকি আমার সাথে
রোজ বিহানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মজনু নামাজ পড়ার পর মোনাজাত ধরল তো ধরলই, আর ছাড়তে চাইল না | পাক আর্মির বর্বরতা!!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৭



১৯৭১ সালে পাকিস্তানী আর্মি পুরো বাঙালী জাতির উপর যে নৃশংস হত্যাংজ্ঞ, বর্বরতা চালিয়েছে যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। সত্যি বলতে ১৯৭১ সালে বাঙালী জাতির উপর পাকিস্তানী আর্মি কর্তৃক... ...বাকিটুকু পড়ুন

সব দোষ শেখ হাসিনার !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৬


অনেকদিন পর zahid takes এর ডা. জাহেদুর রহমানের এনালাইসিস ভিডিও দেখলাম। জুলাই আন্দোলনের পূর্বে বিশেষত যখন র‍্যাব স্যাংশন খায় তখন থেকেই উনার ভিডিও দেখা আরম্ভ করি। শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×