আমি বরাবরই নারীবাদিতে এলার্জিক। কিন্তু আমি নারীবাদি নিয়ে কথা বলতে আসেনি। আমি শুধু জানতে চাই, হুজুররা কিছু বললে তাদের নিয়ে এত সমালচনা কেন?? কিন্তু ওই একই কথা যখন কোন শিল্পী বলে তখন কেন কথা হয় না?? কোন বিজ্ঞাপনে দেখান হয় তখন কেন কথা হয় না??
শুরুতে আসি বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে। দেশ বিদেশের প্রায় বিজ্ঞাপনে দেখান হয় নারী কে খুবই সস্তাভাবে। তার মধ্যে অন্যতম হল এক্স নামক পারফিউমের বিজ্ঞাপন গুলোতে। এদের এত নিম্নমানের বিজ্ঞাপন এত প্রচার হয় কেম্নে!! বছর খানেক আগে শুনে ছিলাম ভারতে না কি কোন এক যুবক এই কম্পানির নামে কেস করে এই জন্য যে এই পারফিউম অনেক ব্যাবহারের পরেও তার কোন বান্ধবী জুটেনি।সেই ব্যক্তি কেস জিতেও যায় এবং বড় অংকের ক্ষতি পূরণও সে পায়।পুরুষদের প্রসাধনীর এরকম বিজ্ঞাপন আরও আছে। সব গুলা ১টা করে আলোচনা করতে গেলে অনেক গুলো পর্ব লিখা লাগবে।
পুরুষদের প্রসাধনীর বিজ্ঞাপন গুলোতে এরকম প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। আবার পুরুষদের বিজ্ঞাপন না হলেও দেখা যায় নারীদের নিচু করে দেখান হচ্ছে। মশলার বিজ্ঞাপন, ডিটারজেন্ট পাওডার/সাবানের বিজ্ঞাপন, আসবাব পত্রের বিজ্ঞাপন... সব কিছুতেই কোন না কোন ভাবে নারীদের ছোট দেখান হয়। এসব বিজ্ঞাপনে দেখান হয় শুধু নারীরাই রান্না করবে, নারীরাই কাপড় ধুবে এরকম আরও অনেক কিছু। তবে ব্রিটেন ১টা ভাল উদ্দ্যগ নিয়েছে, তারা আর এই ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করবে না।
পশ্চিমাদের কথায় আসি। তারা তো প্রায় বলে মুসলিম দেশ গুলোতে নারীদের মর্যাদা নেই। তাদের দেশে মেয়েরা খুবই স্বাধীন। আমি বলছি না যে মুসলিম রাষ্ট্র গুলাতে মেয়েরা ভাল আছে কারন তারা নবী রাসুলের(স) সুন্নাহ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। তারা আসল ইসলামে কি আছে তা বলে না। নিজেদের ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করছে ইসলাম কে।
এখন আসল কথাই আসি। আমাদের হুজুররা মেয়েদের নিয়ে কিছু বললেই তারা হয়ে যায় খারাপ। অথচ উপরে আলোচনা করলাম তার কারন এটা বলার জন্য যে হুজুরদের থেকেও অনেক খারাপভাবে মেয়েদের কে তারা উপস্থাপন করছে, তখন তাদের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়ায় না। হুজুররা কিছু বললে বাম পন্থি আর নারীবাদি দের যত চুলকানি। শাফি হুজুররা ১বার মেয়েদের কে তেতুলের সাথে তুলনা করেছিলেন, তাতেই সবার কি চুলকানী!! কিন্তু এড শেরেন নামক গায়কের চলতি গান Shape of You এর দিকে তাকান। গানের কথা গুলা পড়ে দেখেন নারীকে শুধুই মাংশের দলা হিসেবে দেখান হয়েছে অথচ সেটাই এখন পর্যন্ত ২১৪,০৫৮২,৫০৩ বার দেখা হয়েছে। আমি গানটার এত নাম শুনে ইউটিউবে দেখলাম, পুরাই হতবাক হয়েছি নারীবাদি, বামপন্থি আর পশ্চিমাদের ভন্ডামি দেখে।শাফি হুজুর যে সত্য বলেছেন তা গুলশানে পশ্চিমা পোশকে মেয়েরা হেটে গেলে আশে পাশের পুরুষদের দেখলেই বুঝা যায়।
তবে তালি এক হাতে বাজে না।হুজুরদেরও দোষ আছে। তারা মানুষের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারে না আসলে ইসলাম নারীদের নিয়ে কি বলে। তাদের কোথায় সুবিধা দাওয়া হচ্ছে, তাদের কথায় অগ্রাধিকার দাওয়া হয়েছে।তারা শুধু বলে মেয়েদের কোন কোন কাজে বাধা আছে।
আর পশ্চিমারা সব সময় বলে বেড়ায় যে তাদের দেশে মেয়েরা খুব স্বাধীন। তাদের সমান অধিকার আছে এবং আরও অনেক কথা। হুমায়ন আহমেদের "ঘর পেরিয়ে দুই পা" বই টা পড়লে তাদের আসল পরিস্থীতির ব্যপারে কিছুটা বুঝা যায়।
সব শেষে ১টা ঘটনা দিয়ে বলি।ওমর(রা) এর শাসন আমলের ঘটনা। এক লোকের বউ শুধু ঘ্যান ঘ্যান করত। তাই সে যাচ্ছিল খলিফার কাছে বিচার দিতে। যখন সে খলিফার বাড়ির কাছে গেলেন তখন ভিতর থেকে শুনতে পেলেন খলিফার বউ ঘ্যান ঘ্যান করছেন।তাই তিনি ফিরে যাচ্ছিলেন কিন্তু কোন ভাবে খলিফা ব্যাপারটি লক্ষ করলেন এবং তাকে ডাক দিয়ে জানতে চায়লেন যে সে কেন ফেরত যাচ্ছিল। লোকটি বলল "আপনি খলিফা হয়েও যে সমস্যাই আছেন সেই একই সমস্যার বিচার নিয়ে আসছিলাম"। খলিফা তখন উত্তর করলেন "আমাদের স্ত্রীদের উপরে আমাদের বাড়ির কাজ করা আমাদের বাচ্চা মানুষ করা ফরজ কিংবা ওয়াজিব না, তাই এরকম একটু সহ্য করাই যাই" ।
নতুন দিনের অপেক্ষাই রইলাম।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৫০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



