এই ব্লগ অন্য কেউ পড়বে সেই জন্য না। এর প্রধান কারণ নিজের স্মৃতি গুলো রক্ষা করা। স্মৃতি গুলোও যে ধোকা দেয়।
প্রথমে নিজের ব্যাপারে বলি। আমি এক জন খুবই সাধারণ ঘরের ছেলে। ছোটতে পড়া শোনাতে খুব ভাল ছিলাম না। আসল ভালই ছিলাম না। এজন্য আব্বা আমাকে নিয়ে চিন্তা করেছিল এসএসসি এর পর কোন টিভির দোকানে কাজে লাগিয়ে দিবে। কিন্তু আমার আম্মা আমার জন্য আব্বার সাথে অনেক পিড়াপিড়ি করেন। আম্মার কথা ছিল যাই হোক ছেলে কে মানুষ করব। এসএসসিতে রেজাল্ট করলাম ৪.৮৮। এটা ২০০৮ সালের ঘটনা। এখন যেমন ভুড়ি ভুড়ি এ+, সে সময় তা ছিল না। বলা চলে কোন রকমে রক্ষা পাই। আব্বা পড়াশুনা চালিয়ে যেতে রাজি হয়।
এরপর শুরু হল কলেজে ভর্তি হওয়ার দৌড়। কোন রকমে ১টা সরকারী কলেজে ভর্তি হই। সেটা সেই কলেজের ১ম ব্যাচ। এসএসসিতে অনেক ভাল প্রস্তুতির পরেও এ+ না হওয়াই অনেক ভেঙে পড়েছিলাম। এবারও আম্মা অনুপ্রেরকের ভূমিকাতে। আর সাথে আমার বন্ধুরা। আমি বন্ধু হিসেবে যাদের পেয়েছিলাম/পেয়েছি তাদের প্রতি সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকব। এবার ঘুড়ে দাঁড়ালাম। এইচএসসিতে পেলাম এ+।
এবার শুরু হল আরেক দৌড়। ভার্সিটি ভর্তির দৌড়। অনেক জায়গাতে পরীক্ষা দিলাম। এর মধ্যে টিকে গেলাম পাবনার একটি প্রতিষ্ঠানে। সেখান থেকে গ্র্যাজুয়েশন করলাম। এর মাঝে ঘোটে যায় আমার জীবনে সব চেয়ে কষ্টকর ঘটনাটি। থার্ড ইয়ারে থাকতে আম্মা মারা গেলেন। এরপর শুরু হল আমার জীবনে একা পথ চলা।
আজ ৪ বছর হয়ে যাচ্ছে আম্মা মারা যাওয়া। প্রতিটা দিন কেম্নে যায় আমি নিজেও জানি না। আমার আম্মা আমার জীবনের হিরো। সারা দিনের সব ঘটনা তার কাছে জমা দিতাম। এখনও দেই মনে মনে। প্রকাশ্যে কাঁদতেও পারি না। আমার ছোট ২টা ভাই বোন আছে, তাদের জন্য। তাদের সামনে নিজেকে শক্ত করে রাখতে হয়। কিন্তু এই ব্যথা তো কমে না। আসলে এই ব্যাথা কোন দিনই কমবে না মনে হয়। শুধু আস্তে আস্তে তা সহনীয় হয়ে যাচ্ছে মনে হয়।
আজও লুকিয়ে লুকিয়ে আমি কাঁদি শুধু তারই জন্য। জীবনে অনেক কঠিন সময় আসে। সে গুলো থেকে মুক্তি হয় তো মা করতে পারবে না কিন্তু তার কাছে বললে মনে ১টা অদ্ভূত অনুভূতি হত। মনে হত আমি পারব সব কিছু অতিক্রম করতে। আর আজ......!!!

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



