আগের ব্লগ গুলির মতই পাঠকের জন্য নয়।
আমার বোন HSC টেস্ট পরীক্ষা শেষ করল আর আমি এই সময় তবলীগে যেয়ে কিছু সময় লাগিয়ে আম্মার জন্য অনেক দোয়া করলাম। ২৪ নভেম্বর ২০১৩। রাতের ট্রেনে ঢাকার উদ্দেষ্যে রওনা হলাম। আমরা ৩ ভাই বোন আর আমার ছোট চাচী। হঠাৎ করে আমার ভাই ট্রেনের মধ্যে খুব কাঁতে শুরু করল। সে থামেই না। তার জন্য বগির সবাই বিরক্ত। কিন্তু কিছু করার নাই। বাচ্চা বলে কেউ কিছু বলছেও না।
হঠাৎ আমাকে হাসপাতাল থেকে ফোন করে বলা হল যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে আসুন। আমি তো ট্রেনে ছিলাম। তাই ফুপা আর আব্বা কে বার বার ফোন দিচ্ছিলাম। কিন্তু তারা ধরছিলেন না। আমি তখন খুবই চিন্তাই পড়ে গেলাম। বুঝতে পারছিলাম খারাপ কিছু হতে যাচ্ছে।
উপায় না পেয়ে ঢাকাতে অবস্থানরত ২জন বন্ধুকে আর ১জন মামাকে(বকুল মামা) কল করি। তারা হাসপাতালে যায় সেই রাতেই। তখন সময় রাত ২-৩টার মধ্যে। কিন্তু তারাও কিছু বলেনি আমাকে। আমরা ট্রেন থেকে নামলাম ভোর বেলা। আলো ফুটতেই সরাসরি চলে গেলাম হাসপাতালে। সেখানে যেয়ে দেখি আম্মা কে মুখ ঢেকে রাখা হয়েছে। বাকিটা বুঝতে আমাদের বাকি থাকল না।
আমার বন্ধু আমাকে ধরে নিয়ে যেয়ে হাসপাতালের কিছু কাগজ পূরণ করিয়ে আম্মার লাশ ফ্রিজারে রাখানর ব্যবস্থা করে দিল। আব্বার সাথে বসে ঠিক করলাম কোথায় কবর দাওয়া হবে সেটা। এরপর হাসপাতালের বিল দিয়ে লাশ নিয়ে আমরা চলে যাই আঞ্জুমান মফিদুনে। সেখানে গোসল করিয়ে এম্বুলেন্সে করে রওনা দেই আমরা। সারা রাত ট্রেনে ঘুমাইনি। এম্বুলেন্সের মধ্যে কফিনের পাশে আম্মার পায়ের কাছে ঘুমিয়ে পড়ি আমি।
রাতে বাড়ি এসে পৌছালাম। এসেই দেখি অনেক মানুষ বাসাতে। আমি একটু ফ্রেশ হয়ে চলে গেলাম মসজিদে। সেখানে বাদ এশা জানাযার পর গোরস্থানে। আমাকে অনেকে বলেছিল কবরে আম্মাকে নামাতে। আমি পারিনি। খুবই ভেঙে পড়ে ছিলাম সেদিন।
আজও চিন্তা করি, আম্মা যখন উঁচু টুলে কাজ করত তখন তাকে ধরে নামালে খুব ভয় পেত। আর ছোট কন স্থানে আতকে পড়ার ভয় ছিল তার মনে অনেক। সেদিন কেমন করে আমার কাঁধে চড়ে ওই ছোট কবরে চলে গেল!??
আম্মা, আমি যে আজও তোমাকে মনে করে আশ্রুতে বালিশ ভিজাই......

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



