ফিক্স ডিপোজিট এর নাম মনে হয় কম বেশী সবাই শুনেছেন। কিন্তু প্রেম ডিপোজিট এর নাম মনে হয় আপনাদের শোনা হয় নাই। ইহা আমারই আবিষ্কার! আর এই বিক্রিয়ার মূল বিক্রিয়ক হল আমার বন্ধু রাফি উদ্দিন।
রাফির এর চেহারার বর্ণনা আগে দেই কারণ ওর এই জিনিসটাই সবার আগে চোখে পড়ে। লম্বায় ৫ ফুট সাড়ে ৬ ইঞ্চি, গায়ের রং পুরো ফর্শা কিন্তু রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে গেছে। আমার ঘাড়ের দিকটা একটু বেশী ফোলার কারণে মোটা দেখোয়! কিন্তু রাফি এর শরীর শুধু পেটা, বেশী ফোলাও নয়, নরমও নয় আবার ম্যাড়াও নয়। রাস্তা দিয়ে হেটে গেলে মেয়েরা তো তাকায় তাকায়, সাথে ছেলেদেরও তাকাতে হয়। এক কথায় ছেলেদের যত বেশী সুন্দর হওয়া চাই তার সব কিছুই আছে, ফাটাফাটি হ্যান্ডস্যাম।
তার সাথে পোলা পুরা গার্লস কিলার। ওর সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয় ক্লাস এয়িটে। রাফিরা খাগড়াছড়িতে বদলি হয়ে আসে। এসেই প্রথমে সবার নজর কাড়ে বিশেষ করে মেয়েদের। তার প্রথম কারণ তো আগেই বলেছি, দেখতে ফটাফাটি। দ্বিতীয় কারণ কথা-বার্তার ধরণ-ধারণ। এত ফ্রি আর স্মার্ট যে কদিন এর মধ্যেই আমার ক্লাসের সব মেয়েরাই ওর প্রেমে হাবু-ডুবু খেতে থাকে। আমি ওর এই প্রতিভায় মুগ্ধ তার সাথে আবার বিশেষ কিছু শ্রেণীর ব্যক্তিরাও হিংসার আগুনে দগ্ধ হতে থাকে।
যাই হক রাফি ব্যাপক হারে সমজদার ছেলে আমাদের ক্লাসের তখনকার সময় আমাদের ক্লাসে সবচেয়ে সুন্দরি মেয়ে প্রিয়া চাকমার সাথেই ওর জুটি তৈরি হয়। তবে জুটি বেশী দিন না থাকে না। প্রিয়ার বাবার বদলির হুকুম তামিল হয়।
ওর বাবার বদলিয়ের ওয়ার্ডারের কথা শুনে আমারা মনে করেছিলাম, ছেলেটা মনে হয় ভেঙ্গে পড়বে! কিন্তু এমন কিছুই ঘটলো না। বরং ওর চেয়ে আমার কট্টর মনটাকেই বেশী খারাপ মনে হল। মেয়েটা ভালো ছিল, সবার জন্মদিন আলাদা করে মনে রাখতো।
প্রিয়ারা চলে গেল। তারপরের দিনই রাফিকে একটা মেয়ের সাথে দেখা গেল।
রাফি উদ্দিন তার পরিচয় দিল “আমাদের পাসের বাসাতে থাকে। ক্যান্টরমেন্ট স্কুলে পড়ে।” আমি পরে ওকে একা পেয়ে জিজ্ঞেস না করে পারলাম না, “তোর এক দিনের মধ্যেই প্রেম হল কি ভাবে রে? আর এক দিনের মধ্যেই প্রিয়াকে ভুলে গেলি?”
রাফি খুশি খুশি গলায় উত্তর দিলো, “আরে ধুর! এর সাথে লাইন মারছি পনেরো দিন হল। প্রিয়ার বদলির খবর পেয়েই একে হ্যাঁ করে দিয়েছি।
ঐ ঘটনার পর থেকে আমার জানা হল প্রেমেরও সঞ্চয় বলেন আর ডিপোজিট বলেন, করা যায়।