কাজ করা মানুষ আমি পছন্দ করি। ডা: জাফরুল্লাহ কে পছন্দ করার অনেক কারণ আছে, মুক্তিযুদ্ধে ওনার অবদানের কথা নিশ্চয় স্মরণীয়, তাই বলে অপছন্দ করার কোনো কারণ নেই —তাতো নয়। দেশের এবং মানুষের স্বীকৃত শত্রুদের সাথে কারো ওঠাবসা আপনি কীভাবে সহ্য করবেন? এটা সত্য যে, করোনা ভাইরাস দুর্যোগের এ ক্রান্তিকালে সেসব হিসেব আমরা করতে চাই না, কিন্তু পাশাপাশি এটা মনে রাখতে হবে যে, ডা: জাফরুল্লাহ একজন রাজনৈতিক মানুষ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত, বিএনপি চেয়ার পার্সনের একজন উপদেষ্টা তিনি, ফলে করোনা ভাইরাস সণাক্তের কিট আবিষ্কারের সুযোগে উনি রাজনীতি করলে এবং সরকারকে অহেতুক কাঠগড়ায় দাঁড় করালে সরকার তো সে বিষয়ে সতর্ক থাকেত চাইবেই, চাইবে না?
পৃথিবী নাভিঃশ্বাস হয়ে যাচ্ছে আর গণস্বাস্থ্য একেবারে এমন কীট আবিষ্কার করে ফেলেছে যা কোনো ধরনের প্রশ্ন ছাড়াই অব্যর্থ, এটা ভাবাটা একেবারে সরল অংক হয়ে গেল না? পৃথিবীর এ দুর্যোগে বাংলাদেশ সরকার না হয় গড়িমশি করছে, তাবৎ পৃথিবী কেন গণস্বাস্থ্যের পিছনে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে না? বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, বিশেষ করে যেটি মানব স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে সেটি তো এত সহজে বাজারে আসার রেওয়াজ নেই, তাহলে এক্ষেত্রে কীভাবে তা রাতারাতি আমরা আশা করতে পারি? কিছু ভূলের কারণে তো হিতে বিপরীতও হতে পারে। হা, আপনি বলতে পারেন সব যেখানে অন্ধ কানাই তো সেখানে রাজত্ব চাইবে। সরকারের ওপর ফাপড় নেওয়ার এটাই কারণ, দুর্নীতি এবং দীর্ঘসূত্রিতার কারণে আমাদের সরকার এতটাই নাজুক অবস্থানে থাকে যে, পশ্চিমা অনুদানে যারা এ ধরনের এনজিও এদেশে চালান তারা সরকারের এক হাত দেখে নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন, সেটি শুধু তারা ভালো কাজ করেন বলে নয়, সরকারের মধ্যে অনেকে খুব বেশি খারাপ কাজ করে থাকেন বলে সে সুযোগটা তারা পেয়ে থাকেন।
আশা করি, স্বপ্ন দেখি যে, গণস্বাস্থ্যের হয়ে ড. বিজন শীল আবিষ্কৃত করোনা ভাইরাস সণাক্তের কিট বাংলাদেশ তথা বিশ্বের মানুষের করোনা ভাইরাস পরীক্ষার বিষয়টিকে সহজ এবং সুলভ করবে। তাই বলে সব ধরনের বিতর্ক এড়িয়ে জাতির এ ক্রান্তিকালের সুযোগে কোনো ফাঁক গলে তা বাজারে আসুক, এটি চাই না। আমরা একটি মানব উন্নয়ন সংস্থার কাজ থেকে কিট আবিষ্কারের মতো কাজ অবশ্যই চাই, কিন্তু রাজনীতি চাই না।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৫৮