বাংলা অনলাইন ম্যাগাজিন 'সোনালী সকাল' -এ কিছু মজাদার কৌতুক পড়লাম। ব্লগ বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছা করছে।
পেইজটির মূল লিংক:http://www.sonalisakal.com/details.php?news_id=253
কৌতুকগুলো লিখেছেন: রাজিব আহমেদ, কোর্টপাড়া, চুয়াডাঙ্গা-৭২০০।
কৌতুক-১
চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনার হচ্ছিলো। ইংল্যাণ্ডের ডাক্তার বললেন, আমাদের দেশে একটা শিশু জন্ম নিলো যার একটা পা ছিল না। আমরা নকল পা লাগিয়ে দিলাম। বড় হয়ে সে অলিম্পিকে ১০০ মিটার দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন হলো! জার্মানির ডাক্তার বললেন, আমাদের দেশে এক শিশু জন্ম নিলো যার দু’টি হাত ছিল না। আমরা নকল হাত লাগিয়ে দিলাম। বড় হয়ে সে মুষ্টিযুদ্ধে স্বর্ণপদক পেলো!! সবশেষে বাংলাদেশের ডাক্তার বললেন, আমাদের দেশে একদা দু’টি মেয়ে শিশু জন্ম নিলো- যাদের হাত-পা সবই ঠিক ছিল, শুধু মাথায় মগজ ছিল না। আমরা সেখানে গোবর ঢুকিয়ে দিলাম। বললে বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, দু’জনেই দেশের শীর্ষপদে বসেছিলেন।
কৌতুক-২
বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষের যুগে আমেরিকায় ভিন্ন ধরনের এক মেলা বসেছে। মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি হচ্ছে। যার যেটা দরকার কিনে নিয়ে গিয়ে নিজ শরীরে লাগিয়ে নিচ্ছে। একজন এসেছে নিজের জন্য মগজ কিনতে। স্টলে গিয়ে মগজ পছন্দ করে দাম জানতে চাইলে দোকানি বললো, এটা বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের মগজ, দাম দুইশ’ ডলার। ক্রেতা আরো দামি মগজ চাইতেই দোকানি একটা মগজ দেখিয়ে বললো, এটা নিয়ে যান, পুরো পাঁচশ’ ডলার দাম পড়বে।
- কেন, এত বেশি কেন? কার মগজ এটা?
: এক বাংলাদেশি নেতার। একটু পুরানো, কিন্তু একদম ফ্রেশ। ওই দেশের নেতাদের মগজ সারাজীবনই অব্যবহৃত থাকে কিনা!
কৌতুক-৩
তৃতীয় বিশ্বের কোন এক উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের দুই নেত্রী একই প্লেনে বিদেশে যাচ্ছেন। একজন একটি চকচকে একশ’ টাকার নোট প্লেনের জানালা দিয়ে নিচে ফেলে দিলেন। তারপর অপরজনকে শুনিয়ে বললেন, আমি আমার দেশের একজন মানুষের উপকার করলাম! এই দৃশ্য দেখে অপর নেত্রী পাঁচটি একশ’ টাকার নোট বের করে একই কান্ড করলেন এবং জোর গলায় বললেন, আমি পাঁচজন মানুষের উপকার করলাম!!
সবকিছু দেখে পাইলট আফসোস করে বললেন, আহা আমি যদি দু’জনকেই ফেলে দিতে পারতাম, তবে ১৮ কোটি মানুষের উপকার হতো!!!
কৌতুক-৪
একজন রাজনৈতিক নেতা এক ভদ্রলোককে রাজনীতিতে নামানোর জন্য ফুসলাচ্ছেন। কিন্তু ভদ্রলোক কিছুতেই রাজি হচ্ছেন না। তাঁর ভাষ্য- আমরা অতিশয় সাধারণ মানুষ, আমার চৌদ্দ পুরুষের কেউ কোনদিন রাজনীতি করেনি; ওই পথ আমার জন্যে নয়। তবু নেতা দমবার পাত্র নন। স্বভাবসুলভ বাকপটুতায় বললেন, ধরুন কারো বাপ-দাদা গরু চোর ছিল, তাই বলে কি ছেলেকেও গরু চুরিতে নামতে হবে?
- তা কেন, তবে ও রকম হলে আমি নির্ঘাৎ রাজনীতিতে নাম লেখাতাম!
কৌতুক-৫
একবার দশজন রাজনীতিবিদকে বহনকারী একটি হেলিকপ্টার দূর গ্রামে বিধ্বস্ত হলো। খবর পেয়ে রাজধানী থেকে উদ্ধারকারী দল রওনা হলো। ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সন্ধ্যা প্রায়। দেখা গেল, গ্রামবাসীরা ইতোমধ্যে দশজনকেই দাফন করে ফেলেছে- সারিবদ্ধ দশটি কবর।
উদ্ধারকারী দলনেতা জানতে চাইলেন, সবাই কি ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন?
- কবর দেওয়ার আগ পর্যন্ত দুইজন বলছিলেন যে, তারা মারা যাননি। কিন্তু আমরা সে কথায় কর্ণপাত করিনি। জানেনই-তো রাজনীতিবিদদের সব কথা বিশ্বাস করতে নেই!
কৌতুক-৬
একবার বনমন্ত্রী সুন্দরবন পরিদর্শনে গেলেন। গহীন জঙ্গলে তিনি কিছু লোহা-লক্কর পড়ে থাকতে দেখলেন। তৎক্ষণাৎ স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিলেন এগুলো দেখে-শুনে রেখো। সুতরাং নৈশপ্রহরী নিয়োগ দেওয়া হলো। কিছুদিন পর তার কাজ তদারকি করার জন্যে সুপারভাইজার নিয়োগ করা হলো। এই দু’জনের ছুটিছাটা দেখার জন্যে নিযুক্ত হলো প্রশাসনিক কর্মকর্তা। আর তিনজনের বেতন-ভাতা হিসাব-নিকাশ করবেন সদ্য নিযুক্ত হিসাবরক্ষক।
এক্ষণে অর্থ মন্ত্রণালয়ের টনক নড়লো। তারা আপত্তি জানিয়ে বললো, এত লোকের বেতন দেওযা যাবে না, লোক কমাও। বিষয়টি বনমন্ত্রীকে জানানো হলো। তিনি বললেন, সরকারি কাজকর্ম হবে দিনের আলোয়, রাতে লোক রাখার দরকার কী? তাই নৈশপ্রহরীর দরকার নেই। ওকে আগে চাকরি থেকে বিদায় করো!
কৌতুক-৭
এক লোক সচিবালয়ের মুল প্রবেশ পথে তার জীর্ণ বাইসাইকেলটি রেখে ভেতরে ঢুকছিল। হা হা করে ছুটে এলো দারোয়ান- এই পথ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রীর মতো লোক যাবেন। তুমি কী ভেবে সাইকেলটি এখানে রাখলে?
লোকটি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বললো, সাইকেলটি পুরানো হলেও তালাটি নতুন। উনাদের কেউ এটি চুরি করে নিয়ে যেতে পারবেন বলে মনে হয় না!
কৌতুক-৮
আরেকবার দুই দেশের দুই অসৎ যোগাযোগ মন্ত্রীর মধ্যে গোপন আলাপ চলছিল। নাইজেরিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রী তার দেশের একটি ব্রিজের ছবি দেখিয়ে বললো, এটার বাজেট ছিল ২০ কোটি টাকা। কিন্তু আমি ১৫ কোটি টাকায় বানিয়ে বাকিটা হজম করেছি! এরপর তৃতীয় বিশ্বের এক উন্নয়নশীল দেশের যোগাযোগ মন্ত্রী একটি নদীর ছবি দেখিয়ে বললেন, এখানে ব্রিজ বানানো বাবদ বরাদ্দ ছিল ২০ কোটি টাকা।
- কোথায় ব্রিজ? আমি তো কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।
মন্ত্রী মুচকি হেসে বললেন, ব্রিজ থেকে আমার আয় হয়েছে পুরো ২০ কোটি টাকা!
কৌতুক-৯
বাংলাদেশকে বলা হয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কথাটা সর্বৈব মিথ্যে নয়। বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই নির্বাচিত হন। দলের সদস্যরা স্বাধীনভাবে নেতা নির্বাচিত করতে পারেন। এজন্যে ব্যবহৃত হয় পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন নির্বাচন পদ্ধতিটি। সেটা হলো : আদমকে যখন বলা হলো, এবার তুমি সঙ্গী নির্বাচন করে নিতে পারো, যখন কিনা ইভ-ই ছিলেন একমাত্র মানবী!
কৌতুক-১০ এবং...
একবার এক যৌথ নির্বাচনী সভার আয়োজন করা হলো, যেখানে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিজ নিজ অঙ্গীকার ব্যক্ত করবেন। সবার বক্তব্য শেষ হলে দর্শক সারিতে বসা একজন বলে উঠলেন, এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের মহাত্ম যে, গণতন্ত্র আছে বলেই অন্তত ছয়জন মিথ্যুককে ক্ষমতা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা যাবে; নির্বাচিত হবে মাত্র একজন!
কৌতুকগুলো পড়ে আপনাদের কি মনে হচ্ছে, সব দায় আমি কেবল রাজনীতিবিদদের উপরেই চাপাচ্ছি? আসলে দায় আমাদের সবার। আমরা যদি প্রশ্রয় না দিতাম, সবকিছু জেনে-বুঝেও রাজনীতিবিদদের তোষামোদি না করতাম, তাহলে তারা এত স্পর্ধা পেতো না। এ প্রসঙ্গে আরেকটা কৌতুক বলে লেখাটার ইতি টানবো।
একবার বাংলাদেশ আর নেপালের তথ্যমন্ত্রীর মধ্যে দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হলো। পাহাড়ি দেশ নেপালের তথ্যমন্ত্রী সহজেই জিতে গেলেন। সেই রাতে বাংলাদেশের সরকারি গণমাধ্যমের খবরে বলা হলো : তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতার পর বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী রৌপ্যপদক জয় করেছেন, অথচ নেপালের তথ্যমন্ত্রী অনেক চেষ্টার পরও শেষ লোকটার আগে পৌঁছেছেন মাত্র!
রাজিব আহমেদ
কোর্টপাড়া, চুয়াডাঙ্গা-৭২০০
[email protected]

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


