জলবায়ু পরিবর্তন ও মনের আবহাওয়া
ডা. আহমেদ হেলাল ছোটন
গত কয়েক মাসে পৃথিবীতে যে বিষয়টি সম্ভবত সবচাইতে বেশিবার আলোচিত হয়েছে তা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা। আবার জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর তালিকায় উপরের দিকে আছে বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশের নামটিও আলোচনায় এসেছে বহুবার। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাবে ভৌগোলিক যে পরিবর্তন হবে বা এর ফলে শারীরিক যা যা সমস্যা হতে পারে তা নিয়ে বলা হয়েছে বিস্তর। কিন্তু যে বিষয়টি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে খুব বেশি আলোচিত হয়নি তা হচ্ছে জলবায়ুর পরিবর্তনের কারনে আক্রান্ত অঞ্চলের মানুষের আচরণগত পরিবর্তনের কথা ও মানসিক সমস্যার কথা।
ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশ এর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক- বছর বছর বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় তো আছেই পাশাপাশি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব এদেশের উপর পড়বে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। তার উপর দরিদ্রসীমার কাছাকাছি অবস্থান করায় এবং সুসংসহত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবে সবসময় এদেশের মানুষ এক ধরণের মনঃসামাজিক টানাপোড়েনের মধ্যে থাকে- মানসিক সমস্যা হবার এতবিধ উপকরণ থাকায় পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা একটু বেশি মানসিক স্বাস্থ্য ঝুকির মধ্যে রয়েছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশংকা ২০২০ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী মানসিক রোগ আশংকাজনক হারে বেড়ে যাবে এবং ২০৫০ সাল নাগাদ তা দ্বিতীয় বৃহত্তম স্বাস্থ্য সমস্যা (প্রথম হবে হৃদরোগ) হিসেবে চিহ্নিত হবে। বাংলাদেশও এ আশংকার বাইরে নয়।
বৈরি প্রকৃতির কারণে অতি উদ্বিগ্নতা, খিটখিটে মেজাজ, তীব্র মানসিক চাপ (একিউট স্ট্রেস ডিজঅর্ডার), বিষন্নতা, মানিয়ে চলার সমস্যা (আ্যডজাস্টমেন্ট ডিজঅর্ডার), আবেগের সমস্যা, বিষন্নতা থেকে শুরু করে গুরুতর মানসিক রোগ (সাইকোসিস) ও বিপর্যয় পরবর্তী মানসিক চাপজনিত রোগ (পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার) ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
শতকোটি বছরের বৃদ্ধ সূর্যের নিচে পুড়তে পুড়তে পৃথিবী প্রতিনিয়ত হারাচ্ছে তার জৌলুস আর সেই সাথে মানবসৃষ্ট ‘উন্নয়নপ্রবণ’ আবর্জনার জঞ্জালে পৃথিবীর নাভিঃশ্বাস হবার যোগাড়। আর জলবায়ু পরিবর্তন আর দুর্যোগের সাথে লড়াই করতে করতে মানুষের দুর্যোগ পরবর্তী মনোদৈহিক প্রতিক্রিয়াও পরিবর্তিত হয়েছে বারবার।
জলবায়ু পরিবর্তনের তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় মানুষ হয়ে যেতে পারে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ, আতংকিত বা উৎকন্ঠিত। হঠাৎ যদি বন্যা বা খরার কারনে মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে তবে তাদের মধ্যে তৈরি হতে পারে তীব্র মানসিক চাপ বা একিউট স্ট্রেস ডিসঅর্ডার। এ সমস্যা কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। হতবিহ্বল হয়ে যাওয়া, তাৎক্ষণিকভাবে কোনো উদ্দীপনায় সাড়া না দেয়া অথবা হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে যে কোনো অনাকাংক্ষিত আচরণ করে ফেলতে পারে যে কেউ।
জলবায়ুর পরিবর্তন থেকে হতে পারে যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ- সেই দুর্যোগের কারণে সামাজিক- অর্থনৈতিক নানা ধরণের ক্ষতি হতে পারে। এই ক্ষতির আশংকা থেকেও তীব্র উৎকন্ঠা বা অহেতুক ভীতির উদ্রেক হতে পারে; আর এমন ভাবনায় আচ্ছন্ন থাকতে থাকতে তৈরি হতে পারে বিষণœতা। আর দুর্যোগ যদি হয়েই যায় তবে বিষন্নতায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি। বিষণœতার সাধারণ উপসর্গ হচ্ছে বেশিরভাগ সময় মন খারাপ থাকা, কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলা, চারিদিকের জগৎ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়া, নিজের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলা, অবসাদে ভোগা, ক্ষুধা কমে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা হওয়া এবং গুরুতর ক্ষেত্রে আত্মহত্যার প্রবণতা ও চেষ্টা করা।
আবার জলবায়ুর পরিবর্তনের কারনে মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। অবস্থাপন্ন একজন কৃষক হতে পারেন সর্বস্বান্ত -কিংবা পরিবর্তন করতে পারেন নিজের পেশা- বা গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসিত হয়ে যেতে পারেন। সব ক্ষেত্রেই তার মানিয়ে চলার সমস্যা বা আ্যডজাস্টমেন্ট ডিজঅর্ডার হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘দুর্যোগ পরবর্তী মনো-সামাজিক পরিচর্যা’ শীর্ষক একটি প্রকাশনায় এ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে দুর্যোগের কারনে সৃষ্ট মানসিক চাপ, হতাশা ইত্যাদি কারণে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ার প্রবণতা অনেকাংশে বেড়ে যেতে পারে।
আর আঘাত পরবর্তী মানসিক সমস্যা বা পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারের লক্ষণগুলো তীব্র মানসিক চাপজনিত সমস্যার মত হলেও শুরুটা হয় দুর্যোগের অনেক পড়ে আর স্থায়িত্বও হয় অনেক দীর্ঘ। এ সমস্যায় দুর্যোগ স্মৃতি বারবার মনে পড়া, দুর্যোগ সংশ্লিষ্ট উদ্দীপককে এড়িয়ে চলা, অতিমাত্রায় সজাগ থাকা, খিটখিটে হয়ে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ থাকতে পারে।
আর যারা আগে থেকেই কোনো মানসিক রোগে ভুগছেন- দুর্যোগের কারণে তাদের মধ্যে মানসিক রোগের লক্ষণগুলো আরো তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
আবার জলবায়ু পরিবর্তন বা দুর্যোগের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ কোনো প্রকৃত শারীরিক অসুস্থতা ছাড়াই – মানসিক সমস্যার কারণে শারীরিক উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসতে পারেন। সেখানে দেখা যায় মানসিক কারণে তাদের মধ্যে মাথাব্যথা, ক্লান্তি, বুক ধরফর, খাদ্যে অরুচি, শরীর ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই রোগটিকে বলা হয় সাইকোসোমাটিক ডিজঅর্ডার। এসময় মানসিক রোগ চিকিৎসকের সহায়তায় চিকিৎসাসেবা নেয়া প্রয়োজন।
জলবায়ু পরিবর্তণের কারণে শরীরের মধ্যে নানা পরিবর্তন হয়- বিশেষত মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারগুলোর তারতম্য হয়- মনের মধ্যে ঘটে যায় নানা আবেগের টানাপোড়েন আর পরিবর্তিত পরিবেশ আর সামাজিক অবস্থানের সাথে মানিয়ে নিতে হিমসিম খায় মানুষ। যার ফলশ্রুতিতে ঘটতে পারে নানা মানসিক বিপর্যয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ প্রায় শীর্ষে- তার উপর নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাত তো রয়েছেই।
তাই জলবায়ু পরিবর্তণের ঝুঁকি মোকাবেলায় সতর্ক থাকার যে নীতি ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলো নিয়েছে সে নীতিমালায় মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা জরুরি। জরুরি মানসিক প্রস্তুতি নেয়ারও।
ংড়ঃড়হ৭৩@মসধরষ.পড়স
গত কয়েক মাসে পৃথিবীতে যে বিষয়টি সম্ভবত সবচাইতে বেশিবার আলোচিত হয়েছে তা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা। আবার জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর তালিকায় উপরের দিকে আছে বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশের নামটিও আলোচনায় এসেছে বহুবার। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাবে ভৌগোলিক যে পরিবর্তন হবে বা এর ফলে শারীরিক যা যা সমস্যা হতে পারে তা নিয়ে বলা হয়েছে বিস্তর। কিন্তু যে বিষয়টি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে খুব বেশি আলোচিত হয়নি তা হচ্ছে জলবায়ুর পরিবর্তনের কারনে আক্রান্ত অঞ্চলের মানুষের আচরণগত পরিবর্তনের কথা ও মানসিক সমস্যার কথা।
ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশ এর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক- বছর বছর বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় তো আছেই পাশাপাশি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব এদেশের উপর পড়বে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। তার উপর দরিদ্রসীমার কাছাকাছি অবস্থান করায় এবং সুসংসহত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবে সবসময় এদেশের মানুষ এক ধরণের মনঃসামাজিক টানাপোড়েনের মধ্যে থাকে- মানসিক সমস্যা হবার এতবিধ উপকরণ থাকায় পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা একটু বেশি মানসিক স্বাস্থ্য ঝুকির মধ্যে রয়েছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশংকা ২০২০ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী মানসিক রোগ আশংকাজনক হারে বেড়ে যাবে এবং ২০৫০ সাল নাগাদ তা দ্বিতীয় বৃহত্তম স্বাস্থ্য সমস্যা (প্রথম হবে হৃদরোগ) হিসেবে চিহ্নিত হবে। বাংলাদেশও এ আশংকার বাইরে নয়।
বৈরি প্রকৃতির কারণে অতি উদ্বিগ্নতা, খিটখিটে মেজাজ, তীব্র মানসিক চাপ (একিউট স্ট্রেস ডিজঅর্ডার), বিষন্নতা, মানিয়ে চলার সমস্যা (আ্যডজাস্টমেন্ট ডিজঅর্ডার), আবেগের সমস্যা, বিষন্নতা থেকে শুরু করে গুরুতর মানসিক রোগ (সাইকোসিস) ও বিপর্যয় পরবর্তী মানসিক চাপজনিত রোগ (পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার) ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
শতকোটি বছরের বৃদ্ধ সূর্যের নিচে পুড়তে পুড়তে পৃথিবী প্রতিনিয়ত হারাচ্ছে তার জৌলুস আর সেই সাথে মানবসৃষ্ট ‘উন্নয়নপ্রবণ’ আবর্জনার জঞ্জালে পৃথিবীর নাভিঃশ্বাস হবার যোগাড়। আর জলবায়ু পরিবর্তন আর দুর্যোগের সাথে লড়াই করতে করতে মানুষের দুর্যোগ পরবর্তী মনোদৈহিক প্রতিক্রিয়াও পরিবর্তিত হয়েছে বারবার।
জলবায়ু পরিবর্তনের তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় মানুষ হয়ে যেতে পারে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ, আতংকিত বা উৎকন্ঠিত। হঠাৎ যদি বন্যা বা খরার কারনে মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে তবে তাদের মধ্যে তৈরি হতে পারে তীব্র মানসিক চাপ বা একিউট স্ট্রেস ডিসঅর্ডার। এ সমস্যা কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। হতবিহ্বল হয়ে যাওয়া, তাৎক্ষণিকভাবে কোনো উদ্দীপনায় সাড়া না দেয়া অথবা হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে যে কোনো অনাকাংক্ষিত আচরণ করে ফেলতে পারে যে কেউ।
জলবায়ুর পরিবর্তন থেকে হতে পারে যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ- সেই দুর্যোগের কারণে সামাজিক- অর্থনৈতিক নানা ধরণের ক্ষতি হতে পারে। এই ক্ষতির আশংকা থেকেও তীব্র উৎকন্ঠা বা অহেতুক ভীতির উদ্রেক হতে পারে; আর এমন ভাবনায় আচ্ছন্ন থাকতে থাকতে তৈরি হতে পারে বিষণœতা। আর দুর্যোগ যদি হয়েই যায় তবে বিষন্নতায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি। বিষণœতার সাধারণ উপসর্গ হচ্ছে বেশিরভাগ সময় মন খারাপ থাকা, কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলা, চারিদিকের জগৎ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়া, নিজের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলা, অবসাদে ভোগা, ক্ষুধা কমে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা হওয়া এবং গুরুতর ক্ষেত্রে আত্মহত্যার প্রবণতা ও চেষ্টা করা।
আবার জলবায়ুর পরিবর্তনের কারনে মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। অবস্থাপন্ন একজন কৃষক হতে পারেন সর্বস্বান্ত -কিংবা পরিবর্তন করতে পারেন নিজের পেশা- বা গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসিত হয়ে যেতে পারেন। সব ক্ষেত্রেই তার মানিয়ে চলার সমস্যা বা আ্যডজাস্টমেন্ট ডিজঅর্ডার হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘দুর্যোগ পরবর্তী মনো-সামাজিক পরিচর্যা’ শীর্ষক একটি প্রকাশনায় এ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে দুর্যোগের কারনে সৃষ্ট মানসিক চাপ, হতাশা ইত্যাদি কারণে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ার প্রবণতা অনেকাংশে বেড়ে যেতে পারে।
আর আঘাত পরবর্তী মানসিক সমস্যা বা পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারের লক্ষণগুলো তীব্র মানসিক চাপজনিত সমস্যার মত হলেও শুরুটা হয় দুর্যোগের অনেক পড়ে আর স্থায়িত্বও হয় অনেক দীর্ঘ। এ সমস্যায় দুর্যোগ স্মৃতি বারবার মনে পড়া, দুর্যোগ সংশ্লিষ্ট উদ্দীপককে এড়িয়ে চলা, অতিমাত্রায় সজাগ থাকা, খিটখিটে হয়ে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ থাকতে পারে।
আর যারা আগে থেকেই কোনো মানসিক রোগে ভুগছেন- দুর্যোগের কারণে তাদের মধ্যে মানসিক রোগের লক্ষণগুলো আরো তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
আবার জলবায়ু পরিবর্তন বা দুর্যোগের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ কোনো প্রকৃত শারীরিক অসুস্থতা ছাড়াই – মানসিক সমস্যার কারণে শারীরিক উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসতে পারেন। সেখানে দেখা যায় মানসিক কারণে তাদের মধ্যে মাথাব্যথা, ক্লান্তি, বুক ধরফর, খাদ্যে অরুচি, শরীর ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই রোগটিকে বলা হয় সাইকোসোমাটিক ডিজঅর্ডার। এসময় মানসিক রোগ চিকিৎসকের সহায়তায় চিকিৎসাসেবা নেয়া প্রয়োজন।
জলবায়ু পরিবর্তণের কারণে শরীরের মধ্যে নানা পরিবর্তন হয়- বিশেষত মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারগুলোর তারতম্য হয়- মনের মধ্যে ঘটে যায় নানা আবেগের টানাপোড়েন আর পরিবর্তিত পরিবেশ আর সামাজিক অবস্থানের সাথে মানিয়ে নিতে হিমসিম খায় মানুষ। যার ফলশ্রুতিতে ঘটতে পারে নানা মানসিক বিপর্যয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ প্রায় শীর্ষে- তার উপর নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাত তো রয়েছেই।
তাই জলবায়ু পরিবর্তণের ঝুঁকি মোকাবেলায় সতর্ক থাকার যে নীতি ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলো নিয়েছে সে নীতিমালায় মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা জরুরি। জরুরি মানসিক প্রস্তুতি নেয়ারও।
ংড়ঃড়হ৭৩@মসধরষ.পড়স
(স্বাস্থ্য কুশল - প্রথম আলো তে প্রকাশিত)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:০২