somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারীদের ঘরের বাইরে কাজ করা কি ইসলামে নিষেধ???

৩১ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





নারীদের ঘরের বাইরে কাজ করা কি ইসলামে নিষেধ??? পবিত্র আল-কোরানের একটি আয়াতাংশকে এই প্রসঙ্গে সবচেয়ে বেশি প্রমান হিসেবে উল্লেখ করা হয় আর তা হচ্ছে, “তোমরা ঘরে অবস্থান করবে”...সূরা আহযাব। এই আয়াতটির কথা বলে এটা বলা হয় যে, নারীদের বাইরে কাজে বৈধ নয় । এবার আসুন একটু গভীরে প্রবেশ করি। পবিত্র কোরআনের কোনও আয়াতের প্রকৃত অর্থ অনুধাবন করতে হলে প্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হচ্ছে এই যে, কি প্রসঙ্গে কাদের প্রতি তা অবতীর্ণ হয়েছে(শানে নুজুল) সেটা জেনে নেয়া। দ্বিতীয়ত যে কাজটি করতে হবে তা হচ্ছে, বর্ণনার ধারাবাহিকতার সাথে অর্থ টি মিলিয়ে নেয়া। , “তোমরা ঘরে অবস্থান করবে”- এই আয়াতাংশ টি নির্দেশ হিসেবে এসেছিল নবী করীম (সাঃ) এর স্ত্রীদের প্রতি। পুরো বর্ণনাটি ছিল এই, “৩২) হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা সাধারণ নারীদের মতো নও৷ যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করে থাকো, তাহলে মিহি স্বরে কথা বলো না, যাতে মানুষ গলদে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি প্রলুব্ধ হয়ে পড়ে, বরং পরিষ্কার সোজা ও স্বাভাবিকভাবে কথা বলো৷৩৩) নিজেদের গৃহ মধ্যে অবস্থান করো এবং পূর্বের জাহেলী যুগের মতো সাজসজ্জা দেখিয়ে বেড়িও না৷ নামায কায়েম করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করো৷ আল্লাহ তো চান, তোমাদের নবী পরিবার থেকে ময়লা দূর করতে এবং তোমাদের পুরোপুরি পাক-পবিত্র করে দিতে৷” –সূরা আহযাব। অর্থাৎ প্রথমেই তো এটা বলে দেয়া হয়েছে যে , নবী করিম(সাঃ) এর স্ত্রীরা অন্যান্য সাধারন নারীদের মত নন একারনেই তাদের জন্য কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন আবশ্যক। যেমন হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) এর উপর তাহাজ্জুত নামাজ ফরজ ছিল কিন্তু কেউ যদি তা দেখে তাহাজ্জুত নামাজকে সবার জন্য ফরজ বলে ঘোষণা করে তবে তা হবে অবুঝের মত কাজ। আবার পবিত্র কোরআনের সেই আয়াত যা যুদ্ধের ময়দানে অবতীর্ণ এবং যেটিতে কাফেরদের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই হত্যা করতে বলা হয়েছে তা উদাহরন দেখিয়ে কেউ যদি তা সাধারন অমুসলিমদের বেলায় প্রয়োগ করতে চায় তবে তা হবে পবিত্র কোরআনের মারাত্মক অপব্যাখ্যা। ঠিক তেমনি ভাবে নবী করীম সাঃ এর পত্নীদের( রাঃ) ব্যাপারে যদি কোনও বিধান বিশেষভাবে অবতীর্ণ হয় তবে সেই সব বিধান সব নারীর উপর চাপিয়ে দেয়াটা ঠিক নয়।





ইসলামে পরিবার ব্যবস্থায় নারী ও পুরুষ উভয়ের দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া আছে। অর্থনৈতিক উপার্জনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পুরুষের উপর এবং সংসার আভ্যন্তরীণ দিক যেমন সন্তান লালন পালনের মত দায়িত্ব গুলো দেয়া হয়েছে নারীদের উপর।ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: তোমাদের প্রত্যেকেই রক্ষণাবেক্ষণকারী(বা দায়িত্বশীল) এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার অধীনস্থদের রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পুরুষ তার পরিবার ও সংসারের জন্য দায়িত্বশীল এবং তাকে তার রক্ষণাবেক্ষণ ও দায়িত্বপালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। স্ত্রীলোক তার স্বামীর ঘরের রক্ষণাবেক্ষণকারিনী এবং তাকে সে সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। খাদেম তার মনিবের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং তাকে তার সে দায়িত্বপালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। অতএব তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।” [বুখারী: ৭/৪১(৫২০০) ও মুসলিম: ৬/৭(১৮২৯)] অর্থাৎ পুরুষের মূল কর্মক্ষেত্র বহির্মুখী আর নারীরটা অন্তর্মুখী। ইসলাম মতে পরিবারের আভ্যন্তরীণ বিষয় দেখাশুনা নারীর মূল দায়িত্ব এবং গৃহই তাঁর মূল কর্মক্ষেত্র এবং তা তাঁদের পবিত্রতা ও নিরাপত্তার অনুকুলে তবে কোনও নারী যদি সেই দায়িত্ব সম্পাদনের পর স্বামীর অনুমতিক্রমে শরিয়তের বিধি-নিষেধের সীমায় অবস্থান করে বাইরে অর্থ উপার্জন করতে চায় তবে ইসলাম তার পূর্ণ স্বাধীনতা নারীকে দিয়েছে, তবে তা তার দায়িত্বের মধ্যে পরে না। ।





মহান আল্লাহই সবচাইতে ভালো জানেন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×