মাতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা কোনও সমাজবিজ্ঞানীর কল্পনা নয়। খোদ বাংলাদেশের অনেক আদিবাসী নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে এখনও চালু আছে নারী-প্রধান সমাজ ব্যবস্থা, মাতৃ-প্রধান পরিবার প্রথা। শুধু যেসব আদিবাসীর আঙ্গিনায় হানা দিয়েছে গির্জার পুরোহিতরা সেখানেই শুধু নারীর প্রভাব ক্ষয়ে গেছে বা যাচ্ছে। নারীর দেবীত্ব কেড়ে নিয়েছে ঈশ্বরের ক্রুশ।
খ্রিস্টান ধর্ম ক্রুশকে নিজেদের প্রতীক বানানোর আগে যে ক্রস চালু ছিল পাশ্চাত্যে তা ছিল সুইজারল্যান্ডের পতাকার ক্রসের মত। দুটি সমান রেখার ক্রস। নারী ও পুরুষের সমান গুরুত্বে ব্যালান্সড একটি প্রতীক। রোমানরা খ্রিস্টান ধর্মকে হাতিয়ে নিয়ে নিজেদের বানানোর পর তারা তাবত্ চেষ্টা করেছে সমাজে নারীর ক্ষমতা ও ভূমিকাকে সংকুচিত করে ফেলতে।
ক্যাথলিকদের বই 'দি উইচেস হ্যামার' হচ্ছে মানব-সভ্যতার ইতিহাসে নারীকে ক্ষমতাশূন্য করে দেয়ার খুন-রাঙা দলিল। এর রচয়িতারাই মুক্ত চিন্তার নারী থেকে পৃথিবীকে মুক্ত করার প্রথম পরিকল্পনা নেয়। সব বিদুষী নারী, পূজারী নারী-পুরোহিত, জিপসি-নারী, মিস্টিক নারী-পীর-দরবেশদেরকে আখ্যা দেয়া হয় ‘ডাইনি‘ হিসেবে। পাওয়ামাত্র তাদেরকে খুন করার উন্মাদনায় মাতে ক্যাথলিকরা। চিকিত্সা জ্ঞানসম্পন্ন মিডওয়াইফ/ধাত্রীরা যারা সন্তানজন্মকে ব্যথামুক্ত করে প্রসূতিকে আরাম দিতে চাইতো তাদেরকে হত্যা করতো তারা। কারণ জেনেসিস-এর ঈশ্বরব্যাখ্যায় প্রসববেদনা নারীর পাপের শাস্তি- ইভের কর্মফল। ইউরোপজুড়ে তিনশ বছর ধরে এই ধর্মীয় উন্মাদনায় কম পক্ষে পাঁচ মিলিয়ন মুক্ত চিন্তার নারীকে হত্যা করা হয়েছে।
জামাল ভাস্কর, আপনি এরপরও জানতে চান কি করে নারী তার সামাজিক প্রভাব ও ক্ষমতা হারালো?
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ৮:৫০