আমরা অনেকেই ভীষণ খুশি এবং গর্বিত হচ্ছি কোভিড টিকা গ্রহন করতে পেরে, কিন্তু ভ্যাকসিন গ্রহনই শেষ কথা নয়। ভ্যাকসিন নেয়ার পর কোন কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরূরী তা এক নজর জেনে নেয়া যাক-
প্রশ্নঃ ভ্যাকসিন নেয়ার কতদিন পর শরীরে ইমিউনিটি কাজ শুরু করে এবং এটা কতদিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে?
উত্তরঃ প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন নেয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে শরীরে ইমিউনিটি তৈরী হয়, মূলত দ্বিতীয় ডোজ টিই শরীরের ইমিউনিটিকে আরো বেশী শক্তিশালী করে তোলে এবং দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার অল্প কিছু দিনের ভেতরে শরীরে আরো বেশী পরিমানে ইমিউনিটি রেস্পন্স তৈরী হয়। ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের মাঝে এখনো গবেষনা চলমান রয়েছে, বিজ্ঞানীরা এখনো এ ব্যাপারে নিশ্চিত নয় যে ভ্যাকসিন দেয়ার ঠিক কতদিন পর্যন্ত শরীরে ইমিউনিটি স্থায়ী থাকে। খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে গবেষনার ফলাফল প্রকাশ হলে নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে, সে জন্য আমাদের আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
প্রশ্নঃ ভ্যাকসিন নেয়ার পরেও কি একজন কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত হতে পারে কিংবা অন্যদের মাঝে তা ছড়াতে পারে?
উত্তরঃ বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত গবেষনার ফলাফলের ভিত্তিতে বলা হচ্ছে, ভ্যাকসিন দেয়ার পরও কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত কিংবা তা থেকে অপরজনের মাঝে ছড়ানোর সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আশার বিষয় হলো, ভ্যাক্সিন গ্রহীতাদের মাঝে কোভিড ১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জটিল অবস্থা কিংবা মৃত্যুশয্যায় উপনীত হবার মত অবস্থা ৯০-৯৫ ভাগ পর্যন্ত রোধ করা সম্ভব হয়েছে। এ বিষয়ে অসংখ্য় গবেষনা এখনো চলমান রয়েছে।
প্রশ্নঃ ভ্যাকসিন নেয়ার পরেও কি আমাদের করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে আর হলেও সেটা কত দিন পর্যন্ত?
উত্তরঃ ভ্যাকসিন দেয়ার পর ভাইরাস দ্বার আক্রান্ত হবার কিংবা তা অপরজনে ছড়িয়ে দেবার সমূহ সম্ভাবনা যেহেতু রয়েছে তাই ভ্যকসিন দেবার পরও সকল প্রকার প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা (মাস্ক পড়া, ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত পরিস্কার করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা) গ্রহন করা জরূরী।
অপর দিকে ভ্যাকসিন দেয়ার পর কতদিন পর্যন্ত এসব অনুসরণ করতে হবে সেটি নির্ভর করছে অনেক গুলো বিষয়ের উপর যেমন, আপনি কোন দেশে অবস্থান করছেন, আপনার আশেপাশের কমিউনিটিতে কোভিড সংক্রমণ কেমন, সব চেয়ে বড় বিষয় আপনার কমিউনিটির কত পার্সেন্ট মানুষ কে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে, এসব দিক বিবেচনা করে আমাদের প্রতরোধ মূলক ব্যাবস্থা সমূহ চালিয়ে যেতে হবে।
বিশেষ করে বাংলাদেশে যেহেতু ভ্যাকসিন গ্রহীতার সংখ্যা এখনো অনেক কম ৫% এরও নীচে এবং সংক্রমণ হার অনেক বেশী, সেহেতু অবশ্যই ভ্যাকসিন দেয়ার পরও সকল প্রকার প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। অনেক উন্নত দেশে মাস্ক পড়া অবাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং সেটি সম্ভব হয়েছে কেবল মাত্র ৭০%-৮০% এর ও বেশী মানুষকে নুন্যতম একটি ডোজ এর আওাতায় আনা সম্ভব হয়েছে বলে।
তথ্যসূত্র- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহ অন্যান্য ইভিডেন্স বেজড স্টাডি।
©মেহেদী হাসান
রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট
Centre for Research, Innovation and Development Action - CRIDA
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১২:০৭