somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওয়েস্টার্ন মুভি: ফর এ ফিউ ডলারস মোর

১০ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১০:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওয়েস্টার্ন মুভিগুলোর কাহিনী হচ্ছে আমেরিকার এমন কিছু জায়গার যেখানে জীবনের কোনো দাম নেই বরং মৃত্যুর দাম আছে। এজন্য সেখানে আগমন হয় পেশাদার খুনী বাউন্টি কিলারদের।
এ এলাকায় বিচরণ করে খুব খারাপ অপরাধীরা। পুলিশ কিংবা সরকারি লোকজন তাদের খুজে পায়না। তাই সরকার সেসব অপরাধীদের জীবিত বা মৃত ধরে আনার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে। বাউন্টি হান্টারদের কাজ হলো, খুব খারাপ দাগী অপরাধীদের ধরে নিয়ে আসা বা তাদের খুঁজে বের করে হত্যা করা।
বাউন্টি হান্টার বা কিলাররা হয় খুবই বেপরোয়া, অসম সাহসী আর অস্ত্র চালনায় পারদর্শী। উষর মরুভূমি কিংবা ভীত সন্ত্রস্ত জনপদে তারা ঘোড়া ছুটিয়ে শিকার খুজে বেড়ায়। কাউকে খুজে পেলে প্রয়োজনে খুন করতে দ্বীধা করে না একটুও।
--------------------

কর্নেল ডগলাস
এ মুভিতে একজন বাউন্টি কিলার হচ্ছে কর্নেল ডগলাস (ভ্যান ক্লিফ)। পিস্তল কিংবা রাইফেল, যে কোনো অস্ত্র চালনাতেই তার কোনো জুড়ি নেই। হাতের নিশানা অব্যর্থ। তার চোখের সামনে কোনো অপরাধী পড়লে তার আর নিস্তার নেই।

মেনকো
আরেকজন বাউন্টি কিলার হচ্ছে মেনকো (ক্লিন্ট ইস্টউড)। নির্ভয়ে সে হানা দিতে পারে অপরাধীর আস্তানায়। একাই যুদ্ধ করতে পারে বহু ডাকাতের সঙ্গে। পিস্তল চালনায় তার দ্রুততা আর স্টাইল অতুলনীয়।

ইন্ডিও
খুব খারাপ এক ডাকাত হলো ইন্ডিও (ভলন্তে)। খুন, ধর্ষণ, ডাকাতি হেন অপরাধ নাই সে করে নাই। সরকার ঘোষণা দিয়েছে ডাকাত ইন্ডিওকে খুন করলে বা ধরে এনে আইনের হাতে তুলে দিলে দশ হাজার ডলার পুরস্কার দেয়া হবে। এছাড়াও তার দলের বিভিন্ন লোকজনের জন্য নানা অঙ্কের পুরস্কার ঘোষণা করা আছে। এ টাকার লোভে তার পিছু নিয়েছে দুজন বাউন্টি কিলার কর্নেল ডগলাস আর মেনকো।
বাউন্টি কিলাররা অনুমান করেছিলো ডাকাত ইন্ডিও এ এলাকার সবচেয়ে ধনী আর সুরক্ষিত ব্যাংক এল পাসো লুট করার চেষ্টা করবে। এল পাসোতেই ডাকাত দলের গতিবিধি লক্ষ্য করতে গিয়ে মেনকো আর কর্নেল ডগলাস মুখোমুখি হয়।
কিন্তু দুজনই দক্ষ বাউন্টি কিলার। পুরস্কারের টাকার ভাগ অন্যজনকে দিতে রাজি নয় তারা। তাই একজন অন্যজনকে বের করে দিতে চায় এলাকা থেকে। দুজনের মধ্যে একটা ছোটখাট যুদ্ধ হয়ে যায়। খুন করা নয় বরং নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করারই ছিলো সে যুদ্ধের উদ্দেশ্য….

ডাকাত ইন্ডিওর দলের প্রত্যেকেই দাগী অপরাধী। সবার নামেই ঘোষণা করা আছে পুরস্কার। ডাকাতদের হত্যা করে সে পুরস্কার নেয়াই দুজনের মূল লক্ষ্য। তাই এ এলাকা ছাড়তে রাজি হয়না দুজনের কেউই। ফলে তাদের দুজনের পার্টনারশিপ করতেই হয়। মেনকো জানায় টাকাগুলো তার বেশী দরকার।
বাউন্টি কিলার দুজনের পার্টনারশিপ হবার পরে তারা সিদ্ধান্ত নেয় তাদের একজনকে কোনোভাবে ডাকাত দলের ভেতর ঢুকতে হবে। সিদ্ধান্ত হয় মেনকো ঢুকবে ডাকাত দলে। এজন্য সে বন্ধু সেজে জেল থেকে মুক্ত করে ডাকাত দলের এক সদস্যকে। এরপর তার সহায়তায় ডাকাত দলে ঢুকে সে।
অন্যদিকে মেনকো ও তার দল ডিনামাইট ফাটিয়ে ব্যাংকের ওয়াল ভেঙ্গে ফেলে। অনেক ডলার সহ ব্যাংকের প্রধান সিন্দুকটা গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় সে। এক সুযোগে দলের তিনজন ডাকাতকে খুন করে সে। ডাকাত দলের ভেতরের ভুল বোঝাবুঝি আর কোন্দলও বাড়তে থাকে। এ সুযোগে বাউন্টি কিলার দুজন একে একে খুন করতে থাকে ডাকাত দলের সদস্যদের। আবার নিজেদের কোন্দলেও খুন হয় কয়েকজন। ব্যাংক ডাকাতি করে পাওয়া বিপুল অংকের টাকা তারা তখনো ভাগাভাগি করেনি। ইন্ডিও চেষ্টা করছিলো দলের অন্যদের বঞ্চিত করে একাই পুরো টাকাটা নিয়ে নেয়ার জন্য।
এক পর্যায়ে অবশ্য কর্নেল ডগলাস আর মেনকো ডাকাত দলের হাতে ধরা পড়ে। কিন্তু তাদের সর্দার ইন্ডিও ছেড়ে দেয় সে দুজনকে। উদ্দেশ্য ছিলো, পুরো দলের ডাকাতদের তাদের ধরার জন্য লেলিয়ে দিয়ে সে সুযোগে ব্যাংক ডাকাতির অর্থ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া।
এভাবে নানা ঘটনার পরে একেবারে দুর্বল হয়ে যায় ডাকাত দলটি। কর্নেল ডগলাসের হাতে ডুয়েল লড়াইতে খুন হয়ে যায় তাদের সর্দার ইন্ডিও। জানা যায় অনেক বছর আগে ডাকাত ইন্ডিওর নৃসংসতার শিকার হয়েছিলো কর্নেল ডগলাসের বোন। কর্নেল ডগলাস ডাকাতদের হত্যা করার পুরস্কারের সব টাকা দিয়ে দেয় মেনকোকে।
মেনকো যখন সবগুলো ডাকাতের মৃতদেহ নিয়ে পুরস্কারের ডলার হিসাব করছিলো তখন ২২ হাজার ডলারে এসে তার হিসাব মিলে না (যদিও সবগুলো ডাকাতের মূল্য হবার কথা ২৭ হাজার)। তার সন্দেহ হয় ডাকাতদের কেউ একজন তখনো বেচে আছে। সতর্ক হয়ে যায় সে। ঠিক এ সময়েই পেছন থেকে আক্রমণ করে বেঁচে থাকা সেই ডাকাত। কিন্তু সতর্ক হয়ে যাওয়ায় এ ডাকাতকেও খুন করতে সক্ষম হয় মেনকো।

------------
১৯৬৫ সালে মুক্তি পাওয়া এ মুভিটির পরিচালক হচ্ছেন সার্জিও লিওন।
বি.দ্র. মুভিটিতে প্রচুর নৃশংসতা আর খারাপ দৃশ্য থাকায় ছোটদের সামনে না দেখার অনুরোধ রইলো।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১০:২৯
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নেতানিয়াহুও গনহত্যার দায়ে ঘৃণিত নায়ক হিসাবেই ইতিহাসে স্থান করে নিবে

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩৮

গত উইকেন্ডে খোদ ইজরাইলে হাজার হাজার ইজরাইলি জনতা নেতানিয়াহুর সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
দেখুন, https://www.youtube.com/shorts/HlFc6IxFeRA
ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে নেতানিয়াহুর এই হত্যাযজ্ঞ ইজরায়েলকে কতটা নিরাপদ করবে জনসাধারণ আজ সন্দিহান। বরং এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×