somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টানটান উত্তেজনায় দেখলাম "টার্মিনেটর স্যালভেশন"

১৮ ই জুন, ২০০৯ সকাল ৭:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখার মজাই আলাদা। আর সেটা যদি হয় টার্মিনেটরের মতো রোমাঞ্চকর সায়েন্স ফিকশন তাহলেতো কোন কথাই নেই। বাংলাদেশে থাকতে অনেক সময় সিনেমার প্রিমিয়াম শো দেখা হতো। এবার বৃটেনে বসেই সে সুযোগ পেয়ে গেলাম। গত ৩ তারিখে টার্মিনেটর স্যালভেশন সিনেমাটা বৃটেনে মুক্তি পেল। আমরা তিন বন্ধু সেটা দেখার জন্য সকালেই রওনা দিলাম। ভাবছিলাম সিনেমা হলে অনেক ভিড় হবে কিন্তু গিয়ে দেখি তা নয়। এই দেশের যে কোনো সিনেমা হলে বরাবরের মতো একই দৃশ্য -অধিকাংশ সিটই খালি।

টার্মিনেটর সিনেমাটা মূলত একটা সাইন্স ফিকশন। স্কাইনেট নামের কম্পিউটার ডিফেন্স সিস্টেম মানুষকে তার প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করে এবং মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। এ যুদ্ধের প্রথমেই পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ মারা যায় ভয়ঙ্কর পারমাণবিক আক্রমণের শিকার হয়ে। স্কাইনেট বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ও রবোট পাঠিয়ে পৃথিবীর অবশিষ্ট মানুষদের মেরে ফেলার বা বন্দী করার চেষ্টা করতে থাকে। বেঁচে থাকা অবশিষ্ট মানুষেরা স্কাইনেটের বিরুদ্ধে মরণপণ প্রতিরোধ গড়ে তুলে। স্কাইনেটের বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে মানুষের নেতৃত্বে ছিলেন, জন কনর।

জন কনর

সিনেমার শুরুতেই দুর্দান্ত জন কনরের নেতৃত্বে ভয়ঙ্কর রবোটগুলোর সাথে মারামারি আর প্রচণ্ড যুদ্ধের টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়েই সিনেমার কাহিনী এগোতে থাকে। ভয়ঙ্কর মেশিনগুলোর কাছে অতীতে যেমন মানুষ যতোটা অসহায় ছিলো এবার ততোটা নেই। মানুষ অনেকটাই প্রতিরোধ করতে শুরু করেছে। স্কাইনেটের বিরুদ্ধে কয়েকটা আক্রমণও পরিচালনা করা হয় এ পর্বে। এক পর্যায়ে মানুষেরা আবিষ্কার করে এক রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি যা দিয়ে স্কাইনেটের মেশিনগুলোকে বন্ধ করে দেয়া যায়।
এর মধ্যেই কাহিনীতে প্রবেশ হয় আরেকটি রহস্যজনক সুপুরুষ মারকাসের। প্রথমে তার সাথে কাইল রিসের পরিচয় হয়। কিন্তু কাইল রিস স্কাইনেটের হাতে ধরা পড়ে যায়। মারকাস পালিয়ে যায়। পরে মারকাসের সাথে পরিচয় হয় এক নারী পাইলট ব্লেয়ারের। তারা দুজনে জন কনরের ঘাটিতে যাওয়ার সময় একটা ম্যাগনেটিক মাইনে মারকাস আহত হয়। সে সময় দেখা যায়, মারকাস কোনো মানুষ নয়, রবোট ও মানুষের সংমিশ্রন। তবে সে জানায় যে জন কনরকে রক্ষা করতেই সে এসেছে। জন কনর সে কথা বিশ্বাস করে না। সে মারকাসকে বন্দী করে রাখে। কিন্তু সেই নারী পাইলট ব্লেয়ার তাকে মুক্ত করে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। এ সময়েই জন কনর ধান্দায় পড়ে যায় মারকাসকে নিয়ে। কেন মারকাস জন কনরকে রক্ষা করতে চায়?


মারকাস ও ব্লেয়ার

অন্যদিকে জন কনর জানতে পারে, স্কাইনেট তাদের নেতাদের আগামী চার দিনের মধ্যেই মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছে। তালিকায় জন কনরের নাম দ্বিতীয় স্থানে আছে, প্রথম স্থানে আছে তার বাবা কাইল রিসের নাম। স্কাইনেটের ঘাটিতে আক্রমণ চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় মানুষ পক্ষের নেতারা। কিন্তু স্কাইনেটের ঘাটিতে কাইল তখনই আক্রমণ চালাতে চায় না। কারণ স্কাইনেট সেখানে বহু মানুষকে বন্দী করে রেখেছে। আক্রমণ করা হলে তাদের জীবন বিপন্ন হতে পারে। সেখানেই বন্দী অবস্থায় আছে জন কনরের বাবা কাইল রিস। যিনি পরে টাইম মেশিনে করে অতীতে চলে যান (টার্মিনেটর থ্রী-এর কাহিনী অনুযায়ী)। কাইল রিসকে বাঁচানো না গেলে জন কনরের জন্মই হবে না, মানুষ পক্ষ পাবেনা এ সুদক্ষ নেতাকে।

জন কনর ও মারকাস

কাইল রিসকে উদ্ধার করার জন্য জন কনর নিজেই এক দুঃসাহসী অভিযানে স্কাইনেটের ঘাটিতে ঢুকে পড়ে। জন কনর যখন স্কাইনেটের ঘাটিতে তখন মারকাসও সেখানে। মারকাস জানতে পারে স্কাইনেটই মানবিক আবেগ দিয়ে মারকাসকে তৈরি করেছে জন কনরকে তাদের ঘাটিতে নিয়ে আসার জন্য। যে কারনেই জন কনর তখন তাদের ঘাটিতে। কিন্তু মানবিক আবেগ সম্পন্ন মারকাস তখন স্কাইনেটের অবাধ্য হয় এবং জন কনরকে রক্ষা করতে চেষ্টা করে। বাকি অংশটা সিনেমায় দেখলেই ভাল লাগবে।
সিনেমাটা এতো দ্রুত শেষ হয়ে গেল যে বলার মতো না। ভাবছিলাম আগের পর্বগুলোর সঙ্গে এ পর্বটার পার্থক্য কি? কি কারণে এটা আগের মতো মানুষের নজর আকর্ষণে ব্যর্থ হলো। আগের মতো কাহিনীর বৈচিত্রতা নেই, নাকি চরিত্রগুলো আগের মতো আকর্ষণীয় নেই? মনে হলো দ্বিতীয়টাই সঠিক।



তবে সিনেমাটা অনেকের ভাল না লাগলেও আমার খুবই ভাল লেগেছে। শুধু সিনেমা হলের দারুন সাউন্ড সিস্টেম আর ঝকঝকে ছবির জন্যই নয়, কাহিনীর বৈচিত্রতা আর অভিনয়ও দারুন। হল থেকে বাসায় আসার পরেও ব্লগে বসে চিন্তা করছিলাম, দারুন একটা সিনেমা দেখলাম।
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে না পারার কষ্টটা সমালোচনার কোন বিষয়বস্তু নয়

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

গতকালের একটি ভাইরাল খবর হচ্ছে কয়েক মিনিটের জন্য বিসিএস পরীক্ষা দেয়া হলো না ২০ প্রার্থীর !! অনেক প্রার্থীর কান্নাকাটির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান এর নিয়ামানুবর্তিতার জ্ঞান বিতরনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×