somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গার্মেন্টস্ এবং অবাধ যৌনতা

২৪ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা কমবেশি সবাই জানি গার্মেন্টস্ সম্মন্ধে । তবুও একটু বলি........

গার্মেন্টস্ এমন একটি জায়গা যেখানে শ্রমিক পদে চাকুরি করতে কোন শিক্ষা ,অভিজ্ঞতা, বা ঘুষের প্রয়োজন হয় না....। আসলেই চাকুরি মেলে......
সাধুবাদ জানাই এই গার্মেন্টস্ সেক্টরকে .....
বাংলাদেশের লাখো-লাখো বেকার পুরুষ ও মহিলাদের বিনামূল্যে কর্মসংস্থান করে দেবার জন্য ।
সাধুবাদ জানাই ঐ সকল বিদেশী বায়ার বা ক্রেতাদের যারা বাংলাদেশে বেশি-বেশি কাজ নিয়ে আসেন.........

বিদেশী বায়ারদের প্রথম পছন্দ বাংলাদেশ । কারণ, পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশেই সবচেয়ে সস্তায় শ্রম বিক্রি হয় । বিদেশীরা আমাদের দারিদ্রতাকে কাজে লাগিয়ে আমাদেরকে পোশাকশিল্পের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ......

তারাই গার্মেন্টস্ এ আসেন যারা জীবন সংকটের অন্তিমকালে পৌছান ।
সেই অন্তিমকাল হতে পারে দারিদ্রতা,বেকারত্ব, পারিবারিক সমস্যা,ইত্যাদি ।

আর দেশের গার্মেন্টস্ এর কর্মকর্তা, কর্মচারীরা অসহায় মেয়ে বা মহিলাদের সেই দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে তাদেরকে চরম ভোগের বস্তু বানিয়েছেন... অবাধে যৌনাচার করছেন .......। বেশিরভাগ মেয়েরা পরিস্থিতির শিকার হয়ে এই কাজগুলি করেন ।
কোন সুন্দর মেয়ে আসলেই, তাকে নিয়ে ভাগবাটোয়ারা শুরু হয় । কে কার আগে ভোগ করবে এখানে এই প্রতিযোগিতা চলে ।

ভূক্তভোগীদের অনেকেই মুখ খোলেন না, চাকরিচ্যুত হওয়ার ভয়ে বা মানসস্মানের ভয়ে....।

কে বিচার করবে ? , কারণ বড় বড় কর্তারাই তো মূল আসামি । যে সকল মেয়েরা দেখতে সুন্দর, সুগঠিত দেহ , ঐসব মেয়েদের জি.এম কিংবা বড়-বড় অফিসারদের ভোগ-বিলাসের জন্য পূর্বেই ঠিক করে রাখা হয় ।

অবশ্য এর মধ্যে, অনেক লোভী মেয়ে আছেন যারা সুবিধা লাভ বা পদোন্নতির আশায় বসের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন ।

এখানেও, অনেক ভালো ছেলে-মেয়ে আসেন । পরিস্থিতিতে তারা খারাপ হতে বাধ্য হন ।

আমি বাংলাদেশের একটি নাম করা পোশাক কারখানায় কাজ করি ।
আমি দেখেছি, অনেক ১৬, ১৭ বছর বয়সী মেয়ে কাজ করছে এখানে। যে বয়সটায় পড়াশোনা,খেলাধুলা, কিংবা পরিবারের সাথে আনন্দ করে কাটানোর কথা ; অথচ সেই বয়সে তারা ভাতের জন্য খেটে মরছে । একসময় তারা নিজ ইচ্ছামত বিয়ে করে, পরে ছেলেটার প্রয়োজন মিটে গেলে, মেয়েটাকে ছেড়ে দেয় । আর এখান থেকেই মেয়েটার এলোমেলো ও ছন্নছাড়া জীবন শুরু হয় ।

যেন, জীবন সম্মন্ধে বুঝে ওঠার আগেই সবকিছু শেষ ।

স্বামীহারা একটি মেয়েকে যে কি পরিমান লাঞ্ছনা সইতে হয় তা বলে বোঝানো কঠিন । কারণ তখন তার সুযোগ সবাই নিতে চায় । লোকজনের অত্যাচারে যখন সে আরেকটি বিয়ে করে, প্রতিবেশিরা তখন তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলে । অথচ ছেলেরা একাধিক বিয়ে করে সমাজে পুরুষালী ভাবটা আরও বেশি করে জাহির করে ।

এতো বললাম, অল্প বয়সী মেয়েদের কথা । মধ্য বয়সী মহিলারা যে জীবনের কয়টা ঝড় পাড়ি দেন তা বলা কঠিন ।অনেক-অনেক মহিলা আছেন যারা যুগের পর যুগ স্বামী -সন্তান ছাড়াই কাটিয়ে দেন । বাঙালি মেয়েরা যে কতটা ধৈর্যশীল, মনের দিক থেকে কতটা শক্ত ; এদের না দেখলে বোঝা যাবে না ।


গার্মেন্টস্ এর ছেলেরা হল, প্রজাপতি। এরা ফুলে ফুলে গন্ধ শুকে বেড়ায়। এক ফুল ভোগ করা হলে আরেক ফুলে উড়ান দেয় । এখানে মেয়েদের জীবন নষ্ট করে ছেলেরাই ।
তবে মেয়েদের দোষটাও ছোট করা দেখা যায় না ।

কার সাথে কে প্রেম করে, কার সাথে কে রাত্রিযাপন করে তার কোন হিসাব নেই ।
এখানে ছেলে-মেয়েদের অবাধ প্রেম ও অবাধ মেলামেশা । এদের সমস্যাগুলো দেখার কেউ নেই । যেন; প্রোডাকশন-ই মুখ্য বিষয় ।

অনেক অফিসার বা কর্মকর্তা আছেন, যারা মেয়েলি কেলেঙ্কারি করেও চাকরিচ্যুত হন না । উল্টা এদের চাকুরি আরও পাকাপোক্ত হয় বা দাপটের সাথে ঘুরে বেড়ান । আর ভূক্তভোগী মেয়েটার চাকরি নড়বড় করে বা কৌশলে সময়-সুযোগ বুঝে তাকে বের করে দেয়া হয় ।

আমাদের এখানে প্রায় ৪৫ হাজার লোক কাজ করে এবং প্রতি ১০০ নারীর মধ্যে......
> ৯৫ জনই দাম্পত্য জীবনে অসুখী
> ৩০ জনের বিয়ের পরে স্বামী চলে যায়
> ২০ জন মেয়ে একাধিক বিয়ে করে

প্রতি ১০০ ছেলের মধ্যে......
> ৮০ জনই বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক করে
> ৪০ জন একাধিক বিয়ে করে

আপনি যদি গার্মেন্টস্ এলাকা যেমন আশুলিয়া কিংবা কোনাবাড়ির আশেপাশের কোন হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যান,
তাহলে দেখবেন মহিলা রোগীদের বেশিরভাগই সেখানে যান গর্ভপাত করাতে, বা গর্ভপাতের পরে
জরায়ু ওয়াশ করাতে ।

সরকারের চোখে এইগুলো কি মানবতার বিপর্যয় নয় ???? নাকি শুধু ৭১ রেই মানবতার বিপর্যয় হয়েছিল ??
যত দিন যাচ্ছে, তত শিক্ষিত নারী-পুরুষদের বেকারত্ব বাড়ছে, ফলে আরও বেশি লোকজন এই গার্মেন্টস সেক্টরে ঢুকছে এবং অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে ।

গার্মেন্টস্ এর এই দুর্দশা শুধু সরকারের কারনে। এই অবহেলিত গোষ্ঠীকে দেখার মত কেউ নেই ।

দেশের বড়-বড় বিজ্ঞ লোকেরা নানান বিষয়ে কলাম লিখে পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতা ভরে ফেলেন । টেলিভিশনের টকশোতে তর্ক-বিতর্ক করে আলোচ্য বিষয়ের গুষ্ঠি উদ্ধার করেন ।
অথচ কাউরেও দেখলাম না, এই গার্মেন্টস্ এর নিপীড়িত লোকদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কথা বলতে ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীমহোদয়, এবং মানবাধিকার কর্মীদের বলব, চেয়ারে বসে বড়-বড় ভাষণ না দিয়ে গার্মেন্টস্ এলাকায় আসুন, সেখানকার পরিবেশ দেখুন ।

শুধু যুদ্ধাপরাধীদের ফাসি দেওয়া, আর জামাত-বিএনপির কর্মী আটক করাই কি আপনাদের কাজ ?

BGMEA র কথা কি বলব ? একটা অকার্যকর সংগঠন । এরা যদি কোন কাজ করত তাহলে রানা প্লাজা ধ্বসে মানুষ মরত না , কিংবা তাজরীনে ভয়াভহ অগ্নিকাণ্ড হত না ।

পোশাকশিল্পে কঠোর নীতিমালা করলে হাজারে ছেলে-মেয়ের জীবন বাচানো যাবে ।

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×