লালঘুড়ি
তালপাতায় মুখরিত ঘরে ঝুলে থাকে স্তন্যপায়ি মন
বাবাকে জেনেছি পিতা- মাকে শৈশব
মনোরাজ্যের ভাসান তোলা মন্দ্রিত খেয়াল উড়িয়ে
দিয়ে ঘুড়ির মতো
দূরের ঠিকানায় বসে থাকে জাদুকরÑ
একে একে তাবুতে ফিরে যাওয়া সকল মৃগ
নির্বাসীত মোহনার মাঠে- বাজুক ইস্রাফিলের বাঁশী
আমি তখন আকাশে উড়াই কার্পাস তুলা হৃদয়!
সংসার
প্রত্যহ জমাচ্ছি লোভ
একদিন বাজারে ছারব
একদিন তরপুনে তোলা সকল সম্পদ
ভাসাবো নিরুদ্দেশ
মাধুকরি মোহিনি আমার-
শীতের সকালে, বর্ষার দুপুরে
আর আলো আধাররি রাতে
কেমন তোমার? ক্যামন তোমার শয্যার রং
তোমার খাঁচায় কি আলুঝালো স্বপ্নের ছবি ভাসে?
যাবতীয় আনন্দের সংবাদের লোভ তুমি কোথায় রাখো?
আমিতো গড়েছি পাহাড় তুলনা সমান
শিমুল তুলার বালিশ আহা!
যেন খাঁচা মাংসময়
ঝড়ে পড়–ক চন্দ্রাহত সৌরা
নাবিকের হাতে আরও দূর দীপান্তরের দিকে
দৃষ্টিপাত সময়ই খুলে দেবে নির্ভরতা
পুত্র’র কান্নায় আমিতো মহিমাময়
পিতা, পিতা, বলো শোন-
আ তে আলোকিত আকাশ
‘আমাদের আকাশ আলোকিত’ যারা বলে তারা ‘আলো’ বিষয়টা বুঝে না। আর আমরা অযথা আমাদের আকাশ আলোকিত বলে হয়রান হই।
আমাদের পৃথিবী ‘তাঁদের’ মতো! তাঁরা খুব ভালো আলো খুঁজতে পারে। হ্যারিকেন জ্বালিয়ে তাঁরা আলো খুঁজেন। হ্যারিকেনের ছাদের ছায়ায় আমাদের আকাশ আরো অন্ধকার হয়।
দুঃখিত, বলতে ভুলে গেছি বাতির নিচে অন্ধকার থাকে।
গল্প
চা খাবেন? তার আগে চলুন একটা গল্প শোনা যাক। গল্পটা বলবেন যে কথক যে কথক তিনি অবশ্য ভালো গল্প বলেন না! তথাপি আমাদের গল্প শোনার আগ্রহের কমতি নেই। আমরা একটা গল্প শোনব একজন কথকের কাছ থেকে। তিনি গল্প শুরু করবার আগে একটু প্রস্তুত হয়ে নিলো। আমরা আবারও ভাবলাম গল্প শেষ করেই চা খাবো। গল্পের সময়মান সম্পর্কে আমাদের অসচ্ছতা আছে। কেবল বুঝতে পারছি কথক আমাদের যে গল্পটা শোনাবে সে গল্পটা আমাদেরই। আমরা আমাদের কাঙ্খিত গল্পের ভেতর নিজেদের চরিত্র কল্পনা করতে লাগলাম। কল্পনায় আমাদের নিজেদের ছবির চরিত্র কল্পনা করে আমরা শিহরিত হতে শুরু করলাম। আমাদের সামনে ভেসে উঠল একজন মার্ক্স, একজন আইনস্টাইন, একজন রবীন্দ্রনাথ, একজন পিকাসো, একজন ভাসানী ও একজন সার্বজনিন বেকারের চিত্র। তারা সকলেই নিজস্ব বলয়ের ভেতর শূন্যতাবোধে ভুগছিলো। আমরা গল্পটা শুরুর পূর্বেই সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি আমাদের সবাইকে চালিত করছেন যে কথক তিনি সাাৎ বুশের রূপায়ন। আমাদের সামনে কথক তার গল্পের শুরু ও শেষ করলো এক বাক্যে- ‘ধামরা এক একজন গল্পের ছায়ায় গল্প শোনার পরও নিজেদের হারিয়ে ফেলি।’
দেয়াল
নির্ণিয়মান সত্ত্বা ও আমাদের মুখাবয়ব
উচ্ছ্বল হাঁসের মতো জ্বলে উঠলে স্বব্ধতায়
এুখরিত সমস্ত বাঁশঝাড় পাতা উদ্দাম
ডানামেলে তুলে ধরে কারুকার্যের সামিয়ানা
সর্ন্তপনে তোলা বোবা ভাষা
নিজস্ব অর্গানের পিছে- দেখো
নতুন সূর্যোদয় রঙীন নাওয়ে- আরো কেবল
ভূবনের আমিন সর্দার তার খতিয়ানে সমস্ত
দাগ মুছে ফেলে কোন এক নতুন ফুলের
কল কাকলী এঁকে ফোটায় আশ্চর্য দীপাবলি
ফুলের বাগানে রাখা মধুÑ
পান কর কণ্ঠ তৃপ্ত-
আগুনের হল্কা যেন তারই পেছনে লেগে থাকে
যেনবা কাঠাল কোষ; নিজেকে ফোটাই
প্রতিটি সাি দেয়ালে দেয়ালে আর
প্রতিচ্ছবি দেখি অসম্পূর্ণ এক সঙ্গমÑ
ফিঙ্গে পাখি, চড়–ই পাখি আমাকে ডাকো
সকল শালিক পাখির নিমন্ত্রনে
খুঁজা সময়ের পাতায় দেখো দেয়ালে আঁকা
সঙ্গমহীনার মুখ।
শো-পিস
‘বোবা সময় ভালোবাসে কেবল উজার...’
বাহকের হাতে তুলে দিলে প্রজাপতি ঘুড়ি
কুহক বিভ্রমে খেলা করে বসন্ত বাজার
চেনাসুর আর
রঙীন ফানুস ভাসেÑ আকাশের পরতে একা;
প্রিয় মনুষ্য বিকেল, ঐরাবত সমর্পণ দেখি
একা কোন উঠানের খেলাঘরে- বিভোর দুপুরে
তারওতো কোন আকাশের কোনে আছে
অনন্তময়ীর ছায়া
যে গৃহের ভেতর তুলতুলে বিছানার শয্যা
সেই গালিচার উষ্ণ উপাদান আমাকে ফেরায়
স্বত্ত্বার কাকগৃহ থেকে- মোমের
আলোয় যে জানালা আলোকিত হয়
তার নীচে তুলে ধরে সিলেবাস পাঠ?
সমস্ত বুননের উচ্ছ্বাসকে ধরে রাখার আশায়
আমিতো তাহার নীল সময়, বুনো সংযম আর
কার্পাস মেঘ পকেটে পুরি
জমা করে করে ভেঙে শূণ্য করি মাটি ব্যাংক
ঘাতি-ঘোড়া-আর সার্কাসের তাবুর সুর
হাতে হাতে ফিরে এলেও উড়োচিঠির আশায়
বসে থাকা যুবকের সমস্ত সম্পদ
আমার পকেটে দেখ সাজাই কতো চমৎকার।
রাফ সিরিজ
৬.বড় অসময়ে এ শব্দের বানÑ
আমনের সুঘ্রানের মতো উদাস ও সতেজ করে তোলে;
এইভাবে আরো আরো দিনের প্রতীায় না থেকে
আমি একটা মূর্খ আকাঠে পরিণত হতে চাই না;
যেমন একা পড়ে থাকে মসজিদের মিনারথÑ
ধানের ঘ্রাণ ও আত্ম-তারা’য় যেখানে পতিত ভূমি
আবাদী হয়েছে কোন এক নীলাভ আনন্দের তোড়ে
আমি তার কি দেব বর্ণনা?
কি হতে পারে তার স্বপ্নাশ্রয়ি গান?
কেবল আধো আধো বুলে সে গান যদি বা
ফিরে না আসে তবে কি আমরা ভুলে যাব সেই সুর?
জানি গোলাপের তাজা জলে ভিজে আর
শিশিরের স্নিগ্ধতা মেখে বসে থাকবে কোমল অভিমান
আমি তার মুছে দেব তৃষ্ণাÑ
তারপর দীর্ঘ জীবনের অবহেলা মুছে আমরা
পরস্পর দাড়িয়ে যাব আবর্তনের কালো বৃরে ছায়ায়
সমস্ত বৃ আর বহমান হাওয়া আমাকে বলে প্রকৃত সত্য
অনাগত মুনিয়ার জনক ও প্রতিপালক আমি নই
নিঃশঙ্ক চিত্তে সে জননী তুমি
৭.গত জনমে আমি মেঘ ছিলাম
জেনেছিলাম আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে চলে প্রকৃত হাউয়া
আমি শূন্যের ভিতর হাউয়া আর অশ্র“ত আত্মার
খেলা দেখে বাহবা দিয়েছি;
আমি জেনেছি আত্মা আর হাউয়ার কিংবদন্তিতুল্য ইতিহাস;
জেনেছিলাম মৃত্যুর পর কিভাবে উড়ে যায় প্রাচীন প্রজাপতি;
এবং এও জেনেছি মেঘে মেঘেই নাকি বেলা বেড়ে যায়;
দেখেছি গাঙচিল তার ডানায় বেধে নিয়ে যায় স্বরস্বতির পবিত্রতা-
আমি কেবলই মেঘমল্লার জাদু দেখে দেখে
জাদুকর পাখায় উড়ে গিয়েছি সেই সব প্রান্তরময় গ্রহে
সেখানে নির্ণিয়মান উৎসের কোন এক উদগিরক
আমাকে বলেছে সেও মেঘবতি,
আশ্চর্য সব ফুলের সৌন্দর্য তার ঠোঁটের কোনে,
বড়্ই এর কচি পাতার মতো তার মুখ-
আমিতো ভুলে গিয়েছি কোন এক অপ্রাপ্তির সংবাদে
আমারই নিজস্ব ছায়া এরকম এক
ফলবতি বৃরে রূপধারণ করে বলে উঠবে
সে নিজেও মেঘ এবং আমি তাদেরই একজন।
৮.স্তব্ধতার একটা সীমা থাকে;
আরো কিছু প্রাচীন কলেবরের থাকে নীরবতা ভাঙার সঙ্গীত,
যদি কোন মেঘপুঞ্জ স্বতন্ত্র বৃষ্টির ধারা নিয়ে ভেজায় মেঠো পথ
তবে তাকে আমরা নীরবতা ভাঙার আশ্চর্য মতা বলে মেনে নিতে পারিÑ
উত্তপ্ত রাজপথের উন্মুক্ত রোদের আলোয়
যারা ক্রমে ক্রমে এক একটা স্বপ্নের বৃত্তান্ত আঁকে
আমি কেবল সেই সব রঙিন পাখির সুরে একটা
মোহনীয় পৃথিবীর ছায়া দেখতে পাই,
যদিও ছায়া কেবলই একটা ছায়া- তারপরও আমি দেখি
বাঁশি হাতে বসে কোন এক হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা
সকল রোগাক্রান্ত গর্ভবতিদের বের করে দেয় আমাদের নগর থেকে
আমাদের উত্তর প্রজন্ম বুক ভরে নিঃশ্বাস নিক
অতঃপর তোমার মৃত্যুতে যারা নীরব থাকে তাদের
মনে হয় প্রকৃত রোগাক্রান্ত গর্ভবতি।
৯.প্রিয় সুদুরের মেঘ, বুদ্ধির খেলায় তুমি কোথায়?
তোমাকে রুদ্দুর ভেবে আমাদের পাড়ায়
উৎসব উৎসব ভাব ডেকে যায়-
পরতে পরতে সাদা বরফ খণ্ড'র কৌটো
লাবণ্যের পরাভূত আকাশে সাজালে
অস্পৃশ্য টর্চের আলো ফেলে ফেলে আগাও তুমি?
তুমি কি জানো এখানে মঞ্চ হয়েছে চমৎকার!
সৃজনের মুখরতায় আলোকজ্জ্বল রঙ্গমঞ্চ
তামাকেই অভ্যর্থনার জন্য সমগ্র অঞ্চলের
মানবের সারি সারি সহকারী সকলেই বর্তমান
নিরিহ দুপুরের নির্জনতা ভেঙ্গে ডেকে উঠা
পাতিকাকেরই কি নির্মোহ সে আমন্ত্রণ
ক্যামনে ধরে রাখে ক্যালেন্ডারের পাতা?
যৌবনের তাপ প্রত্যাশার ফানুসে উড়ায়?
ছুয়ে যায় কি আলেয়ার মরিচিকা?
তবে সকল পথিক কোন দিন এইখানে
থেমে থাকলে দেখে যাবে আমাদের
লীলাকীর্ত্তন।
ঘুড়ি উড়ানো বালকের ছিড়ে যাওয়া সুতোয়
তুমি ছুঁয়ে দিলে সম্পন্ন হয় চতুর্ভূজÑ
আহা মেঘ, ভেসে বেড়ানো পদার্থ!
১০.আস্তরণের ছোঁয়ায় পেলব জোছনা কোথায়?
অন্তরিে স্বপ্নের নোনা জল আর
হলুদ বৃরে পাতা সারি সারি ...
মহাকাল মুনির তন্ত্রের খেলায় কেন তবে
ঘূর্ণায়মান শব্দের প্রতিলিপি তুলে
কোন সন্ধ্যায় একা একা
সমস্ত ঝাউবনের নীরবতাকে উস্কে দিয়ে
অসহায় সমস্ত স্বপ্নের রঙের মতো
আমার কেন খুঁজা হয় ডানাহীন উড়া?
সেই কালে মৃদুমৃদু শব্দ কম্পনময় হয়ে
লুটেরা বাণিজ্যের সম্ভার নিয়ে এসেছে
তোমাদের নীরিহ চাকুর বোর্ডে।
মাত্রই একখানা গল্প বললো সে
ডাকলো আরো কেবল ইশরায়,
অনেক মৃত্যুর পর সমস্ত সৌন্দর্যমাখা
বোধিবৃরে ডালে যে পাখি সুর তোলে
তোমাকে ছুঁয়ে দিলে নিঃশ্বাস তার প্রকম্পিত হয়।
সারাবেলা সমাপ্তির পিছে ছুটে ছুটে
যে বনহংস ভুলে যায় মেঠো স্বাদের রামায়নÑ
দিঘীকে স্বচ্ছ মনে হলে তবুও
দ্বিবীধ কোলাহলের সালতামামি এগিয়ে এলে
বিন্দু বিন্দু ঝড়ে পড়া কুসুম জল
সমাপ্তির পথে হাঁটে,
আগুন গোলাপ পাপড়ি মেলে তোমাকে কিনে নিলে
সমস্ত বাধনের রেখাটাকে টানি সমাপ্ত।
তুমি যেন ভুলো আকাশ
অথবা সময় সঙ্গমের মহাকালÑ
সুসম বৃরে নিচে যদি পেয়ে যাই
সরোবর সম্ভব তৃপ্ততা- তবে কেন খুঁজে নেব
ইথারে ভেসে আসা শব্দ তরঙ্গ?
আরো আরো পলেস্তারার মতো খসে যাবে
সময়ের পূর্ণ আবরণ- আর বণিকের প্রাপ্তি সকল
মিলে গেলে সকল চিহ্ন
কেবলি তার প্রাপ্তির খাতায়
পড়ে থাকে আদীম সংলাপ...

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





