somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু কথা, কিছু গল্প... এবং গল্প

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১.
"কিছু করার নেই মা। ওরা যেহেতু জানে আমি তাগোর বশ্যতা স্বীকার করিনা ফলে আমার মতোই দুইটা ক্যারেক্টার হুবহু আমি ই যেন, তৈরি করে নিয়েছে। আর আমাকেই না, শুনেছি যারাই তাগোর বশ্যতা মেনে নেয়নি সবারই এমন ক্লোনিং তৈরি করে নিবে, নিচ্ছে, যাতে সব চরিত্রগুলোকে ইচ্ছে মতো ব্যবহার করতে পারবে।-- কথাগুলো তিনু খুব স্বাভাবিক ভঙিতে বললেও তার মা কাঁপতেছে ভয়ে। ভয় যে মায়ের সামনে বসা তিনুকেও পেতে হচ্ছে। কিন্তু মা'কে কিছু টিপস আর স্থির সাহস দেয়ার লাইগাই কথাগুলো প্রস্তুতি নিয়েই বলছে যেন। রাবেয়া যখন ছেলে দুটোর কথা বলতেছিল তখন তিনু যেন ভয়ে কল্পনা করছিল যা সেটাই তার মাকে সাহস নিয়া রসিকতার স্বরে বলল --' মা, তাইলে তো একবার ওদের লগে দেখা হওয়া উচিত না সামনাসামনি, দেখতাম আমারে কেমন দেখায়' বলেই ভয় কমানোর একটা নকল হাসি হেসে খাবার প্লেটে হাত ধুইলো তিনু।"

উপরের অংশটুকু মনিরুল মিরাজের 'ক্লোনিং' গল্প থেকে নেয়া হয়েছে।


২.
"ছেলেরা ঘুমিয়ে পরেছে, ওসমান সাহেব এখনো ঘরে ফিরেননি। নীলা খাবার টেবিলে বসে আছে অনেক সময় ধরেই। কিছুক্ষণ টিভি দেখেছিল, খবরের চ্যানেলগুলো দেখলে তার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। তাই টিভি অফ করে চুপ করে বসে আছে খাবার টেবিলে। ওসমান সাহেব সাধারণত এত দেরী করেননা। মাঝে মাঝে ড্রিংক্স করে বাসায় ফিরলে এমন দেরী হত। কিন্তু এখনতো ড্রিংক্স করার কথা না, সাধারণত নীলার সাথে রাগারাগি না হলে কিংবা কোন মানুষিক টানাপোড়নে না থাকলে ড্রিংক্স করেননা তিনি। তবে কি দুপুরে একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলছে নীলা! হয়ত হ্যা, হয়ত না। নীলা ভাবছে, সত্যিইতো মানুষটা কত কষ্ট করে আমাদের তিনটি প্রানের জন্যে। বিশ হাজার টাকায় কি আসলেই কিছু হয় ঢাকা শহরে? বাসা ভাড়া দিতে দিতে তেল ফুরিয়ে যেত প্রথম দিকে, এখন বড় একটি ফ্লাট নীলার নামে। ভাল-মন্দ খাওয়া হত সপ্তাহে একবার-দুবার, এখন সন্তানরা প্রতিদিনই পুষ্টিকর খাদ্য পায়। যা সন্তানদের বয়সী ৯০% বাচ্চারা। নিজেকে দেশের ফার্ষ্ট ক্লাস সিটিজেন হিসেবে প্রেজেন্ট করার জন্যে কত আয়োজন, এসব কিছু কি বিশ হাজার টাকায় হয়? ঢাকায় টাকা উড়ে, সত্যিই উড়ে, তবে এই শহরের অধিবাসীরা টাকা ধরতে পারেনা, উড়ে যায়। আর ওসমানরা টাকা ধরতেও পারে, উড়াতেও পারে।"

সালাহ উদ্দিন শুভর লেখা 'নজরানা' গল্প থেকে উপরের অংশটুকু নেয়া হয়েছে।

৩.
"সাধারণত কোনো পরিবারেই প্রেমের অনুমতি দেয় না। বিয়ের অনুমতি দেয়। তাও হোমড়াচোমড়া জামাই হতে হবে। যার হালকা ভূড়ি আর টাক থাকবে। প্রেমের ব্যাপারে সবুজ সংকেত পাওয়াতেই বোধহয় রেনু কখনো প্রেম করতে পারে নি। নিষেধাজ্ঞা থাকলে হয়তো ওর এতোদিনে গোটাআষ্টেক প্রেম হয়ে যেতো। এমন মহান বাবা কেনো যে এন্ড্রিন খেয়ে মরতে গেল সে ব্যাপারে রেনু কিছুই বুঝতে পারছে না। পৃথিবীর যাবতীয় ভালবাসা যেই মানুষটাকে দিয়ে রেখেছিল তিনি আজ অক্সিজেনহীন একটা দেহে পরিণত হয়েছেন। ওর মা কিছু জানতে পারে এর নেপথ্যের কাহিনীর ব্যাপারে। তাই মাথার ভেতরে গোছানো কয়েকটা প্রশ্নবাণ নিয়ে মায়ের রুমে ঢুকবে ঢুকবে ভাব এমন সময় শুনতে পেল ওর মাও ফিসফিস করে ডাকছে। “রেনু, রেনু! কই তুই? এদিকে আয়। আমার পানের কৌটাটা আবার খুঁজে পাচ্ছি না। দেখতো কোথায় রেখেছি!”

মুয়াজ হোসেনের 'প্রতিস্থাপন' গল্পের কিছু অংশ উপরে তুলে ধরা হল।

এরকম ২৬টি গল্প নিয়ে বইমেলায় আসছে গল্প সংকলন 'এবং গল্প'। আমার নিজের সম্পাদনায় এ বইটি বের হচ্ছে নবসাহিত্য প্রকাশনী থেকে। ১৭৬ পৃষ্ঠার এ বইটির গায়ের মূল্য ২৫০টাকা। বইটি ৬২৪ নং স্টলে পাওয়া যাচ্ছে।

আশা করি পাঠকদের মন ছুয়ে যেতে পারবে গল্পগুলো। কারন যথেষ্ট উপাদান রয়েছে বইটিতে। সবাইকে আমন্ত্রণ জানালাম 'এবং গল্পের' স্বাদ নেয়ার জন্যে।

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:২২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×