somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাহাঙ্গীর আলম আকাশ, আনিসুজ্জামান উজ্জ্বল ও রাজশাহীর প্রিয় সাংবাদিকেরা: রাবির ইতিহাস আর কতদিন আড়ালে রাখবেন?

০৭ ই জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৪:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাবির ৫৫ বছর নিয়ে সাংবাদিক আকাশ একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন।

আকাশ সাহেব তার লেখায় রাবির দুজন অধ্যাপক অর্থনীতির মোহাম্মদ ইউনুস ও ভূতত্ব ও খনিবিদ্যার ড. তাহের হত্যাকান্ডের সাথে শিবিরের সংশ্লিষ্টতার কথা এমন দৃঢ়তার সাথে বলেছেন যে মনে হচ্ছে হত্যাকান্ডের সময় তিনি নিজেই উপস্থিত ছিলেন।

মজার ব্যাপার হলো এই দুজন শিক্ষক হত্যাকান্ডের পর আকাশ সাহেবরা জামাত শিবিরের দিকে তাদের আঙুল নির্দেশ করলেও আদালতের মাধ্যমে শিবিরের সবাই খালাস পেয়ে যায়। জেএমবি যখন মোহাম্মদ ইউনুস স্যার হত্যাকান্ডের দায় দায়িত্ব স্বীকার করে, পুলিশ যখন প্রফেসর ইউনুস হত্যাকান্ডের দায়ে জামাত শিবিরের পরিবর্তে জেএমবির নামে চার্জশিট দেয় তখন আকাশের মতো সাংবাদিকদের মুখে চুনকালি পড়ে। ড. তাহের হত্যা মামলা থেকেও যখন সালেহী খালাস পায়, তখনও কিছু সাংবাদিক লজ্জায় মুখ ঢাকে।

আকাশ, উজ্জ্বল আপনাদের বলি। শিবিরের বিরুদ্ধে প্রতিটি অভিযোগই পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। পরে সবার কাছে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে শিবির ষড়যন্ত্রের শিকার। বড় কষ্ট হয় আপনাদের একপেশে নীতি দেখে।

শিবির ছাত্রছাত্রীদের মেধা বিকাশের জন্য, ছাত্রছাত্রীদেরকে প্রো বাংলাদেশী এবং প্রো হিউম্যন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কিছু নিয়মিত কর্মসূচি পালন করে থাকে। এর মধ্যে আছে ট্যালেন্ট সার্চ, কৃতি সংবর্ধনা, ডিবেট কম্পিটিশন, বিসিএস কোচিং, ইংরেজি শেখার আসর, বিজ্ঞান মেলা, এ প্লাস সংবর্ধনা, বৃক্ষ রোপন অভিযান, ব্লাড গ্রুপিং, রক্ত দান কর্মসূচী, ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতা ইত্যাদি। আপনাদের লেখায় সেসব কথা মোটেই উঠে আসে না।

যেহেতু অন্য কোন দলের কর্মীরা এগুলো করে না তাই ইচ্ছে করেই আপনারা শিবিরের এই পজিটিভ কাজগুলো চেপে যান। এমনকি শিবিরের বিরুদ্ধে করা রিপোর্টের প্রতিবাদও আপনারা ব্ল্যাক আউট করে দেন।

অন্য ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ যখন হলের ডাইনিংয়ে বাকী খেয়ে টাকা দেয় না, ফেন্সিডিলের বোতলসহ ধরা পড়ে, সাধারণ ছাত্রদের মারধোর করে, ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে, অথবা নিজেদের মধ্যে অর্ন্তকোন্দলে প্রকাশ্যে অস্ত্র ব্যবহার করে, অথবা ক্যাম্পাসের কর্তব্যরত পুলিশকে তাদেরই লাঠি কেড়ে নিয়ে পেটায় তখন বুঝি একটুও মানবতাবিরোধী কাজ হয় না। আপনাদের লেখায় কেন সেসব কথা উঠে আসে না?

শুনুন অকাশ, উজ্জ্বল একটা কথা আপনাদের বলি, আপনারা বয়সে নবীন। রাবির হলের সিটের ইতিহাসের হয়তো অনেকটাই আপনাদের অজানা। ৮০'র দশকে রাবির একজন সাধারণ ছাত্র জাসদ-মৈত্রি করবে না আর হলে উঠবে এমনটা ছিল কল্পনা মাত্র। তখনকার ছাত্রনেতারা ত্রি সিটেড বা ফোর সিটেড রুমে ১ বা ২ জন করে থাকতো। এমনকি হলের প্রভোস্ট ছাত্র নেতাদের ডেকে ডেকে সিট দিতে চাইতো, তবু তারা সিট করতো না। কারণ তালিকাভুক্ত হয়ে হলে থাকলে তো মাসে মাসে সিট ভাড়া গুনতে হবে। এমনিতেই যেখানে হলে থাকতে পারছে, সেখানে তালিকাভুক্ত হয়ে লাভ কী। সে সময় সাধারণ ছাত্ররা হলে উঠতেই চাইতো না। নারী অস্ত্র ও মাদকের সেই নরকে গিয়ে নিজের মূল্যবান প্রাণ হারাতে কেই-ই বা চায়! তখন রাবির ছাত্রীদেরকে ছেলেদের হলে এসে বাধ্যতামূলকভাবে রাত কাটাতে হতো। সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলোর কথা কেন আপনাদের পত্রিকায় তুলে ধরেন না ?

আজ এটা আর আড়াল করার কোনই উপায় নেই যে ক্যম্পাসে শিবির আছে বলেই সাধারণ ছাত্ররা নিরাপদে রাত্রি যাপণ করতে পারে। চাঁদা দিয়ে নিরাপত্তার গ্যারান্টি কিনতে হয় না। ৪ বছরের অনার্স ১২ বছরে শেষ করার দুর্ভোগ পোহাতে হয় না। ক্যাম্পাসের দোকানদার, ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তাও শিবিরই দিয়েছে।

ঢাবিতে ও জাবিতে এখনও সাধারণ ছাত্রদেরকে বাধ্য হয়ে ক্ষমতাসীনদের মিছিলে যেতে হয়। কই রাবি, চবি, ইবিতে তো এধরনের ঘটনার নজির নেই।

আপনারা সাংবাদিক মানুষ। একটু চোখ তুলে ইতিহাসের দিকে তাকান। তাহলেই অতীতের সেই সময়ের সাথে বর্তমানের পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন।

আমি বলছি না শিবিরের সবাই ফেরেস্তা। কিন্তু রাবি ক্যাম্পাসে অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় বর্তমানে সাধারণ ছাত্রদের অধিকার বেশি সংরক্ষিত হয়, এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৪:৩১
৩৪টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×