একটু এদিক সেদিক হলেই কেউ একজন বকছে, ইচ্ছেমত গালি দিচ্ছে... শুনতে খারাপ লাগে না রে...
অনেকজনের দরকার নেই, সেই কেউ একজনটার থাকা দরকার...
আমি স্পষ্ট টের পাই কেউ একজন ভাবছে আমাকে নিয়ে...
জ্বর হলেই সে আদুরে সেবা করে...
আলতো করে কপালে হাত বুলিয়ে দেয় ,নাকের সর্দি নিজের টি-শার্টে মুছে দেয়
আর সমান তালে বকে চলে- কত জ্বালাবি আমাকে? মেরে ফেলবি নাকি এভাবে জ্বালিয়ে হু...?
কথা শুনিস না কেন? কেন এমন করিস... !
আহ্ তার সেই উৎকণ্ঠা, ভাবনা মনে প্রশান্তি এনে দেয়...
আমি যখন হাপুশুপুস করে কাঁদি সেই একজনটা বুকে টেনে নেয়- আমাকে কাঁদতে দেয়...
আর বলে চলে-বাচ্চাদের মত করে কাঁদছিস কেন রে হারামী? কিন্তু কান্না থামায় না...
শেষে যখন কাঁদতে কাঁদতে আমি হাঁপিয়ে যাই, চোখের কাজল লেপ্টে যায় সেই একজনটা বলে চলে-
অই দেখ, চেহারাটা একটু আয়নায় দেখ তো, কেমন পেত্নীর মত হয়ে গেছিস...আমার সুন্দলী বউটা...
বুকের ভেতরের হাহাকারটা তখন ভয়ঙ্কর ভালোলাগায় ভরে যায়...
সেই একজনটা তখন বলে চলে- আয় তোকে বাচ্চাদের মত করে ঘুম পাড়িয়ে দেই...
রাজ্যের ঘুম এসে তখন ভিড় করে আমার দু’চোখে... !
না খাওয়ার অনিয়মের জন্য সেই একজনটা আমাকে বাচ্চাদের মত করে বকতেই থাকে ...
পারলে মারে... হিহিহি শেষে আমার সাথে না পেরে নিজেই খাইয়ে দেয় বাচ্চাদের মত করে ভুলিয়ে...
আমার সব অনিয়ম তখন ধরা খেয়ে যায় তার কাছে...
সেই একজনটা আমার চুল থেকে ক্লিপ খুলে নেয়...
এলো চুল আরো বেশি আউলিয়ে দিয়ে আমাকে পাগলী পাগলী বলে ক্ষ্যাপায় ...
তখন সত্যি সত্যি পাগলামিতে আমাকে পেয়েবসে...
সেই একজনটা আমার এলো চুল কপাল থেকে সরিয়ে দেয়ার অজুহাতে কালো টিপটা চুপিসারে খুলে নেয়...
তখন অদ্ভুদ মায়া খেলে যায় দু’চোখে...
আমার হাতের চুড়ির রিনিঝিনি শব্দে সেই একজনটার দু’চোখে ঘোরলাগা দৃষ্টি আসে...
ভাবলেই শিরশিরে একটা অনুভূতি খেলেযায় বুকের মাঝে...
আমার পায়ে থাকা নূপুরের ঝম ঝম শব্দে সেই একজন যখন আমাকে খুঁজে বেড়ায়...
লুকোচুরি খেলাতে মন তখন মেতে ওঠে...
ঘুম আসছে না বললেই সেই একজনটা যখন- চুলে বিলি কেটে বুকে আগলে নিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়...
তখন ভাবতেই ভাল লাগে... সেই একজনটার কতটা দরকার এই জীবনে...
কুট কুট করে সেই একজনটা ঝগড়া করে...
আবার অভিমান ভাঙ্গাতে কান ধরে উঠ বস করে...
তখন বারবার মনে হয় সেই একজনটা থাকুক না আজীবন আমার পাশে...
আমার ছায়াসঙ্গী হয়ে...
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৫৬