মুসলিম বিশ্বের প্রনক্তিগত দিক থেকে তুরস্কের অবস্থান ছিল শীর্ষে সেই শান্তি থাকা সত্ত্বেও আমেরিকান চক্রান্তে এবং ওহাবী রাষ্ট্রগুলোর উৎসাহে সে-ই একই মরণ ফাদে পা রেখেছে।
'আমেরিকা যার বন্ধু তার সমস্যার শেষ নাই ' কথাটি সত্যে পরিণত হতে যাচ্ছে তুরস্কের বেলায়ও।'
তুরস্কের অদানা প্রদেশে ইঞ্জারলিক ঘাঁটিতে অবস্থিত মার্কিন সেনারা পবিত্র কুরআন শরীফ অবমাননা করায় এবং ওই ঘাঁটির মসজিদের মিম্বর জ্বালিয়ে দেয়ায় দেশটির জনগণ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। বিক্ষোভকারীরা কুরআন ও মসজিদ অবমাননার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ন্যাটো ও মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে। বিক্ষোভকারীরা সেদেশে অবস্থিতি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করে দেয়া এবং ন্যাটো জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া দাবি জানিয়েছে।
আমাদের সংবাদদাতা জানিয়েছেন, তুরস্কের ‘আনাতোলি যুব ইউনিয়ন’র সদস্যরা সেদেশের দক্ষিণে অবস্থিত আমেরিকার ইঞ্জারলিক সামরিক ঘাঁটির সামনে সমবেত হয়ে ন্যাটো ও মার্কিন বিরোধী শ্লোগান দেয়। এর আগেও তুরস্কের জনগণ সেদেশে মার্কিন সেনাদের ইসলাম অবমাননার প্রতিবাদ জানিয়ে মার্কিন বিরোধী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিল। আজকের বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী অদানা শহরের ‘আনাতোলি যুব ইউনিয়ন’র প্রধান আব্দুল্লাহ কারান শাল এক বক্তৃতায় তুরস্কে মার্কিন সেনা উপস্থিতি এবং তাদের ইসলাম ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডকে সেদেশের সরকার ও জনগণের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি মার্কিন সেনাদের ইসলাম অবমাননার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইঞ্জারলিক ঘাঁটি বন্ধ করে দেয়া, মুসলিম এ দেশটি থেকে মার্কিন সেনাদের বহিষ্কার করা এবং ন্যাটো জোট থেকে তুরস্কের বেরিয়ে যাওয়ার দাবি জানান।
‘আনাতোলি যুব ইউনিয়ন’র প্রধান আব্দুল্লাহ কারান শাল বলেছেন, মুসলিম দেশগুলোর শিল্পোন্নত আটটি দেশের সমন্বয়ে গঠিত ডি-এই জোটে’র সদস্য দেশগুলোর উচিত নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক শক্তিশালী করার মাধ্যমে আমেরিকাসহ পাশ্চাত্যের দেশগুলোর ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়া। তিনি আরো বলেছেন, তুরস্কে ন্যাটোর ‘পেট্রিয়ট’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন পরিকল্পনা থেকে সরে আসার ব্যাপারে দ্রুত সরকারের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
তুরস্কের নাগরিক সংগঠনগুলোও মার্কিন সেনাদের ইসলাম অবমাননার নিন্দা জানিয়ে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছে। সরকার বিরোধী ‘ন্যাশনাল মুভমেন্ট’ দলের নেতা দৌলাত বাগচে লি ইসলাম অবমাননার নিন্দা জানিয়ে দ্রুত এ ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি এ ব্যাপারে সরকারের নীরবতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান।
উল্লেখ করা যায়, গত সপ্তায় একদল মার্কিন সেনা ইঞ্জারলিক ঘাঁটিতে অবস্থিত মসজিদে ঢুকে কুরআন শরীফ ছিঁড়ে ফেলে এবং মসজিদের মিম্বারে অগ্নি সংযোগ করে। ঘাঁটিতে কর্মরত শতশত তুর্কি শ্রমিক প্রতিদিন ওই মসজিদে নামাজ পড়ে। এর আগেও মার্কিন সেনারা ইরাক ও আফগানিস্তানসহ আরো বেশ কয়েকটি আরব দেশে ইসলাম অবমাননা করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন সেনারা খ্রিস্টান মিশনারিদের প্রভাবে কিংবা অনেক সময় উন্মত্ততা প্রদর্শন করতে গিয়ে কাণ্ড-জ্ঞান হারিয়ে কুরআন শরীফ ছেড়া কিংবা ইসলাম অবমাননার মত ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। পাশ্চাত্যের খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতারা পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে ইসলাম প্রসারে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে এবং কীভাবে ইসলামের প্রসার ঠেকানো যায় তা নিয়ে ব্যাপক চিন্তা-ভাবনা শুরু করে দিয়েছে। এ জন্য সম্প্রতি তারা ইসলাম বিরোধী ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে।
তুরস্কের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতার অংশ হিসেবে আমেরিকা ১৯৮০ সালে ইঞ্জারলিকে সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করে এবং এটি মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার সবচেয়ে বড় ঘাঁটি। এ ঘাঁটিতে ন্যাটো ও মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। কৌশলগত কারণে ইঞ্জারলিক সামরিক ঘাঁটি আমেরিকা ও তার মিত্রদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধ বিশেষ করে ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধে ইঞ্জারলিক ঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এ কারণে এ ঘাঁটি উচ্ছেদে জনগণের দাবি সরকার পূরণ করতে পারবে কিনা তাতে ব্যাপক সন্দেহ রয়েছে। সম্ভবত এ কারণেই তুর্কি সেনাবাহিনী মার্কিন সেনাদের হাতে ইসলাম অবমাননার ঘটনা অস্বীকার করেছে। #
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:১৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



