একাত্তরের খুনি, ঘৃণিত রাজাকার, মিরপুরের কসাই আব্দুল কাদের মোল্লার মানবতা বিরোধী অপরাধের রায়ের ঘোষণার প্রতি আজ দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল দেশের আপামর জনসাধারণের। অফিস কামাই করে আজ টিভি সেটের সামনে বসে ছিলাম সকাল থেকেই। কিন্তু আমার মত পুরো দেশ দেশবাসীকে হতাশার সাগরে ডুবিয়ে দিয়ে ট্রাইব্যুনাল যে রায় দিল তা রীতিমত প্রহসন ছাড়া অন্য কিছু নয়। । নিজেকে আজ বড্ড বেশি অসহায় লাগছে। স্বাধীন বাংলার মাটিতে রাজাকারদের উল্লাস দেখতে হবে এও ছিল কপালে!!! বিতর্কিত এ রায় নিজের অবচেতন মনে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছেঃ
মানবতা বিরোধী ঘৃণ্য অপরাধের সাজা কি মানবিক কারনে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ? নাকি বিচারকদের মনে কোন ভীতি কাজ করেছিল ?
এ রায় আন্তর্জাতিক প্রভাব মুক্ত ছিল কিনা ?
যে অপরাধে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসি রায় হল, সেই একই ধরনের অপরাধে কেন কাদের মোল্লার ফাঁসি হয় না ?
পলাতক আসামীর রায় কেন আগে ঘোষণা করা হল? সে ধরা ছোঁওয়ার বাইরে ছিল বলে কি ? ( গোয়েন্দা নজরদারী এড়িয়ে বাচ্চু রাজাকার কিভাবে ভারত পালিয়ে গেল এ এক বিরাট বিস্ময়!!)
এ রায় নিয়ে রাজনীতি চলছেনা তো ? যাতে সাপ ও না মরে আর লাঠি ও না ভাঙ্গে? এটা কি আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের কৌশলগত আই ওয়াশ ? অর্থাৎ জামায়াতকে ও চাপে রাখা হল আর জনগণকে বোঝানে যাবে আমরা নির্বাচনী ওয়াদা পূরণ করেছি। ( রাজনীতিবিদগন আম জনতা কে এত ছাগল ভাবে কেন ? )
ফাঁসির সাজা পেতে কাদের মোল্লাকে আর কি কি অপরাধ করতে হত? ৩৪৪ টি খুন এর জন্য যথেষ্ট নয় কি ?
পরবর্তী আসামীরা ও কি এ রকম গুরু পাপে লঘু দণ্ড পাবে ?
আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা আদালত অবমাননা হলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব তথা ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগের অবমাননাকারী এ রায়ের বিচারকদের বিচার করবে কারা ?
এ রায়ের ফলে জামায়াত আস্কারা পেয়ে সরকারের আরও ঘাড়ে চেপে বসবে। এর প্রমাণ ইতি মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। রায় ঘোষণার পর তারা ভেতরে ভেতরে বেজায় খুশি হলেও কপট রাগ দেখিয়ে মহাউৎসাহে আগামীকাল ও তারা হরতাল ডেকে বসেছে। এদের আর বাড়তে দেওয়া যায় না। নিরীহ শিক্ষকদের উপর পিপার স্প্রে বর্ষণে সিদ্বহস্ত পুলিশ জামায়াতের প্রতি এত নমনীয় কার নির্দেশে, বড্ড জানতে ইচ্ছে করছে। এখন সময় এসেছে আম জনতার স্বাধীনতা বিরোধী জামাতকে সর্ব শক্তি দিয়ে প্রতিহত করার। কারন যে পুলিশ জামায়াতের হাতে লাঠির পিটুনি খেয়ে আবার তাদের নিকট থেকে রজনী গন্ধার স্টিক নিতে বিন্দুমাত্র ঘৃণাবোধ করে না তাদের নিকট থেকে জাতি বেশি কিছু আশা করা বোকামি।
মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে যারা প্রহসন করছে তাদের উপর ৩০ লক্ষ শহীদের অবিরাম অভিসম্পাত বর্ষিত হোক। হে শহীদগণ , তোমরা আমাদের ক্ষমা কর, তোমাদের খুনিদের ন্যায্য বিচার এ জাতি করতে পারেনি। তোমাদের রক্তের ঋণ এ জাতি আর শোধ করতে পারবে না কখনো।