somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মূর্খতাই জ্ঞান ও স্বাধীনতার শত্রু

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সমগ্র ইউরোপ যখন অশিক্ষায় নিমজ্জিত ছিল তখন জ্ঞান ছিল তাদের শত্রু। সক্রেটিসকে বিষ খাইয়ে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছিল। গ্রিসের গ্যালিলিওকে ‘পৃথিবী সূর্যে চতুষ্পার্শ্বে ঘুরে,’ বলাতে একই ভাগ্যবরণ করতে হয়। এদেশের প্রাকৃতিক দার্শনিক খনা সঠিক জ্ঞান বিতরণের জন্য তার জিহ্বা কেটে ফেলা হয়েছিল। মহান আল্লাহ তায়ালা প্রেরিত সকল নবী-রসূলদের উপর মূর্খদের আক্রমণ তো ছিল চিরন্তন বাস্তবতা। দুর্ভাগ্য আজকের দিনের তথাকথিত শিক্ষিত শ্রেণীর জন্য যারা মনে করে ইহুদীরা অত্যন্ত জ্ঞানী, অনেক আবিষ্কার আর অনেক নোবেল পুরস্কার পাওয়ার কারণে। আসলে এই ইহুদীরাই আজ পর্যন্ত আগত সকল নবী-রসূলদের বিরুদ্ধে শত্রুতা করেছে, যুদ্ধ করেছে। সত্তর হাজার নবী-রসূলকে শহীদ করেছে।

বাস্তব উদাহরণ হচ্ছে- আমেরিকার মতো দেশ প্রযুক্তিতে সর্বশ্রেষ্ঠ কিন্তু মূর্খতা তাদেরকে পরাধীনতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে ঠেকিয়েছে। ৯/১১, ওয়ার অনটেরর, এনডিএন এবং সর্বশেষে ‘টিএসএ’, এসবই হচ্ছে পরাধীনতার এক একটি কঠিন রজ্জু। সামান্য কিছু দূরদৃষ্টি সম্পন্ন আমেরিকান বিষয়টা উপলব্ধি করতে পারলেও জাতি যেখানে ইহুদীদের গোয়েন্দা এবং মিডিয়ার মাধ্যমে আষ্টে-পৃষ্ঠে বাঁধা সেখানে সম্পূর্ণ পরাধীনতা একটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। একই অবস্থা পৃথিবীর প্রায় সকল খ্রিস্টান দেশগুলোর। ইহুদীদের প্ররোচনায় তারা সিভিলাইজেশন থেকে দ্রুত এনিমেলাইজেশনের দিকে ধাবমান। তাদের কাছে সৃষ্টিকর্তার প্রদত্ত প্রতিটি নিয়মের বিরুদ্ধাচরণই হচ্ছে সত্যিকারের স্বাধীনতা। ফ্রি সোসাইটি বিষয়টি যে, খোদায়ী গযব আকৃষ্ট করার এক ভয়ঙ্কর উপলব্ধিগত অবস্থা তা ওবামা-ক্যামেরনকে কে বোঝাবে? ওরা যে বিষয়টা একেবারেই বুঝছে না ব্যাপারটি তেমনও না। আসলে ইহুদীদের গোলাম হিসেবে তাদের কিইবা করার আছে!

এবার দেখা যাক, আমাদের দেশের অবস্থা! বিভিন্ন জাতীয় দিবসে স্বাধীনতার হাজার হাজার গান, নাটক আর বিভিন্ন দেশাত্ববোধক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু রাতের আঁধারে ইহুদী গোলামদের কাছে নাকে ক্ষত দিয়ে আমাদের গণতান্ত্রিক সরকারেরা ক্ষমতায় আসন গ্রহণ করে।

এক কঠিন বাস্তবতা। মহান আল্লাহ পাকের প্রেরিত জ্ঞানই যে সত্যিকারের জ্ঞান এবং উনার প্রতিটি হুকুম মানার মধ্যেই যে আছে মানবজাতির প্রকৃত স্বাধীনতা, এ বিষয়টি ক্ষমতার আশেপাশে অবস্থানরত মূর্খ চাটুকারদের বোঝানো যাবে না কস্মিনকালেও। প্রযুক্তিই যদি একমাত্র জ্ঞান হতো, তবে বিজ্ঞানে উন্নতির চরম শিখরে অবস্থানরত বহু সভ্যতা মাটিচাপা পড়তো না। প্রযুক্তি দিয়েই তারা নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারতো। খোদায়ী গযবের সামনে প্রযুক্তি খড়কুটা নয়, এমনকি ধূলিকণাও নয়। যে এই বিষয়টি অন্তর থেকে উপলব্ধি করতে পারবে সেই হচ্ছে সত্যিকারের জ্ঞানী, তার বাহ্যিক কোন সনদ বা সার্টিফিকেট থাকুক বা না থাকুক।

নবী যেহেতু আর আসবেন না, ওই উপলব্ধি অর্জনের জন্য বর্তমান সময়ে একমাত্র পথই হচ্ছে বেলায়েত (উলিল আমর) এর পথ। এটা একটা সহজ পথ, তবে অত্যন্ত কঠিন ওই পথ খুঁজে পাওয়া কিংবা নির্বাচন করা। ওহীপ্রাপ্ত জ্ঞানের শত্রুরা ওই পথের আশেপাশে বিছিয়ে রেখেছে হাজারো ফাঁদ, সিওর সাকসেস নোট বই, বিসিএস গাইডের মতো সহজে বেহেশত প্রাপ্তির গাইড, ভন্ডপীরদের ভাঁওতাবাজি, বছর বছর ধরে গাট্টি নিয়ে রাস্তায় আর মসজিদে মসজিদে ঘুরে বেড়ানোর দল, আছে আহলে হাদীস/সালাফি চেতনার আত্মঘাতী বোমারু, আছে জিন্সের প্যান্ট পরে সিগারেটে টান দিয়ে খিলাফত দাবিকারী হিযবুত তাহরীর, সেই সাথে আছে জাকির (কাফির) নায়েকের মতো বিখ্যাত তথাকথিত হিদায়েতের পথ প্রদর্শকরা।

সত্যিই বর্তমান যুগে মুসলমান সমাজে মূর্খতা থেকে মুক্তি যেমন কঠিন, তেমনি কঠিন নাজাতের জন্য জ্ঞান আহরণের সঠিক মাধ্যমটি খুঁজে পাওয়া। ব্যক্তি কিংবা জাতীয় পর্যায়ে মুক্তিপ্রাপ্তি কিংবা স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে আমাদেরকে শত্রুর মগজধোলাই কার্যক্রম থেকে নিজেদেরকে মুক্ত রাখতেই হবে নতুবা ফলশ্রুতিতে গন্ডমূর্খতা অতঃপর পরাধীনতাই একমাত্র গত্যন্তর/পরিণতি।

মহান আল্লাহ পাক আমাদের অন্তরে শুভবুদ্ধির উদয় করুন, হিদায়েতের সঠিক পথটি চিহ্নিত করতে সহায়তা করুন। (আমীন)
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড্রাকুলা

লিখেছেন সুদীপ কুমার, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১২

কোন একদিন তাদের মুখোশ খুলে যায়
বেরিয়ে আসে দানবীয় কপোট মুখায়ব।

অতীতে তারা ছিল আমাদের স্বপ্ন পুরুষ
তাদের দেশ ছিল স্বপ্নের দেশ।
তাদেরকে দেখলেই আমরা ভক্তিতে নুয়ে পড়তাম
ঠিক যেন তাদের চাকর,
অবশ্য আমাদের মেরুদন্ড তখনও... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×