somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিষিদ্ধ সবকিছুই আকর্ষণীয় ..!

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



“আরবিতে একটি কথা আছে - ‘ كل ممنوع مرغوب - নিষিদ্ধ সবকিছু আকর্ষণীয়।’ যদিও দ্বীনের পথে ফিরে আসার পর আমরা আমাদের অতীত পাপ নিয়ে সর্বদা অনুশোচনায় দগ্ধ হই। সেই পাপগুলো আবার করার কথা চিন্তাও করতে পারি না এবং সেগুলোকে অনেকটা ঘৃণা করি। কিন্তু দিনশেষে, আমরা সবাই মানুষ। আর মানুষের প্রবৃত্তির কামনা-বাসনা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। শয়তান আমাদের এই দুর্বলতাকে তার নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়। সে আপানাকে পথভ্রষ্ট করতে চাইবে। সে বলবে, “তুমি আগে কতসুন্দর মৌজ মাস্তিতে মেতে থাকতে! তোমার পূর্বের অবস্থা কত ভালো ছিল। জীবন কত সহজ ছিল! এখন তুমি কেন নিজেকে এতোসব আনন্দ থেকে বঞ্চিত করছ? কেউ তো আর জানবে না! পূর্বের অবস্থায় ফেরত যাও।” এভাবে সে আপনাকে আবার পাপের পথে নিয়ে যেতে চাইবে। এভাবে শয়তান পেছন থেকে আপনাকে আক্রমণ করবে। পেছন থেকে আপনাকে টানতে থাকবে যে পর্যন্ত না আপনি আগের মত হয়ে যান। আমাদেরকে এ সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।” - উস্তাদ নোমান আলী খান

একটা ব্যাপার খেয়াল করে দেখুন, আমরা জান্নাত দেখিনি, আমরা শুধু কুরআন হাদিসে এর বর্ণনা শুনেছি। কিন্তু শয়তান জান্নাত দেখেছে। সে জানে জান্নাত কি জিনিস! সে জানে আল্লাহর জান্নাত কত অফুরন্ত নেয়ামত আর সুখ-শান্তিতে পরিপূর্ণ। নিজের ব্যাপারে তো সে হতাশ হয়ে গিয়েছে এবং মেনে নিয়েছে যে, দোজখের আগুনই তার শেষ ঠিকানা। এখন, যখন শয়তান দেখতে পায় তার চিরশত্রু আদম (আ) এর কোন এক সন্তান তওবা করেছে এবং আল্লাহর গোলামী মেনে নিয়ে জান্নাতের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। তখন সে কেমন হিংসা অনুভব করবে! একবার কল্পনা করে দেখুন! তার নিজের খাদ্য হবে যাক্কুম, আর জান্নাতী মানুষের খাদ্য হবে রং বেরঙের ফলমূল, পাখির গোশত, দুধ এবং নানারকম পানীয় সহ আর কত কি। সে থাকবে উত্তপ্ত আগুনে আর মানুষ - যাদেরকে সে নিচু মনে করতো - থাকবে সবচেয়ে উঁচু মাপের রেশমি কাপড়ের বিছানায়।

যখন শয়তান দেখে, এই আদম সন্তান নিজের মনের কথা শুনে না। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে এই আদম সন্তান নিজেকে প্রশ্ন করে আল্লাহর একজন গোলাম হিসেবে এখন আমার কী করা উচিত? তারপর আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী চলে। এই আদম সন্তান নিজের অভিমতকে গুরুত্ব দেয় না, সে আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের আদেশ নিষেধের কাছে মাথা নত করে দেয় এবং বলে - “সামি’না ও আতা’না - আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম।” শয়তান তখন হিংসায় জ্বলে যাবে এবং নিজের প্রচেষ্টার সবটুকু দিয়ে আপনাকে আমাকে আল্লাহর পথ থেকে দূরে সরিয়ে দিতে চাইবে। সাময়িক আনন্দ ফুর্তিতে ডুবিয়ে রেখে আমাদের চরম সর্বনাশ করতে চাইবে। যেন আমরা চির সুখের জান্নাতে যেতে না পারি। যেখানে আমাদের বয়স হবে ৩৩ বছর। যেখানে আমরা কোন দিন অসুস্থ্য হব না, বৃদ্ধ হব না, মারা যাব না। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল - মহাবিশ্বের মালিক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের উপর সন্তুষ্ট থাকবেন। তাই শয়তানকে কোনভাবেই সফল হতে দিবেন না। মহান আল্লাহ বলেন - إِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمْ عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوهُ عَدُوًّا - “শয়তান তোমাদের শত্রু; অতএব তাকে শত্রু রূপেই গ্রহণ কর (35:06)।” এখন আপনার মনে হয়তো প্রশ্ন আসতে পারে - আমাদের এই অদৃশ্য শত্রুর সাথে যুদ্ধ করে কি পারবো? আল্লাহ কী বলছেন শুনুন - إِنَّ عِبَادِي لَيْسَ لَكَ عَلَيْهِمْ سُلْطَانٌ وَكَفَى بِرَبِّكَ وَكِيلًا - “আমার দাসদের উপর তোর (শয়তানের) কোন ক্ষমতা নেই। আর কর্মবিধায়ক হিসাবে আপনার প্রতিপালকই যথেষ্ট।” (15:42)

শয়তান আপনাকে দিয়ে জোরপূর্বক কিছু করাতে পারবে না। তাই, নিজের মানবীয় চাহিদাগুলো আল্লাহর নির্ধারিত পথে পূরণ করুন। আর সম্ভব না হলে ধৈর্য ধরুন। দুনিয়ার জীবন খুবই ছোট, এই ধৈর্যের একদিন সমাপ্তি হবে। আর ইনশাআল্লাহ, এই ধৈর্যের জন্য একদিন অফুরন্ত পরস্কার পাবেন। আল্লাহ বলেন - “তবে যারা ধৈর্য্যধারণ করেছে এবং সৎকার্য করেছে তাদের জন্য ক্ষমা ও বিরাট প্রতিদান রয়েছে। (১১:১১)

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:১৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×