somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প- অন্ধকারের ফুল

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বান্দরবানে পোস্টিংয়ের চিঠিটা যেদিন হাতে পেলাম, দু’রাত ঘুম হলো না।
বারবার মনে হতে লাগলো, কী অন্যায় করেছি আমি! মনে করতে পারছি না যদিও...কিন্তু কিছু একটা তো করেছি নিশ্চয়ই। নইলে এই শাস্তির কারণ কী? এই মাত্র কয়েকবছর হলো চাকরিতে ঢুকলাম। সবে গুছিয়ে নিতে শুরু করেছি। এর মধ্যেই কী এমন গুরুপাপ ঘটিয়ে ফেললাম যে একেবারে বান্দরবানে পাঠিয়ে দিল!
বেজার মুখে তল্পিতল্পা গুছিয়ে নিয়ে গন্তব্যে রওয়ানা দিলাম। যেতেই হবে যখন, খামাখা দেরি করে লাভ কী? আর তাছাড়া বয়স থাকতে থাকতেই এইসব বন-বাদাড়, পাহাড়-পর্বতে ঘুরে আসি। বুড়ো বয়সে কি আর কোমর ভেঙে পাহাড়ে চড়তে ভালো লাগবে?

জয়েন করে মোটামুটি থিতু হওয়ার পরে কিন্তু এতটা খারাপ লাগলো না। বেশ জায়গাটা! বাংলাদেশ যে এত সুন্দর এটা কিছু জায়গাতে না গেলে জানা যায় না! আমি মনকে সান্ত্বনা দিলাম। ক’জনের ভাগ্যে এমন দেশ ভ্রমনের সুযোগ মেলে? দায়িত্ব পালন...সেই সাথে দেশ ভ্রমন!
একটা কোয়ার্টারের মতো জায়গাতে থাকার ব্যবস্থা করা হলো। কোয়ার্টার না বলে রিসোর্টও বলা যেতে পারে। ছোট ছোট আলাদা কটেজগুলোতে একা থাকার বন্দোবস্ত। নিজস্ব বারান্দা, সামনে খোলা মাঠ। মাঠ পেরিয়ে বিস্তীর্ণ জঙ্গল। সরকারী অফিসারদের মধ্যে যারা এখনো অবিবাহিত তারাই এইসব ছোট কটেজগুলোতে এসে ওঠে। রান্নাবান্না আর বাসার কাজকর্ম করে দেওয়ার জন্য বাবুর্চি কাম কেয়ারটেকার আছে। ঘরদোর ঝাড়ামোছা থেকে শুরু করে রান্নাবান্না, কাপড়চোপড় ধোওয়া...সব কাজ তারাই করে দেয়। এরা সবাই স্থানীয় লোকজন। ভাউচারভূক্ত কর্মচারী। এসব কাজের বিনিময়ে সরকারের কাছ থেকে সামান্য মাসোয়ারা পায়। তবে এদের জীবিকা মূলত নির্ভর করে এখানে অবস্থানরত কর্মকর্তাদের দান আর মর্জির ওপরে। কর্মকর্তারা খুশি হয়ে বখশিশ হিসেবে যা দেয়, তাই দিয়েই এরা পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকে।

কটেজগুলো একেবারে পাশাপাশি অবস্থিত না। একটার সাথে আরেকটার বেশ কিছুটা দূরত্ব আছে। তবু বারান্দায় দাঁড়িয়ে আশেপাশের কটেজগুলোকে কেন যেন খুব আপন মনে হয়। কটেজগুলোর বাসিন্দাদের সাথে দূর থেকেই কুশলাদি বিনিময় করতে করতে একসময় বন্ধুত্ত হয়ে গেল। বিকেলে পরষ্পরের কটেজে এসে আড্ডাবাজি, তাস খেলা...এসব চলতে লাগলো। দূরে এসে অনাত্মীয় পরিণত হয়ে যায় পরমাত্মীয়ে। আমাদেরও তাই হলো। সুখ-দুঃখের এসব আলাপচারিতা আমাদের এই নির্জনবাসে বেঁচে থাকার খোরাক যোগাতো।
আমি পুলিশ ক্যাডারের এসিস্টেন্ট কমিশনার অফ পুলিশ পদে আছি। আমার কাজের ধরণই ঝামেলার। দিন নাই রাত নাই, যেকোন সময়েই ডাক চলে আসে। আর ডাক এলে জানে প্রাণ থাকলেই হাজিরা দিতে হবে। ছাড়াছাড়ি নেই কোন। তবে এখানে আসার পর থেকে কাজের চাপ এখনো সেভাবে আসেনি। সারাদিন খাই দাই আর দয়া করে অফিস থেকে ঘুরে আসি। কাজকর্ম বিশেষ একটা নাই। সহজ সরল পাহাড়ি লোকজন। প্রতিকূল পরিবেশে হিংসা বিদ্বেষ ভুলে একত্রে মিলে মিশে বাঁচে। কাজেই পুলিশ অফিসারদেরও শান্তিতেই দিন কাটে। তবে যারা উপরি পয়সার ধান্ধায় থাকে, তাদের একটু অসুবিধা হয়। দু’একটা সহজ সরল লোককে ঠেঙিয়ে পিটিয়ে তাদের সেই ‘জোগাড়’ করতে হয়। আমি যেহেতু এখনো ঐ পথ মাড়াইনি, কাজেই আমার বেশ শান্তিতেই দিন কাটছে এখানে।
আমার কটেজের কাজকর্ম করে দেয় সুখরঞ্জন বসু নামের পঞ্চান্ন ছাপ্পান্ন বছরের এক প্রৌঢ়। সুখরঞ্জনের চেহারাতে অদ্ভূত একটা বৈসাদৃশ্য আছে। তার চুল দাড়ি ভ্রু সব পেকে গেছে। কিন্তু চোখমুখ আশ্চর্য রকমের সজীব আর চঞ্চল। বাদামী চোখের মণিতে কোন ধুসরতা নেই। সারাক্ষণ যেন জ্বলজ্বল করছে। কাজকর্মেও কোন অনিহা নেই। যেকোন কাজেই চটজলদি তৎপরতা। শুধু লোকটা কথা কম বলে। এত কম যে কখনো কখনো গুঁতা মেরে কথা আদায় করতে হয়। এই একটা ব্যাপারেই মাঝে মাঝে বেশ বিরক্ত লাগে। এছাড়া তার রান্নাও বিশেষ সুবিধার নয়। তরকারিতে এত বেশি তেল, মশলা দেয় যে এন্টাসিড সবসময়েই কাছে রাখি। কখন দরকার পড়ে বলা মুশকিল।

বৈকালিক আড্ডাটা পাশের কটেজের তরুণ ডাক্তার সজল হায়দারের ওখানেই বেশি চলে। সজল প্রাণবন্ত ছেলে। ঠাট্টা রসিকতাও খুব জানে। বিকেলটা তরতর করে কেটে যায়। সেদিন আড্ডার ছলেই সজলকে বললাম,
‘আচ্ছা, সজল বল দেখি...তেল মশলা বেশি খেলে কত বছর বয়স থেকে প্রভাব পড়তে শুরু করে?’
সজল হাসতে হাসতে বললো,
‘তোমার প্রশ্নটা যে মুখবন্ধ তা বুঝতে পেরেছি। আসল কথা খুলে বল।’
‘কী বলবো ভায়া আসল কথা...আমার সুখরঞ্জন মিয়ার রান্না যদি খেতে তবে বুঝতে! মনে হয় যেন তেলে ডুবানো মাছ মাংশ তরকারী খাচ্ছি। তেল আর মশলা থেকে ছাড়িয়ে ছাড়িয়ে খেতে হয়!’
সজল খিক খিক করে কিছুক্ষণ হাসলো। তারপরে বললো,
‘ভায়া এদিকেও দশা বিশেষ কিছু ভালো নয়। আমার কটেজের সোনাগাজির রান্নাও তথৈবচ!’
আড্ডায় উপস্থিত অন্যদের মন্তব্য শুনে বুঝলাম, রান্না নিয়ে কারোরই সন্তুষ্টি নেই। আমি উৎসাহ সহকারে বললাম,
‘এর একটা বিহিত করা যায় না? আরে রান্নাবান্না কি ছেলেদের কাজ? এখানে মহিলা বাবুর্চি পাওয়া যায় না?’
সজলকে এবারে একটু সিরিয়াস মনে হলো। চিন্তামগ্ন গলাতে বললো,
‘আগে তো মেয়েরাই এই কটেজগুলোতে রান্নাবান্না করতো। প্রতিটি কটেজেই অন্যান্য কাজ পুরুষেরা করলেও শুধু রান্নাবান্নার কাজটা মেয়েরা করতো। একজন মেয়ে হয়ত দু’তিনটা কটেজে রান্নার কাজ করতো। অবশ্য আমিও তো খুব বেশিদিন হয় আসিনি। এসব কথা শুনেছি অন্যদের কাছ থেকে।’
‘তা...সেই ব্যবস্থা পাল্টানো হলো কেন? সেটাই তো ভালো ছিল!’
‘হুম...ভালো তো ছিলই। কিন্তু এখানে একবার একটা ঘটনা ঘটে। তারপর থেকেই আর কোন মেয়ে এখানে কাজ করতে রাজি হয় না। তাদের পরিবার থেকেও আসতে দেওয়া হয় না। যদি ফেরার পথে আবারও অন্য কারো সাথে সেই একই ঘটনা ঘটে!’
‘কী ঘটনা ঘটেছিল?’ দূর্ঘটনার গন্ধে আমার পুলিশ মন সজাগ হয়ে ওঠে।
‘আমাদের কটেজগুলোর সামনে ঘন জঙ্গল দেখতে পাও না? সেই জঙ্গলে রাতের অন্ধকারে একটি মেয়ের মৃতদেহ পাওয়া যায়। সেই মেয়েটিও এখানকার কটেজগুলোতে রান্নার কাজ করতো। কিছু মেয়ে দিনে রান্নার কাজ করে চলে যেত। আর কেউ কেউ রাতে কাজ করতো। সবাইকেই বাড়ি ফেরার সময়ে এই জঙ্গল দিয়েই যেতে হতো। যে ক’জন মেয়ে রাতে কাজ করতো তারা সবাই এক সাথেই বাড়ি যেত। কিন্তু সেদিন কোন কারণে সেই মেয়েটি অন্যদিনের চেয়ে একটু আগেই বাড়িতে রওয়ানা দিয়েছিল। অন্যরা ওর জন্য অপেক্ষা করে যখন ওকে আসতে দেখেনি তখন নিজেরাও চলে গিয়েছিল। পরদিন সকালে জঙ্গলের মধ্যে মেয়েটির লাশ পাওয়া গিয়েছিল। মেয়েটার লাশ পোস্টমর্টেমের সময় একটা জিনিস জানা গিয়েছিল। মেয়েটা অন্তঃসত্ত্বা ছিল!’
‘আচ্ছা...বিবাহিতা ছিল?’
‘উহু! অবিবাহিত মেয়ে। ওর বাড়ির লোকেরাও কেউ কিছু বলতে পারেনি। মেয়েটা নাকি এমনিতে বেশ শান্তশিষ্ট ছিল। কোন ছেলের সাথে তার এমন কোন সম্পর্কের কথাও কেউ জানতো না।’
‘হুম!’ আমি গম্ভীর মুখে বললাম। নির্বিবাদী জনগোষ্ঠীতেও তাহলে এমন ঘটনা ঘটে! যতটা ভেবেছি, ঠিক ততটা নিস্তরঙ্গ নয় তবে এদের জীবন!

‘ঘটনাটা কত আগের বল তো?’ আমি বেশ কৌতুহল বোধ করছি।
সজল বললো,
‘তা চার-পাঁচ বছর আগের ঘটনা তো হবেই! স্থানীয় পত্রিকায় ছাপাও হয়েছিল।’
‘কোন কেস হয়েছিল কি?’
‘কী জানি...হয়ে থাকতে পারে। আবার নাও পারে। এই শ্রেণীর লোকেরা কি এমন একটা ঘটনা ঘটার পরে আবার কেস করতে যাবে? তাদের তো ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার দিকেই আগ্রহ বেশি থাকে! অবশ্য এসব আমার ধারণা। তোমার কী মনে হয়? আমার চেয়ে তোমারই তো এসব ব্যাপার বেশি জানার কথা।’
আড্ডার বেশিরভাগ অফিসারই এখানে নতুন পোস্টিং পেয়েছেন। কাজেই এই ঘটনা এমনিতে লোকমুখে শুনলেও কেউ বিস্তারিত কিছু জানে না।
‘চার-পাঁচ বছর আগের ঘটনা...একেবারে খুব বেশি আগের নয় তাহলে!’ স্বগোতোক্তি করলাম আমি। মনে মনে ঘটনার গভীরে ঢোকার ইচ্ছে উঁকি দিচ্ছিলো। চার-পাঁচ বছর আগের কেসের ফাইল খুঁজতে তেমন একটা সময় লাগার কথা না। অবশ্য যদি কোন কেস হয়ে থাকে! দিনরাত বসে বসে মশা-মাছি তাড়াই। একটা রহস্যের সন্ধানে লেগে থাকলে সময়টাও ভালো কাটবে। একঘেয়েমীতেও ভুগতে হবে না!

সেদিন রাতে সুখরঞ্জনকে দিয়ে দুধ আর কলা আনালাম। তারপরে সেই ছোটবেলার মতো ভাতের সাথে দুধ-কলা মাখিয়ে খেয়ে নিলাম। সুখরঞ্জন আড়ে আড়ে দেখলো শুধু। মুখে কিছু বললো না। পরেরদিন দুপুরে বাসায় খেতে এসে দেখি ভিন্নধর্মী আয়োজন। শাক, ডাল, কচু ভর্তা আর মলা মাছ। সবকিছুতে তেল বেশ কম মনে হলো। খেয়েও অতৃপ্তি হলো না। উত্তর পাবো না জেনেও সুখরঞ্জনকে ধন্যবাদ দিয়ে বললাম,
‘বাহ্‌! বেশ ভালো রেঁধেছো তো আজ! প্রতিদিন এমনই রেঁধো। তেল মশলা কম দিয়ে। এত তেল মশলা খেলে অসুস্থ হয়ে পড়বো তো!’
আমাকে অবাক করে দিয়ে সুখরঞ্জন কথা বলে উঠলো। একটি বা দুটি সংক্ষিপ্ত বাক্য নয়। বেশ লম্বা কয়েকটি বাক্য।
‘রান্না তো আগে করিনি গো বাবু। আমার মাইয়ার রান্না দেইখা দুই চারটা পদ শিখছি। আপনে যেভাবে খাইতে চান আমারে কইয়েন। আমি চেষ্টা কইরা দেখুম!’
আমি তো সুখরঞ্জনের মুখে এতগুলো বাক্য শুনে একেবারে হতবাক। সোৎসাহে আরেকটু আলাপ জমাতে চাইলাম,
‘তোমার বাড়িতে কে কে আছে সুখরঞ্জন? তোমার স্ত্রী...ছেলেপুলে?’ আমার প্রশ্ন সুখরঞ্জনের কানে ঢুকেছে বলে মনে হলো না। আচমকা অনেক কথা বলে ফেলে সে আবার মুখে কুলুপ এঁটে নিয়েছে। আজব মানুষ। লোকে পুলিশের কাছে অন্তত এত ভাব নেয় না! এর মনে হয় সেসব বোধশোধই নেই!

পরদিন থানায় গিয়ে সবার আগে সেই খুন হওয়া মেয়েটার কেসের অনুসন্ধ্যান করলাম। খুব ভাসা ভাসা কিছু তথ্য জানলাম। কেমন যেন ধোঁয়াশা! মেয়েটার বাবা একটা এফ আই আর করেছিল বটে, কিন্তু পরে আর সেটার কোন হদিস রাখা হয়নি। আমি অবাক হলাম। এফ আর আই হয়েছে...অথচ ফাইলে কোন রেকর্ড নাই। এটা কেমন কথা! জিজ্ঞেস করলাম,
‘সেই সময়ে কোন অফিসার দায়িত্বে ছিলেন? তার নাম বল। আমি যোগাযোগ করে নিব।’
আমার এসিস্টেন্ট এবারে খুব চমকপ্রদ খবর দিলো।
‘স্যার... সেই স্যার তো আর নেই!’
‘নেই মানে?’
‘উনি দু’বছর আগে হারিয়ে গিয়েছেন।’
‘কী বলছো? ছোট বাচ্চা নাকি? হারিয়ে যাবে কেন?’
‘তা তো স্যার বলতে পারবো না। তবে উনাকে দু’বছর যাবত কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। একটা মিসিং ডায়েরিও করা হয়েছিল। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। স্যার আর ফিরে আসেননি।’
‘চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন?’
‘জি না স্যার। সেসব কিছুই নয়। উনার দেশের বাড়িতেও খোঁজ করা হয়েছিল। সেখানেও যাননি। তাদের সাথেও নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে আর কথাবার্তা কিছু হয়নি।’

আমি ভীষণ অবাক হলাম। এই রহস্যের মানে কী? এই জায়গার দেখা যাচ্ছে ভালোই প্যাঁচ আছে! এতদিন কী না ভাবছিলাম শত্রুতামুক্ত অঞ্চল!
আমি গভীর ভাবনায় মগ্ন হলাম। এসিস্টেন্টকে প্রশ্নের পরে প্রশ্ন করে যেতে লাগলাম।
‘উনি কি এই কেসের তদন্ত শুরু করেছিলেন? সেটার সাথে কি কোন সংযোগ আছে? মানে অপরাধীরা তাকে সরিয়ে দিয়েছে। এমন কি হতে পারে?’
‘জি স্যার... তা হতে পারে বৈকি! কিন্তু মেয়েটা খুন হয়েছিল প্রায় সাড়ে চার বছর আগে। আর আজিজুল হক স্যার নিখোঁজ হয়েছেন মাত্র দু’বছর আগে। আর উনি কেসের তদন্তের ব্যাপারে তেমন কিছু করেছেন বলেও জানি না স্যার। প্রথম কিছুদিন একটু খোঁজ খবর করেছেন। ওপর মহলের তেমন চাপ ছিল না। উনিও ঢিমেতালেই কাজ করেছেন। আস্তে আস্তে ঘটনা চাপা পড়ে গেছে।’
‘হুম। ইন্টারেস্টিং!’

বৈকালিক আড্ডায় বন্ধু সজল হায়দারের কাছে বিষয়টা পাড়লাম। সজল সেই পুলিশ অফিসারের অন্তর্ধানের বিষয়টা জানে। তবে আর সবার মতোই এর চেয়ে বেশি কিছু জানে না। কেমন যেন ভোজবাজির মতোই হারিয়ে গিয়েছেন এএসপি আজিজুল হক।
আমি তবু লেগে রইলাম। এ ওর কাছে জিজ্ঞেস করতে থাকলাম। যদি কিছুমাত্র সূত্র মেলে। থানায় এখনও তেমন কোন কাজ নেই। কাজেই আমার হাতে অফুরন্ত সময়।
এদিকে সুখরঞ্জন আমার মুখের রুচি ফেরাতে আর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে বেশ উঠেপড়ে লেগেছে। প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন স্বাস্থ্যকর পদ রান্না করে। ভালোই লাগছে খেতে। একদিন রান্নার বেশ প্রশংসাই করলাম ওর।
‘আরে সুখরঞ্জন! তুমি তো দিব্যি ভালোই রান্না কর! এতদিন তাহলে ওসব হাবিজাবি রাঁধছিলে কেন?’
সুখরঞ্জন মাথা নীচু করে খাবার বেড়ে দিচ্ছিলো। ধীর গলায় বললো,
‘কাজ করতে আর ভালা লাগে না বাবু! মাইয়াটা চইলা যাওনের পর থিকা আর কিছু করতে মন চায় না!’
আমি মুখ তুলে চাইলাম ওর দিকে। খুব অস্বাভাবিক ব্যাপার। আবেগের প্রকাশ করে ফেলেছে আজ সুখরঞ্জন! যেটা তার চরিত্রের সাথে একেবারেই যায় না! জিজ্ঞেস করলাম,
‘তোমার মেয়ে কোথায় গেছে?’
‘মইরা গেছে বাবু!’
মনটা খারাপ হলো। আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করলাম না। বুঝলাম এই কারণেই সুখরঞ্জন সারাক্ষণ মনমরা হয়ে থাকে। আমি জিজ্ঞেস না করলেও সুখরঞ্জন নিজে থেকেই বললো,
‘এক শুয়োরের বাচ্চা ওরে নষ্ট করছিল বাবু! ওরে পোয়াতি বানাইয়া ফ্যালছিল! আমরা কিছুই জানতাম না! এত কিছু করার পরেও ওরে বাঁচতে দেয়নি। পেটের বাচ্চাশুদ্ধু মাইরা ফেলছে!’
আমি ভেতরে ভেতরে চমকালাম। এই মেয়েটাই কি তবে সেই মেয়ে?
‘কবে মারা গিয়েছে তোমার মেয়ে?’
‘আজ সাড়ে চার বচ্ছর হইলো বাবু!’
আমি আর কিছু জিজ্ঞেস না করলেও সুখরঞ্জনকে আজ যেন কথাতে পেয়েছে। কাঁদতে কাঁদতেই বললো,
‘মাইয়াটারে গোলা টিপে মাইরা জঙ্গলে ফেলাই আসছিল বাবু!’
আমি আবার চমকে উঠলাম। মেরে জঙ্গলে ফেলে এসেছিল...এটা সুখরঞ্জন জানলো কিভাবে? এটা তো তার জানার কথা নয়! তবে আমি সেই প্রশ্নটা তাকে আর করলাম না। সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে বললাম,
‘তোমার মেয়ের মৃত্যুর পর থেকে কি তুমি ওর কাজগুলো করছো সুখরঞ্জন? মানে এই রান্নার কাজ?’
‘জি বাবু!’
‘তোমার মেয়ে কি আজিজুল হক এএসপি’র কটেজেও কাজ করতো? উনিই তোমার মেয়ের হত্যার তদন্তের কাজটা করছিলেন তাই না?’
সুখরঞ্জন কিছুটা নীরব হলো। তারপরে ধীরে ধীরে বললো,
‘গরীবের বিচার কেউ করে না বাবু!’
আজ সুখরঞ্জন অনেক কথা বলছে। কথা কম বলা লোক একবার বলতে শুরু করলে নাকি অনেক বেশিকিছু বলে ফেলে। আমি সেই বেশিকিছু কথাই শুনতে চাইছিলাম সুখরঞ্জনের কাছ থেকে। ওর নিশ্চয়ই অনেক কথাই বলার আছে।
‘তোমার মেয়ের লাশটা কোথায় পাওয়া গিয়েছিল? আমাকে দেখাবে সুখরঞ্জন?’
‘আপনি দ্যাখবেন বাবু? চলেন ঐ জঙ্গলের ভিতরে...দেখলে চলেন আমার লগে, দেখাইয়া আনি।’

শীতের আগমনী সুর বাজছে চারদিকে। বাতাসে হিমের পরশ। বিকেল হব হব করছে। আজ আর আড্ডায় গেলাম না। গায়ে একটা হাল্কা শাল জড়িয়ে সুখরঞ্জনের সাথে হাঁটতে হাঁটতে জঙ্গলের দিকে গেলাম। ঘন জঙ্গল। কিছুদূর গেলেই গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে সামান্য আলোটুকু ছাড়া আর কিছুই আসে না। অন্ধকারের এক ঘোরলাগা মায়াজাল জড়িয়ে আছে পুরো জঙ্গলে। আমি বললাম,
‘এই জঙ্গলে হিংস্র প্রাণী নেই সুখরঞ্জন? আমার তো গা টা ছম ছম করছে। বন্দুকটা বুঝি সাথে আনতে হতো!
সুখরঞ্জন হাসলো। কেমন যেন নেশাগ্রস্তের হাসি। আজ সুখরঞ্জনের মুখে কীসের এক অচেনা ছায়া দেখতে পেলাম। অনেকখানি পথ হাঁটার পরে এক জায়গায় এসে থমকে দাঁড়ালো সুখরঞ্জন। বড় বড় চোখে তাকিয়ে রইলো নিচের দিকে। আমি বুঝলাম এই সেই জায়গা। যেখানে সুখরঞ্জনের মেয়ের লাশ পাওয়া গিয়েছিল। এত এত গাছের ভীড়ে জায়গাটাকে আলাদাভাবে মনে রাখা বেশ কঠিন। হয়ত এরা একই পথ দিয়ে যাতায়াত করে দেখে সহজে ভোলে না। আমি সুখরঞ্জনের চোখে সোজাসুজি তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
‘তোমার মেয়েকে যে গলা টিপে মেরে এখানে আনা হয়েছিল তা কিভাবে জানলে সুখরঞ্জন?’

সুখরঞ্জন আমার দিকে তাকালো না। মাটির দিকে ঠাঁই তাকিয়ে রইলো। বেশ কিছুক্ষণ পেরিয়ে গেল এভাবে। আমি কিছুটা অসহিষ্ণু হতে শুরু করেছি। সুখরঞ্জনের মুখে কি আবার কুলুপ এঁটে গেল? একবার এঁটে গেলেই তো আবার খোলা মুশকিল! আমাকে আশাহত না করে সুখরঞ্জন বেশ অনেকটা সময় পরে কথা বললো। কেমন এক গমগমে গম্ভীর ঘোরলাগা আওয়াজে! যেন বহুদূর থেকে ভেসে এলো সেই আওয়াজ।
‘আমার মাইয়ার গলায় দাগ ছিল বাবু। আর সেই শুয়োরের বাচ্চার সুটকেসের মইধ্যে আমার মাইয়ার একটা নুপুর ছিল। সুটকেসটা খুইলা যেদিন ঝাড়ছিলাম, সেইদিনই দেইখেছিলাম! অনেক বড় সুটকেস গো বাবু! মানুষের শরীর খুব সহজেই ঢুইকে যায় ভিতরে! গুটিসুটি মাইরা পল্টাইয়া রাখলে বাইরে থাইকা কিচ্ছু টের পাওন যায় না!’
আমি শান্তস্বরে বললাম,
‘তুমি ঢুকিয়েছিলে কখনো সুখরঞ্জন? সেই সুটকেসে...কোন মানুষ?’
সুখরঞ্জন স্থির এখনো। মাথা একবারের জন্যও ওপরে তোলেনি। নির্বিকার গলায় বললো,
‘ঢুকাইছি। সেই শুয়োররে ঢুকাইছি। তারপর...তারপর... ম্যালা রাইতে এইখানে নিয়া আসছি। আগে থাইকা গর্ত খুঁইড়া রাখছিলাম। ঐ সুটকেসটা শুদ্ধু শুয়োরটারে ঢুকাই দিছি ভিতরে!’
‘মেরেছিলে কিভাবে?’
‘খাবারে বিষ মিশায় দিছিলাম বাবু। ইঁদুর মারনের বিষ! এক প্যাকেট পুরাটাই দিয়া দিছিলাম। খাইয়া রক্তবমি কইরা চোখমুখ উল্টাইয়া ফ্যাললো। দুই তিন মিনিট জান ছিল হের পরে। কাটা মুরগির লাগান ছটরফটর করলো। পানির লাইগা চিক্কুর পাড়লো। আমি খাড়ায় খাড়ায় দ্যাখলাম! কইলজাডার মইধ্যে এমুন শান্তি লাগতাছিলা! ক্ষ্যামতার ফুটানি...মর্দাগিরির ফুটানি! দুই তিন মিনিটেই ফুরুৎ হইয়া গ্যালো!’
আমি পাথরের মতো নিশ্চুপ হয়ে রইলাম কয়েকটা মুহূর্ত। তারপরে জিজ্ঞেস করলাম,
‘কেউ সন্দেহ করেনি তোমাকে?’
‘নাহ্‌!’
‘আড়াই বছর পরে এসে মেয়ের খুনিকে চিনতে পারলে? আগে কেন পারোনি?’
‘শুয়োরটা একটা রাস্তার মেয়েছেলেরে ঘরে নিয়া আইতো। সেই মেয়েছেলের লগে একদিন খুব বচসা হইলো। মেয়েছেলেটা ওর কাছে টাকা পাইতো। ম্যালা টাকা। হেই টাকা দিয়োনের লাইগা চাপাচাপি করতাছিলা। ঐ শুয়োর দিবার চায়নি। তখন মাইয়াটা কইছিল...দেইখা নিব! আর হের পরদিনই শুয়োরটা আমারে দিয়া ঐ সুটকেসটা খুঁইজে রাখতে কইলো। ওপরের আটকানো লকারের মইধ্যে ছিল সুটকেসটা। আমি ভাবলাম, হয়ত কুথাও যাইবো। আমি তাই ওইটারে খুইলে ঝাইড়া রাখতে গেলাম। তখনই...আমি আমার মাইয়ার পায়ের নুপুরটা পাইলাম। বড় শখের নুপুর আছিল আমার মাইয়ার। আমি কিইনা দিছিলাম মেলা থিকা...মাইয়াটার কুনো সময় পা থিকা খুলেনি। মরার দিনটাতেই শুধু একটা নুপুর ওর পা থিকা খুইলা গ্যালো!’

সুখরঞ্জন থামলো। এতক্ষণে চোখ মেলে চাইলো আমার দিকে।
শুকনো খটখটে সেই চোখে অনুশোচনা, পাপবোধ, ভীতি...কিচ্ছু নাই। সেই জায়গায় আছে তীব্র অহংকার। অসহায় বিচারের বাণীকে সে নীরবে কাঁদতে দেয়নি। প্রকাশ্যে মুক্তি দিয়েছে। হয়ত সেই অহংকারই ঝলকাচ্ছে ওর চোখেমুখে।
সুখরঞ্জন আবার বললো,
‘আমাকে এট্টু সময় দিবেন বাবু? আমার বৌ টারে ওর বাপের বাড়ি পাঠায় দিতাম। বৌটার বাপ-মা দুইজনেই বাঁইচা আছে। ঐখানেই যাক। তারা মরি গেলে কিছু এট্টা গতি ভগবানেই করে দিবি!...চলেন বাবু!’
আমি কিছুটা যেন ঘোরের সাথে বললাম,
‘কোথায়?’
‘আমার বাড়িত চলেন। ঐখান থিকা আপনের থানায়। চিন্তা কইরেন না বাবু। আমি পালামু না! আমার কাম আমি শ্যাষ করছি। লুকাইয়া চুরাইয়া আর চলবার পারতাছিলাম না। এইবার জান ভইরা বাঁচুম!’
‘একটা কথা সুখরঞ্জন। আমাকে এসব কথা কেন বললে?’ মনের মধ্যে খচখচ করে চলা প্রশ্নটা করেই ফেললাম।
‘আপনেরে কইতে মন চাইলো বাবু। সক্কলের কাছে কি বিচার চাওন যায় ...কন? তয় আমার মাইয়ার বিচার আর কারো কাছেই চাই না আমি। ঐডা আমি নিজেই আদায় কইরা নিছি!’ তারপর একটু চুপ করে থেকে আবার বললো,
‘কন দ্যাখি বাবু...ঐদিন আমার মাইয়ার পায়ের নুপুরটা খুইলা গ্যাছিলো ক্যান?’
‘কেন?’
‘আমার মাইয়া জানতো... ঐ আন্ধার রাইতের কথা কেউ ভাইঙ্গাচুইড়া বাইর করবার যাইবো না! তাই ভগবানের কাছে বিচার চাইয়া আদরের নুপুরটারেই ফালায় গ্যাছিলো। পাপীর পাপের চিহ্ন ছাইড়া গ্যাছিলো...য্যান ঝাড় বংশে বিনাশ করবার পারি! করছি বিনাশ! আর কারো উপরেই কুনোদিন মর্দাগিরি ফলাইবার পারবো না! ... এইবার চলেন বাবু...অন্ধকার হইয়া গ্যালো।’
সুখরঞ্জন দ্রুত পায়ে সামনে এগুতে থাকে। আমি পেরে উঠি না ওর সাথে। আজ যেন ওর স্ফূর্তি আরো কয়েকগুণ বেড়েছে!

(সেদিন আমার ফেসবুক পেজের মেসেঞ্জারে এক ভাই এসে বললেন, 'আপা কেমন আছেন?' জানালেন তিনি নাকি আমাকে চেনেন। আমার লেখার পাঠক ছিলেন সামু ব্লগে। মনটা একটু তরল হলো। তাহলে তো ব্লগ কিছুমিছু হলেও দিয়েছে আমাকে! প্রাপ্তির অংকটা একেবারে শূণ্য নয় তবে!)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৯
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×