somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বঙ্গভঙ্গ : সেই ১৯০৫ থেকে শুরু, রদ করা গেল না গুরু-০১

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সেই ১৯০৫ থেকে শুরু:

বঙ্গভঙ্গ বাংলার ইতিহাসে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৯০৫ সালের ১৬ই অক্টোবর ভারতের ভাইসরয় লর্ড কার্জনের আদেশে ১ম বঙ্গভঙ্গ সম্পন্ন হয়। বাংলা বিভক্ত করে ফেলার ধারনাটি অবশ্য কার্জন থেকে শুরু হয়নি। ১৭৬৫ সালের পর থেকেই বিহার ও উড়িষ্যা বাংলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ফলে সরকারী প্রশাসনিক এলাকা হিসেবে বাংলা অতিরিক্ত বড় হয়ে যায় এবং বৃটিশ সরকারের পক্ষে এটির সুষ্ঠু শাসনক্রিয়া দুরূহ হয়ে পড়ে। বঙ্গভঙ্গের সূত্রপাত এখান থেকেই।

কিন্তু ১৯১১ সালে, প্রচণ্ড গণআন্দোলনের ফলশ্রুতিতে বঙ্গভঙ্গ রহিত হয়।

রদ করা গেল না শেষ পর্যন্ত:

দ্বিতীয়বার বঙ্গভঙ্গ হয় ১৯৪৭ সালে। এর ফলে পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানে এবং পশ্চিমবঙ্গ ভারতে যুক্ত হয়। পশ্চম বঙ্গ এখনও ভারতের সাথে যুক্ত থাকলেও, পূর্ববঙ্গ পরবর্তীকালে পাকিস্তানের কাছ থেকে এক রক্তক্ষয়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে ও বাংলাদেশ নামক একটি নতুন রাষ্ট্রের সৃষ্টি করে।

বঙ্গভঙ্গ:

১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ কার্যকর হলেও এর ইতিহাস আরেকটু আগের।

১৯০৩ সালে প্রথম বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাবসমূহ বিবেচনা করা হয়। তখন বঙ্গ হতে চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করা এবং ঢাকা ও ময়মনসিংহ জেলাদ্বয়কে আসাম প্রদেশে অন্তর্ভুক্ত করার একটি প্রস্তাবও ছিল। তেমনিভাবে ছোট নাগপুরকে মধ্যপ্রদেশের সঙ্গে আত্তিকরণেরও একটি প্রস্তাব ছিল। ১৯০৪ সালের জানুয়ারিতে সরকারীভাবে এই পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয় এবং ফেব্রুয়ারিতে লর্ড কার্জন বঙ্গের পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে এক সরকারি সফরের মাধ্যমে এই বিভক্তির ব্যাপারে জনমত যাচাইয়ের চেষ্টা করেন। তিনি বিভিন্ন জেলার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে এই বিভক্তির বিষয়ে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বক্তৃতা দেন।



নতুন প্রদেশটির নামকরণ করা হয় “পূর্ব বঙ্গ ও আসাম” যার রাজধানী হবে ঢাকা এবং অনুষঙ্গী সদর দফতর হবে চট্টগ্রাম। এর আয়তন হবে ১,০৬,৫৪০ বর্গ মাইল এবং জনসংখ্যা হবে ৩১ মিলিয়ন যাদের মধ্যে ১৮ মিলিয়ন মুসলিম ও ১২ মিলিয়ন হিন্দু। এর প্রশাসন একটি আইন পরিষদ ও দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি রাজস্ব বোর্ড নিয়ে গঠিত হবে এবং কলকাতা হাইকোর্টের এখতিয়ার বজায় থাকবে। সরকার নির্দেশ দেয় যে পূর্ব বঙ্গ ও আসামের পশ্চিম সীমানা স্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট থাকবে সাথেসাথে এর ভৌগোলিক, জাতিক, ভাষিক ও সামাজিক বৈশিষ্টাবলিও নির্দিষ্ট থাকবে। সরকার তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে ১৯শে জুলাই, ১৯০৫ সালে এবং বঙ্গভঙ্গ কার্যকর হয় একই বছরের ১৬ই অক্টোবর।

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্বয়ং লর্ড কার্জন ঢাকায় এসে মুসলমানদের বুঝান যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে মুসলমানদের জন্য ভালো হবে। পশ্চিম বঙ্গের অভিজাত ও শিক্ষিত মহল এই সিদ্ধান্তের বিরোদ্ধে প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। এসব প্রতিবাদের মুখেও অবশেষে ১৯০৫ সালে অক্টোবরে বাঙলা ভাগ কার্যকর করা হয়।

পূর্বঙ্গের অধিকাংশ মুসলমানই বঙ্গভঙ্গের পক্ষে অবস্থান নেন।

কারণ কি? হিন্দুদের তুলনায় পশ্চাদপদ মুসলমানরা মনে করেছিলো এতে তাদের সমূহ উন্নতি সম্ভব- এবং এ কথাটি প্রথৃম থেকে ব্রিটিশরা মুসলমানদের দিয়ে এসেছে। ১৯০৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা সফরে লর্ড কার্জন বলেন,
“বঙ্গভঙ্গ পূর্ববঙ্গের মুসলমানদের মধ্যে এমন এক নতুন ঐক্য আনবে যা মুসলমান শাসকদের আমলেও তাঁরা পাননি”।

পূর্ববঙ্গের উন্নয়নে ব্রিটিশদের উদ্যোগ:

বাস্তবিকই এসময় ব্রিটিশদের কিছু উদ্যোগ দেখা যায়। বঙ্গভঙ্গের ঠিক পরেই পাট চাষে কৃষকরা লাভবান হন। এবং পরীক্ষামূলকভাবে বর্গা বা আধিয়ারি আইন প্রচলিত হওয়ায় কৃষকরা জমিদারের খাস জমিতে বর্গাচাষি হিসাবে স্বীকৃতি পেতে লাগলেন। শুধু ঢাকা জেলাতেই ৭০ হাজার কৃষক খাসজমির প্রজা হিসাবে নিজেদের নাম তালিকাভুক্ত করতে পেরেছিলেন। (অথচ- এই ইংরেজ সরকারই একদিন চিরস্থায়ি বন্দোবস্তের মাধ্যমে- কৃষকদের জমি থেকে উতখাত করেছিলো!!), একে বঙ্গভঙ্গের সুফল মনে করে মুসলমান কৃষকরাও বঙ্গভঙ্গ সমর্থন করতে আরম্ভ করেন। পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের নতুন গভর্ণর স্যার ব্যামফিল্ড ফুলার মুসলমানদের উন্নতির জন্য বিশেষ নজর দেন, এতে কিছু পরিবর্তনও খুব তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে- যার মধ্যে মুসলমানদের শিক্ষা অন্যতম।

ব্রিটিশ সরকার এপর্বে নানাভাবে মুসলমানদের সুবিধা দিতে থাকে, নতুন প্রশাসনে মুসলমান ও হিন্দুর অনুপাত ২:১ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়। নবাব সলিমুল্লাহর অবদানও কম নয়- বঙ্গভঙ্গের পক্ষে মুসলমানদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে। বৃটিশ সরকারের একথা অজানা ছিলো না যে, পূর্ববঙ্গের অভিজাত মুসলমান সম্প্রদায় এবং মুসলমান তালুকদার-ধনী কৃষক গোষ্ঠীর ওপরে নবাব সলিমুল্লাহর যথেস্ট প্রভাব আছে। নবাব সলিমুল্লাহর মদতপুষ্ট প্রচারকরা প্রচার করতে থাকে যে, নতুন গঠিত হওয়া প্রদেশটিতে মুসলমান কৃষকদের কোন রাজস্ব দিতে হবে না এবং বৃটিশদের শেষ হয়ে ইসলামের পুনরুত্থান আসন্ন, যে ইসলামি শাসনের কর্ণধার হবেন নবাব সলিমুল্লাহ।

১৯০৫ সালের রাজনৈতিক ধাক্কায় বিশেষভাবে পূর্ববঙ্গ জেগে উঠে এবং ব্যস্ত হয়ে পরে মাধ্যমিক শিক্ষার সম্প্রসারনে। পরবর্তী পাঁচ বছরে এই এলাকায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় বৃদ্ধির শতকরা হার দাঁড়িয়েছিলো ৮২.৯ ভাগ।

রাজনৈতিক অস্থিরতা

এই ঘটনা এক প্রচণ্ড রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে। পূর্ব বঙ্গের মুসলিমদের এই ধারণা হয় যে নতুন প্রদেশের ফলে শিক্ষা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাদের সুযোগ বেড়ে যাবে। যদিও পশ্চিম বঙ্গের জনগণ এই বিভক্তি মেনে নিতে পারল না এবং প্রচুর পরিমাণে জাতীয়তাবাদী লেখা এই সময় প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৫ এ প্রবলভাবে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন, কলকাতার হিন্দু- মুসলমানদের মিলনের লক্ষে রাখী বন্ধনের আয়োজন করেছিলেন। ১৯০৬ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বঙ্গভঙ্গ রদ করার প্রস্তাবকদের জন্য এক মর্মস্পর্শী গান আমার সোনার বাংলা লেখেন, যা অনেক পরে, ১৯৭২ সালে, বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতে পরিণত হয়।



বঙ্গভঙ্গ-আইন বাতিল

অবশেষে পশ্চিম বঙ্গের তীব্র বিরোধিতার মুখে বঙ্গভঙ্গ আইন বাতিল করা হয়।

ব্রিটিশ-রাজ সপ্তম এডওয়ার্ড মৃত্যুবরণ করেছিলেন ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দের ৬ মে তে। তাঁর পুত্র পঞ্চম জর্জের অভিষেক হয় ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দের ২২ জুন। ৯ নভেম্বর, ভারতের উদ্দেশে পঞ্চম জর্জ রানি মেরি-সহ ইংলন্ড থেকে রওনা হন এবং ৭ ডিসেম্বর রাজকীয় শোভাযাত্রা সহকারে তিনি দিল্লির দরবারে পৌঁছান। ১২ ডিসেম্বর তিনি দিল্লির দরবারে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি ঘোষণা ছিলো―

১. পূর্বতন বাংলা ও পূর্ববঙ্গ-আসাম প্রদেশ থেকে যথাক্রমে বিহার ও আসামকে বিচ্ছিন্ন করে অখন্ড বাংলাপ্রদেশ গঠিত হবে।
২. বাংলা প্রদেশ প্রেসিডেন্সি স্তরে উন্নীত করে লেফটেন্যান্ট গভর্নরের স্থানে গভর্নরের শাসনাধীনে আনা হবে।
৩. কলকাতার পরিবর্তে দিল্লি হবে ভারতের রাজধানী।
এ-ঘোষণার দ্বারাই ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের বঙ্গভঙ্গের আইনটি বাতিল হয়ে যায়। মূলত হিন্দু বাঙালিরা এই আইন বাতিলের কারণে আনন্দিত হন। তাঁরা কলকাতায় ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের ৫ জানুয়ারি, পঞ্চম জর্জকে বিপুল সংবর্ধনা দেন। ১৯১২ সালের ২৫ জুন ভারত শাসন আইন পাশ হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নানা আনুসাঙ্গিক আলোচনা।

পূর্ববর্তী আলোচনা থেকে আমরা জেনছি, ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ করা হলে পূর্ববঙ্গের বুদ্ধিজীবিসহ সকল পেশাজীবির সাধারণ- সমাজের প্রায় সবাই খুশি হয়েছিল এবং এতে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবি সমাজ বঙ্গভঙ্গকে বাঙলাকে দ্বিখন্ডিত করার ব্রিটিশ অপপ্রয়াস হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। পশ্চিম বঙ্গের বিশেষ করে সেই সব জমিদার যাদের জমিদারী ছিল পূর্ববঙ্গে তারা বঙ্গভঙ্গের ফলে নিজেদের ক্ষতিগ্রস্থ হিসাবে দেখে এর তীব্র বিরোধিতা করেছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বঙ্গভঙ্গ রদ আন্দোলনের নেতৃত্বের ভুমিকায় ছিলেন, এসময় তিনি প্রচুর জাতীয়তাবাদী লেখা লিখেন, গান রচনা করে সুরারোপ করে দেন যা বঙ্গভঙ্গ রদে বিশাল ভুমিকা রাখে। আমাদের জাতীয় সঙ্গীতটি এ সময়ে রচিত এবং ব্যাপক আলোড়িত।

১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়। ফলশ্রুতিতে, পূর্ববঙ্গে চরম হতাশা দেখা দেয়। এই সময়টাতে পূর্ব ও পশ্চিম বঙ্গের বিরোধ অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে সুস্পষ্ট হয়ে উঠে। কিছুক্ষেত্রে পূর্ব-পশ্চিমের এই দ্বন্দ্বটি ধর্মীয় তথা হিন্দু-মুসলমান দ্বন্দ্বের চেহারা ধারণ করে।

বঙ্গভঙ্গ রদ হবার পর পূর্ববঙ্গের মানুষরা নিজেদের নিগৃহীত অবস্থাটি খুব ভালোভাবে অনুভব করতে পারে। ১৯১২ সালের ৩১ জানুয়ারী ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ঢাকায় এলে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল পূর্ববঙ্গের মুসলমানদের জন্য এ অঞ্চলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবী জানান। লর্ড হার্ডিঞ্জ এ দাবীর যৌক্তিকতা অনুভব করে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন।

সরকারিভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেবার পর পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবিরা এর বিরোধিতা করা শুরু করেন। সংবাদপত্র ও রাজনৈতিক মঞ্চ এই বিরোধিতা প্রকাশের প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই দ্বন্দ্ব হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বের চেহারা ধারণ করে।

এই সময় পশ্চিমবঙ্গীয় বুদ্ধিজীবিরা বেশ কিছু সাম্প্রদায়িক বক্তব্যও দেয়া শুরু করেন।

গুরুদাস বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন- “পূর্ববঙ্গের মানুষরা মুসলমান ও কৃষক; ওরা বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে কি করবে? বিশ্ববিদ্যালয় কি কৃষি কাজ করার স্থান?”
সে সময় এমনও রবও উঠে, “মুসলমানদের জন্য আর কত বিশ্ববিদ্যালয় হবে?”
এর জবাবে, পূর্ববঙ্গের বুদ্ধিজীবি ও প্রতিনিধিত্বশীলরা এবং ব্রিটিশরাজ এটা নিশ্চিত করেছিলেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র মুসলমানদের জন্য নয়, বরং পূর্ববঙ্গের পিছিয়ে পড়া সকল সম্প্রদায় ও জাতির মানুষদের এগিয়ে নেবার জন্য স্থাপন করা হচ্ছে, সকলে এখানে পড়াশুনোর সুযোগ পাবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করেছিলেন, এমন আরেকজন পশ্চিমবঙ্গীয় বুদ্ধিজীবি হলেন কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। তিনি রীতিমত আদাজল খেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতায় নেমেছিলেন। পত্রিকায় লেখালেখি, বক্তৃতা, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করা সহ হেন প্রচেষ্টা নেই, যা উনি করেননি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে দুই বাঙলার বিরোধ বাড়তে থাকে। বিরোধের চেহারা ক্রমশ ধর্ম, ভাষাগত ও জীবনাচরণের পার্থক্যের দিকে রূপান্তরিত হতে থাকে। পশ্চিম ও পূর্ববঙ্গের বিরোধ তিক্ততার সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে যায়।

অবশ্য এটা অস্বীকার করার উচিত হবে না যে, পশ্চিমবঙ্গের এই বিরোধিতা শুধুমাত্র এক-বাঙলা টিকিয়ে রাখার জন্য ছিল না, এক-বাঙলা তত্ত্বের আড়ালে লুকিয়ে ছিল হিন্দু-মুসলমানের ধর্মীয় দ্বন্দ্ব, বাঙলা ভাষার আঞ্চলিকতার পার্থক্য ও ব্যবসায়-বাণিজ্য-শিক্ষা-সাহিত্য-সরকারি চাকুরিতে পুবের চেয়ে পশ্চিমের অগ্রসরতার কারনে তাদের নাক-উঁচা মনোভাব।

এইসব বাধার মধ্যেও ১৯২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী ভারতীয় আইন সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় এবং ১৮ মার্চ সর্বসম্মতিক্রমে এ্যাক্ট – এ পরিণত হয়। ১৯২০ সালের ২৩ মার্চ গভর্নর জেনারেল কর্তৃক “দি ইউনিভার্সিটি এ্যাক্ট” অনুমোদন লাভ করে। এর আওতায় ঢাকায় একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়। এই আইনের বলে ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানচর্চায় সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ দেশের ভাষা আন্দোলন, স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা বিশ্ববাসী শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। শুধু শিক্ষা, গবেষণা, ক্রীড়া, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনে এই বিশ্ববিদ্যালয় সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে। শিক্ষা বিস্তারের প্রায় সকল শাখায় উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পদচারণা এবং উজ্জ্বল উপস্থিতি প্রনিধানযোগ্য।



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রবীন্দ্রনাথ

বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতায় নেতৃত্ব দেয়ার কারণে আর পশ্চিম বঙ্গের বুদ্ধিজীবিদের বিরোধিতার কারণে আমরা ধারনা করতে পারি যে রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করেছিলেন।
রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোর বিরোধী ছিলেন বলে একটা কথা বেশ কিছুকাল ধরে বাংলাদেশে মুখে মুখে চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ ধরনের একটি অভিযোগ সম্প্রতি সংবাদপত্রসহ বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়েছে। অভিযোগকারীদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদক। কিছু কিছু কলামলেখকও নানা সময়ে সংবাদপত্রে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করছেন। ২০০০ সনে আহমদ পাবলিশিং হাউস থেকে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিকতা এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা’ নামে একটি বইয়ে মেজর জেনারেল (অব.) এম এ মতিন, বীরপ্রতীক, পিএসসি (তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা) একটি তথ্য জানান যে, ”১৯১২ সালের ২৮শে মার্চ কলিকাতা গড়ের মাঠে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিবাদে এক বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয়।” তিনি অভিযোগ করেন যে, রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন।

দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় ১ জুলাই ২০১১ সংখ্যায় আলী নিয়ামত লিখেছেন– ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঘোরতর বিরোধী ছিলেন আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী, ড. রাসবিহারী ঘোষ, কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ।

নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীর গত ২৫ বৈশাখ এনটিভিতে একই অভিযোগ করে বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন।

আমাদের অনুসন্ধানে রবীন্দ্ররচনাবলীর বিশাল আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধীতা করে কোন ধরনের লেখা পাইনি। ১৯১২ সালের ২৮ মার্চ ও রকম একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল বটে, কিন্তু তাতে রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতি ছিল অসম্ভব, কেননা সেদিন তিনি কলকাতাতেই ছিলেন না। ১৯১২ সালের ১৯ মার্চ সিটি অব প্যারিস জাহাজযোগে রবীন্দ্রনাথের বিলাতযাত্রার কথা ছিল। তাঁর সফরসঙ্গী ডাক্তার দ্বিজেন্দ্রনাথ মিত্র জাহাজে উঠে পড়েছিলেন, কবির মালপত্রও তাতে তোলা হয়ে গিয়েছিল; কিন্তু আকস্মিকভাবে ওইদিন সকালে রবীন্দ্রনাথ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে মাদ্রাজ থেকে তাঁর মালপত্র ফিরিয়ে আনা হয়। কলকাতায় কয়েক দিন বিশ্রাম করে ২৪ মার্চ রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে চলে আসেন এবং ২৮ মার্চ থেকে ১২ এপ্রিলের মধ্যে সেখানে বসে ১৮টি গান ও কবিতা রচনা করেন, যা পরে গীতিমাল্য (১৯১৪) গ্রন্থে সংকলিত হয়। গীতিমাল্য-এর ৪ সংখ্যক কবিতা ‘স্থিরনয়নে তাকিয়ে আছি’ যে শিলাইদহে ১৫ চৈত্র ১৩১৮ তারিখ (২৮ মার্চ ১৯১২) রচিত হয়, তা ওই গ্রন্থে কবিতাটির নিচেই লেখা আছে। উল্লেখযোগ্য যে, ইংরেজি গীতাঞ্জলির (১৯১২) সূচনাও হয় এ সময়ে।

তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেই যে রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকলীন সময়ে বিরোধিতা করেছিলেন তবু বলতেই হয় প্রতিষ্ঠার পর রবীন্দ্রনাথ তার অবস্থার পরিবর্তন করেছিলেন এবং এদেশের মানুস ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাত্র ছয় বছরের মাথায় ১৯২৬ সালে তার ঢাকা সফরে যে উষ্ণ সংম্বর্ধনা দেয় তাতে একথা বলা যায় যে, রবীন্দ্রনাথকে বাংলাদেশ গ্রহন করেছিল একান্ত নিজের লোক হিসাবে।



(১৯৩৮ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্রদের একাংশ।
চেয়ারে উপবিষ্ট: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্। দণ্ডায়মান: (বাঁদিক থেকে) মথুরেন্দ্রনাথ নন্দী, মুহম্মদ আবদুল হাই। নিচে উপবিষ্ট: (বাঁদিক থেকে) আই এন চৌধুরী, আহমদ হোসেন, বিশ্বরঞ্জন ভাদুড়ী
ছবি: তোমার সৃষ্টির পথ গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত )

১৯২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢাকা আসেন এবং কার্জন হলে ১০ ফেব্রুয়ারি দি মিনিং অফ আর্ট এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি দি বিগ এ্যান্ড দি কমপ্লেক্স বিষয়ে বক্তৃতা প্রদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম তিনটি হল থেকে রবীন্দ্রনাথকে সংবর্ধণা জানানোর আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে রবীন্দ্রনাথ কেবন মুসলিম হলের সংবর্ধণা সভায় যোগদান করতে পেরেছিলেন।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(একদম ডানে অধ্যাপক রমেশচন্দ্র মজুমদার)

রবীন্দ্রনাথকে প্রথম অভিনন্দনটি জ্ঞাপন করা হয়েছিল ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯২৬ তারিখের বিকেল চারটেয় মিউনিসিপ্যালিটি এবং পিপলস এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ঢাকার নর্থব্রুক হলে। সমস্ত হলটি পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল এবং বাইরেও ঘন জমায়েত হয়েছিল। ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটির কমিশনারগণ মানপত্রে লেখেন—
হে জাতীয়তার দার্শনিক প্রচারক। হিন্দু-মুসলমানের স্থায়ী মিলন কেবল সাহিত্য ও শিক্ষার ভিতর দিয়াই সম্ভবপর—বর্তমান বিরোধ ও অনৈক্য সমাধানের এই গুহ্য মন্ত্র তুমি বহু পূর্ব হইতেই প্রচার করিয়া আসিতেছ। …জাতির প্রতি অত্যাচারে নিজকে লাঞ্ছিত মনে করিয়া তুমি রাজদত্ত দুর্লভ সম্মান ঘৃণায় পরিত্যাগ করিয়াছ; দেশবাসীর নিগৃহ হেতু কানাডার নিমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করিয়া আত্মসম্মানবোধ ও দেশনেতার জলন্ত দৃষ্টান্ত প্রদর্শন করিয়াছ।

১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল পরিদর্শন করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তারপর দুপুর আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্জন হলে উপস্থিত হন। এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যার্থী সঙ্ঘ তাঁকে একটি কাব্যাভিনন্দন প্রদান করে।

এখানেই বিকেলে মুসলিম হলে ছাত্র ইউনিয়ন সংবর্ধনার বিপুল আয়োজন করে। ছাত্রসংসদ কবিকে আজীবন সদস্যপদরূপে গ্রহণ করে। মুসলিম হলে সংবর্ধনা সম্পর্কে আবুল ফজলের স্মৃতিচারণ- ‘কবি যখন ঢুকলেন……… হল ঘরের প্রবেশ পথ থেকেই কবির উপর শুরু হয়েছে পুষ্পবৃষ্টি।’ মুসলিম হল ছাত্রবৃন্দ মানপত্রে বলেন যে, বিধাতা বড় দয়া করিয়া, প্রাণহীন ভারতের দুর্দিনে তোমার মত বিরাট-প্রাণ মহাপুরুষকে দান করিয়োছেন। তোমার প্রাণ মুক্ত, বিশ্বময়। সেখানে হিন্দু নাই, মুসলমান নাই, খ্রিস্টান নাই—আছে মানুষ। …একদিকে তুমি মানুষকে নানা কর্মধারায় জাগ্রত করিয়াছ, অন্যদিকে সেই অসীম স্রষ্টার দিকে মনকে আকৃষ্ট করিয়াছ। ‘কর্ম ও ধ্যান’ উভয়ের সামঞ্জস্য সাধনই মানব জীবনের শ্রেষ্ঠ আদর্শ। ইসলামের এই সার বার্ত্তা তোমার ছন্দে প্রতিধ্বনিত হইয়াছে।


এ প্রসঙ্গে শেষ একটি কথা। ১৯২৬ সালে রবীন্দ্রনাথ ঢাকা সফরে এসে যেভাবে প্রথমে ঢাকার নবাবের আতিথ্যলাভ করেন এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবর্ধিত হন, তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে তীব্র ও দীর্ঘমেয়াদী বিরোধিতা করে থাকলে তা সম্ভব হতো না বলেই মনে করি। আজ এক শতাব্দী পরে যে বিষয় আমাদের আলোড়িত করছে, মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে সেকালের মানুষের স্মৃতি থেকে তা মুছে যায় কীভাবে।

বাঙালি মুসলমান সমাজে মুক্ত বুদ্ধির চর্চা তথা বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা মুসলিম হল থেকেই এবং তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই। মুসলিম হল ইউনিয়নের কক্ষে ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে এক সভায় ১৯২৫ সালের ১৯ জ়ানুয়ারি মুসলিম সাহিত্য সমাজ গঠিত হয়। এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা ছিলেন অধ্যাপক আবুল হোসেন, তার সঙ্গে ছিলেন আবদুল কাদির, কাজী আবদুল ওদুদ, কাজী আনোয়ারুল কাদির, শামসুল হুদা, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল প্রমুখ শিক্ষক ও ছাত্র। এ প্রতিষ্ঠানের মূল মন্ত্র ছিল ‘”বুদ্ধির মুক্তি”। মুসলিম সাহিত্য সমাজের মুখপাত্র ছিল শিখা নামক বার্ষিকী। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম সাহিত্য সমাজের প্রথম বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ১৯২৭ সালে। ১৯৩৬ সালে কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মুসলিম সাহিত্য সমাজের দশম ও শেষ অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন।

২য় পর্বে যা থাকবে...

রদ করা গেল না শেষ পর্যন্ত:
দ্বিতীয়বার বঙ্গভঙ্গ হয় ১৯৪৭ সালে। এর ফলে পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানে এবং পশ্চিমবঙ্গ ভারতে যুক্ত হয়। পশ্চিম বঙ্গ এখনও ভারতের সাথে যুক্ত থাকলেও, পূর্ববঙ্গ পরবর্তীকালে পাকিস্তানের কাছ থেকে এক রক্তক্ষয়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে ও বাংলাদেশ নামক একটি নতুন রাষ্ট্রের সৃষ্টি করে।

সূত্রঃ
১। বঙ্গভঙ্গ ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি- বদরুদ্দীন উমর,
২। বঙ্গভঙ্গ প্রতিরোধ আন্দোলন- শতবর্ষ স্মারক সংগ্রহ,
৩। উনিশ শতকে বাংলাদেশের সংবাদ-সাময়িকপত্র (অষ্টম খণ্ড)- মুনতাসীর মামুন সংকলিত,
৪। Swadeshi Movement in Bengal- Sumit Sarkar,
৫। উপনিবেশপূর্ব বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতি – গোলাম রব্বানী,
৬। Bengal divided- জয়া চ্যাটার্জি
৭। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীর শ্রদ্ধাঞ্জলী: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রবীন্দ্রনাথ -বিশ্বজিৎ ঘোষ
৮। .http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2013-05-03/news/349272.
৯। Click This Link.
১০। https://blog.mukto-mona.com/2014/07/21/42081/.
১১। Click This Link.
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৩০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×