somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোট ছোট কথামালা-৩

২৭ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
এক.



সিঙ্গাপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের একটা অর্কিডের নামকরণ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে।

১২ মার্চ সকালে অর্কিডটির নাম উন্মোচন করা হয়,
যার আনুষ্ঠানিক নাম দেনদ্রোবিয়াম শেখ হাসিনা অর্কিড ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য বলে স্বীকৃত এই বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন পরিবারের কয়েকজন সদস্য ও কয়েকজন সফরসঙ্গীকে নিয়ে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য এ এক বিরল সম্মান।

গাঢ় বেগুনী রঙের শেখ হাসিনা” অর্কিডটা সম্পর্কে গবেষকরা বলছেন এ অর্কিডটা দৃঢ়তা ও কোমলতার সঠিক মেলবন্ধন, এ অর্কিডটি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রকৃতিকে সঠিকভাবে প্রকাশ করে।

বাংলাদেশেও যে এখন ফুলের চাষ বেড়েছে- সে কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “ফুল সৌন্দর্যের প্রতীক। ব্যবসা আর সৌন্দর্য… ভালবাসা নিবেদন সব ক্ষেত্রেই ফুল ব্যবহার করা হয়।”

দুই.



বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে এশিয়ার নেলসন ম্যান্ডেলা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার মাহাথির মোহাম্মদ। তিনি বলেন, সাউথ আফ্রিকার কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলাকে তৎকালীন স্বৈরাচারী সরকার যুগের পর যুগ নির্বাসন এবং কারাবন্দী করে রাখায় তিনি যেভাবে বিশ্বনেতা হয়ে উঠেছিলেন, ঠিক তেমনই বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া কারাদণ্ডের কারণে তিনিও অচিরেই বিশ্বনেতা হিসেবে আবির্ভূত হবেন।

মালয়েশিয়ার প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ‘দ্য মালয় মেইল’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাহাথির মোহাম্মদ এসব কথা বলেন।

মাহাথির বলেন, ‘আমি সাধারণত আমাদের প্রতিবেশি দেশ বা বাংলাদেশের মতো বন্ধুভাবাপন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করি না। কিন্তু আমি দেখছি, বাংলাদেশে রাজনীতি বেশি, উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের দিকে মনোযোগ কম। এখানকার সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রী এখন কারাগারে আছেন। এমনকি তিনি জামিন পর্যন্ত পাচ্ছেন না। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ন্যায় নাকি অন্যায় তা বিবেকবান আদালতের ওপরই ছেড়ে দিতে চাই।’

https://www.sheershakhobor.com/special-column/2018/03/14/খালেদা-জিয়া-এশিয়ার-ম্যান/. এই সূত্র থেকে সংবাদটি পরবর্তীকালে ফেক নিউজ হিসাবে প্রমানিত হয়।

তিন.


. ২০০৮-এ নেলসন ম্যান্ডেলা
নেলসন রোলিহ্লাহ্লা ম্যান্ডেলা (জোজা উচ্চারণ: [xoˈliːɬaɬa manˈdeːla]; জন্ম: জুলাই ১৮, ১৯১৮ – ডিসেম্বর ৫, ২০১৩)[২] ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে ম্যান্ডেলা আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সশস্ত্র সংগঠন উমখন্তো উই সিযওয়ের নেতা হিসাবে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকার গ্রেপ্তার করে ও অন্তর্ঘাতসহ নানা অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ম্যান্ডেলা ২৭ বছর কারাবাস করেন। এর অধিকাংশ সময়ই তিনি ছিলেন রবেন দ্বীপে।



রবেন দ্বীপে ম্যান্ডেলার কারাকক্ষ। এখানেই বন্দী ছিলেন দীর্ঘদিন।

১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি কারামুক্ত হন। এর পর তিনি তাঁর দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশ নেন। এর ফলশ্রুতিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান ঘটে এবং সব বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।


চার.

ত্রিপুরায় বিধান সভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার মাত্র আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যেই (ভোটের ফল ঘোষণা 3.3.2018) বিজয়ী বিজেপি দলের কর্মী ও সমর্থকেরা লেনিনের একটি মূর্তি ভেঙে দিল বুলডোজার দিয়ে। পূর্ণায়ব এই মূর্তিটি ত্রিপুরার বেলোনিয়া শহরের কলেজ স্কোয়ারে বসানো ছিল।



ঠিক সতেরো বৎসর আগে, 2001 খ্রিষ্টাব্দে এই মার্চ মাসে আফগানিস্তানের বমিয়ানের বুদ্ধমূর্তিগুলি তালিবানরা ধ্বংস করেছিল । মূর্তিগুলি ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় পৃথিবীর বহু দেশ নিষেধ করে। কিন্তু কারও কথা তারা শোনেনি। এমনকি ওরগেনাইজেশন ওব ইসলামিক কনফারেন্স এর চুয়ান্ন দেশের প্রতিনিধিরা একটি সভায় মূর্তি ধ্বংসের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়। সৌদি আরবের মতো কট্টর ধর্মপন্থী দেশও এই কাজকে বর্বোরচিত বলে আখ্যা দেয়। তালিবানদের দ্বারা ধ্বংসের জন্যে চিহ্নিত সমস্ত ভাস্কর্য ভারতে স্থানান্তরের আবেদন জানায় তৎকালীন ভারত সরকার। কিন্তু সে অনুরোধ তালিবান সরকার ফিরিয়ে দেয়। সেই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। 2001 খ্রিষ্টাব্দে 2 মার্চ থেকে পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ ধরে ডিনামাইট ও অন্যান্য বিস্ফোরক দিয়ে মূর্তিগুলি ধ্বংস করা হয়। তালিবানদের যুক্তি ছিল মূর্তি-সংস্কৃতি ইসলাম বিরোধী। মূর্তি – ভাস্কর্য এবং মূর্তি পূজার মধ্যে তফাত সারা বিশ্ব তাদের বোঝাতে পারেনি। ভাস্কর্য ও স্থাপত্য যে মানবেতিহাসের অমূল্য সাক্ষী সে শিক্ষা গ্রহণ না করে কেবল ধ্বংস করার ইতিহাস তৈরি করে গেল তালিবানরা।

তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী যে দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, যিনি বিদেশের মাটিতে মূর্তি রক্ষা করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন সেই দলের কর্মী সমর্থকরা আপন দেশে মূর্তি ভাঙ্গার নজির সৃষ্টি করলো।

পাঁচ.

ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না।
ক্ষমতা, প্রভাবশালী থাকার সময় অনেক চাটুকারের দেখা মিললেও দু:সময়ে ঐতিহাসিক চিহ্ন মুছে যেতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:৩৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×