somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কিংকর্তব্যবিমূঢ়-২০৯৩
স্বপ্ন আর বাস্তবতার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান। জন্ম থেকৈই নিজেকে ঘৃনা করি। জিবনের সাথে লড়াই করতে করতে যখন হাপিয়ে উঠি, তখন নিজেকেই নিজে প্রবোধ দেই। বিরামহীন বিবেকের দংশন আর নিয়তির আপোসহীন প্রহার মন-প্রান বিষিয়ে তোলে।

মনস্তাত্ত্বিক রচনা

০৮ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেখতে দেখতে কতগুলো বছর পার হয়ে গেল। শৈশব, কৈশর পেরিয়ে যৌবনে পা দিলাম। কর্মের আধিক্যে মন নিজেকে বিশিষ্ট ভাবতে শুরু করেছে। মাঝে মাঝে বিহ্বলের ন্যায় বসে ভাবি, প্রাকৃতিক নিয়মে মানুষ কত তাড়াতাড়ি বদলে যায়। সত্যি বলতে, আমার বাহ্যিক দিকটাই শুধু পরিবর্তিত হয়েছে। অভ্যন্তরটা এখনও ছেলেবৈলায় পড়ে আছে। প্রত্যেক মানুষের জীবনে ছেলেবেলাটা উচ্ছসিত, রোমাঞ্চকরও আনন্দময়। জীবনের এই অধ্যায়টা সবার কাছেই বড় মধুময়। ছেলেবেলায় সবকিছুতেই একটা অজানা আনন্দ বিরাজ করে। কিছু পাবার বা হারাবার ভাবনা থাকে না। ঠিক-ভুল বিচার করার ইচ্ছাও থাকে না। শুধু সিমাবদ্ধতা থাকে। তবে, সিমাবদ্ধতার গন্ডি পেরিয়ে ছোট মন আনন্দের বীজ বুনে। সে তাই করে যাতে তার অবুজ মন আন্দ পায়। কেউ বাধা দিলে শোনে না,রুখেও দাড়ায় না,শুধু অশ্রুসিক্ত হয়ে মনের ভাব প্রকাশ করতে চায়। তবে, সে কান্নায় কোন দু:খ থাকে না, হতাশার লেশমাত্রও থাকে না। শুধু অন্যের উপর প্রভাব বিস্তারের ক্ষুদ্র প্রয়াস থাকে। বাল্যকালে ছোট মন নিজেকে রাজা বলে মনে করে। নিজের রাজ্যে নিজেই রাজা, প্রজাবিহীন রাজা, সন্যৈ-সামন্তহীন রাজা।


সবার জিবনেই বাল্যকালটা সৃতির অনেকটা জুড়ে থাকে। আমার সৃতিতেও বাল্যকাল রামধনুর সাত রঙে রঞ্জিত হয়ে অক্ষয় হয়ে আছে। ভাবি, আবার যদি বাল্যকালে ফিরে যেতে পারতাম, অনেক সুখ পেতাম । সামাজিক দায়বদ্ধতা ছেড়ে বাচতে পারতাম। মনকে সুখের সাগরে ভাসিয়ে আপন মনে গান গাইতাম। কিন্তু, তাকি সম্ভব? সৃষ্টিকর্তা যে নিয়মের শিকলে মানুষকে বেধেছেন তা থেকে মুক্তিলাভ করা অলীক কল্পনা মাত্র। শিশু, কিশোর, যৌবন, বার্ধক্য এ চারটি ধাপ প্রত্যেক মানুষের জিবনে মৌলিক ও অবশ্যম্ভবী। এটা চিরন্তন সত্য। আজ আমার চোখে স্বপ্ন আছে, পাবার বা হারাবার ভয় আছে, তবে ছেলেবেলার সেই উচ্ছসিত আনন্দ আজ আর খুজে পাই না।অল্প খুশিতে মন আর আনন্দে নেচে উঠে না। তাই বলে আমার মন যে খুশির ছোয়া পায় না এমন নয়।তবে বাল্যকালের সেই হাসিঝরা আনন্দের তুলনায় নির্জীব, শুষ্ক ও ম্লান বলে মনে হয়।



মানুষ আস্তে আস্তে বেড়ে উঠে। ক্রমান্বয়ে, তার দেহ-মন, সুখ-দু:খের প্রকৃতি, শিক্ষা, জ্ঞান,অভিজ্ঞতা প্রভৃতি সব বিষয়ের পরিবর্তন ঘটে। আজ শরীরে শক্তি এসেছে, মনে সাহস বেড়েছে, চোখে স্বপ্ন আছে। শুধু ছেলেবেলার সেই সিগ্নতা আর পবিত্রতা নেই। অন্যায়ের বিষ্পবাষ্পে মন আজ কলুষিত হয়েছে। চোখের সামনে আবেগের পর্দা খুলে গিয়ে বাস্তব কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে ধরা দিয়েছে। আমি বাস্তবকে মেনে নিয়েছি। আর যত চরমভাবেই এটা সামনে আসুক না কেন, মানতে পিছপা হব না। প্রকৃতপক্ষে, যে কোন অবস্থাতেই পিছপা হবার নাম বোকামি ছাড়া আর কিছু নায়। প্রবল উদ্যমের সাথে জিবনকে আকড়ে ধরার মধ্যেই প্রকৃত সার্থকতা নিহিত। সুখ-দু:থ মানুষের জিবনের দুটি মৌলিক অংশ। একটির সমাপ্তি হলে অন্যটির শুরু হয়।প্রত্যেকটি মানুষ জিবনে দু:খের চেয়ে সুখের ভাগ অনেক বেশি। তবে সে সুখটা মনে রাখে না। দু:খটাকে আকড়ে ধরে। এজন্য অনেকের জিবন বিষাদময় হয়ে উঠে। আমি অবশ্য সুখ-দু:খের মাঝামাঝি অবস্হানে মনকে আটকে রাখার চেষ্টা করি।জানিনা কতটা পারি, তবে চেস্টা করি।



কখনো সুখের ঝর্ণাধারায় মনকে ভাসিয়ে দেই না।আবার, বিষাদময়তায় হৃদয়কে আচ্ছন্ন করি না। সুখ এলে তাকে নিরবে উপভোগ করি আর দু:খ এলে তাকে হাসিমুখে বরণ করে নেই। আমি বিশ্বাস করি দু:খ হল অনেকটা জোকের মত, ভয় না পেয়ে আপোস করলে সহজে ছাড়ানো যায়; টানাটানি করলে আরও বেশি আটকে থাকে। তদ্রুপ, দু:খটাকে মেনে নিতে হয়, নাহলে এটা হৃদয়কে জ্বালিয়ে-পুরিয়ে ভষ্ম করে ফেলে।আসলে, মানুষ তাই পায় যা তার জন্য সর্বোত্তম। এ কথাটা মনে প্রানে বিশ্বাস করলেই দু:খকে ছুটি দেয়া যায়। এই নিতী অবলম্বন করেই একুশটা বছর পার করেছি। আমার বয়স তেইশ ছুইছুই। অবসরে নিজেকে নিয়ে ভাবি। সৃতির সাগরে সাতার কাটি।ছোট ছোট স্বপ্ন দেখি, মনের মাধুরি মেশানো রং দিয়ে স্বপ্নকে রঙিন করি।চাওয়া-পাওয়ার হিসাব করি না, পাবার বা হারাবার ভয়ও করি না। জোয়ার এলে দূরদিগন্তে ভেসে যাই আবার ভাটাতে ফিরে আসি। আমি বিশ্বাস করি জিবন নামের চাকাটা সর্বদা সচল রাখতে হয়। কেননা জিবনের গতিশীলতা বন্ধ হলে দেহ ও মন হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। তখন মন বাস্তব থেকে সরে যায় এবং ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৩০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×