"ইসলামের পথ কুসুমাস্তির্ন নয়" -একথা শুনে যাদের অধরের সীমারেখা প্রশস্ত হয়, তারাই যুগে যুগে আবু জাহল, উৎবা, শাইবার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। অন্যদিকে এ চিরন্তন কথাটি যাদের প্রেরণা উৎস, যাদের ঐতিহ্য, যাদের ইতিহাস, যাদের জন্য একথা আল্লাহ্র পথে চলার আলোকবর্তিকা; তারাই আল্লাহ্র ঘোষিত সরল পথের অনুসারী; যদি তারা পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করে আল্লাহ্র দেয়া কিতাবের এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঠিক সুন্নাহর। বাংলাদেশেও ইসলাম এবং ইসলামের রক্ত পিচ্ছিল পথের সংগ্রামী পথিকরা কালের বিভিন্ন বাঁকে বাঁকেই রেখে গেছেন তাদের পরীক্ষার ফলাফল, অনাগত যাত্রীদের জন্য দিকনির্দেশনা এবং আল্লাহ্র পথের প্রতিজন সৈনিকের ছোট্ট বুক জুড়ে বপন করে গেছেন এক আকাশের প্রেরণা। মুসলিম তো অনেকেই, কিন্তু আল্লাহ্র পথে চলার শপথ দীপ্ত পথিকেরা সর্বকালেই হয়ে থাকেন তাদের মধ্য থেকে একটা বিশেষ অংশ। যারা আজো আলজেরিয়া, চেচনিয়া, দাগেস্তান, আফগানিস্তান, ইরাক, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, মায়ানমার, কাশ্মীর এবং বাংলাদেশসহ এই সবুজ গ্রহের আনাচে-কানাচে আল্লাহ্র দ্বীনের ঝান্ডাকে সমুন্নত রাখতে অর্থ, শ্রম, রক্ত আর জীবনের মত মহামূল্যবান 'উপহার' পেশ করে চলেছেন আল্লাহ্র তরে, পৃথিবীর সম্মুখে!
অনেক মূল্য দিয়ে অর্জন করা ইসলামের এই সুশীতল ছায়াতলকে যতটা ত্যাগের বিনিময়ে প্রশস্ত করেছেন যুগের মুজাহিদ বাহিনী, আল্লাহ্র সৈনিকগণ; তার চেয়ে লক্ষ-কোটিগুণ ক্ষীণ এবং হীন স্বার্থের লোভে তাকে নিয়ে ব্যবসা করেছে যুগের গাদ্দার মুনাফেক বৈশিষ্ট্যধারী জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্থানের অধিবাসীরা (মৃতু্যর পূর্বে যাদের তাওবাহ করার সৌভাগ্য হয়েছে এবং তা আল্লাহ্র নিকট কবূল হয়েছে, তারা ছাড়া)। আমাদের প্রিয় জন্মভূমিতেও আমরা দেখেছি মীর জাফরকে, তৎপরবর্তীকালের বিভিন্ন বাঁকে বাঁকে দেখেছি তার উত্তরসূরীদেরকে। আজো দেখে আসছি স্বাধীনতার অর্জনকারী স্বঘোষিতদের একটা অংশকে অনেক রক্তে কেনা স্বাধীনতাকে নিয়ে ব্যবসা করতে। স্বার্থের লোভে আর ক্ষমতার অন্ধ মোহে স্বদেশের সম্মানকে পৃথিবীর মঞ্চে লাঞ্ছিত করতে। দেখছি বিশ্বের দরবারে শান্তিপ্রিয় খ্যাত বাংলাদেশের অধিবাসীদেরকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে শুধুমাত্র তাদের হীন স্বার্থকে চরিতার্থ করার প্রয়াসে। ধিক্! শত ধিক্ এসব মুখোশধারী ঘরের শত্রুদের দুষ্কর্ম এবং অবয়বে-সত্তায়।
বিগত নির্বাচনী মৌসুমগুলোয় আমরা দেখেছি কারো কারো মাথায় 'মৌসুমী পট্টি' উঠে এসেছে, আমরা দেখেছি উমরার হিড়িক পড়ে যেতে, আমরা দেখেছি তাসবীহর মালায় সুসজ্জিত হতে। বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য ছোট্ট দেখালেও এটা একটা বড় সুখবর যে, এবারের মৌসুমে তা আর দেখা যাচ্ছে না। আস্তিনের সাপ এবার আস্তিন থেকে বের হয়ে শান্তি খেকো গোখরাদের সাথে বিপরীত অবস্থানে যোগ দিয়েছে। অন্ততঃ প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে পারবে বাংলাদেশের মুসলমানদের একটা বিরাট অংশ। দিনে দিনে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি যেদিকে এগুচ্ছে, তাতে একথা সুস্পষ্ট যে- আগামী দিনের বাংলাদেশে থাকবে প্রধানতঃ দুটি ধারাঃ 'ইসলামী ও ইসলামপন্থী জাতীয়তাবাদী' এবং 'ইসলাম বিরোধী ও অনৈসলামী ধর্মনিরপেক্ষ বা ধর্মহীন জোট'। অর্থাৎ, এক কথায় ইসলামের পক্ষ-বিপক্ষই হবে আগামীর বাংলাদেশের মূল ধারার দু'টি দিক। সুখের কথা এই যে, এদেশের মানুষ ইসলামপ্রিয় এবং আমরা দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করি যে, একদিন তারা তাদের এই প্রিয়তার পরিচয় দেবেই দেবে, ইনশাআল্লাহ।
ছবির জন্য [link|http://upload.wikimedia.org/wikipedia/en/thumb/7/70/Bayt_al_Mukarram.jpg/280px-Bayt_al_Mukarram.jpg|K

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।

