somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফ্রিৎজ ল্যাং আর তাঁর ফিউচারিস্টিক মেট্রোপলিস

২২ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




বেশ কিছুদিন আগে ইতিহাসের প্রথম সায়েন্স ফিকশান মুভি, A Trip to the Moon নিয়ে সামুতে পোস্ট দিয়েছিলাম। A Trip to the Moon মূলত ছিলো একটি ১৫ মিনিটের শর্ট ফিল্ম, এর পরবর্তিতে সায়েন্স ফিকশান জেনার ইতিহাসের যেই মেজর উদাহরণটি আসে তাহলো ফ্রিৎজ ল্যাংয়ের বিখ্যাত মেট্রোপলিস মুভিটি। বলতে গেলেই এটিই প্রথম ফুল লেংথ সায়েন্স ফিকশান মুভির উজ্জ্বলতম উদাহরন, যাকে বলা হয় ফাদার অফ অল সায়েন্স ফিকশান মুভি। আজকে আপনাদের সেই মেট্রোপলিস মুভিটির কথাই শোনাবো।

তবে তার আগে পরিচালক ফ্রিৎজ ল্যাংয়ের জীবনী সম্পর্কে কিছু জানা যাক।




Fritz Lang (1890–1976) ছিলেন একজন অস্ট্রিয়ান-আমেরিকান ফিল্মমেকার, নির্বাক যুগ এবং পরবর্তিতে ক্ল্যাসিক এজে বিশেষ করে ফিল্ম নয়ের জেনারে তাঁর নামটি অবধারিতভাবে আসবেই আসবে। তিনি যে শুধুমাত্র পরিচালনাই করেছেন তা কিন্তু নয়, একাধারে স্ক্রিণরাইটার, প্রোডিউসারও ছিলেন। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট তাঁকে উপাধি দিয়েছিলেন, "মাস্টার অফ ডার্কনেস"। তাঁর বিখ্যাত চলচ্চিত্রের মধ্যে প্রথমেই আসবে এই মেট্রোপলিসের নাম, তারপরেই বলা যায় M (1931),Siegfried (1924), The Testament of Dr. Mabuse (1933), Fury (1936) কিংবা The Big Heat (1953) এর কথা। বিশেষ করে M (1931) একটি কালজয়ী সিনেমা।

একটা মজার তথ্য জানিয়ে রাখি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকলীন সময়ে তিনি অস্ট্রিয়ান আর্মিতে যোগ দিয়েছিলেন এবং রাশিয়া ও রোমানিয়ায় যুদ্ধ করেছিলেন, সেখানে তিনি মোট তিনবার আহত হন।সেই ইনজুরি থেকে রোকোভারিং করার সময় তিনি মুভির জন্য অনেক থিম আর প্লট লিখে রেখেছিলেন। পরবর্তিতে ১৯১৮ সালে জার্মানির Ufa নামক একটি ফিল্ম ইনস্টিটিউটে পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেখান থেকেই তাঁর ক্যারিয়ার শুরু। ১৯২০ সালে তাঁর সাথে পরিচয় হয় রাইটার এবং অ্যাক্টরেস Thea von Harbou এর সাথে। উল্লেখ্য, ১৯২১ সাল থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত যতো মুভি ল্যাং বানিয়েছেন, তার সবকটার গল্প আর চিত্রনাট্য ভন হারবোউ আর ফ্রিৎজ ল্যাং একসাথে লিখেছিলেন।১৯২২ সালে তারা একে অপরকে বিয়ে করেন, তবে ১৯৩৩ সালে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।এর পিছনে কারণ ছিলো মূলত দুইটি, প্রথমত ভন হারবোউ আর ফ্রিৎজ ল্যাং উভয়েরই পরকীয়া প্রেম আর দ্বিতীয়ত, ১৯৩৩ সালে হিটলার ক্ষমতায় আসলে, ভন হারবোউ NSDAP (Nazi Party) -এ যোগ দেন। ফ্রিৎজ ল্যাং ছিলেন Jewish heritage এর। ফলে অবস্থার আরো অবনতি হয়। ১৯৩৩ সালের ২০ এপ্রিল তাদের মধ্যকার ডিভোর্স চূড়ান্ত হয়, আর এরই সাথে একটি অসাধারন এবং অন্যরকম জুটিকে হারায় গোটা চলচ্চিত্র দুনিয়া।



উপরের ছবিতে ভন হারবোউ আর ফ্রিৎজ ল্যাং


এরপর ল্যাং ১৯৩৪ সালে জার্মানি ছাড়েন এবং প্রথমে প্যারিসে এবং পরে তিনি আমেরিকায় চলে যান। সময়টা তখন ১৯৩৬ সাল, শুরু হয় ফ্রিৎজ ল্যাংয়ের হলিউডি ক্যারিয়ার। একেরপর এক তিনি আমাদের দারুন কিছু সিনেমা উপহার দেন, যেমন Fury, The Big Heat , While the City Sleeps, Beyond a Reasonable Doubt ইত্যাদি। ১৯৭৬ সালে Beverly Hills, Los Angeles, California, USA তে ৮৫ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরন করেন।

আমেরিকার চলচ্চিত্র ইতিহাসে যখন ফিল্ম নয়ের জেনারটির সূচনা ঘটে, তিনি ছিলেন সেই সময়ের অন্যতম অগ্রদূত। চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি দুইবার Walk of Fame এর অধিকারী হয়েছিলেন।এছাড়া German Film Awards আর Academy of Science Fiction, Fantasy & Horror Films, USA তাকে সম্মানসূচক লাইফ ক্যারিয়ার অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে।

ওয়াক অফ ফেম:




এইবার মেট্রোপলিস মুভিটির ব্যাপারে আসা যাক। আগেই বলেছি এটি একটি সাই ফাই মুভি, ইতিহাসের প্রথম ফুল লেংথ ফিচারড সাই-ফাই মুভি। রানিংটাইম ১৫৪ মিনিট, তবে পরে রিমাস্টার করে দুই ঘন্টায় আনা হয়। সো তেমন একটা লম্বা নয়। রিলিজটাইম ১৯২৭ সাল। চিত্রনাট্য লিখেছেন ভন বারবোউ আর ল্যাং দুইজন মিলে, তবে উপন্যাসটি ছিলো ভন বারবোউয়ের। আর রাইটার হিসেবে আনক্রেডিটেড হিসেবে ছিলো ল্যাংয়ের নাম। মুভিটি টোটালি নির্বাক মুভি, অর্থাৎ কোনো সংলাপ নেই, মাঝেমধ্যে কাহিনীর প্রয়োজনে কিছু ডায়ালগ এবং কনভার্সেসান ইন্টারটাইটেলে লিখে দেয়া, যেমনটা হয় আর কি !!!

মুভিটির গল্প ২০২৬ সালের, অর্থাৎ তখনকার সময়ের ১০০ বছর সামনের কথা, এমনকি আমাদের বর্তমান সময়ের ১৪ বছর পরের কথা। মেট্রোপলিস ২০২৬ সালের এক সোসাইটি যেখানে ক্ষমতাধর ও ধনাঢ্য ইনটেলেকচুয়ালরা মাটির উপরে একটি শহরে বিলাসবহুল ও কেয়ারফ্রি জীবনযাপন করে আর শ্রমিকশ্রেণীর সাধারন মানুষগুলো সেই জায়গার অনেক নীচে একটি আলাদা ও নির্দিষ্টস্থানে বাস করে, যেই জায়গাটার নাম "ডেপথ"। ডেপথ বলতে মাটির নীচকেই বুঝানো হয়েছে।মেট্রোপলিসে রয়েছে ধনি-গরীবের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান, তাদের পারষ্পরিক কোনো যোগাযোগ নেই, যেখানে শ্রমিকদের কাজই হলো গোটা শহরটার মেশিনারি যন্ত্রপাতিগুলোকে সর্বদা সচল আর তত্ত্বাবধানে রাখা, সারাদিন সারারাত অমানুষিক খেটে যায় তারা, আর সেই উঁচুশ্রেণীর মানুষগুলোকে নিরবিচ্ছিন্ন আরাম-আয়েশ নিশ্চিত করে রোবটের মতো সারিবদ্ধ হয়ে টলতে টলতে নিজ নিজ বাসায় ফেরে। সেই সামাজিক বিভেদের প্রমাণ পাই,যখন দেখবো, জো ফ্রেডারসান (মেট্টোপলিসের মাস্টার অফ দ্যা সিটি) এর ছেলে ফ্রেডার বাগানের মধ্যে অবসর সময় কাটাচ্ছেন, আর তার বিনোদনের জন্য গোটা দশেক মেয়ে থেকে একজনকে নির্বাচিত করা হচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ বাইরে থেকে এক অপরূপ সুন্দর মেয়ে অনেকগুলো বাচ্চাকে নিয়ে আসে, বাচ্চাগুলো সব জীর্ণ শীর্ণ, গায়ে ময়লা কাপড় চোপড়, মুখগুলো মলিন,বোঝাই যাচ্ছে মেয়েটা আর বাচ্চাগুলো এসেছে সেই "ডেপথ" জায়গাটি থেকে, আর সেই বাচ্চাগুলো সেই শ্রমিকগুলোরই সন্তান। সেই মেয়েটা চারদিকের মানুষগুলোকে দেখিয়ে বলতে থাকে, "Look, These are your brothers", ফ্রেডার আর তার আশেপাশের মানুষগুলো সবাই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায়। পরে নিরাপত্তারক্ষী এসে তাদেরকে দরজা দিয়ে বের করে দেয়। কিন্তু সেই মেয়েটির সৌন্দর্য ফ্রেডারকে মুগ্ধ করে দেয়। সেই মেয়েকে খুঁজতে বের হয় সে, শ্রমিক শহরে ঢুকামাত্র তার চোখের সামনে একটি যান্ত্রিক দূর্ঘটনা ঘটে,সেখানে অনেক শ্রমিক আহত হয়, তারপর ফ্রেডার গিয়ে তার বাবাকে দূর্ঘটনার কথা জানায়। জো ফ্রেডারসান এই ঘটনার কথা শুনে খুবই রাগান্বিত হন তার নিজের লোকজনের উপর, কারন যার উপর এইসব তদারকের দায়িত্ব ছিলো তার কাছ থেকে কেন এই দূর্ঘটনার কথা তিনি জানলেন না, কেন তার ছেলের কাছ থেকে জানতে হলো যেখানে কখনোই তার ছেলের পক্ষে যাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব না। ভীষন ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি ঐ দায়িত্বে থাকা জোসাফাটকে বরখাস্ত করেন, এরপর জোসাফাট ক্ষোভে অপমানে আত্মহত্যা করতে উদ্যত হয়,ফ্রেডার তাকে বাঁচায়। ফ্রেডার তাকে বুঝিয়ে তার বাসায় পাঠিয়ে দেয়। এরপর সে ঐ মেয়েটিকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে। আর খুঁজতে খুঁজতে একসময় খোঁজ পেয়ে যায় মেয়েটির, জানা যায় মেয়েটির নাম মারিয়া, সে শ্রমিকদের নিয়মিত একটি নির্দিষ্টস্থানে জমায়েত করতো আর ধর্ম আর নৈতিকতার বিভিন্ন গল্প আর প্রফেসি বলতো,আর তাদের সাহস আর সান্ত্বনা দিতো, এইসময় মারিয়াকে বলতে দেখি , "The mediator between head and hands must be the heart, wait for him, he will surely come." ফ্রেডার সেই শ্রমিকদের অবস্থার উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চায়, কিন্তু আড়াল থেকে মারিয়ার সেই কথাগুলো শুনে ফেলে জো ফ্রেডারসান আর তার প্রাক্তন বন্ধু ও মেরোপলিসের ইনভেনটর রটওয়াং। শ্রমিকদের দমন করার জন্য মারিয়াকে রুখতে মরিয়া প্ল্যান করে তারা, মারিয়া আর ফ্রেডারের প্রেম আর তাদের সেই দিন বদলের স্বপ্ন, আবার মেট্রোপলিসকে ঘিরে রটওয়াংয়ের রয়েছে ভিন্ন আরেক প্ল্যান----আর এভাবেই কাহিনী এগুতে থাকে সামনের দিকে।আর শেষটাতো রীতিমতো আউটস্ট্যান্ডিং।


কাহিনী কিন্তু খুব একটা বেশি বলি নি, তবে এতোদূর বলারও একটা আলাদা কারন আছে, যখন মুভিটি বিশ্লেষণে যাবো তখনই বলবো। আপনাদের কাছে মনে হতে পারে, আচ্ছা, গল্পের স্টোরিলাইনে তো সায়েন্স ফিকশানের কোনো গন্ধই পেলাম না, টিপ্যিকাল রোমান্টিক ড্রামার মতো প্লট, আসলে সায়েন্স ফিকশান বলার পিছনে অনেকগুলো ব্যাপারই রয়েছে, যেমন প্রথমেই গল্পের সময়কাল। ২০২৬ সালের কাহিনী, আর এইখানে ঐ সায়েন্টিস্ট রটওয়াংয়ের অ্যাক্টিভিটিজে সায়েন্স ফিকশানের প্রচুর এলিমেন্ট পাবেন।

যাই হোক এইবার মুভিটির বিশ্লেষণে আসি, প্রথমত এটি একটি সংলাপবিহীন মুভি, তবে গল্পটি কিন্তু বেশিমাত্রায় ব্যাপক আর বিস্তৃত, ইন্টারটাইটেলের সংখ্যাও বেশ ভালোই ছিলো। সুতরাং এমন একটি মুভিকে নির্বাক মুভি হিসেবে রিপ্রেজেন্ট করাটা বেশ দুঃসাধ্য ছিলো, পরিচালক ফ্রিৎজ ল্যাংয়ের অসম্ভব দক্ষতার সাথে অত্যন্ত সফলভাবে এই কাজটি করে দেখিয়েছেন। বিশেষ করে তখনকার সময়ে কোনো প্রকার টেকনোলজ্যিকাল হেল্প ছিলো না, ছিলো না কোনো সুপার কম্পিউটার,নিদেনপক্ষে কোনো কম্পিউটারই ছিলো না, তারপরও ২০২৬ সালের মেট্রোপলিস শহরকে যেই ডাইমেনশানে দেখানো হয়েছে, রীতিমতো অভিনব আর ব্রিলিয়ান্ট। এই মুভিটি সাইলেন্ট যুগের অন্যতম ব্যয়বহুল মুভি, যেটি বানাতে খরচ হয়েছিলো 5,000,000 marks, এই মুভিতে এক্সট্রা লেগেছিলো প্রায় ৩৭০০০ মানুষের মতোন, আর তখনকার দিনের ম্যাক্সিমাম ইফেক্টস ছিলো হাতে বানানো, সেই কম্পেয়ারিজনে গেলে আশ্চর্য হতে হয়, কি দেখানো হয় নি মুভিটিটে, বিশাল বিল্ডিং, এক্সপ্লোশন, বন্যা, রোবট, রোবট থেকে মানুষের ট্রান্সফরমেশান আর কতো কি !!!


মেট্রোপলিসের বিশাল অট্টালিকা:




রোবট মানুষের কনভার্সান:




আর স্টোরিলাইনটা ভীষণরকম ইন্ফুয়েন্সিয়াল, গল্পটির থিমে ছোটোছোটো অনেকগুলো দিক রয়েছে, সবকিছু মিলিয়ে যা হয়েছে দূর্দান্ত। যেমন The mediator between head and hands must be the heart ---এই লাইনটার কথাই মনে করুন, মুভিটির এই ট্যাগলাইনের সাথে কাহিনীটি এতোটাই চমৎকার ভাবে মিশেছে বলার মতো না, এইখানে হ্যান্ডস বলতে সেই শ্রমিকশ্রেণীকেই বোঝানো হয়েছে, যারা দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করে ধনীদের সুখ আর নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে, অপরদিকে হেড বলতে সেই ধনাঢ্য ইনটেলেকচুয়ালদের বুঝানো হয়েছে যারা থাকে মাটির উপরে, আলিশান বাড়িতে থাকে আর গাড়িতে চরে বেড়ায়। সেই ধনী আর গরীবদের মাঝে কোনো কিছুই নেই যা তাদের মধ্যে সংযোগস্থাপন করবে, পরষ্পরকে পরষ্পরের কাছে টেনে নিয়ে আসবে। তাদের মধ্যে এই পাহাড়সম ব্যবধান কে ঘোচাতে চাই সেই হাত আর মাথার মাঝামাঝি একটি জিনিস, যা হলো হৃদয়। এই হৃদয়ই পারে ধনী-গরীবের ব্যবধান কমাতে, এই হৃদয়ই পারে শাসক আর শোষিত মানুষের মেলবন্ধন ঘটাতে। এই হৃদয়ই পারে ক্ষমা করতে, ভালবাসতে। কি চমৎকার ম্যাসেজ, তাই না??


মুভিটির স্টোরিলাইনে যেমন কিছু সামাজিক আর দর্শনগত জিনিস উঠে এসেছে, ঠিক তেমনটি ছিলো ছিলো কিছু রিলিজিয়াস রেফারেন্স, এইটাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার ছিলো মুভিটায়। দ্যা টাওয়ার অফ ব্যাবেল স্টোরিটি এর উজ্বল উদাহরন।



বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে একটু চিন্তা করলেই আসলেই অবাক লাগে। যখন মুভিটিতে দেখি ফ্রেডার তার বাবাকে বলছে, কেনো সেই শ্রমিকশ্রেণীর কোনো স্বীকৃতি নেই, এই মেট্রোপলিস গড়ার কাজে তো তাদেরই সিংহভাগ অবদান,তাদের জন্য কিছু না করলে একদিন তারা ঐক্যবদ্ধ হবে, মিউটনি ঘোষণা করবে। বর্তমান সমাজের দিকে তাকিয়ে এই জিনিসটার তুলনাটা বেশ গ্রহনযোগ্য মনে হলো।

এইবার আসি কাস্টিংয়ের ব্যাপারে, প্রত্যেকেই চমৎকার অভিনয় করলেও আলাদা করে একজনের কথা বলতে চাই,মারিয়া চরিত্রে অভিনয় করা Brigitte Helm এর কথা। ডাবল রোলে তার অনবদ্য অভিনয় বেশ দাগ কেটেছে।

পজিটিভ রোলের মারিয়ার থেকে নেগেটিভ রোলের মারিয়ার অভিনয় ছিলো মনোমুগ্ধকর:




মুভিটির মিউজিক স্কোরের কথা কি বলবো, যেহেতু রিমাস্টারড ভার্সন দেখেছি তাই বলতে পারছি না মুভিটির অরিজিনাল মিউজিক স্কোরটা কেমন ছিলো, কিংবা এই ভার্সনে অরিজিনালটাই শুনেছি কিনা, তবে আমার কাছে ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বেশ ভালো লেগেছে।

আমাদের সমাজে শ্রেণীসংঘাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। সমাজের এই বিভেদ আর বৈষম্য দূর করার পিছনে এই মুভিটার অন্তর্গত ম্যাসেজটি আসলেই ভেবে দেখবার মতো। শুধু কাহিনীর দিক দিয়েই নয়, ইফেক্টস আর এইরকম কনসেপ্টে ১৯২৭ সালের মতোন সময়ে এতোটা দারুন ফিউচারিস্টিক মুভি, ভাবা যায় না, রীতিমতো মুগ্ধ হয়েছি।

সোশালিস্টিক মুভমেন্টের সাথে রোমান্টিক স্টোরি প্যারালালি যাওয়া আমরা অনেক মুভিতেই দেখি, কিন্তু এতোটা দুর্দান্ত ভাবে কম্পাইল করাটা বেশ মুন্সীয়ানার ব্যাপার। মুভিটি New York Film Festival (২০০০), Los Angeles Film Critics Association Awards (২০০১), New York Film Critics Circle Awards (২০০২) সহ বেশ কয়েকটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সম্মানসূচক স্পেশাল অ্যাওয়ার্ড জিতে। মুভিটির আইএমডিবি রেটিং ৮.৪, আর মেটাস্কোরে ৯৮% এবং টমেটোমিটারে ৯৯% ,এছাড়া আইএমডিবি টপ ২৫০ তালিকায় ৯০ তম স্থানে রয়েছে।

আমার পার্সোনাল রেটিং ১০/১০। তবে সবার এই মুভিটি ভালো নাও লাগতে পারে, কারণ অনেকেরই সাদাকালো স্পেশালি নির্বাক মুভি হজম হয় না, সুতরাং আপনাদের উপরই দেখবার দায়িত্বটি ছেড়ে দিলাম।

ডাউনলোড লিংক:

র‌্যাপিডশেয়ার:

Click This Link
Click This Link
Click This Link

স্টেজভ্যু:

http://stagevu.com/video/lppvpdssexye


যাওয়ার আগে কিছু মজার ইনফো শেয়ার করে যাই,

১।এই মুভির অরিজিনাল প্রিমিয়ার কাট কিছুদিনের মধ্যেই হারিয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে এটিকে নতুন করে রিস্টোরেশান এবং এডিটিং করা হয়, এবং এরপর ১৯৮৬ সালে আবারো এটিকে রিকন্সট্রাকশান করা হয়, এরপর যথাক্রমে ২০০২, ২০০৫ ও সর্বশেষ ২০০৮ সালে কনসিডারেবল রিস্টোরেশান করে ২০১০ সালে আবারো প্রিমিয়ার করা হয়।
২।এই মুভিটি পুরোপুরি শ্যুট করতে দুই বছর সময় লাগে।
৩। এই মুভিটি হিটলারের বেশ প্রিয় একটি মুভি ছিলো।


সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:৪০
২৯টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×