somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রিমাদের জীবন

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



- কাল সকালে আইয়া পড়ো। বড় একখান কাজ আছে।
- জ্বি জনাব।
- তরে দিয়া কাজটা করাইতে হইব। তাড়াতাড়ি আইয়া পড়িস। না আইলে কিন্তু প্রমোশন পাইবিনা। মাইনেও কইমা যাবু।
- আজ্ঞে স্যার বুইঝাছি।
- যা একান থেকে। এখনের কথাটা মনে বাইন্ধা রাইখা যা। আর তোর মেয়েটারে সাথে নিয়ে আছিস। মেলাদিন তুর মেয়েরাটারে দেখি না।
- আইচ্ছা স্যার।.... স্যার আমারে যদি ফাইল বন্ধির কাজটা দিতেন। চা পানি আর কত হাটাইব। লোকে কই। আমার মেয়েডা বড় হইছে।
- আরে রজিন মিয়া। তুই বেডা এত কথা কস কিল্লায়। তুরে এতক্ষণ কি কইতাছি। যা কাল আইছ।

রজিন মিয়া। একজন কুলি মানুষ। অফিসে চা নাস্তা হাটাই। এই তার কাজ। রজিন মিয়া স্বপ্ন দেখে। সে অফিসের ফাইল তাইল হাটাবে। আর এই ফাইলে দিনে দিনে টাকা আসবে রজিন মিয়ার পকেটে। তার একটা পনেরো ষোল বয়সী মেয়ে আছে। স্ত্রী সহ রজিন মিয়ার এইটুকু সংসার।
রজিন মিয়া যথারীতি অফিসে হাজির হল পরেরদিন। চা নাস্তা রেডি করতে ব্যস্ত। আজ সাথে তার মেয়েটাও আছে। বাবাকে কাজবাজ করে দিচ্ছে।

- স্যার আসব।
- হু। আস। চা তা নিয়ে আসছ। তোমার মেয়েটারে দেখতেছিনা যে।
- স্যার আছে। রুমে বসে আছে। স্যার আমার কাজটা।
- ও। মনে আছে। কাপ তাপ রেখে আস। তারপর বলি!
- জ্বি জ্বি জনাব। চা খেয়ে নেন। আমি একটু আসতেছি।
- হু। যাও। সাথে মেয়েটারে নিয়ে আস।

রজিন মিয়া আজ অবাক হয়ে গেছে। স্যার তার সাথে এমন সুন্দর, আদুরে করে কথা বলেনা কোনদিন। আজ কি হলো। রজিন মিয়া ভাবতে থাকে। তার প্রমোশন হয়নি তো আবার। রজিন মিয়া মেয়েটারে সাথে করে স্যারের রুমে ঢুকল।

- স্যার।
- আস। আমার মাটা কেমন আছে।
-স্যার ভাল।
- রজিন মিয়া শুন। আজ তোমার কাজটা হলো। এই ফাইলটা কাদের স্যারের কাছে দিয়ে আসবে। আর এই ফাইলগুলো বিলি করে দিবা।
এক্ষুনি যাও।
- স্যার যাচ্ছি। আমার মেয়েটা। সাথে চলে গেলে।
- না না। থাক। তোমার মেয়েতো আমার মেয়ে।

রজিন মিয়া ফাইলগুলো নিয়ে বের হয়ে আসল। আজ তার কপাল ভাল। আজকেই শতখানিক টাকা চলে আসবে পকেটে। খুশি রজিন মিয়া। কিন্তু মেয়েটা যে এখানে। রজিন মিয়া মনে মনে চিন্তায় পড়ে গেল। চিন্তা মাথায় নিয়ে বের হয়ে গেলেন কাজে।

রজিনের মেয়ে আর স্যার অফিসে বসে আছে। মেয়েটা নিশ্চুপ।

- এই মেয়ে। তোমার নাম টা কি ছিল যে।
- চাচা। রিমা।
- ও। সুন্দর নাম। ক্লাস নাইনে পড় তাই না।
- হ্যাঁ। চাচা। চাচা আমার আব্বু কখন আসবে।

এভাবে কতক্ষণ চলতে থাকে। এক পর্যায়ে.....

- রিমা। তোমার হাতটা এমন হয়ে গেছে কেন। ক্রিম ত্রিম ব্যবহার করোনা।
- চাচা। বাবা ক্রিম তো এনে দেই না। কত বলি। কানে শুনে না। আর চাচা আমার হাতটা ছাড়েন না। কতক্ষণ ধরে থাকবেন।
- মা। এই নে ক্রিম। এখন মাজ। সুন্দর লাগবে।
- না চাচা। ঘরে মাজব। আমাকে এটা দিয়ে দাও না চাচা।
- দিব। তোই না মাজলে আমি মেজে দিই। দে এদিকে তুর হাত। আমি মেজে দিই।
- না। চাচা। আমি পারব।
- হু। তাহলে নে। এই মা দেখবি। এই মেয়ে গুলো কত সুন্দর।

রফিক। রিমার বাবার স্যার। রিমা চাচা বলে ডাকে। চাচা তাকে খুব আদর করে। রিমার এই ধারণা। রফিক সাহেব মোবাইলে একটা ভিডিও চালু করে দিয়ে রিমার সামনে ধরল।

- চাচা এগুলো কি। ছিঃ ছিঃ ছিঃ। আপনি এত খারাপ। ছিঃ ছিঃ।
- চুপ মেয়ে। বেশি কথা বলবিনা।

রিমা। মোবাইলের দিকে চোখ যেতেই চোখটা বন্ধ করে ফেলল। আর তার চাচাকে ঘৃণায় ভাসিয়ে দিচ্ছে। রফিকের ভিতর লুকিয়ে থাকা পশুত্ব জেগে উঠল। অতঃপর রিমা দিশেহারা হয়ে বসে রইল।


সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৫
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×