somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেই লাল গোলাপ, রক্তের সেই লাল রং

১৪ ই জুন, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গল্পের নায়ক আল বসীর, লাল সরকারী পার্টির কমিশনার থেকে কিছু দিন আগেই সততার সম্মানী পুরোষ্কার পেয়ে ছিলেন, যতনাটা তার যোগ্যতা তার চেয়ে কমিশনারের পছন্দের লোক বলে। কেন এই পছন্দ? আল বসীর তা বুঝে উঠতে পারেন না। তবে কমিশনারকে তিনি অনেক সম্মান করেন, তার বদলোতেই পুলিশের সাধারন সদস্য থেকে এরিয়া কমান্ডার হতে পেরেছেন। এর বিনিময়ে কমিশনারও করিয়ে নিয়েছেন বিভিন্ন কাজ। কিছুটা কমিশনারের নিজের আর কিছুটা পার্টির। বাহিরের দেশের মানুষ আসলে, এই লাল পার্টিকে বাহবা দিয়ে যায়। কি শান্তি শৃংকলা। কিন্তু আল বসীর সাহেব জানেন, কিভাবে এই শান্তি। পার্টির লোকেরা নয়ত, পুলিশ বাহীনি দিন রাত পুরো দেশবাসীকে চোখের উপর রাখেন। পার্টির বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই, পার্টি অফিসে এনে মাইর দেওয়া হয়। এই মাইর দিতে বসীর সাহেবের অনন্দ অনেক। ব্যাটা পার্টির খেয়ে পার্টির বদনাম করছ ? সাহস কত।

বসীর সাহেব এতিম অবস্থায় মানুষ হয়েছেন। কিভাবে এতিম হয়েছেন এ ব্যাপারে তিনি তেমন কিছু জানেন না। তবে ছোট বেলার কথা আবছা আবছা মনে করতে পারেন। তাদের একটি সাদা রং এর বাড়ি ছিল, তার সামনে ছিল ছোট খাট একটি বাগান। সেখানে তার মা ফুলের গাছের পরিচর্যা করতেন। একবার একটি লাল গোলাপ দেখিয়ে তার মা বলে ছিলেন, এ হচ্ছে লাল গোলাপ, ভালবাসার প্রতিক, মানুষকে ভালবাসতে চেষ্টা করিস। মায়ের মুখ আবছা আবছা মনে আছে বশীর সাহেবের।

মানুষকে ভালবাসা আর বসীর সাহেবের হয়ে উঠেনি। সরকারী চাকরির বদলে লাল পার্টির একজন লাঠিয়াল হয়ে গেছেন। এ নিয়ে তার কোন কষ্ট নেই। মানুষ কত কী করে, এতিম অবস্থায় তার সাথে যে রূপ ব্যাবহার করা হয়েছে, তা সে ভুলে কি করে। মানুষ যেন তাকে যুতার তলায় রাখত। সে অবস্থা থেকে লাল পার্টির তাকে তুলে নিয়ে এসেছে। এখন তিনি পুলিশের এরিয়া কামান্ডার। নিজের একটি তিন তালা বাড়িও আছে। তাই, লাল পার্টির যেকোন আদেশ বলা মাত্রই তামিল করেন। কাউকে গুলি করতে বললেও করেন।

গত শনিবার, পার্টির অফিসের সামনে ব্যাপক গোলাযোগ, বেকুব মানুষগুলি আবার চিল্লা ফেল্লা শুরু করেছে। বিশস্থ এরিয়া কামান্ডার বসীর সাহেবেরই ডাক পরল। লালা পার্টির কমিশনার সাহেব জানিয়েছেন, এই বিক্ষোভ দমাতে পারলে বশীর সাহেবকে কমিশনার করা হবে। প্রয়োজনে ব্রাস ফায়ার করার পারমিশন দিয়ে দিলেন।

বশীর সাহেব উত্তাল জনতার উদ্দোশ্যে হুমকি দিলেন। না থামলে ব্রাস ফায়ার করে এই চিল্লা চিল্লির অবসান এই মুহুর্তেই করবেন। পুলিশের সদস্যরা ভয়ানক কষ্ট করে যাচ্ছে। ইট পাটকেলের আঘাত পুরোটাই এদের উপর পরতেছে। বশীর সাহেব আর দেড়ি করতে পারেন না। আকাশে ফায়ার করার হুকুম দিলেন। ঠাস ঠাস, আওয়াজ, মুহূর্তেই দোড়া দোড়ি। কিন্তু মানুষ গুলো বেহায়া হয়ে উঠেছে। আবার তারা স্লোগান দেওয়া শুরু করেছে। আর ধৈর্য ধরা যায় না, ব্রাস ফায়ারের হুকুম দিলেন। নাহ, উনার পুলিশের ছেলেরা হুকুম অমান্য করল। বসীর সাহেব উঠে দাড়ালেন। কি করবেন বুঝতে পারলেন না, সরাসরি কমিশনারকে ফোন দিয়ে জানালেন, কমিশনার জবাব দিলেন, সব কটা পুলিশ সদস্যকে জমের বাড়ি পাঠাবেন, তিনি এক্ষুনী এক ট্যাঙ্ক সহ এদিকেই আসছেন।

বসীর সাহেব, পুলিশের জুনিয়র সদস্যদের আচরন নিয়ে চিন্তা করছিলেন। ছেলে গুলো এত বড় রিস্ক নিল। মাথা ঘুরে গেল বসীর সাহেবের। ঐখানে গুলি করলে হয়ত অনেকেই তার মত এতিম হত। শেষ পর্যন্ত মায়া লাগলো এই যুবক পুলিশদের জন্য। ইতিমধ্যে কমিশনার সাহেব তার দল বল টাংক সহ হাজির।

কমিশনারঃ মিস্টার বসীর, হোয়ার ইজ ইয়োর ফোর্স ।

বসীরঃ স্যার, এই টোল্ড দেম টু গো আউট ফর্ম দিস এরিয়া ।

কমিশনারঃ হোয়াট ?

বসীরঃ Yes sir, I know What you will do, Your party has no love for the people even if they serve you for long time.

কমিশনারঃ Do you aware what you are saying ?

বসীরঃ Sir, I have understood, Soon there will be no Boshir in this world. Sir, I had a Mom, She told me to love the people, But I could not. Sir, these boys have showed me what is love. Dear Sir, You give me many things, Your party gives me lot of things. At Last I realised, I should be a person what my mom want's. Sir, If I did any things for your party, Please Plant a rose-tree in my grave.. (আমি বুঝেছি, কিছুক্ষনের মধ্যে বসীর নামে কেউ এই দুনিয়ায় থাকবে না। স্যার, আমার একজন মা ছিলেন, তিনি যেন মানুষকে ভালবাসী, তাই বলেছিলেন। কিন্তু আমি তা পারিনি। স্যার, এই ছেলে গুলো আমাকে শিখিয়েছে ভালবাসা কি। স্যার, আপনি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছেন, এই পার্টি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। কিন্তু সবশেষে আমার উচিত মায়ের চাওয়া মত মানুষ হওয়া। স্যার, আমি যদি পার্টির জন্য কিছু করে থাকি, তাহলে আমার কবরের উপর একটি গোলাপ গাছ লাগিয়েন)

আকাশের দিকে তাকিয়ে বসীর সাহেব জোর গলায় বলে উঠলেন, হে আল্লাহ পাক, তুমি আমায় মাফ করে দিও।

"সিরীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, গত সোমবার এই শহরে সরকারবিরোধীরা ১২০ জন পুলিশকে হত্যা করে। মানবাধিকার সংগঠন ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে অপারগতা প্রকাশ করলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ওই পুলিশ সদস্যদের গুলি করে হত্যা করে।" – প্রথম আলো
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×