(সাক্ষাতকারের সকল চরিত্র কাল্পনিক, কারো সাথে মিলে গেলে লেখক দায়ী নন)
এলাকার বিশিষ্ট জমিদার চৌধুরী সাব, দুঃখিত জমিদার বংশীয়। উনার পিতার দিকে পূর্ব পুরুষ ইরান থেকে এসে ছিলেন। শুনা যায়, ইরানে বাদশার খাস আত্মীয় ছিলেন। বাংলায় এসে উচ্চ বংশীয় ব্রাহ্মণের সন্তানকে বিবাহ করেছিলেন। সে হিসাবে দুই দিক থেকেই উনি সম্ভ্রান্ত বংশের সন্তান। গরীবের জন্য উনার মায়া অনেক, তাই কার্ল মাক্সের সমাজ তন্ত্রের অনুসারী। বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির জেলা সভাপতি। দলের জন্য এহেন কর্ম নাই যে তিনি করেন নাই, উনাকে দেখলে হিন্দি ছবির নায়ক মনে হয়, কি সুন্দর লম্বা কোর্ট, একে বারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলে ভুল হয়। চৌধুরী সাব জ্ঞানী মানুষ, সবার মাথা সমান না, এইটা তিনি ভাল করেই বুঝেন, সাথে ন্যাচারাল সিলেকশনের যোগ্য মানুষ গুলিরেই পার্টিতে নেন। কয়দিন আগে বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতির পোলারে সবাই চান্দা তোলে একখানা মার্সিডিজ কিনে দিয়েছেন! এব্যাপারে উনার বক্তব্য, পোলাটা কত কষ্ট করে দেশের জন্য আমেরিকায় পড়াশুনা করতেছে। সৌদি বর্বরতা সম্পর্কে উনার অবস্থান সম্পূর্ণ কঠোর, শুনুন তাহলে চৌধুরী সাহেবের মুখেই:
“ফকিরন্নির পোলা দুইটা সৌদি গিয়া গ্রামে পাক্কা বাড়ি তোলেছে। দুইদিন আগেও বাড়ি বাড়ি কামলা দিত। এখন বাড়ি বাড়ি কামলা দেয়না, ঢাকা শহরে কামের মানুষের পাওয়ার কত অভাব। কয়দিন আগেও মুসলিম মাইয়া গুলি মাথায় লাল তিলক দিয়ে কলকাতার বাড়ি ঘরে কামলা দিত। ফকিরন্নির পোলা পাইন সৌদি টাকায় মসজিদ বানিয়েছে। এখন আর দরকারে এদের পাওয়া যায় না। রহিমার পোলাটা এখন চোখ তোলে কথা কয়, নাতীটারে স্কুলে ভর্তি করিয়েছে। সৌদি না গেলে সারা জীবনেও ভাত পাইত কি না সংদ্ধেহ। এখন এদের পাওয়ার বেড়েছে, দেখলে গা জ্বালা করে। সৌদি গুলার মানবতা বলে কিচ্ছু নাই, মন্দির বানাতে দেয়না। তয় দাদারা কেন সৌদি যাইবার লাগি পাগল সেইটার মারিফত বুঝা যায় না। সৌদিরা বর্বর দাদারা বলেছেন, দাদাদের কথা কি ভুল হইবার পারে? তয় সাদা চামড়ার দেশ গুলি অত্যান্ত মানবিক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ছাড়া কাউরে ভিসা দেয়না। দুই পয়সার দাম নাই, অশিক্ষিত রহিমার পোলাপালাইনরে ভিসা দিয়া গোলাম গুস্টিরে মাথায় তোলব নাকি? এই বর্বর কাম সোদি ছাড়া আর কোন বেকুবে করব, অশিক্ষিত গোলারে ভিসা দিয়া মাথায় তুলছে। এরা এখন সাম্যবাদী সমাজের জন্য হুমকি সরূপ।”
প্রশ্ন: স্যার, শুনা যায় আপনার চাচা নাকি শান্তি কমিটির বড় সদস্য আছিলেন, ৭১ রে অনেকের রক্ত নাকি উনার হাতে লেগে আছে , এ জন্য নাকি দাড়ি টুপি ওয়ালা মানুষ দেখলেই রাজাকার বলে গালি দিয়ে নিজের বাপ চাচার দোষ লুকান ?
চৌধুরী সাব: “আমার নামে এই গীবত যারা গায়, তারা যে মহা ভণ্ড তাহা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধ করেননি সেইটা ভুল কথা, উনারে বন্দুকের নলের মুখে পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করানো হয়েছিল, আমার চাচা রাজাকার না, এটা মিথ্যা-অপপ্রচার, তিনি শুধু পাকিগো নামে মাত্র সহায়তা করেছিলেন। আর দাড়ি টুপি মানেই রাজাকার সেটা বুঝার জন্য আপনাকে রকেট সাইনটিস্ট হতে হবে না, শুধু ইউটিউবের ভিডিওটা দেখলেই বুঝবেন।”
http://youtu.be/ILsGjUyT1bA
প্রশ্ন: আপনার প্রিয় ব্লগের নামে শুনেছিলাম তারা নাকি ধর্ম প্রচার নিরুত্সাহ করে, কিন্তু ধর্ম বিরোধী প্রচার নিয়ে কোন কথা বলে না। ঘটনাটি একটু খুলে বলবেন?
চৌধুরী সাব: “দেখেন ঘটনা না বুঝেই কথা বলা মূর্খদের স্বভাব, আপনারা বেকুব গুষ্ঠি এইটা বুঝে না, যে কোন নাস্তিক কখনও খারাপ হই-তাপারে না, বরং সকল আস্তিকই ভণ্ড। আস্তিকদের ভণ্ডামি বিশেষ করে এই জগতের সব থেকে বড় সমস্যা মুসলিমদের ভণ্ডামি রোধের জন্যই এই ব্যবস্থা। এই ধরনের সামান্য স্ববিরোধীটাকে যারা ভণ্ডামি বলে, তারা যে কত বড় ভণ্ড তা বুঝার নিশ্চয়ই বাকি থাকে না। মনে রাখবেন, আমার মত মানুষ হাজার বছরেও বাঙ্গালি একটাও দেখে নাই, নিকট এক হাজার বছরেও দেখবে না। আমি যদি কিছু পছন্দ করি, মনে রাখবেন এর পিছনে বড় কারণ নিহিত আছে।”
-আপনার মহামূল্যবান সময় আমাদেরকে দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৫৫