somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভিখারির বাড়িতে লক্ষ টাকা

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৫:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত ১৩/০১/২০১৬ তারিখে বাংলাদেশের বরিশাল শহরে এক ভিখারী মারা যাবার পরে তার ঘরের মালামাল সরাতে গেলে পাওয়া যায় ৭ বস্তায় ৯৭০০০ টাকা, ১০১ টি শাড়ি, ২০০টি লাক্স সাবান....। আফসোস ঐ মহিলার জন্য তিনি ভোগ করে যেতে পারলেন না, এর চেয়ে বড় আফসোস ভাগ বাটোরায় দেয়ার জন্য। পত্রিকা মারফতে জানতে পারলাম, ওখানকার হিসাব-নিকাশের পর সিদ্ধান্ত মোতাবেক, ঐ টাকা থেকে বিশ হাজার টাকা এক স্থানীয় মসজিদকে মাইক ক্রয়ের জন্য দেয়া হয়েছে, যারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গণনা করছে তাদের ৭ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে, ভিখারী ভদ্রমহিলা যে ঘরে ভাড়া থাকতেন তার ভাড়া বাবদ তিন হাজার টাকা নিয়েছেন, এক হাজার টাকা অন্য এক মসজিদে আর বাকি টাকা ভিখারী মহিলা আলেয়া বেগমের দুই ভাইকে হস্তগত করা হয়েছে। যাক, ভাই-বোনের সম্পর্কটা আজকে কাজে লাগলো, বোনের ভরণ-পোষন করতে না পারলেও যাবার সময় কয়টা টাকা ভাইদের দিয়ে গেলেন, ন্যূনতম ধর্মীয় জ্ঞান থাকলে একটুও না হয় দোয়া দরূদ পড়বে। তবে আমার মতে আগে ঐ ভাইদের একটা শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিৎ ছিল, তারা কেন বোনকে ভিখারীর রাস্তায় দেখেও তার ভরণ-পোষণ করলো না, অথচ রক্তের সম্পর্ক দেখিয়ে প্রায় সত্তর হাজার টাকা নিয়ে গেল। বাড়ি ওয়ালাও কেয়মতের ময়দানে আর দাবি করতে পারবে ন, তারও হিসাব পেয়ে গেলো। আর কোন পাওনাদারের দাবিদারও মিলল না, তাই বলতে পারি মহিলা খেটে-খুটে খেলেও কারো কাছ থেকে ঋণ করেননি বা কারো কোন হক মারেন নি। দোয়া করি এই মহিলার সততার জন্য।

আলেয়া বেগম জীবদ্দসায় কোন খরচ না করে টাকা জমিয়েছেন, এমন কি হয়তো খাবার দাবারেও কোনদিন দুই টাকার উপরে খরচ করেছেন কি না সন্দেহ আছে। মানুষের বাড়িতে খেয়েছেন, যে বাসায় থেকেছেন ওখানকার ভাড়াও দেন নাই। সে যাই হোক, মিথ্যা বলে হোক আর কৃপণতা করে হোক টাকা জমিয়েছেন, এই টাকা থেকে ধর্মীয় কাজেও ব্যয় হচ্ছে। আমার জানামতে ইংল্যান্ডে মধ্যে বসবাসরত অনেক বয়স্ক মহিলা আছেন এভাবে সরকার থেকে পাওয়া টাকা জমান, ভোগ করার সময়ও পান না, কেউ জানতে পারে না, ঐ টাকা কোন ধর্মীয় কাজে ব্যবহারও হয় না, যার কাছে ঐ বাড়াল থাকে সেই একা ভোগ করে। কারণ জানাজানির সুযোগ থাকে না। কথাটা বললাম এজন্য, এখানকার অনেকে নাক ছিটকাচ্ছেন, ঐ মহিলাকে ভিখারী বলে কটাক্ষও করছেন, কৃপণ, শরীরকে কষ্ট দিয়ে মরলো ইত্যাদি। আমি অবশ্য যুক্তি দিলাম, সঞ্চয় সবাই করে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ একটু বেশি, আর ঐ মহিলা ভিক্ষা করে জনগণের কাছ থেকে নিয়ে জমিয়েছেন কিন্তু এই ইংল্যান্ডে অনেকে লেবার নেয়, বেনিফিট নেয় কার কাছ থেকে। কেন নেয়, যে তথ্যগুলো দিয়ে নেয় তার মধ্যে কতটা সততা আছে, এও বললাম নিজের বউকে খাওয়াচ্ছেন, হয়তো ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে দামী দামী গহনাও কিনে দিচ্ছেন, তারপরও লেবার বা বেনিফিট ঠিকই নিচ্ছেন, তাও অমুসলিম সরকারের কাছ থেকে। যাইহোক, মুখ দোষে আমি সর্বদাই দোষী। তাদের কাছেও দোষী হয়ে গেলাম।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে একটা কথাও বলতে হয়, আলেয়া বেগমের টাকা পাবার খবর শোনার পর মনে পড়ে গেল ফখরুদ্দিন ও মঈনউদ্দীনের সময়ের কথা। এভাবেই অনেকের কাছে টাকা মিলেছিল, কারো বালিশের ভেতর, কারো তোষকের ভেতর, কারো জুতার ভেতর, কারো কমেডের ভেতর.... তারাও টাকা জমিয়েছিল। তবে তাদের টাকার মালিক হয়ে যায় বাংলাদেশ সরকার, কারণ দেশের টাকা তারা জালিয়াতী করে, দুর্নীতি করে জমিয়েছিল। ভদ্র মহিলার মতো খেটে কুটে নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৫:২১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×