somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাছের রাজা ইলিশ, দেশের রাজা পুলিশ

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাছের রাজা ইলিশ, দেশের রাজা পুলিশ।
একটা জাতীয় মাছের সাথে নিকৃষ্ট একটা শ্রেণীকে মেলানো কি সমিচীন হলো! তবে, আমি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একমত। কারণ বাংলাদেশে অন্য কেউ কিছু করতে পারুক আর না পারুক, পুলিশ সব পারে। তাই মানবিধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ডঃ মিজানুর রহমান সাহেবের সাথে আমি একমত।

আমার একটা ঘটনা, বাংলাদেশে আমার এক নাটকের পয়সা নিয়ে এক বাটপার রফিকুল ইসলামের সাথে সমস্যা চলছিল। হঠাৎ একদিন ঢাকার দক্ষিণ খান থানা থেকে এক এসআইয়ের ফোন আসলো, 'ভাইজান, আপনার নামে রফিকুল ইসলাম নামে এক লোক মামলা করতে এসেছে, আপনি নাকি উনার কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ভাগিয়ে নিয়েছেন, এখন দিচ্ছেন না।' আমি বললাম, ডাহা মিথ্যা কথা। আমি আমার নাটকের অনএয়ার বাবদ ওর কাছে টাকা পাই, তাই ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করেছি। উনি বললেন, আমিও তাই বিশ্বাস করি। তারপরও আপনি আমার সাথে দেখা করেন। আমি দেখা করতে অপারগতা প্রকাশ করলে উনি মামলাতে ওয়ারেন্ট বের করবেন বলে ধমকি দিলেন। বাধ্য হয়ে আমার উকিল নিয়ে দক্ষিণ খান থানায় গেলাম কিন্তু আমি ভেতরে গেলাম না। আমি মার্কেটের সামনে অপেক্ষা করতে লাগলাম, উকিল ভেতরে গেলেন। ঘন্টা খানেকের মধ্যে আমার উকিল সেই এসআইকে নিয়ে আসলেন। আমার কাছ থেকে আপাত দুই হাজার টাকা নিলেন। জানালেন, রফিকুল মামলা করতে এসেছিল, আমরা ওর কথা বিশ্বাস করিনি, তাই জিডি রেখে বিদায় করে দিয়েছে। এখন খোজ নিয়ে জেনেছি, ও একটা দালাল, এই নাটকটা আপনার, ওসি সাহেব তাই আপনার সাথে বসে একটা সমযোতা করতে বলেছেন। আমি বললাম, আমার টাকা চাই। উনি বললেন, উনি সব টাকা নিয়ে দিতে পারবেন, কত টাকা উনাকে দেয়া হবে। আমার উকিল বললেন, পঞ্চাশ হাজার আপনাকে দিয়ে দিবো। আমি পুতুলের মতো দাড়িয়ে রইলাম। পরে আরেকদিন আমাকে এয়ারপোর্টের সামনে ডেকে নিয়ে আরো চা পানির টাকা নিলেন। আরেকদিন ডেকে নিয়ে উনার আটদশের ফোর্স নিয়ে এয়ারপোর্টের সামনে আসলেন, বললেন টহল দিচ্ছেন, এখন এই লাইটেসটার ভাড়া দিতে হবে, আমাকে টাকা দিতে বললেন। অনেক কষ্টে কিছু টাকা দিলাম। আরেকদিন খবর দিয়ে নিয়ে তারা দশ পনের জনের চা পানির পয়সা দিতে বললেন, আমি বাকবিতন্ডা করে সবাইকে আইসক্রিম খাওয়াতে হলো, কিছু টাকাও দিতে হলো। আরো কয়েকদি ফোন দিছেন, আমি সাহস করে যাই নাই।

আরেকদিনের আরেক ঘটনা, সিলেট রেল ষ্টেশনে এক কনস্টেবল এক বাদাম বিক্রেতার কাছ থেকে কয়টা টাকা নেবার জন্য চাপাচাপিতে পাঁচ টাকা পেয়ে খুশি হয়ে চলে যেতে দেখে আমি গিয়ে শুধু বললাম ধিক্কার আপনাকে।

আরেকদিনে ঘটনা, ঢাকার মৌচাকে আমি রিক্সা করে যাচ্ছি, হঠাৎ এক সাদা পুলিশের মোটর সাইকেলের ধাক্কা খেল, বলতে গেলে মোটর সাইকেলে দোষ দেখলাম, কারো ক্ষতি হলো না। সাথে সাথে কয়েকজন পুলিশ আসলো, ওরা সাদা পোশাকদারীকে স্যালূট দিল। তারপর সাদা পোশাকদারী ওদের উপর দায়িত্ব দিয়ে চলে গেল, ওরা রিক্সা ড্রাইভারকে কয়েকটা থাপ্পড় দিল, রিক্সা নিয়ে যাবে বলাতে দুই শত টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিল।

আরেকদিনের ঘটনা, আমার স্ত্রী ও স্ত্রীর বান্ধবীরর ডিগ্রীর রেজিস্টেশন কার্ড হারিয়েছে। তারা সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার বাসিন্দা, আমার সাথে সদ্য বিয়ে হয়েছে। আমার স্ত্রীর বান্ধবী গোলাপগঞ্জ থানায় পাঁচ শত টাকা দিয়ে ডিজি করতে হলো। আমি তখন বার বার শুনছিলাম, কেউ জিডি করতে হলে কোন টাকা দিবেন না। আমি ভাবলাম এবার একটা সংঘাত বাঁধাবো। গেলাম, ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় জিডি করালাম, তারা আমি এফডিসিরি সদস্য কি না? কোন কোন টিভি চ্যানেলের লোক আমাকে চিনে, প্রমাণ কি আছে জানতে শুরু করলো? পরে আমি একটু উত্তেজিত হলে, কোন টাকা না চেয়ে জিডির সিল ও নং নিয়ে দিল।

আরো অনেক ঘটনা আছে, পুলিশের কর্মকান্ডের, যা আমার চোখের সামনে ঘটেছে। আমার জীবনে পুলিশের ভালো কাজ দেখিনি। তাই, ওদের ধিক্কার। ওদের ঘৃণা জানাই। ওদের কোন সাহায্য না পেয়ে আজ আমি পরবাসি। ওরা যদি সাহায্য করতো তবে আমার লক্ষ লক্ষ টাকা আটকাতো না। আমাকে নিরাপত্তা হীনতায় ভুগতে হতো না। দেশ ছেড়ে বিদেশে থাকতে হতো না। ধিক্কার তোমাদের হে বাংলাদশের পুলিশ। ধীক্কার.. ধীক্কার.. ধীক্কার..ধীক্কার..

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×