পত্রিকায় একটা খবর দেখলাম, আমাদের মাহমান্য রাজনীতিবিদ, একসময়ের সেনা নায়ক-যাকে বাংলাদেশের ইতিহাস পরিচয় দেয় স্বেরশাসক হিসেবে। তিনি মহামান্য ব্যক্তিত্ব জনাব হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনি বলেছেন, মুক্তমনা হত্যায় সারা বিশ্ব কথা বলে, প্রতিবাদ করে কিন্তু ইমাম হত্যায় কেন কথা বলে না।
জনাব এরশাদ সাহেব, আপনি কি কোন ইমামকে হত্যায়, কোন সাধারণ মানুষকে হত্যায়, কখনো কোন রাষ্টদ্রোহ কাজে, কোন মুক্তমনাকে দেখেছেন। তবে হ্যা, যদি কেউ মুক্তমনার পরিচয় দিয়ে কিছু করে তবে সেটা ভিন্ন কিছু। এজন্য আপনি বলতে পারেন, ইমামগণও তো কোন মানুষ হত্যায় বা রাষ্ট্রদ্রোহ কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হবার অধিকার রাখে না, কারণ তাকে ধর্ম সেই অধিকার দেয়নি। কিন্তু সমাজে দেখা যাচ্ছে যে, কতিপয় ইমাম নামধারী বা ইসলামী জিহাদী পরিচয়ধারী মানুষ হত্যা করেই চলেছে।
আসেন বিশ্ববাসির কথায়, কোন ইমাম হত্যা হলে দেখা যায়, তারই মতো অন্য কোন ধর্মী জিহাদী পরিচয়দানকারী কেউ হত্যা করেছে। এর উপর দেখা যায়, কোন মুক্ত মনা হত্যা হলে বিশ্বের প্রায় সব দেশই প্রতিবাদ জানায় কিন্তু তথাকথিত কোন ইমাম হত্যা হলে মুসলিম বিশ্বের কোন দেশ প্রতিবাদ জানায় না, স্বয়ং সৌদিআরবই জানায় না, বরং তারাও সন্ত্রাসী বলে তথাকথিত ইমামদের উপর হামলা করে সাধারণ মানুষও হত্যা করছে, যার প্রমাণ ইয়েমেন। তবে কখনো সখনো দেখা যায়, কোন ইমাম হত্যা হলে পাকিস্থান নামক দেশটি উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করে, প্রবাদে আছে না, 'মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি'।
জনাব এরশাদ, কথা প্রসঙ্গে বলতে হয়, ধর্ম কথায় পালন হয় না। টুপি পড়ে ওয়াজ মাহফিলে গেলেই কি ধর্ম পালন হয়ে যায়! লোক দেখানোর জন্য মসজিদে গেলেই কি ধর্ম পালন হয়ে যায়! বিছমিল্লাহ হির রাহমানির রহিম বলেই বক্তৃতা শুরু করলেই কি ধর্ম রক্ষা হয়ে যায়। ইসলামে পাঁচ স্তম্বের মধ্যে প্রথম স্তম্ব 'ইমান' নিয়ে একটু পড়াশোনা করুন। আপনি নিজেই প্রথমে নিজেকে নিয়ে আলোচনা করুন।
আপনার জীবনের যত কর্মকান্ড, সেই বোম্বের নায়িকা মমতা কুলকার্নি বলেন আর বাংলাদেশের শাকিলা জাফর হোক। তারউপর আপনি একটা বার আপনার বক্তব্যগুলো নিয়ে আত্ম সমালোচনা করুন, আমার বিশ্বাস নিজেকে মুসলমান পরিচয় দেয়ার জন্য কি করণীয়, তা নিজেই বুঝতে পারবেন। নতুবা আপনার কথা শোনে যে লোক বিশ্বাস করবে, তাকেও আপনার সারিতে নিয়ে যাবেন। তাকেও পথভ্রষ্ট করবেন। তাই, অনুরোধ সংযত হয়ে কথা বলুন।