somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রহস্যময় এক চাদর “দ্য তুরিন শ্রাউড” (X-file )

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[ একটি চাদরের কাহিনী যার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়নি আজও, রহস্যের বেড়াজালে আটকে আছে যার ইতিহাস । পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় আর জটিল “ আন - সলভড প্রবলেমস” এর একটি ।]

সাড়ে চার বাই সোয়া মিটার টুইল এর চাদর খানা যেটা আবার বোনা হয়েছে ফ্লাক্স সুতো দিয়ে ৩:১ হেরিঙবোন ষ্টাইলে, তা নিয়ে সে কি হৈ চৈ । গন্ডোগোলটা পাকিয়েছে সখের ফটোগ্রাফার সেকেন্ডো পিয়া ,১৮৯৮ সালে ইটালীর তুরিন ক্যাথেড্রালে যখন চাদরটি দেখানো হচ্ছিলো প্রদর্শনীতে । চাদরের ছবি তোলার দীর্ঘপ্রতীক্ষিত অনুমতিটি পেয়ে ২৮শে মে’ র সন্ধ্যেবেলায় তোলা এই ছবিটিই তুললো তর্ক বিতর্কের ঝড় ।
সিনদোনে দাই তোরিনো নামের এই দর্শনীয় কাপড়ের টুকরোটি রাখা ছিলো উত্তর ইটালীর তুরিনের ক্যাথেড্রাল অব সেইন্ট জন দ্য বাপ্টিষ্ট এর রয়াল চ্যাপেলে । খালি চোখে দেখা যায়না ভালো করে, চাদরের গায়ে ফুটে ওঠা এমন একটি ছবি দেখতে মানুষের ঢল নেমেছিলো সেখানে ।
ছবির মুখটি তো আর যার তার নয়, মানুষের ত্রাতা ঈশ্বরপূত্র জেসাসের ।
সেকেন্ডো পিয়ার তোলা ছবিটির নেগেটিভ থেকে ফুঁটে উঠেছে এই মুখখানি । আর তার পরের কাহিনী শুধু তর্ক-বিতর্কের, যার শেষ হয়নি আপনি যখন এই লেখাটি পড়ছেন তখনও ।

আজ "তুরিন শ্রাউড" নাম হলেও একদিন তার নামটি ছিলো “ম্যান্ডেলিয়ন অব এডেসা” । নথীপত্রে এর প্রথম দেখা মেলে ১৩৫৭ সালে যখন এটি দেখানো হচ্ছিলো ফ্রান্সের লীরে শহরের একটি গীর্জায় । বিশ্বাসীদের দলের ধারনা, চাদরটিতে একটি মুখের ছবি রয়েছে । ক্রিশ্চান ঐতিহাসিক ইউসেবিয়াস লিখেছেন , এই চাদরটি দেয়া হয়েছিলো এডেসার রাজা পঞ্চম আবগারকে সেই ৩০ খ্রীষ্টাব্দে । ৯৪৪ খ্রীষ্টাব্দে যেটাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো কন্সটান্টিপোলে । ১২০৪ খৃীষ্টাব্দে চতুর্থ ক্রুসেড চলাকালে এটি হারিয়ে গিয়েছিলো ।
বর্তমানে ইটালীর তুরিনের সেইন্ট জন দ্য ব্যাপটিষ্ট এর ক্যাথেড্রালে রাখা এই রহস্যময় চাদরটিতে যে মুখের ছবি রয়েছে তা নাকি একজন ক্রুশবিদ্ধ লোকের মুখ । ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের প্রায় সবারই দৃঢ় বিশ্বাস এই মুখটি মানুষের ত্রানকর্তা জেসাস ক্রাইষ্টের আর চাদরটি তার ই কাফনের । বহু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো হলেও ব্যাখ্যা মেলেনি, মানুষের এই ছবিটি এই চাদরে এলো কি করে । এমোন ইমপ্রিন্ট হলোই বা কি করে । রহস্য আরো জট বাঁধলো যখন দেখা গেল, হাযারো চেষ্টার পরেও ছবিটির রিপ্রিন্ট করা যাচ্ছেনা । কার্বন টেষ্ট বলছে , এটা মধ্য যুগের । আর বিশ্বাসী বিশেষজ্ঞরা বলছে , এটি মোটেও জালিয়াতী নয় কারন কার্বন টেষ্টে কেবল মাত্র ক্ষয়িষ্ণু বস্তুর ই পরিমাপ করা সম্ভব ।
মধ্যযুগের আগেও খ্রীষ্টিয় চতুর্থ শতকে এই চাদরটির অস্তিত্ব ছিলো বলেও কথিত আছে । এর পাশাপাশি সেইন্ট জন এর লেখায় “দ্য সুদারিয়ম” নামের আরো একটি চাদরের অস্তিত্বের কথা শোনা যায় বাইবেলের সময়কাল থেকে । এই চাদরটিও নাকি কবরে জেসাস ক্রাইস্টের মুখমন্ডল ঢাকতে ব্যবহৃত হয়েছিলো । স্প্যানিস সেন্টার ফর সিনডোনোলজীর মাল্টিডিসিপ্লিনারী ইনভেষ্টিগেশান কমিটির সদস্য মার্ক গাসকিন ১৯৯৯ সালে দুটো চাদরের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজতে গিয়ে ব্যাপারটিকে জটিল করে তুললেন আরো । ইতিহাস, ফোরেনসিক প্যাথোলজী, ব্লাড কেমেষ্ট্রি এবং দাগ লাগার ধরন নিয়ে পরীক্ষা করে গাসকিন মত দিলেন, খুব অল্প সময়ের ব্যাবধানে পৃথক পৃথক ভাবে চাদর দুটি একই মাথা ঢেকে রেখেছিলো । “দ্য সুদারিয়ম” এ পাওয়া এ-বি গ্রুপের রক্তও মিলে গেছে “দ্য শ্রাউড” থেকে প্রাপ্ত রক্তের সাথে । জেরুযালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এ্যা‌ভিনোয়াম ডানিন জুটলেন এর সাথে । গাসকিনকে সমর্থন করে ডানিন বললেন, শুধু তা ই নয় চাদর দুটিতে পাওয়া ফুলের রেনুও একই ।
সেই থেকে সব বৈজ্ঞানিক, থিওলোজিয়ান, ইতিহাসবিদ, গবেষকদের মাঝে বিতর্কের শুরু । এই বিতর্কের ঝড়ে মুখ খুললেন না ক্যাথলিক চার্চগুলি । তারা আনুষ্ঠানিক ভাবে চাদরটিকে সমর্থনও করলেন না কিম্বা বাতিল করেও দিলেন না । শুধু ১৯৫৮ সালে মহামান্য পোপ পিয়ুস (দ্বাদশ) রোমান ক্যাথলিক বিশ্বাসের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে অনুমোদন করলেন, প্রতিচ্ছবিটি পবিত্র জেসাসের মুখমন্ডল হিসাবে ।
এর প্রকৃতিগত লালচে খয়েরী রংয়ের চেয়ে প্রতিচ্ছবিটি সাদা কালোর নেগেটিভে পরিষ্কার ভাবে ফুটে উঠেছে । ১৯৭৮ সালে STURP নামে একদল আমেরিকান সায়েন্টিস্ট চাদরটির উপরে ব্যাপক পরীক্ষা চালান । জালিয়াতির কোনও নমুনা সেখানে না পেয়ে তারা বরং প্রতিচ্ছবিটি এখানে কেমন করে এলো এই প্রশ্ন তুলে এটিকে বলেছেন এক রহস্য । ১৯৮৮ সালে আবার বিতর্কিত এক কার্বন ডেটিং টেষ্ট চালানো হয় চাদরটির একটি টুকরো নিয়ে । য়্যুনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড, য়্যুনিভার্সিটি অব আরিজোনা এবং সুইস ফেডারেল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজীর পরীক্ষকরা জানান যে, যে কাপড়টির উপর তারা পরীক্ষা চালিয়েছেন তা মধ্যযুগীয় ১২৬০ থেকে ১৩৯০ সালের মধ্যে । শুরু হলো তর্ক বিতর্ক আর বিশ্বাস অবিশ্বাসের ঝড় । কেমেষ্ট্রি থেকে বায়োলজী , মেডিক্যাল ফোরেনসিক থেকে অপটিকাল ইমেজ এনালাইসিস ও এই বিতর্কের ঝড় থেকে বাদ পড়লোনা । নতুন নতুন থিয়রী প্রকাশিত হলো রহস্যময় চাদরটিকে ঘিরে । সুরাহা হলোনা কিছুই । জমে উঠলো খেলা ....


Secondo Pia's 1898 negative of the image on the Shroud of Turin has an appearance suggesting a positive image. It is used as part of the devotion to Holy Face of Jesus.
প্রতিচ্ছবিটির যা বিশেষত্ব তা হলো এই যে, খুব অস্পষ্ট আর হলদে রংয়ে এতে একই সাথে একটি নগ্ন পুরুষের সন্মুখ আর পশ্চাৎ দিক প্রতিফলিত হয়েছে যে মানুষটির হাত দু’টি তার জংঘার কাছে আড়াআড়ি করে রাখা । দু’টি ভঙ্গীমাই শরীরের মধ্য রেখায় মিলেছে আর বিপরীতমুখি অবস্থায় আছে । আর মাথার সন্মুখ আর পশ্চাৎ এর ছবিটি মিলেছে কাপড়খন্ডটির মাঝামাঝি ।

লালচে খয়েরী রংয়ের অনেক দাগ রয়েছে কাপড়টিতে যাকে অনুমান করা হয়েছে রক্ত হিসাবে । আছে ক্ষতচিহ্ন যা মিলে যায় ক্রুসিফিকেশানের প্যাথোফিজিওলোজির সাথে ।
একটি হাতে রয়েছে কোনও কিছু দ্বারা ফুটো করা হয়েছে এমোন গভীর ক্ষত ।
কপালে আর মাথার চারপাশে রয়েছে ছোটছোট ছিদ্র ,সম্ভবত কাটার মুকুটের আঘাত ।
একটি বড় লোহা ঢোকালে যেমন ফুটোর মতো ক্ষত তৈরী হয় তেমনি একটি ক্ষত রয়েছে পায়ে ও।

সম্পূর্ন ছবিটি বাইবেলে বর্নিত যীশুর মৃত্যুর বর্ননার হুবহু প্রতিকৃতি যেন ।

Full-length image of the Turin Shroud before the 2002 restoration.

চাদরটির ঐতিহাসিক নথিপত্র সময়কে দুটো ভাগে ভাগ করে দিয়েছে , ১৩৯০ এর পূর্বকাল আর সে থেকে বর্তমান পর্য্যন্ত ।
১৩৯০ সাল পর্য্যন্ত সময়টা ছিলো বিতর্ক আর বৈপরীত্যের । ১৩৯০ সালে বিশপ পীয়েরী দ্য’আর্কিস যখন সপ্তম এ্যান্টিপোপ ক্লিমেন্টকে একটি মেমোরেন্ডাম পাঠালেন এই বলে যে, চাদরের ব্যাপারটি একটি জালিয়াতী আর এর চিত্রকর তার দোষটি স্বীকার করেছে তখন থেকেই বইতে শুরু হলো অন্যরকম হাওয়া । ১৪৫৩ সালে এটি এসে পড়লো হাউজ অব স্যাভয় এর দখলে । সেখান থেকে এর মালিকানা চলে এলো তুরিনে ১৫৭৮ সালে । সতের শতকে এটি প্রদর্শনীর জন্যে উন্মুক্ত করা হয় এবং এর ছবি তোলার প্রথম অনুমতি মেলে উনিশ শতকে । চোদ্দ শতকের আগে এই চাদরটি সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনও ঐতিহাসিক প্রমানাদি নেই । তবে এর আগে বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া অনেক রিপোর্টে জেসাস’এর মৃতদেহ ঢেকে রাখতে ব্যবহৃত কাপড়, কিম্বা তার মাথার ছবি কোথাও না কোথাও রয়েছে এমোন সন্দেহের কথা জানা গেছে । কিন্তু তা যে বর্তমানের আলোচিত কাপড় খন্ডটি-ই তার কোনও ঐতিহাসিক ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি ।

চোদ্দ শতকের ইতিহাস ঘাটলে, ক্রুসিফায়েড কোনও এক ব্যক্তির মাথার প্রতিচ্ছবি সম্বলিত একটি চাদর লীরে শহরে জিওফ্রয় দ্য চারনী নামের এক ফ্রেঞ্চ নাইট এর কাছে ১৩৫৩ থেকে ১৩৫৭ সালের মধ্যে ছিলো বলে ঈঙ্গিত পাবেন আপনি । তার পরেও নানা জনের মধ্যে বিভেদ রয়েছে এর মৌলিকত্বের । কেউ বলছেন এটি স্রেফ জালিয়াতি, কেউ বলছেন শত বছরের ব্যবধানে জন্ম নেয়া দুই শিল্পীর কাজ এটি । সবচেয়ে চমকপ্রদ ধারনাটি হলো, লীরে তে রাখা রহস্যময় চাদরটি একজন খুনী ব্যক্তির স্ব-স্বীকৃত জালিয়াতী অথবা তা লিওনার্দো ভিঞ্চির একটি জালিয়াতী ।

জেসাসের মৃত দেহ আচ্ছাদিত করে রাখা কাপড়টির কথা বহু শতাব্দীকাল ধরেই ধর্মীয় বিশ্বাসের অন্তর্গত ছিলো । ম্যাথ্যু, মার্ক আর লুক লিখিত গোসপেলে ও বলা হয়েছে , আরিমাথিয়ার জনৈক যোসেফ যিশুর দেহটি একটি লিলেন কাপড়ে মুড়ে নতুন একটি কবরে রেখেছিলেন । আবার সেইন্ট জন বলেছেন, একটি নয় যীশুর শিষ্য পিটার বেশ কয়েক টুকরো কাপড় কবরে দেখেছেন যখন কবরটি অজ্ঞাত কারনে উন্মুক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলো, জেসাসের লাশটি ছিলো লা-পাত্তা ।
কিন্তু এসবের কোনটিই তুরিনের চাদরের মতো হৈ চৈ ফেলতে পারেনি । এতে প্রস্ফুটিত প্রতিচ্ছবিটি ধার্মিকদের কাছে অলৌকিক এক প্রতিচ্ছবি যেমনটি তারা ভাবেন মেক্সিকোর “ব্যাসেলিকা অব আওয়ার লেডী অব গুয়াদাল্যুপ” এ সংরক্ষিত আলখেল্লায় প্রস্ফুটিত “ ইমেজ অব ভার্জিন মেরী ” র প্রতিচ্ছবির মতো । কারন এই চাদরটি দিয়ে যাকে আচ্ছাদিত করা হয়েছিলো তিনি কেবলমাত্র মানুষই নন, একজন স্বর্গীয় ব্যক্তি যার পুনরুত্থানের সময়কালেই তার স্বর্গীয় মুখমন্ডল অলৌকিক ভাবেই এতে মুদ্রিত হয়ে যায় । বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষা দিয়ে সেই অলৌকিক স্বর্গীয় পদ্ধতি বুঝে ওঠা কোনও কালেই মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় ।

এই কাপড়খন্ডটির আনুষ্ঠানিক পরীক্ষায় প্রথম “সিনডোনোলজী (sindonology)” শব্দটি ব্যবহৃত হয় । গ্রীক “σινδών— sindon” শব্দ থেকে নেয়া এই শব্দটি মার্কের গোসপেল এ শুধুমাত্র জেসাসের মৃতদেহ আচ্ছাদনের কাপড়গুলির জন্যেই ব্যবহার করা হয়েছে । ১৮৯৮ সালে সেকেন্ডোপিয়ার তোলা ছবিটি থেকেই শুরু হয়েছে ব্যাপক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষার । এই সিনডোনোলজী নিয়েই চলছে এর বব্যচ্ছেদ ।

১৯৭০ সালে এগারো সদস্য বিশিষ্ট তুরিন কমিশন এই কাপড়ের কনভেনশনাল এবং ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপিক পরীক্ষা করে বললেন, এতে কোন ধরনের রং (heterogeneous coloring material or pigment )ব্যবহার করা হয়নি । আবার ১৯৭৯ সালে ওয়াল্টার ম্যাককোরন STURP কর্তৃক দেয়া কাপড়টির অংশবিশেষ পরীক্ষা করে বললেন, সত্যিকার ভাবেই বিলিয়ন বিলিয়ন সাবমাইক্রোমিটার পিগমেন্ট পার্টিকেলস দ্বারা প্রতিচ্ছবিটি আঁকা হয়েছে । অবশ্য কাপড়টির যে আঁশগুলো তিনি রং পরীক্ষা করার জন্যে পেয়েছেন তা নাকি প্রতিচ্ছবিটির গায়ে লাগানো যে তালি গুলি রয়েছে তার বত্রিশটি অংশ থেকে পাওয়া । পরে জন হেলার এবং এ্যালান এ্যাডলার নামের দুজন পরীক্ষক সেই একই জিনিষ পরীক্ষা করে ওয়াল্টার ম্যাককোরনের সাথে একমত হয়ে বললেন, যে এখানে আয়রন অক্সাইড রয়েছে । যদিও তারা সমাপ্তি টেনেছেন এই বলে যে , এই কেমিক্যালগুলির ব্যতিক্রমি শুদ্ধতা এবং প্রাচীন অন্যান্য কাপড়ের তুলনায় এই কাপড়খন্ডটিতে বিশিষ্ট ভাবে আয়রন শোষিত হলেও কেবলমাত্র এই আয়রনই প্রতিচ্ছবিটির উৎস নয় । অন্যান্য মাইক্রোস্কোপিক পরীক্ষার ফলাফলও একই ইঙ্গিত দিয়ে বলছে , প্রতিচ্ছবিটি কেবল মাত্র কাপড়টির কার্বোহাইড্রেট স্তরেই অংকিত; অন্য কোনও রং এর দেখা মেলেনি কোথাও ।

২০০০ সালে জেরুজালেমের কাছে একটি কবর থেকে আবিষ্কৃত হলো ১ম শতাব্দীর একটি কাফন (burial shroud)। ধারনা করা হচ্ছে , এটি তখনকার সময়ের একজন উচ্চশ্রেনীর ইহুদী ধর্মযাজকের । কাপড়টি সাধারন দুস্তরে বোনা । যা তুরিনের কাপড়টির মতো নয় । এই আবিষ্কারের উপর ভিত্তি করে পরীক্ষকেরা বললেন, তুরিনের এই কাপড়খন্ডটি জেরুজালেমে যীশুর সময় কালের নয় ।

A Roman loom, c. 2nd century CE.

ওদিকে আবার হামবুর্গের টেক্সটাইল বিশেষজ্ঞ Mechthild Flury-Lemberg বলে বসলেন, কাপড়টির প্রান্তীয় ভাজের জোড়ায় যে কাপড় রয়েছে তা ডেড-সী’র কাছে “মাসাদা” দূর্গে রক্ষিত ১ম শতাব্দীর কাপড়টির মতো । এর বুনন ৩:১ টুইল বৈশিষ্টের যা প্রথম শতকের সিরিয়ান ডিজাইন । লেমবার্গ এর সাথে বললেন, তুরিনের চাদরে ব্যবহৃত লিলেন (কাপড়)টিতে এমোন কোনও বুনন বা সেলাই বৈশিষ্ট নেই যা দেখে এটাকে প্রথম শতকের বুনন শিল্পীদের উচ্চমানের কাজ নয় বলে বাতিল করা যায় ।
২০০২ সালে ইউটাহ এর হারকিউলিস এ্যারোস্পেস কম্পানীর যোশেফ কোলবেক এবং এনরিকো ফার্মি ইন্সস্টিটিউটের রিচার্ড লেভী চাদরটিতে পাওয়া কিছু ধূলাবালির নমুনা পরীক্ষা করেন । দেখা গেল এগুলো ট্রাভার্টাইন এ্যারাগোনাইট লাইমষ্টোন । জেরুজালেমের প্রাচীন কবরগুলি থেকে ধূলো নিয়ে হাই রেজিল্যুউশান মাইক্রোপ্রোব দিয়ে পরীক্ষা করে তারা বললেন , উভয় ধূলোর নমুনাই হবহু এক তবে তুরিনের চাদরটিতে পার্থক্য এই যে এতে অতি সুক্ষ সেল্যুলোজ লিলেন এর কিছু আঁশ রয়েছে যেগুলি কোনও ভাবেই কাপড়টি থেকে পৃথক করা সম্ভব হয়নি ।

A piece of travertine

রক্ত বলে অনুমিত হয় এমোন অনেক লালচে রংয়ের দাগ রয়েছে কাপড়টিতে কিন্তু তা যে প্রতিচ্ছবিটি যে সময়ে ফুঠে উঠেছে তখন লেগেছে না কি পরে , তা অনিশ্চিত । ম্যাকক্রোন তো বলেইছেন, ওগুলো রেড অক্সাইড যা ঐ সময়ে ব্যবহার করা হতো । আবার এ্যালান এ্যাডলার সহ অনেক গবেষক লাল দাগগুলিকে রক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং বলেছেন, আয়রন অক্সাইড হলো হিমোগ্লোবিনের প্রাকৃতিক রেসিডিউ । তারা শুধু একে হিমোগ্লোবিন -ই বললেন না বৈজ্ঞানিক নিশ্চয়তা সহকারে বললেন তারা এখানে পরফাইরিন, বিলিরুবিন, এ্যালবুমিন আর প্রোটিন ও খুঁজে পেয়েছেন । এদিকে আবার আলাদা ভাবে পরীক্ষা করে ফোরেনসিক প্যাথোলোজিস্ট পিয়্যের ল্যুইগি বেলোনী তাদের সাথে একমত পোষন করে বললেন, রক্তের গ্রুপ “এ-বি” । তাই দেখে STURP রক্তের কিছু ফ্লেকস পাঠালো ন্যূ’ ইয়র্কের স্টেট য়্যুনিভার্সিটিতে । ওখানকার ডঃ এ্যান্ড্রু মেরীওয়েদার বলে দিলেন , রক্তের কোনও গ্রুপ নিশ্চিত করা যায়নি আর ডি-এন-এ গুলি বেশ খারাপ ভাবেই খন্ড বিখন্ড হয়ে আছে । তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন এগুলো রক্তই, কিন্তু এর প্রকৃতি ঠিক কোন ধরনের বা তা পুরুষ মানুষের কিনা সঠিক ভাবে বলা যাচ্ছেনা ।
গবেষক জ্যাক নিকল তর্ক তুলেছেন, এ্যাডলার হিমোগ্লোবিনের যে আয়রন অক্সাইড সম্পর্কে বলেছেন সে আয়রন অক্সাইড পাওয়া যেতে পারে টেম্পেরা পেইন্ট থেকেও । অবিশ্বাসী আর নিন্দুকেরা অন্যান্য ফোরেনসিক ব্লাড টেষ্টের কথাও উল্লেখ করে থাকেন যার ফলাফল চাদরটির বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্ন বিদ্ধ করে এই বলে যে , যে বা যারা এই চাদরটি হাতে নিয়েছে এই রক্ত তাদের ও হতে পারে আর রক্তের ধারা যে ভাবে ফুঠে আছে তা নিখুত এবং অবিশ্বাস্য ভাবে রিয়েলিস্টিক ।

গবেষনার শেষ নেই । কাহিনীর ও শেষ নেই ।
১৯৩১ সালের তোলা ছবি থেকে চাদরটিতে প্রথম ফুলের রেনুর ছাপ দেখতে পান এ্যালান হোয়ানজার ১৯৮৫ সালে । ১৯৯৭ সালে এভিওনাম ডেনিন নামে জেরুযালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বোটানিষ্ট সেই রেনু যে Chrysanthemum coronarium, Cistus creticus এবং Zygophyllum ফুল থেকে এসেছে তা ও আবিষ্কার করে ফেলেন । শুধু তা-ই নয় তিনি ঘোষনা দেন যে , ফুলগাছের যে আউটলাইন চাদরটির গায়ে আছে তা থেকে বোঝা যায় এগুলি মার্চ কিম্বা এপ্রিল মাসের । সুইস পুলিশের ক্রিমিনোলোজিষ্ট ম্যাক্স ফ্রেই চাদরটি সম্পর্কে STURP এর তদন্ত চলাকালে প্রাপ্ত ফুলের রেনু নিয়ে তদন্ত করে আরো একধাপ এগিয়ে রায় দেন যে, চাদরটিতে ৫৮ ধরনের ফুলের রেনু রয়েছে । এর মধ্যে ৪৫ টি জেরুযালেম এলাকার , বিশেষ করে ৬ টি হলো মধ্যপ্রাচ্যের । ১টি কেবল মাত্র কন্সটান্টিপোলেই শুধু পাওয়া যায় , বাকী দুটো তার্কির এডেসা এলাকার । ওদিকে নিন্দুকেরা বলছেন , ডেনিন যে ফুলের কথা বলছেন তার ছাপ এতোই অস্পষ্ট যে তা থেকে নির্দিষ্ট কোনও কিছু বলা সম্ভব নয় । আর এতে যে ভাবে রেনু ছড়িয়ে আছে তা-ই বলে এগুলি ইচ্ছাকৃত ভাবে রেনু দিয়ে সংক্রমিত করা হয়েছে । একধাপ এগিয়ে নিন্দুকেরা আবার আঙ্গুল তুলেছেন ক্রিমিনোলোজিষ্ট ম্যাক্স ফ্রেই এর দিকে । ম্যাক্স ফ্রেই এর আগে “Hitler Diaries” তদন্তে ঘুষ খেয়েছেন তাই এক্ষেত্রেও তার ঘুষ খাওয়া সম্ভব । অথবা সে নিজেই ফুলের রেনু চাদরে লাগিয়ে বাহবা কুড়াতে চেয়েছেন । কেউ কেউ বলছেন , ম্যাক্স ফ্রেই নিজেই স্ব-শিক্ষিত এ্যামেচার এবং তার এ জাতীয় গবেষনার জন্যে কোনও প্রশিক্ষন নেই । অতি সম্প্রতি ২০০৮ সালে এভিওনাম ডেনিন আবারো বিভিন্ন রিসার্চের উল্লেখ করে বললেন , চাদরটিতে ফুলের ছাপ সত্যিকারেরই । তা কোনও ভাবেই বিশেষভাবে তোলা ছবির চালাকি নয় ।

১৯৫০ সালে চিকিৎসক পীয়েরী বারবেট, ১৯৯৭ সালে ফোরেনসিক প্যাথোলোজিষ্ট রবার্ট বাকলিন, ১৯৯৮ সালে মেডিক্যাল পরীক্ষক ফ্রেডরিক যুগীব, ২০০১ সালে ফোরেনসিক মেডিসিনের অধ্যাপক পিয়্যের ল্যুইগি বেলোনী সবাই মিলে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে যে ফলাফল তুলে ধরলেন তার সারমর্ম এই - the image on the shroud was authentic, anatomically correct and consistent with crucifixion, who was whipped, wounded around the head by a pointed instrument and nailed at the extremities before dying .

এদিকে গুইলিও ফেন্টি নামের মেকানিকাল মেজারমেন্টস এর এক অধ্যাপক আবার প্রতিচ্ছবিটি যে ১৭৫ থেকে ১৭৭ সেন্টিমিটার লম্বা লোকের এবং তিনি যে ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় ছিলেন তা ও আবিষ্কার করে ফেললেন ।
বিভিন্ন চিত্রশিল্পী(professional figurative artist) প্রতিচ্ছবিটি নিয়ে কোনও মানুষের শরীরের সরাসরি ছাপ আর হাতে আঁকার পার্থক্য নিয়ে মাথা ঘামিয়েছেন যথেষ্ট । মোনালিসা যে ভিঞ্চির নিজ প্রতিকৃতি এই ব্যাপারটি যিনি প্রথম উদ্ঘাটন করেন সেই বিখ্যাত লিলিয়ান শোয়ার্জ ২০০৯ সালে বলে বসলেন, প্রতিচ্ছবির মুখমন্ডলটির অনুপাত সঠিক এবং ভিঞ্চির নিজের মুখমন্ডলের সাথে তার হবহু মিল ।
এই কদিন আগে, ২০১০ সালে গ্রেগরী.এস.পল আবার বললেন, প্রতিচ্ছবিটির মুখমন্ডলের আনুপাতিক আকৃতি বাস্তব সম্মত নয় এবং তা অসম্ভব । এর আগে ১৯৮৩ সালে জো নিকেল বলেছিলেন একই কথা । তারা বোঝাতে চেয়েছেন এটা একজন গথিক চিত্রশিল্পীর আঁকা ছবি ।
এবার বুঝুন !

এদিকে আবার ডিজিটাল ইমেজ প্রসেসিং, ভিপি-৮ ইমেজ এ্যানালাইজার ব্যবহার করে কেউ কেউ বললেন তারা যে ছবিটি পেয়েছেন তা ত্রিমাত্রিক । কোনও ফটোগ্রাফিক ইমেজ এরকম ত্রিমাত্রিক হওয়া সম্ভব নয় । তারা প্রাপ্ত ছবিটির কপি করতে গিয়ে ব্লক প্রিন্ট, এনগ্রেভিং, বাস রিলিফ পদ্ধতি প্রয়োগ করেও ব্যর্থ হয়েছেন এর আর একটি কপি বানাতে ।
আশ্চর্য্যই বলতে হবে !

এদিকে অসংখ্য অপটিক্যাল বিশ্লেষন একে অপরকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে । ২০০৪ সালে ফেন্টি এবং ম্যাগ্গিওলো “Journal of Optics” এ লিখলেন, তারা চাদরটির আর একপাশে অস্পষ্ট দ্বিতীয় একটি মুখের ছবি পেয়েছেন । ভাবুন, যেখানে তুরিনের চাদরটির সামনে যে প্রতিচ্ছবি তা লম্বায় ১.৯৭ মিটার আর পেছনেরটা হলো ২.০২ মিটার । দুটো প্রতিকৃতি, এপিঠে ওপিঠে । কি বলবেন ?

সব মিলিয়ে দাড়াচ্ছে এই – “ Many hypotheses have been formulated and tested to explain the image on the Shroud. To date, despite numerous and often media-related claims, it can be said that "the body image of the Turin Shroud has not yet been explained by traditional science; so a great interest in a possible mechanism of image formation still exists...” ।

দেখা যাক কি হলো শেষে -

গবেষক জ্যাকুইস ডি কস্টাঞ্জো বললেন, শ্রাউডটি তৈরী হয়েছে একটি সত্যিকারের বাস-রিলিফ স্কাল্পচার ব্যবহার করে । যার ফলে ছবিটিতে ত্রিমাত্রিক ভাব এসেছে । এর জন্যে তিনি যীশুর মুখমন্ডলের মতো দেখতে একটি বাস-রিলিফ তৈরী করলেন । এবং ভেজা একটি লিলেন দিয়ে তাকে জড়িয়ে রাখলেন । যখন লিলেনটি শুকিয়ে গেল তিনি সেটাকে জিলেটিন আর ফেরিক অক্সাইডের মিশ্রনে ডোবালেন । দেখা গেল তুরিন শ্রাউডের মতো একটি ছবি ফুঁটে উঠেছে তাতে । ছবিটি ওয়াটার রেজিষ্ট্যান্ট হলো, ২৫০ ডিগ্রী তাপ সয়ে টিকে থাকলো, বাই-সালফাইট জাতীয় তীব্র কেমিক্যালস এ ও অক্ষত থাকলো, জিলেটিনের কারনেই নাকি ফেরিক অক্সাইড ভেঙ্গে ফেরাস অক্সাইডে পরিনত হলোনা ।
রং এর ব্যাপারেও আছে চমকপ্রদ তথ্য । ক্রাইষ্টের জন্মের ১৫০০ বছর আগে থেকেই লেবাননের উপকুল এলাকাতে কাপড় রঙ করার এক অভিনব পদ্ধতির কথা জানা যায় । এতে ব্যবহার করা হতো সামুদ্রিক শামুকের থেকে সংগৃহিত রস । এই রঙ হতো সাধারনত দুধ-সাদা থেকে হলদেটে । কখনও গোলাপী থেকে গাঢ় নীল । ঠিকঠাক ভাবে কাপড়ে ব্যবহার করতে জানলে এতে একটা ঐশ্বরিক ভাব ("eternal".) ফুটে উঠতো । সূর্য্যের তাপে ভালোমতো শুকিয়ে নিলে এই রঙ যে কোনও আবহাওয়ার ধকল সইতে পারতো । আলো ছাড়া দেখা যেতোনা কোনও ছবি । কেবল সূর্য্যের আলোতেই দেখা মিলতো অস্পষ্ট একটি ছবির ।
ছবিটি এই শামুকের রঙের খেলা নয়তো ?
এ পর্য্যন্ত তুরিনের চাদরটির সবচেয়ে কড়া আর তীব্র সমালোচক হলেন ট্রয়েস এর বিশপ পীয়্যেরী দ্য’ আর্কিস । আর্কিসের পূর্বসুরী বিশপ হেনরী ডি পোর্টিয়ার্স এর কাছ থেকে পাওয়া কিছু তথ্য প্রমান থেকে তিন বললেন, এটি স্রেফ একটি জালিয়াতি । ১৩৮৯ সালের লেখা এক চিঠিতে তিনি তখনকার পোপ কে জানালেন, চাদরটির মালিক জিওফ্রয় মিথ্যা আর প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে তার গীর্জার জন্যে একখানি চাদর সংগ্রহ করেছেন যাতে চতুরতার সাথে একটি মুখের ছবি অংকিত রয়েছে । উদ্দেশ্য , এই ধারনা প্রচার করা যে এই চাদরখানিই যীশুখ্রীষ্টকে তার কবরে আচ্ছাদিত করে রেখেছিলো । আসলে সবটাই তার একটি বানিজ্য পরিকল্পনার অংশ । উদ্দেশ্য ঐ গীর্জায় রক্ষিত অন্যান্য স্যুভেনিরগুলি যেন উচ্চমূল্যে দর্শনার্থীদের কাছে বিক্রি করা যায় ।এবং হয়েছিলোও তাই । পীয়্যেরী দ্য’ আর্কিস এর মতে এটি একটি চাতুরী এবং যিনি এটাকে একেছেন তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে । যদিও সে জালিয়াতের নাম কোথাও উল্লেখিত হয়নি ।
এটিই হলো চাদরটি সম্পর্কে তোলা প্রথম অভিযোগ । যে সময় এই চিঠি লেখা হয় তার ৩৩ বছর আগেই জিওফ্রয় পরলোকগত হয়েছেন । এতো বছর পরে এই অভিযোগ কেন ? এর উত্তরে আর্কিস এর বক্তব্য – ১৩৮০ সাল থেকে জিওফ্রয়ের ছেলে দর্শনীর বিনিময়ে চাদরটিকে দেখার আয়োজন করেছেন বলেই তার এই সন্দেহ জাগে ।

গত একশো বছরের বেশী সময় ধরে চাদরটি নিয়ে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়েছে হাযার হাযার । গত বিশ বছর ধরে এটি যে একটি জালিয়াতি সে ধারনা বেড়েছে । কিন্তু আজ পর্য্যন্ত আসল সত্যটি বের করা যায়নি ।
আসল সমস্যাটি এই নয় যে , চাদরটি প্রথম শতকের না কি মধ্যযুগের । সমস্যাটি হলো এটা বুঝে ওঠার যে, কি করে চাদরটিতে রক্তের ছাপ এলো আর কি করেই বা কারো পক্ষে সম্ভব চাদরের প্রতিটি সুতোর আঁশে জারন ক্রিয়ার (oxidation) সুষম বন্ঠন করা ।
কি করে এটি তৈরী হয়েছে, কে করেছে এমোন কাজটি ?
এর জবাব মেলেনি । শেষে যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হলো, এই একবিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষ হাতে থাকতেও আমরা এই সাধারন প্রশ্নগুলির উত্তর কেন দিতে পারছিনে ?

আমাদের কি অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছু কাল ? নতুন কোনও বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে, কি বলে সে এটা জানতে ?
নাকি একটি দীর্ঘশ্বাসের সাথে মেনে নিতে হবে - হতেও পারে । ভগবানের লীলা বোঝা ভার ........


সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:৩৮
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×