somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আর থাকা গেলোনা ...

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আর থাকা গেলোনা ।
“ভোট হান্টার”দের পাল্লায় আপনার- আমার জীবন যখোন ত্রাহি ত্রাহি তখোন মুখে কুলুপ এটে বসে থাকা ঠিক নয় ভেবে বসে থাকা গেলোনা ! আমরা যেন “ভোট হান্টার”দের অর্থাৎ রাজনৈতিক দলগুলোর শিকার । তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে ঠিক যেমন করে বাঘ শিকার করা হয় তেমনি । বাঘশিকারীর সাঙ্গ-পাঙ্গোরা যেমন জংগলে আগুন দিয়ে, পটকা ফুটিয়ে বাঘকে তাড়িয়ে নিয়ে আসে শিকারীর জালের কাছে বা বন্দুকের মুখে তেমনি রাজনৈতিক দলের সাঙ্গ-পাঙ্গোরা আমরা ভোটারদের আগুন দিয়ে, পটকা ফুটিয়ে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে যেন ভোট নামের জালটির দিকে ,যাতে “ভোট হান্টার”রা ভোটারদের বুকে কয়েকটা বন্দুকের নল ঠেকিয়ে গুলি ছুঁড়তে পারেন অতি সহজেই । বাঘ যেমন বোঝেনা যে সে ফাঁদে পড়েছে তেমনি আমরা আহাম্মক জনগণও বুঝতে চাইনে যে আমরা আসলেই মরন একটি ফাঁদে পড়েছি ।


“ভোট হান্টার” রেডী টু কিল..

কেন বুঝিনা তার কারন বলছি । টক’শোগুলোতে দেখবেন পন্ডিত ব্যক্তিদের ছড়াছড়ি । এরা আমাদের চিন্তাকে আচ্ছন্ন করেন । এরাই গণতন্ত্র শেখাচ্ছেন আমাদের মতো আহাম্মক পাবলিকভাইদের তাদের মতো করে । হরতাল নাকি রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার ( যে দলই করুক না কেন কোনও মিথ্যে নেই এতে ) ।
কিন্তু একজনকেও দেখেছেন কি, যিনি বলছেন হরতাল ডাকা রাজনৈতিক অধিকার হলেও জনগণের জানমাল ধ্বংশ করা কারো গণতান্ত্রিক অধিকার নয় ? তারা কি কখোনও বলেছেন, যদি ধ্বংসকারী কর্মকান্ড রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক আর গণতান্ত্রিক অধিকার হয় তবে আত্মরক্ষার খাতিরে সে ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডকে বাঁধা দেয়াও প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক , গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক অধিকার ?
বলেননি । কারন এরা , শিকার করা বাঘটির চামড়া দিয়ে ড্রইংরুমের শোভা কবে বাড়াবেন তার ধান্দায় ওৎ পেতে আছেন । তাই শিকারীদের (সব দলের )চটিয়ে দেবেন না, যাতে আখেরে ধান্দাটি মারা যায় । কেউই বলছেন না - হরতাল ডাকা যেমন যে কারো গনতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার তেমনি হরতালের তান্ডব থেকে জনগণের জানমাল রক্ষা করা , রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা বজায় রাখা সরকারের ( যে দলের সরকারই হোক না কেন ) রাষ্ট্রিয়, নৈতিক এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধতার অধিকার এবং তা জনগণের দ্বারা গঠিত সরকারেরই অঙ্গীকার । বলছেন না এটাও যে, আগুনে পুড়ে যে কটি ভোটদাতা মারা গেছেন বা যাবেন তার সংখ্যা যেন আর না বাড়ে তা বজায় রাখতে সরকার যা করছে (লাঠির বারি খানকয়েক, টিয়ার শেল বা নিদেন পক্ষে রবার বুলেট ব্যবহার মাত্র ) তা সহিংসতা বন্ধে যথেষ্ট কম ! বলছেননা, যে হাযার কোটি টাকা প্রতিদিন ভোটদাতা জনগণকে গচ্ছা দিতে হচ্ছে হরতালের কারনে তা রক্ষা করতে সরকারের উচিত আরো কঠোর হওয়া । বলবেন না কারন, আখের যাতে নষ্ট না হয় সে শিক্ষা তারা অর্জন করে নিয়েছেন তোষামোদ করার কালচার থেকে । প্রতিবারই এ জাতীয় “ধরি মাছ না ছুঁই পানি” ষ্টাইলের কথাবার্তা তাদের ধিকৃত নয়, পুরষ্কৃতই করেছে । অথচ হরতালকে ( সহিংস ) বৈধতা দিতে তারা সরকারের সমালোচনা করছেন গলা বাড়িয়ে । সরকার নাকি গণতন্ত্রকে গলা টিপে ধরেছেন । কিন্তু এটা বলছেন না যে, দলের রাজনৈতিক অধিকার রক্ষা করতে দলটি যে সারা দেশের গলাটাই টিপে ধরছে ! কারন এ মূহুর্তে পাল্লাটি হরতালকারীদের দিকে ঝুঁকে আছে । ভবিষ্যতে আখের গোছানোটা যাতে রিস্কি না হয় সেদিকে তাদের হিসেব জ্ঞান টনটনে । তাই মাঝে মাঝে হরতালকারীদের কিছু না করতে আহ্বান জানাচ্ছেন যাতে সরকারও খুশি থাকে খানিকটা । জনগণের পিছন দিয়ে কি ঢুকলো তা নিয়ে তাদের কিচ্ছুই যায় আসে না ।
এই টক’শোওয়ালাদের তালে তালে আমরাও তাল ঠুকছি । এরা আমাদের বুদ্ধিভ্রষ্ট করে দিচ্ছে । তাই আমার এই লেখাটি পড়ে অনেকেই গনতন্ত্রের পক্ষে বর্তমানের নৈরাজ্যকে বৈধতা দিতে চেষ্টা করবেন আমার বক্তব্যের বিরূদ্ধে গিয়ে । এরা আসলে নিজের অজান্তেই প্রকারান্তরে ধান্দাবাজ “ভোট হান্টার”দের হাতকেই শক্তিশালী করবেন মাত্র। ঠান্ডা মাথায় কথাটি ভাবতে তাদের অনুরোধ করছি । কারন আপনার জীবনের নিরাপত্তার পশ্ন, আপনার সন্তানের শিক্ষার প্রশ্ন, আপনার শান্তিপূর্ণ বেঁচে থাকার প্রশ্ন , আপনার রুজি-রোজগার আর ব্যবসা - বানিজ্যের প্রশ্ন ইত্যাদি সবকিছুর বিনিময়ে “ভোট হান্টার”রা একটি মাত্র অপশন রেখেছে আপনার জন্যে - ভোট । এই ভোটটি পেতে আপনাকে পুড়িয়ে মারতেও তাদের বিন্দুমাত্র বুক কাঁপবেনা ।


পুড়ছে আপনার ভবিষ্যত .....

এটা তো আপনি দেখতেই পাচ্ছেন চোখের সামনে । না কি, দেখেও না দেখার ভান করছেন অথবা জ্ঞানী সাজতে ঘটনাগুলোকে অন্যদিকে ঘোরাতে কুযুক্তির আশ্রয় নিয়ে উট পাখির মতো মুখখানাকে বালুতে গুঁজে পন্ডিতি কায়দায় গোঁফের ফাকে হাসছেন ?
কিন্তু আপনি জানেন না আপনাকে ভোটের ফাঁদের সামনে টেনে আনতে আপনাকে দিয়েই গনতন্ত্রের কথা বলিয়ে ছাড়বে এরা । আপনি ভাববেন , আপনি শিক্ষিত তাই গনতন্ত্রের পক্ষে কথা আপনাকে বলতেই হবে । ভুল ধারনা আপনার । এটা অজ্ঞ –অনভিজ্ঞ তথাকথিত শিক্ষিতদের সারবস্তুহীন “ অহং” বা “ ইগো” । আপনি সত্যিকারের শিক্ষিত হলে আপনার উচিত, যে ধরনের গনতন্ত্র নামক বীজ থেকে কেবলমাত্র “ভোট হান্টার”দের জন্ম হয় সে বীজ বপন থেকে বিরত থাকা ।
আপনি কি বুঝতে পারছেন না , কেবল মাত্র ভোট খেলার আয়োজনের কারনেই আজকের মতো প্রতিবারই আপনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় বেড়িয়েছেন অফিস- আদালতে হাজিরা দিতে যাতে আপনাকে সামান্য চাকুরীটি হারাতে না হয় ? আপনি কি দেখছেন না , আপনার সন্তানটির শিক্ষা এক অনিশ্চয়তার ঘুরপাকে পাঁক খাচ্ছে ? আপনি কি দেখছেন না , আপনার সন্তান-ভাই কিম্বা বোনটি ৯০% বার্ণ নিয়ে মৃত্যুর সাথে লড়ছে হাসপাতালের মেঝেতে কিম্বা পুড়ে ছাই হয়েছে ? আপনি কি অনুভব করছেন না, আপনার স্ত্রী-স্নেহময়ী মা-দরদী বাবা আর আপনার প্রানাধিক সন্তানটি উৎকন্ঠিত আপনার নিরাপদ গৃহে ফেরার অপেক্ষায় ?
যদি এ অনুভব আপনার হয়ে থাকে তবে বলবো – ভাবুন , পচা-গলা এই রাজনীতি নামের রোগটির মূল চিকিৎসাটি কি করে করবেন !

চিকিৎসা বা ট্রিটমেন্ট হলো , রিমূভ্যাল অব দ্য কজ । কারন নিমূর্ল ।

এইসব বর্ব্বরোচিত ঘটনা প্রবাহের একটিই কারন – ভোট চাই আমার বাক্সে । জনগণকে জিম্মি করে রাখার এটাই একমাত্র কারন । দীর্ঘদিন এভাবে জিম্মি থেকে থেকে একটি “ভোট – টিউমার” এর জন্ম দিয়েছেন আপনি । আপনি যদি আপনার ভবিষ্যতকে এই “ভোট – টিউমার” জনিত ককটেলের আঘাতে আর কোনওদিন ছিন্নভিন্ন করতে না চান তবে এই রোগের একমাত্র ধ্বন্বন্তরী চিকিৎসা হলো – ভোট না দেয়ার ছুরিটি দিয়ে একটি পোঁচ দেয়া । কারন নিমূর্ল হলেই রোগটি সেরে যাবে ।

আপনারা যে যাই বলুন না কেন , জনগণের কাছে এই একটিই ধারালো অস্ত্র আছে রোগ সারানোর । এটাকে ব্যবহার করার এখোনই সময় ।

আমি জানি , এমোন কথা বলায় অনেকেই আমার চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করে ছাড়বেন । গালাগালির বন্যা বইয়ে দেবেন । কিছু মনে করবোনা আমি । তাদেরকে শুধু আমি আর একবার যোগ-বিয়োগ-গুন-ভাগ করে মিলিয়ে দেখতে বলবো যে, রোগ চিকিৎসাটি আদৌ ভুল কিনা !
গালাগালিও আমার সইবে, যদি তাতে আপনার আর আপনার সন্তানকে ভোট-হান্টারদের হাতে আর কোনও দিন জিম্মি হয়ে থাকতে না হয় ।

সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক .......

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×