[ পূর্বকথাঃ স্বাধীনতার মাস। মাসটি এলেই স্বাধীনতার প্রসঙ্গ নিয়ে অনেক পুরোনো কথাই আবার নতুন করে সামনে আনা হয়। যে যার ধারনা থেকে কিছু প্রশ্ন তোলেন। কিন্তু অনেকেই মনে হয় প্রশ্নগুলি বা তার উত্তর যৌক্তিক সম্ভাবনা থেকে বিশ্লেষণ করে দেখেন না। ]
অনেককেই দেখি, দেশের স্বাধীনতার ঘোষনাটি ৭১ এর মার্চেই শেখ মুজিব কেন দেননি তা নিয়ে শেখ মুজিবের হঠকারীতা -অস্পষ্টতা - ক্ষমতার লোভ ইত্যাদি নিয়ে বাহাস করেন বীরদর্পে। আমার ধারনা, তাদের মগজে বুদ্ধির ঘাটতির সাথে সাথে অংক কষার ক্ষমতারও ঘাটতি রয়েছে। যুক্তির বদলে নিজ নিজ আবেগটাকেই তারা শেষ কথা বলে জাহির করতে চেয়েছেন। যার বেশীর ভাগই “ইনডিউসড” বা “ বায়াসড কনসেপশান”।
যারা এমন বাহাস করে শেখ মুজিবকে খাটো করতে চান তাদেরকে বলি-ইতিহাসের সমস্ত প্রেক্ষাপট ভালো করে একবার বিচার করে দেখুন।
যদি শেখ মুজিব সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করতেন তবে তিনি পাকিস্তান কেন, সকল বিশ্ববাসীর কাছে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে বিবেচিত হতেন একবাক্যে। সব দোষ পড়তো তারই ঘাড়ে। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি বিশ্ববাসীর সমর্থন থাকতোনা মোটেও। সবাই পাকিস্তানের পক্ষে থেকে যেতো কারন তখনও পূর্ব পাকিস্তান যা পাকিস্তানেরই এ্কটি অংশ সেখানে রাজনৈতিক সংকট ছাড়া গনহত্যার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি, বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার মতো কিছু হয়নি। ভোটের রায় কার ভাগে কতোটুকু যাবে এটা নিয়ে টানাহেচড়া হচ্ছে, এই আর কি! সেখানে বিচ্ছিন্ন হতে চাওয়া সরাসরি ক্ষমার অযোগ্য ধৃষ্টতা বলেই দেখতো সবাই। বিশ্ব বলতো, যে সংকট টেবিলে বসে সমাধান করা যেত সেখানে স্বাধীনতার ঘোষনা সর্বোচ্য রাষ্ট্রদ্রোহীতা-ই।
এখন অনেকে বলতেই পারেন , টেবিলে বসেও তো সংকটের সমাধান হয়নি। তাদের কে বলি- মনে করুন আপনি কেউ একজনের সাথে কোনও রেষ্টুরেন্ট বা কলেজ ক্যান্টিনের টেবিলে বসে কোনও বিষয় নিয়ে তুমুল বাকবিতন্ডায় লিপ্ত। আশেপাশের লোকজন আপনাদের ঝগড়া দেখছে। আপনার কথা ন্যায্য হলেও অন্যজন কিছুতেই তা মেনে নিচ্ছেনা। এখন রাগ করে ভরা মাহফিলে আপনি প্রতিপক্ষের গালে ঠাস করে একটি চড় মেরে বসলেন। কি হবে? লোকজন আপনার পক্ষ নেবে, না আপনাকেই দোষী সাব্যস্ত করবে? আপনিই দোষী হবেন সবার চোখে। সবাই বলবে, আপনি কেন আগে ঐ লোকের গায়ে হাত তুললেন? এরকম ঘটনা আপনারা প্রায়ই দেখে থাকেন, অংশ নিয়েও থাকেন। শত যৌক্তিকতা সত্ত্বেও একজন রিকশাওয়ালার গায়ে আপনি আগে হাত তুলেছেন কি পাবলিক আপনাকে নিয়েই পড়বে। রিকসাওয়ালার পক্ষে চলে যাবে সবাই। ( উদাহরণটি মনে রাখুন)
আর স্বাধীনতার ব্যাপারটি রাস্তাঘাটের কোন মামুলী সমস্যা নয়, সমস্যা একটি জাতির। সেখানে স্বাধীনতা ঘোষনা করার মতো মাথাগরম সিদ্ধান্ত নিলে সারা পৃথিবী আপনার বিপক্ষে চলে যেতো। যদিও সে সময় আপামর মানুষের মনের বাসনাটি ছিলো-“স্বাধীনতা ঘোষনা”। তাই-ই যদি হতো তবে আজকে আপনি একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক বলে গর্ব করতে পারতেন না। সারা জীবন আপনাকে পাকিস্তানের গোলামী করে যেতে হতো। সবাই বলতো - তুমিতো ভোটে জিতেছোই তবে স্বাধীনতা ঘোষনা করলে কেন? দোষটা তো তোমারই! পাকিস্তান ইজ কারেক্ট.....................
“ পারফেক্ট ডিফেন্স ইজ দ্য বেষ্ট অফেন্স” এই পথটাই শেখ মুজিব বেছে নিয়েছিলেন তখন। সমগ্র পরিস্থিতি বুঝেই ছাত্রনেতাদের চাপের মুখে থেকেও ৭ই মার্চের ভাষনে তাই তিনি বলেছেন --“ আমি যদি হুকুম দেবার না ও পারি, তোমরা তোমাদের যা কিছু আছে ...........”।
বলেছেন - “এবারের সংগ্রাম. স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
এই কথা বলার পরে ইনফর্মাল স্বাধীনতা ঘোষনার আর কিছু বাকী থাকে কি? সরাসরি বা স্বাধীনতার ফর্মাল ঘোষনা দেয়ার মতো আহাম্মকী না করেই বিশ্ববাসীর সহানুভূতি বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে নিয়ে এসেছেন তিনি। পাকিস্তানকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ না ছুঁড়েই স্বাধীনতার বিষয়ে যা বলার তা ইঙ্গিতেই বলেছেন, কি করতে হবে বলেছেন তাও। পাকিম্তানকে দ্বিধায় ফেলে দিয়েছেন।
এটাই তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা।
এ কারনেই বাংলাদেশের মানুষের উপরে প্রথমেই পাকিস্তানীদের বন্দুক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়াটাকে অনেক দেশই মেনে নিতে পারেনি। কোনও দোষ ( সরাসরি স্বাধীনতার কথা) না করা নিরীহ বাঙালীদের উপড় মেশিনগানের গুলি ছোঁড়াটাকে মানবাধিকার লঙ্ঘন - জেনোসাইড বলে সোচ্চার হয়েছে বিশ্ব। মনে রাখতে হবে, এর পরেও কিন্তু বাঙালীকে বেগ পেতে হয়েছে অনেক। পাকিস্তানকে নিজেদের স্বার্থে টিকিয়ে রাখতে ক্ষমতাধর দু-তিনটি রাষ্ট্র পাকিস্তানকেই সাপোর্ট দিয়ে গেছে সারা বিশ্ববাসীর বিপক্ষে দাঁড়িয়ে। সপ্তম নৌ-বহর পাঠানো হয়েছে। চীন হুমকি দিয়েছে ভারতকে। দোষ না করেও যদি এই হয়, দোষ করলে যে কি হতো; এটা কি যারা শেখ মুজিবের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন তারা কখনও ভেবে দেখেছেন কি ? আমরা প্রথমেই অফেন্সিভ হই নি বলেই ভারতের পক্ষে আমাদের জন্যে সারা বিশ্বের সমর্থন আদায় করা সহজ হয়েছে। প্রথম বুলেটটি পাকিস্তান ছোঁড়ায় সারা বিশ্ব পাকিস্তানের নিন্দা করেছে। প্রথমেই অফেন্সিভ হয়ে হামলে পড়লে আমরা কি কারো সমর্থন পেতাম ? ভারতের পক্ষে তখন আমাদের জন্যে সমর্থন আদায় ইন্ধিরাজীর জন্যে রাজনৈতিক আত্মহত্যা হোত। ভারত জড়াতো না কিছুতেই। আমরা পাকিস্তানী মিলিটারীর বুটের তলাতেই থাকতাম।
ভেবে দেখুন তো, কুয়েতের পক্ষ থেকে কোনও আগ্রাসন বা অফেন্সিভ ছাড়াই কুয়েত দখল করে ইরাক কি বিশ্বের সমর্থন আদায় করতে পেরেছিলো ? নাকি নিন্দা ? এমন কি আপনিও ইরাকের কুয়েত দখলের বিরূদ্ধে সোচ্চার ছিলেন সে সময়। আবার সেই ইরাককেই প্রথম আক্রমন করে আমেরিকা কি হাততালি পেয়েছে শেষ পর্যন্ত ? আবার ভারতের দিকে দেখুন, “গো-রক্ষা” সমিতি কোনও উস্কানী ছাড়াই নিরীহ মুসলমানদের উপরে নির্যাতন চালিয়ে সে দেশের বুদ্ধিজীবি থেকে শুরু করে সকল ধর্মের সাধারন মানুষদেরও বিরাগভাজন হয়ে পড়েছে তো বটেই বিশ্ববিবেকও তাদের ছেড়ে কথা কইছেনা।। তাতে ভারত সরকারকেও পড়তে হয়েছে বিব্রতকর অবস্থায়।
এগুলো হলো বৈশ্বিক বাস্তবতা।
শেখ মুজিব জানতেন, বোমার সলতেয় আগুন যখন লাগানো হয়েছেই তখন বোমাটি ফাঁটবেই একসময়। সেকারনেই তার বলা ---“ আমি যদি হুকুম দেবার না ও পারি.....”। যিনি এতোকিছু পেরেছেন তিনি কেন আর একটা হুকুম দিতে পারবেন না? এ হলো তাঁর দূরদর্শিতা।
স্কুল জীবনে ক্লাসে বসে আপনি যেমন পেছন থেকে কারো মাথায় চাঁটি মেরে নিরীহ মুখে বসে থেকেছেন যেন আপনি কিছুই জানেন না, এটাও অনেকটা তেমনই। চাঁটি মারা তো হয়েই গেছে, মাথায় ব্যথাও লেগেছে; আপনার উদ্দেশ্যটি পুরন হয়েছে। যদি জানান দিয়ে ঘটনাটি ঘটাতেন তবে ক্লাসটিচারের বেতের বাড়ি একটাও মাটিতে পড়তোনা!
যারা যারা শেখ মুজিবের তখনকার ভূমিকাকে দোষনীয় ধরে বসে আছেন তাদেরকে উপরের উদাহরণগুলো স্মরণ করিয়ে বলতে চাই - ৭১ এর আগ থেকে রাজনৈতিক গতিধারা পর্যালোচনা করে দেখুন, তারপরে বলুন কোন পথটি সঠিক ছিলো। সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষনা করা ? যেখানে পাকিস্তানীরা বাঙালীদের পাখির মতো গুলি করে মারার লাইসেন্স নির্বিধায় পেয়ে যেতো রাষ্ট্রীয় ভাবেই, তা? নাকি, স্বাধীনতার ঘোষনা না দিয়েই বিশ্বের সমর্থনে রক্তপাত কমিয়ে যৌক্তিক ভাবেই স্বাধীনতা লাভ করা ?
কেউ কেউ আবার শেখ মুজিব স্বাধীনতা ঘোষনা না করেই যে বাংলাদেশের মানুষকে অরক্ষিত রেখে নিরস্ত্র বাঙালীকে মেশিনগানের সামনে ঠেলে দিয়েছেন, তাও বলেন। ভেবে দেখুন তো, স্বাধীনতা ঘোষনা করলেই কি পাকিস্তানীরা সুড়সুড় করে মেশিনগান বগলে নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে গিয়ে সুখনিদ্রা যেতো? এমনটাই যদি আপনার ভাবনা হয়, বুঝতে হবে আপনার মাথায় কোথাও ঘিলু কম আছে। তখন বৈধভাবেই পাকিস্তানীরা গণহত্যা চালিয়ে যেতো বীরবিক্রমে। ত্রিশ লাখের সংখ্যটা কোটি ছাড়িয়ে যেতো। আপনিও সেখানে একটি সংখ্যা হতে পারতেন। স্বাধীনতার ঘোষনা না দেয়ায় সে বৈধতা পাকিস্তানীরা পায়নি বলেই রয়ে সয়ে গণহত্যা চালিয়ে গেছে গোপনে গোপনে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের যেমন ঘোষনা দিয়েই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ কোনও অনুকম্পা ছাড়াই গুলিতে ঝাঝরা করে , আভ্যন্তরীন ব্যাপার বলে কিছু বলার থাকেনা বাইরের কারোই তেমনি করতো পাকিস্তানীরাও।
এটা আমাদের জন্যে সুখকর হোত কিনা! একটি রেগুলার সেনাবাহিনীর বিরূদ্ধে স্বল্প সময়ে যুদ্ধ প্রস্তুতি নেবার মতো সামর্থ্য কি বাংলাদেশের ছিলো? যারা এর প্রবক্তা তারা আবেগের জোশেই মনে হয় এমনটা বলেন, বুদ্ধিতে ধার দিয়ে নয়। এমন পরিস্থিতিতে ঢালু মাঠে বলটি গড়িয়ে যেতে দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ ছিলো। শেখ মুজিব সেটাই করেছেন মনে হয়।
এখানে অনেকেই জেনারেল জিয়াকে টেনে আনেন, ত্রানকর্তা হিসেবে। বলেন যে , জিয়া না হলে মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তোনা। যারা এমনটা বলেন তাদেরকে বলি- শুকনো আকাশ থেকে বৃষ্টি হয়না, আমি-আপনি বললেই মেঘশূন্য আকাশে মেঘ জমেনা। বৃষ্টি হতে হলে আগে বাতাসের, মাটির তাপমাত্রা বাড়তে হয়, তাপমাত্রা বেড়ে গেলে নদনদী-সাগরের পানি জলীয় বাষ্প হয়ে উপরে উঠে যেতে হয়। সেই বাষ্প বায়ুস্তরের ধূলোবালির সাথে মিশে মেঘ হয়। এগুলো আপনার ছেলেবেলার পাঠ্যপুস্তকের পাঠ।
আবার মেঘ হলেই বৃষ্টি হবে এমন কোনও কথা নেই। মেঘের যখন আর জলীয়বাষ্প ধরে রাখার শক্তি থাকবেনা অথবা মেঘের ভেতরে থাকা জলীয়বাষ্পের ওজন যখন মেঘের তুলনায় বেশি হয়ে যাবে তখন মেঘেরা না চাইলেও সেই জলীয়বাষ্প বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়বে। এতোকিছু ঘটতে হবে আগে তবেই বৃষ্টি হবে।
তেমনি আপনি চাইলেন আর অমনি মানুষ দলে দলে পথে নেমে এলো, এটা যদি সত্যি বলে ভেবে থাকেন তবে আপনাকে বলি, আপনি এই করোনা ক্রান্তিকালে মাইক ফুঁকিয়ে সবাইকে ঘরে থাকতে বলেন। কারন এটাও তো আরেক ধরনের মৃত্যুর বিপক্ষে যুদ্ধ। দেখেন আপনার এলাকারই কে কে থাকে , কতোজন থাকে ঘরে ! যদি পারেন তবে তা জাতির কল্যানের জন্যে আপনার সর্বশ্রেষ্ট অবদান বলে স্বীকার করতে কারোই বাঁধা থাকবেনা।
তেমনি আপনার এলাকার সামান্য ওয়ার্ড কমিশনার পদের জন্যে একদিন সকালে উঠে আপনি আপনার প্রার্থীতা ঘোষনা দিলেন। এর ফলাফল যে কি, আপনি যদি তা বুঝতে ব্যর্থ হন তবে বলতেই হবে আপনার মগজের ঘাটতি রয়েছে। সামান্য একজন ওয়ার্ড কমিশনার পদের জন্যে লালায়িত হলে আপনাকে আপনার এলাকায় পরিচিত হতে হবে আগে, এলাকায় কিছু না কিছু উন্নয়নের কাজ করে দেখাতে হবে, জনগণের সাথে হাত মেলাতে হবে, পেছনে নাড়া দেবার লোকজন থাকতে হবে। এইসব কাজগুলো ( প্রি-ওয়র্ক) অনেক সময় ধরে করার পরেও যে আপনার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে এমনটা নয়। এখন বলতে পারেন পয়সাওয়ালারা তো দিব্যি ওয়ার্ড কমিশনার হয়ে যাচ্ছে হঠাৎ এসেই। সত্যি। কিন্তু সেখানেও তো তাদের পেছনে নাড়া দেবার, পেশী ফুঁলিয়ে দল ভারী করার লোক থাকেই। এবং আপনার চেয়ে বেশীই থাকে মনে হয়।
পেছনে মানুষ নেই, নাড়া দেয়ার লোক নেই, কেউ চেনেনা, এমন কে ওয়ার্ড কমিশনার পদে প্রার্থীতা ঘোষনা করে লোক জড়ো করতে পেরেছেন, ভোটে জিতে কমিশনার হয়েছেন ? উত্তরটা আপনি নিজেকেই দেবেন সততার সাথে।
আর স্বাধীনতার যুদ্ধে আহ্বান করে যোদ্ধা জড়ো করা কোনও ওয়ার্ড কমিশনার প্রার্থীর লোক জড়ো করা নয়। উপরের বৃষ্টির উপমাটি স্মরণ করুন।
তবে নিঃসন্দেহে জেনারেল জিয়া একজন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা। জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করেছেন। সন্মান তার অবশ্যই প্রাপ্য। রাষ্ট্রীয় সম্মানও পেয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর ডাকেই যে মানুষ জেগেছে এমনটা কি ? মানুষ তো সেই ৭০ এবং আরো অনেক আগে থেকেই জেগে ছিলো। হ্যা, জিয়ার ঐ আবেদন আমাদের সাহস যুগিয়েছে। আগে উল্লেখ করা বোমার জ্বলতে থাকা সলতেয় তিনি কিছু বারুদ যোগ করেছেন মাত্র, সলতে আর বোমাটি তাঁর নিজের বানানো নয়। জেনারেল জিয়াও কিন্তু আপনাদের কারো কারো মতো অযৌক্তিক আবেগে ভেসে যাননি। বেঁচে থাকাকালীন তিনি নিজেও অমন দাবী করেন নি, আপনারা অনেকেই যা করছেন শুধু বিরূদ্ধাচারণের স্বার্থে। দীর্ঘদিন জিয়া রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলেন, তিনি কি পারতেন না তাঁর এই ভূমিকাকে (আপনারা তাঁকে যা বানাতে চেয়েছেন, চাচ্ছেন) প্রতিষ্ঠিত করে যেতে? কেন করেন নি, এর উত্তরটাও আপনি নিজেকে দিন।
থিংক র্যাশনালী। যৌক্তিকতার সাথে ভাবুন। আপনি যদি নিরপেক্ষ ভাবে সত্যিকার অর্থেই র্যাশনাল হতে পারেন তবে জাতির বিভাজন অনেকটা কমে আসতে পারে। সেল্ফ কোয়ারেন্টাইন যখন আপনাকে করোনা থেকে বাঁচাতে পারে তেমনি উদ্ভট-অযৌক্তিক- অসার ধারনাগুলোকেও কোয়ারেন্টাইনে রাখুন, জাতি বাঁচতে পারে ............................
পরের কথা - আমি আওয়ামী লীগার নই। কোনও কালেই ছিলুম না। নেতান্তই আপনারই মতো। সচেতন থাকতে চেষ্টা করি। আপনার মতোই দেশের ভালোটা হয়েছে দেখলে ভালো লাগে, মন্দটা হতে দেখলে রাগ হই। যে বা যারা ভালো করেন তাদের প্রশংসা করি, মন্দ করলে সুযোগ পেলে রাগটা ঝেড়ে দেই।
( ছবির কৃতজ্ঞতা - নেট থেকে নিয়ে সাজানো।)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৮:৩৮