পৃথিবীর সব মা’য়েরাই একদম মা’য়ের মতো ।
সন্তান বিখ্যাত কি অবিখ্যাত, সে জিনিষ তার কাছে কোনও ব্যাপার নয়। তার কাছে সে কোলের শিশুটির মতোই এই টুকুন । যাকে ধমকানো যায়, শাসন করা যায়..এই আর কি !
যদি পৃথিবী বিখ্যাত সন্তানদের মা’য়েরা তাদের সন্তানদের কি বলতে পারেন, এই করোনাকালে যদি একটু কল্পনা করে দেখি, কেমন হয়? ……………
কলম্বাসের মা – “বাইরে টো-টো করে ঘুরে তুমি কি আবিষ্কার করেছ না করেছ তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসেনা । বাইরে বাইরে না ঘুরে,ঘরে বসে তুমি তো লিখেই দিতে পারতে কি আবিষ্কার করছো। যা হয়েছে ভুলে যাও, কোথা থেকে কি ভাইরাস নিয়ে এসেছো আল্লাহ-ই জানে। এসো, সাবান দিয়ে বিশ সেকেন্ড স্নান করিয়ে দেই….”
মাইকেলেঞ্জেলোর মা - “ বাছা, আইসোলেশনে থাইক্কা কি কামডা করছো! সারা সিলিঙ-ছাদ ভংচং আইক্কা ভইররা ফালাইছো। তুমি কি অন্য পোলাপানগো মতো হুদা দেওয়ালে আঁকিবুকি করতে পারোনা ? তোমার কি ধারনা আছে, সিলিঙয়ে যেসব ছাইপাশ আকছো হেডা মুছতে করোনায় ধরনের আগেই আমার জান বাইরাইয়া যাইবে ? এহোন যাও.. বাঁশের মাতায় একটা ঝাড়ু বাইন্দা আনো, এডা দিয়া পারিনা....”
আইনষ্টাইনের মা – “ আইসোলেশনে থেকে থেকে চুল না কাটতে পেরে চুলের তো বারোটা বাজিয়েছো। অথচ তুমি এতো এতো থিওরী দিচ্ছো রোজ, বুদ্ধি দিচ্ছো সবাইকে অথচ তোমার চুলগুলি যে ছ্যারাবেড়া সেটা সোজা করার কোনও বুদ্ধিতো তোমার মাথায় দেখিনা ! একটু স্টাইলিং জেল না হয় নিদেনপক্ষে একটু সর্ষের তেলও তো মাথায় মাখতে পারো !”
নেপলিয়নের মা – “ ঠিক আছে বাছা, এই লকডাউনের সময় তুমি দ্বিগ্বিজয় করিয়া কি কি ছিড়িয়াছো আর ঐ জোব্বার সাথে কোভিড-১৯, ২০,২১ কি কি নিয়া আসিয়াছো সেই রিপোর্ট কার্ডটি যদি পকেটে ঢুকিয়ে না থাকো তবে পকেট থেকে হাত বের করে দেখাও…”
আব্রাহাম লিংকনের মা – “ আবার তুমি ঐ “ষ্টোভপাইপ” টুপিটা মাথায় দিয়েছ ? "পাসিং শো" সিগ্রেট ধরেছো মনে হয়! জানোনা, সিগ্রেট খেলে করোনায় কাবু হলে রক্ষা নাই ? একটু ভদ্র হতে শেখো। অন্য ছেলেদের মতো একটা “বেসবল” টুপি মাথায় দিলেই তো হয় ……”
মোনালিসার মা – “ এই করোনায় মরার ঝুকি নিয়ে হাসপাতালে গুতোগুঁতি করে তোর দাঁত বাঁধাতে আমি আর তোর বাপ যে এত্তোগুলি পরিশ্রম আর টাকা খরচ করলাম আর তুই এর চেয়ে জোরে একটা হাসি আমাদের দিতে পারলিনা ? একটা দাঁতও তো দেখাতে পারতি ! ছেমড়ি বেআক্কল কুনহানকার…”
থমাস এডিসনের মা – “ বুঝলাম, লকডাউনে দোকানপাট সব বন্ধ, হেরিকেনের কেরাসিন নেই তাই রাত জেগে আকাম করতে যাতে সুবিধা হয় এজন্যে তুমি ইলেক্ট্রিকবাল্ব বানিয়েছো । এবার এটা নিভিয়ে ঘুমাতে যাও… রাত অনেক হয়েছে ।”
বিলগেটসের মা – “ তোমার কি আর কোনও কাজ নেই বাছা ? অনলাইনে ক্লাস চলছে আর তুমি লেখাপড়া বাদ দিয়ে সারাটি দিন বখাটে ছেলেদের মতো কম্পিয়্যুটার নিয়ে মেতে আছো, আক্কেল জ্ঞান সব জলাঞ্জলি দিয়েছো মনে হয় ? দেখবো, পরীক্ষার রেজাল্ট কি হয় ! রেজাল্ট খারাপ হলে ঘর থেকে বের করে দেবো, খয়রাত করেও দিশা পাবেনা...................”
ষ্টিফেন হকিংয়ের মা – “ সারাদিন তো ম্যাটার, এন্টি-ম্যাটার নিয়ে আছো । পার্টিকেলস কি ভাবে কাজ করে, কতো শক্তি তার, কিভাবে জোড়া লাগে আর কি হয়, এইসব বয়ান দিচ্ছো সবাইকে । নিজের ভাঙ্গা হাত-পা’য়ে একটু জোর আনার জন্যে নিউরোন পার্টিকেলসকে কিভাবে কাজে লাগানো যায় এইসব চিন্তা ভাবনা করলেও বুঝতাম একটা কাজের কাজ করছো । যাক তবুও মন্দের ভালো, ঘরে ঐ চেয়ারটায় লকডাউন অবস্থায় ছিলে তাই তোমাকে করোনায় ধরতে পারেনি। ধরলে বুঝতে কতো ধানে কতো ম্যাটার........... ”
মার্ক জুখারবার্গের মা – “তোমার স্বভাব চরিত্র তো দিন দিন খারাপ হচ্ছে বাপধন ! পৃথিবীর সব মানুষ মরনের চিন্তায় চিন্তায় মারা যাচ্ছে আর তুমি কিনা সারাদিন আকামের ছেলেপুলেদের মতো সেই ফেসবুক নিয়ে পড়ে আছো ? শোন, ফেসবুকের ঐসব গুজবে কান দিয়ে কোনও ষ্ট্যাটাস দিওনা, ট্রাম তোমার একাউন্ট বন্ধ করে দেবে .................. ”
রবীন্দ্রনাথের মা – “ বাবা, একটা দোতারা নাইলে আমি তোমার হাতে দিতে পারি নাই । হেই দুঃখে জীবনভর গান ল্যাখছো, লম্বা দাড়ি রাইখ্যা আমারে ফ্যালাইয়া দ্যাশ বিদ্যাশ ঘুইররা ব্যারাইছো, লকডাউন মানো নাই! ভাগ্য ভালো যে এতো ঘোরাফেরার পরেও তোমারে করোনায় ধরে নাই! আল্লায় বাচাইছে। কিন্তু এতো কিছু কইররাও তুমি লালন ফহির হইতে পারলানা, হেই দুঃখ মু্ই রাহি কই ?”
ছবি - নেট থেকে সংগৃহিত।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৮:২২