খেসারত
৭১ টেলিভিষণে টক’শোতে “একাত্তর জার্নাল” দেখছিলাম ৬ই অক্টোবর’২০ তারিখ রাতে। দেশজুড়ে নারী নির্যাতনের মহমারী, বিচার না পেয়ে ধর্ষিতা বাংলাদেশের খবরের মাঝে দর্শক-শ্রোতাদের ফেসবুকে পাঠানো অনেকগুলো মন্তব্যের বক্তব্য ছিল মোটামুটি এমন -“সামনে আরো অন্ধকার, রোহিঙ্গারা শাসন করবে কক্সবাজার”। আমন্ত্রিত বক্তা ও সঞ্চালিকাও নিজেদের মাঝে স্বগোতোক্তি করছিলেন এই বলে - একদিন এরাই হয়তো বাঙলাদেশও শাসন করবে। আতঙ্কের কথা জানাচ্ছিলেন তারা।
এই টক’শোটি দেখে এবং টিভিতে গত কয়েকদিনের সংবাদ শুনে, পত্রিকায় এমন সব সংবাদ পড়ে আমি মহাবেকুব জাতক, সেই থেকেই ভেবে মরছি, মানবতা দেখিয়ে আমরা নিজেদের লেজ এমন করে পোড়ালাম কেন ! আগুনে লেজ পোড়ানোর শুরু তো সেই ২০১৭ সাল থেকেই। এখন দেখছি যে, নিজের ঘরেই লাগতে যাচ্ছে সেই আগুন।
খবরগুলো আর কিছুই নয় , কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে গত ৪ঠা অক্টোবর. ২০২০ রাতভর নাকি গোলাগুলি চলেছে, মরেছে ২জন , আহত অনেক। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’গ্রুপের এমন মরন মরন খেলা।
৬ই অক্টোবর’২০ তারিখের সংবাদ - দুই সন্ত্রাসী বাহিনীর সংঘর্ষে আবারও ৪ জন নিহত হয়েছেন।গত শনিবার থেকে একনাগাড়ে চলছে এই সংঘর্ষ।
এসব নতুন কিছু নয়, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে এসব নিত্যদিনের ব্যাপার।
বিশ্বের সবচাইতে বড় শরণার্থী শিবির এখন উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প।
মহাবেকুব বলে পুরোনো বস্তাপঁচা আরও একটি খবর এই ফাঁকে মাথার মধ্যে চট করে পাঁক খেয়ে গেলো -
বেশ কিছুদিন আগে মামুবাড়ীর আবদারের মতো সৌদি আরব সরকার বলেছে, তাদের দেশে অবস্থানকারী ৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিতে হবে। বাংলাদেশ যদি এটি না করে তাহলে সৌদিতে কর্মরত ২০ লাখ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
এই মহাবেকুবের মনে হয়েছে, এর চেয়ে একটা মিজাইল ছুঁড়লেও এতো ভয়ের কিছু ছিলোনা। কারন-৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ পাসপোর্ট দিলে বড় একটি তুরুপের তাস হাতে পেয়ে যাবে মিয়ানমার। এতদিন ধরে তারা যে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়েছে এই বলে যে, রোহিঙ্গারা আসলে বাংলাদেশের নাগরিক, সেটা সত্যে পরিণত হবে। তারা আরও জোরালোভাবে বলতে পারবে রোহিঙ্গা আসলেই বাংলাদেশের নাগরিক। তাহলে রোহিঙ্গাদের আর কোনো দিন মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার প্রশ্নই আসবেনা।
বেকুব বলে, রোহিঙ্গাদের যতো অপকর্ম আর তাদের ঔদ্ধত্য আর বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুলো দেখানো নিয়ে এরকম ঘটনাগুলো কোনসূত্রে যে গাঁথা তা বুঝে উঠতে পারিনে। আপনারা পারেন কিনা তাও বোঝা যাচ্ছেনা!
কথায় আছে সময়ের ১ ফোঁড় অসময়ের ১০ ফোঁড়ের সমান। আমরা কোন ফোঁড়ের মধ্যে যে আছি বুঝে উঠতে পারছিনে তাও।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের নিয়ে সমস্যায় প্রথম ফোঁড়টি আমরা দিতে পারিনি সময় মতো। আমরা আহাম্মক দেশবাসী তখন মানবতার নিশান উড়িয়ে সাদরে তাদের জামাই আদরে পালঙ্কে বসতে দিয়েছি। এখন তারা শুতে চাইছে , চাইছে তাদের পিঠটাকে যেন আমরা চুলকেও দেই। সেই সময় থেকে এ সংকটের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীরতার ব্যাপক বিস্তার ঘটলেও এ সংকটে আমরা জড়িয়ে পড়েছিলাম আরও আগে,১৯৭৮ সাল থেকে।
সমস্যাটি আজকে যে রূপ নিয়েছে, বাংলাদেশের সব সরকারই তা সময়মতো অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছে। অসময়ের শুরু তখন থেকেই। দীর্ঘদিন যাবৎ বিশাল সংখ্যক হিসাবহীন রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে কক্সবাজারে অবস্থান করতে দিয়ে যে ফোঁড়াটি আমাদের শরীরে লালন করেছি তা এখন বিষফোঁড়ার মতো হয়ে উঠেছে।
শুরুটা হয় ১৯৭৭-৭৮ সালে প্রথমবার এবং ১৯৯০-৯১ সালে দ্বিতীয়বার। ঐ সময় আরাকান থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সে সময়ে বাংলাদেশের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত সামরিক সরকার তাদের দৃষ্টিভঙ্গির কারনে এবং পরিস্থিতির দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মূল্যায়নে ব্যর্থ হওয়ায় স্থায়ীভাবে এ সমস্যার সঙ্গে বাংলাদেশ জড়িয়ে পড়ে আষ্টেপৃষ্টে। তখন সমস্যাটিকে ধর্মীয়করণ এবং ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করায় বাংলাদেশের জন্য সেটি হিতে বিপরীত হয়ে ওঠে। “মুসলমান , মুসলমান ভাই ভাই” এই অকার্যকর ও অদূরদর্শী একটি আওয়াজের কারনে রোহিঙ্গা শরনার্থীরা ভেবেই নিয়েছে যে, বাংলাদেশ তাদের জন্য সহজ আশ্রয়স্থল। এখানে বসতে চাইলে শুতেও পারা যাবে। এমনকি সময়মতো পিঠ চুলকে দিতেও বলা যাবে!
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর বাংলাদেশে উগ্র ইসলামিস্ট সাম্প্রদায়িক শক্তির যে উত্থান ঘটে, তাদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার আওতায় প্রতিবেশী ভারত ও বার্মায় উগ্রবাদের বিস্তার ঘটানোর চেষ্টা চলে। ইসলামিস্ট উগ্রবাদী শক্তি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ক্রমশ শক্তিশালী হওয়ায় নির্যাতিত-নিপীড়িত রোহিঙ্গারা মুসলিম পরিচয় সূত্রে বাংলাদেশের ইসলামিস্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠীর আশ্রয়-প্রশ্রয় এবং সাহায্য-সহযোগিতা পেতে থাকে। গড়ে ওঠে বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপ।
সকল সরকারের দূরদৃষ্টির অভাব, আষাঢ়ে মেঘ চিনতে না পারার অক্ষমতার ফাঁকেই নব্বই দশকের মাঝামাঝি থেকে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা অবৈধভাবে কক্সবাজারে এসে বসতি গড়ে তোলে। পার্শ্ববর্তী দেশের এত বিপুল সংখ্যক নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ এবং বসতি স্থাপন কতদিক থেকে কতভাবে যে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক হতে পারে তা বোধহয় কেউ ভেবে দেখেননি বা কারও বুদ্ধিতেও কুলোয়নি তখন। জানিনা, তারা এটা নিয়ে অন্য কোনও হিসেব নিকেষে ব্যস্ত ছিলেন কিনা !
কারা আসছে, যাচ্ছে, থাকছে তার কোনো গণনা, নিবন্ধন এবং নিয়ন্ত্রণ কোনো কিছুই করা হয়নি। ফল যা হওয়ার তা-ই হয়েছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট ও তার পরবর্তী এক মাসের মধ্যে পাঁচ লাখ এবং পরে আরও দুই লাখ, মোট সাত লাখেরও অধিক রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাতে আগের সহ মোট ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ এবং ঘাটি গেড়ে বসেছে । সবার ওপরে মানবতা। বাংলাদেশ তা প্রমাণ করেছে এবং নিজের মৃত্যুঘন্টাও বাজিয়ে দিয়েছে।
এ হলো “মেঘনায় কতো জল” প্রমান করার মতো । ছোটবেলায় পাঠ্যবইতে এমন একটি গল্প পড়েছিলাম। মেঘনার জল মাপতে গিয়ে বালক নায়কের সলিল সমাধি ঘটার কাহিনী। মানবতার প্রমান দিতে গিয়ে আমাদের অবস্থা এখন ডুবে মরারই মতো।
বছর খানেক আগে সময় টিভির সাথে এক স্বাক্ষাতকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, “মিয়ানমারের রাষ্ট্রনায়ককে আমরা বলে আসছি, তারা যদি মীমাংসা না করে তাহলে রোহিঙ্গারা যে কোন চ্যালেঞ্জ নিতে পারে। তখন তাদের থামানো আমাদের জন্য কষ্টকর হবে। মিয়ানমার দ্রুত ফিরিয়ে না নিলে, রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ক্রীড়নক হতে পারে। যে সন্ত্রাস শুধু বাংলাদেশ না, সারা বিশ্বের জন্য হুমকি।“
আমি মহাবেকুব তাই খামোখাই হিসেব করি, এই যে ১১ লাখ রোহিঙ্গা এদের মধ্যে অর্ধেকই তো শিশু-কিশোর। তার উপরে ২৫শে আগষ্টে আসা রোহিঙ্গা নারীদের ১০ হাযারই নাকি ছিলো গর্ভবতী। এখন এই তিন বছরে গর্ভবতীর এই সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা। এই গর্ভের সবাই তো ভুমিষ্ঠ হবে, বড় হবে। আর ৪/৫ লাখ শিশু কিশোর তো রয়েছেই। নিজ দেশে নির্মমতার শিকার হয়ে ভিটে-মাটি ছাড়া এই সব শিশু-কিশোরদের ক্ষোভ, হতাশা, বিদ্বেষ ও প্রতিহিংসা লালন করাই তো স্বাভাবিক। এদের একটা স্বল্প সংখ্যাও যদি সন্ত্রাস এবং বিদ্রোহের পথ বেছে নেয় তাহলে পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে ?
আপনি কি ভেবেছেন, চিত্রটি কতো ভয়ঙ্কর?
দিনে দিনে বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গাদের বড় একটি অংশ। মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে তাদের অপরাধ। এর ধারাবাহিকতাতেই শুরুর ঘটনাগুলোর মতো ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। রোহিঙ্গাদের এমন মারমুখী আক্রমণ থেকে রেহাই মিলছে না কারোরই। শুধু নিজ গোত্রের গণ্ডিতে এখন আর সীমাবদ্ধ নেই তাদের অপরাধ কার্যক্রম। ইতিমধ্যে তাদের রোষানলে পড়ে একাধিকবার লাঞ্ছিত হয়েছেন দেশি-বিদেশি সাংবাদিক, এনজিও কর্মী, বিদেশি পরিদর্শক দলের প্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। থানা লুট করে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার মতো দুঃসাহসও দেখিয়েছে তারা।
অন্যদিকে ইয়াবা পাচারের সাথে বলতে গেলে এখন প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবারই জড়িয়ে পড়েছে । বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্তের মধ্যে অন্তত ৫৪ কিলোমিটার কাঁটাতারবিহীন খোলা, অরক্ষিত পথে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে রোহিঙ্গা নারী, কিশোর ও পুরুষরা। পাশাপাশি নিজেরাও জড়িয়ে পড়ছে এই ব্যবসায়। ইয়াবার পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে গোপনে অবৈধ অস্ত্র এনে সন্ত্রাসীদের কাছে বিক্রি করছে।
ডাকাতি, লুটপাটসহ নানাবিধ অভিযোগও রয়েছে এই সব রোহিঙ্গাদের বিরূদ্ধে ।
একে-৪৭ রাইফেলসহ অত্যাধুনিক অস্ত্রও নাকি রয়েছে তাদের ।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন রোহিঙ্গা অপরাধীরা।
অন্যদিকে এই অরাজকতার সাথে পাল্লা দিয়ে দিন দিন দেহব্যবসার সাথে অধিকহারে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরীরা।
পত্রিকান্তরে জেনেছি, বছর কয়েক আগে থেকেই এ পেশায় জড়িত ছিল প্রায় পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গা নারী। এখন নতুন আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে থেকে ১০ হাজারের মতো নারী ও কিশোরী দালালের মাধ্যমে এ পেশায় ঢুকে যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে। তবে এর মধ্যে হয়তো তারা এই ব্যবসায় ঢুকেও গেছে। তবে কতজন যুবতী বা নারী ও কিশোরী এ ব্যবসায় এ পর্যন্ত জড়িয়ে পড়েছে সে হিসাব নেই জাতিসংঘের কোনো এজেন্সির কাছে।
বেকুব বলেই এই প্রশ্নটা মাথায় আসে - শুধু অভাবের তাড়নায়, না কি তাদের চরিত্রগত অসাধুতার কারনেই ঐসব যাবতীয় অপরাধের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে তারা ?
সমাজবিদ আর মনোসমীক্ষকরাই এর জবাব দিতে পারবেন। আমার মতো বেকুবের কর্ম নয় এটা। তবে এসবের কারনে সমাজে যে অনাচার - আতঙ্ক তৈরী হচ্ছে তা বুঝতে বুদ্ধিমান হওয়ার দরকার নেই।
এসবের ফাঁকে একটা বিষয় অনেকেরই চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে। তা হলো রোহিঙ্গাদের হাতে হাতে থাকা দেশীয় অপারেটরদের মোবাইল ফোন। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের কাছে অন্তত পাঁচ লক্ষ মোবাইল রয়েছে। তাদের সমস্ত অপরাধে সহায়ক হচ্ছে এই মোবাইল ফোন।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গুরুত্ব বিবেচনা, আইন-শৃংখলা রক্ষা ও জনসুরক্ষার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের আর মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ না দেয়ার জন্য নাকি অপারেটরদের নির্দেশনা দিয়েছে ।
মহাবেকুব ভেবে পায়না, মোবাইল অপারেটরদের এতো সাহস হলো কি করে যে, সরকারী নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই লক্ষ লক্ষ মোবাইল সিম তারা রোহিঙ্গাদের হাতে তুলে দিয়েছে, এবং এখনও দিচ্ছে ? সাথে রয়েছে আমাদের আহাম্মক জণগনের সুবিধাবাদী ও ধান্ধাবাজ একটি অংশ যারা রোহিঙ্গাদের এসব সিম জোগাড় করে দিচ্ছেন দু’টো পয়সা কামানোর আশায়। ভেবে পাইনা, দেশের নিরাপত্তার চেয়েও তাদের কাছে ব্যবসাটাই বড় হয় কি করে ?
মহাবেকুবী ভাবনা থেকেই এই জাতক জানতে চায় -বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিমের নিবন্ধন হলে এই সব মোবাইল সিম এই পাঁচ লক্ষ রোহিঙ্গাদের হাতে গেলো কি করে ?
এসব চিহ্ণিত করে কি বন্ধ করে দেয়া যায়না ?
এটা কি খুবই কষ্টসাধ্য কিছু ? সরকার কি কঠোর হতে পারবেন এখানে, নাকি বেনিয়াগোষ্ঠির কাছে হেরে যাবেন ? নেটওয়র্ক বন্ধ করা হয়েছিলো বটে কিন্তু মানবদরদী গোষ্ঠিগুলোর চিল্লাচিল্লিতে তা আর এখন কার্যকর নেই। হেরে গেছেন সরকার।
সব থেকে চরম বেকায়দায় পড়েছেন স্থানীয়রা। এই ৮-৯ লাখ অবাঞ্ছিত ও দূর্বিনীত মানুষের চাপের প্রভাব স্থানীয়ভাবে এখনই দেখা যাচ্ছে৷ কক্সবাজার এলাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে গেছে ৷ তাদের থাকার জন্য বন এবং পাহাড় কাটা হচ্ছে ৷ স্থানীয় অধিবাসীদের চেয়ে এখন রোহিঙ্গা সেখানে বেশি ৷ রোহিঙ্গা জনসংখ্যা সামনে জ্যামিতিক হারে আরো বাড়বে ৷
এতে বাড়বে নিরাপত্তা ঝুঁকি. বাড়বে সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা।
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয় শিবিরের কোনোটি ঘিরেই সম্ভবত নেই যথেষ্ট পরিমানের কাঁটাতারের বেড়া। অবশ্য কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে একটি জায়গাতে আটকে রাখা সম্ভবও নয়। শিবিরের আয়তন প্রায় ১০ হাজার একর। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে ২৫ আগস্ট ২০১৭-র পর ৭ লাখ ৪১ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। আগের প্রায় ৩ লাখের অধিক রোহিঙ্গার সঙ্গে তাদের ঠাঁই হয়েছে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে।
কক্সবাজারের উখিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সড়কের দু'পাশে পলিথিন দিয়ে বানানো হয়েছে শত শত ঝুপড়িঘর৷ যতদূর চোখ যায় একই চিত্র৷ পাহাড়-বনাঞ্চল এখন আর কিছুই চোখে পড়ে না৷ পাহাড়গুলো কেটে বানানো হয়েছে এই ঝুপড়িঘরগুলো ৷ বন বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, সাড়ে চার হাজার একর পাহাড় কেটে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য বসতি করা হয়েছে৷ এই ঝুপড়িঘরগুলো রোহিঙ্গারা নিজেরাই তৈরি করেছে৷ ফলে ওই এলাকায় ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷
পরিবেশ এবং বনভূমির কথা চিন্তা করলে রোহিঙ্গাদের জন্য বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ ৷ সবাইকে রান্না করে খেতে হচ্ছে ৷ এক লক্ষ চুলা যদি থাকে, সেই এক লক্ষ চুলার জন্য প্রতিদিন যদি ন্যূনতম পাঁচ কেজি জ্বালানি ধরা হয়, তাহলে প্রতিদিন পাঁচ লক্ষ কেজি কাঠ পুড়ছে ৷ এগুলো কোনো না কোনোভাবে আমাদের উখিয়া টেকনাফের জঙ্গল থেকেই যাচ্ছে ৷ এই অবস্থা অব্যহত থাকলে বনভূমি উজার হয়ে যাবে ৷ বাড়বে পাহাড় ধ্বস, উষ্ণায়নের কবলে পড়বে দেশ।
এই পাহাড়গুলো ১৫-২০ মিলিয়ন বছরের (দেড় থেকে দু'কোটি বছর) পুরনো৷ এর একটা প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক মূল্য আছে।
স্থানীয় পরিবেশবাদীদের হিসাব অনুসারে, এই সব পাহাড় সহ পাহাড়ের আশেপাশের জায়গা ধরলে রোহিঙ্গাদের বস্তির জায়গার পরিমাণ সব মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার একর ৷
১১/১২ লাখ বা তারও বেশী মানুষের জন্যে এতোবড় পাহাড়ি এলাকাও কিন্তু যথেষ্ট নয়। এইসব ক্যাম্পগুলো এক একটা ঠাসা বস্তির চেয়েও অস্বাস্থ্যকরভাবে ও অস্বাভাবিক পরিবেশ নিয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে দিনে দিনে। সেখানে এখন নিত্য দিন চলছে হানাহানি সহ যতো ধরনের অপরাধ আছে তার সব।
হবে না-ই বা কেন ?
শরনার্থী হিসেবে এদের নেই কর্মসংস্থানের বৈধ সুযোগ। আশ্রিত রোহিঙ্গা তরুণরা সপ্তাহে একদিন রেশন তুলবে আর বাকি দিনগুলো কি বসে থাকবে ? তাই দেশের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে পড়ার জন্যে এরা স্বাভাবিক ভাবেই মরিয়া হয়ে উঠবে। রোহিঙ্গা নারীরা নিরাপদ জীবনের আশায় দেশীয় পুরুষদের গলায় ঝুলে পড়তে চাইবে। হচ্ছেও তাই।
দেশীয় দালালদের সহায়তায় এরা ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করছে। মাত্র ১৪/১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশের ন্যাশনাল আইডি (এনআইডি) পাচ্ছে এই সব রোহিঙ্গারা ৷ এই এনআইডি’র সুবাদে দালালদের হাত ঘুরে রোহিঙ্গা নারীরা পাচার হয়ে যাচ্ছে দেশের ভেতরে এবং বাইরে।
( সৌদি আরব সেকারনেই সুযোগ পেয়েছে বলতে যে, সৌদিতে থাকা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিতে হবে।)
এসবই কোটি কোটি টাকার ব্যবসা। ঠেকাবে কে ?
উখিয়া ও টেকনাফের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় সূত্র মতে,রোহিঙ্গাদের নিয়ে গড়ে ওঠা সব ব্যবসায় অর্থায়নসহ পৃষ্ঠপোষকতা করেন এক ডজনেরও বেশি জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও ডিলার।
এসব ক্ষতির পাশাপাশি সরকারের ক্ষতিও কম নয় । বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রাক্কলন অনুসারে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৬০২ মার্কিন ডলার ৷ সেই হিসাবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এই ৭ লাখ রোহিঙ্গার মাথাপিছু আয় হওয়ার কথা ১১২ কোটি ডলার বা ৮ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা৷ কিন্তু আশ্রিত হিসেবে রোহিঙ্গাদের আয়ের কোনো উৎস নেই৷ জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু ব্যয় প্রায় ৭০০ ডলার৷ কিন্তু রোহিঙ্গাদের ব্যয় থাকলেও বৈধপথে আয়ের কোনো উৎস নেই৷ সেই হিসাবে এই ৭ লাখ রোহিঙ্গার পেছনে সরকারের বছরে ব্যয় হবে প্রায় ৪৯ কোটি ডলার বা ৩ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা, যা অর্থনীতির চাকা সচল রাখার ক্ষেত্রে একটি বড় হুমকি ৷
রোহিঙ্গাদের কারণে এর মধ্যেই বাংলাদেশ বড় ধরনের আর্থিক চাপে পড়ে গেছে। তার উপরে রয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পেছনে বাড়তি অনেক খরচ। সেখানে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি সহ বিভিন্ন বাহিনীর লোকজন নিয়োগ করতে হয়েছে ৷ এর ফলে রাষ্ট্রীয় ব্যয় বেড়েছে ৷ আর এই ব্যয়টা খরচ হচ্ছে বাজেট থেকে ৷ অথচ রোহিঙ্গা শরনার্থীরা না থাকলে এই টাকা অন্য জায়গায় ব্যয় করা যেত ৷ সেটা করা গেলে দেশের কিছু মানুষ তো অন্তত ভালো থাকতো।'
এদেরকে না বসিয়ে শ্রমের বিনিময়ে খাদ্য প্রকল্পের আওতায় এলাকার রাস্তাঘাট নির্মান, সংষ্কার, পাহাড় ও বনাঞ্চল সংরক্ষনের মতো কাজে লাগানো যেতে পারতো।
মানবতায় যারা উথলে ওঠেন ক্ষনে ক্ষনে, তাদের কেউ কেউ হয়তো বলবেন, শরনার্থীদের দিয়ে শ্রম করানোর নিয়ম আন্তর্জাতিক শরনার্থী আইনে নেই।
আমি মহাবেকুব অতো কিছু বুঝিনা।
সহজ সরল ভাবে এটা বুঝি যে, এই শরনার্থীদের আর ইহকালে নিজ দেশে ফেরৎ পাঠানো যাবেনা । এরা দেশী বিদেশী স্বার্থান্বেষী মহলের মদদে দেশটাকে বাপ-দাদার সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছে এর মধ্যেই। নইলে মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থী রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠাতে সরকার যেখানে চেষ্টা করছে এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজেই যেখানে বলেছেন, পাহাড় কেটে নতুন করে আর রোহিঙ্গা ক্যাম্প করা যাবেনা, সেখানে “এনজিওগুলো“র উখিয়ায় পাহাড় কেটে নতুন করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প তৈরি করে দুঃসাহস দেখানোর কথা নয় ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে আরও রোহিঙ্গা নিয়ে আসার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে কিছু এনজিও এবং আইএনজিও লন্ডাখালীতে ক্যাম্প তৈরি করেছে।
কেন ?
রোহিঙ্গারা যদি এদেশে আসতে না পারে বা এদেশ থেকে তাদের চলে যেতে হয় তাহলে ঐসব প্রতিষ্ঠানগুলোর আর কোনো কাজ থাকবে না এবং পকেটে পয়সাও জুটবেনা , তাই?
আরো ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো, ক্যাম্প এলাকায় এনজিওরা নতুন কী করছে তা স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টির বাইরেই থাকছে। ক্যাম্পের কার্যক্রম দেখভাল করেন ক্যাম্প ইনচার্জরা, সেখানে নাকি প্রশাসনের প্রবেশাধিকার নেই। এমনটাই বলেছেন স্থানীয় প্রশাসন।
গোঁদের উপর বিষফোঁড়ার মতো জুটেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আন্তর্জাতিক ভাবে বাংলাদেশের বিরূদ্ধে সুগোপনে পরিচালিত কার্যক্রমের আওতায় জামাই আবদার তুলেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তারা বলছে - বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকতে হবে, তাদের কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। “লেট আস স্পিক ফর আওয়ার রাইটস” শীর্ষক এক ব্রিফিংয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অংশগ্রহণ না থাকার প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণ না থাকায় তাদের মানবাধিকার চর্চা বিঘ্নিত হচ্ছে।
এখন তো মহাবেকুব জাতক গালে হাত দিয়ে ভাবতেই পারে - কেন ? যাদের কারণে কক্সবাজার ও সংলগ্ন এলাকার স্থানীয় জনগণের নাভিশ্বাস উঠছে গত কয়েক বছর ধরে, পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে স্থানীয়দের সামাজিক-অর্থনৈতিক, আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক নিরাপত্তার অধিকারসমূহ, তাদের বাদ দিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্যেই শুধু এই মায়া কান্না কেন ? তারা কথা বলবে মায়ানমার সরকারের সাথে। বাংলাদেশ সরকার তার নিজের নিরাপত্তা - অর্থনৈতিক সামর্থের দিকে নজর রেখে যা বলবেন এই অসংযত ও “লাই” পাওয়া শরণার্থীদের সেসব কথাই শুনতে হবে।
তারা কি তা শুনছে ?
মানবতার দিকে তাকিয়ে মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের অন্ধকার থেকে টেনে ভাসানচরের আলোকিত অভয়ারণ্যে তুলতে চেয়েছিলেন। দেশের লাখ লাখ গৃহহীন ছন্নছাড়া মানুষদের অধিকার ছিন্ন করে এই যে জামাই আদর রোহিঙ্গাদের করা হয়েছে সেটা কি তারা মেনে নিয়েছে ? এর চেয়ে আর কতো জামাই আদর রোহিঙ্গারা পেতে চায় ?
বরং ভাসানচর সফরে যাওয়া শরণার্থীরা অ্যামনেস্টিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেছে এই বলে , ৫০ বর্গফুটের একটি ঘরে দুই থেকে পাঁচজন মানুষের গাদাগাদি করে থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় ।
আমার মতো বেকুব যদি কেউ থাকেন তবে এমন প্রশ্ন রোহিঙ্গাদের দিকে ছুঁড়ে দিতেই পারেন -“আরে পেয়ারে ভাইজান! মায়ানমারে কোন ফাইভ ষ্টার হোটেলে ছিলেন এতোদিন আপনারা ? এখন কক্সবাজারেই বা কোন ষ্টার হোটেলে আপনাদের জায়গা হয়েছে ?”
উল্লেখিত টক’শোতে একজনের ফেসবুকীয় মন্তব্য ছিলো এরকমের - “ আমি মিয়ানমারে থাকা এক বন্ধুকে প্রশ্ন করেছিলাম, তোমরা রোহিঙ্গাদের এতো নির্যাতন করে তাড়ালে কেন ? উত্তরে সে বললো - “ কেন ? এখন তোমরা বুঝবে রোহিঙ্গা কী জিনিষ !!!!”
আসলেই, অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে; সুঁই হয়ে ঢুকে পড়ে ফাল হয়ে বেরুনো রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশী নাগরিক তালিকায় আত্মীকরণ করা ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনও রাস্তা মনে হয় খোলা নেই। নইলে সমগ্র চট্টগ্রাম এলাকাটাকেই তারা বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে একসময় !
এখন বেকুবের মতো বলতেই হয় , সে প্রস্তুতি আমরা কেন করে রাখছিনা ?
বিশ্ব মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হত্যার বিভীষিকা দেখে যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক কারণে এইসব রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন তিনি কি দেশের সার্বভৌমত্ব- রাজনৈতিক-ভৌগলিক- আর্থ সামাজিক নিরাপত্তার স্বার্থে আর একবার ভেবে দেখবেন, এদের জামাই আদর করেই যাবেন, না কি তাদের কর্মকান্ড দেখে অপাত্রে মানবতা ঢালার কথা ভুলে যাবেন ....................?????
সূত্র -
বাংলাদেশ জার্নাল, আমাদের সময়, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ডয়েচে ভেল, দ্য ডেইলী ষ্টার, কালের কন্ঠ, বিবিসি নিউজ বাংলা, ভোরের কাগজ, সমকাল, প্রথম আলো, নিউজ২৪ ইত্যাদি দৈনিক পত্রিকা-
এবং বিভিন্ন টিভি চ্যানেল।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৫৯