নাহিদার সাথে রাতুলের সম্পর্কের বয়স প্রায় ছয় মাস। দুজন দুজনকে প্রচন্ড ভালবাসে।সোনার কাঠি আর রুপোর কাঠির মত।কেউ কাউকে ছেড়ে থাকতে পারে না। ভালবাসায় একদম টইটুম্বর।দুএক মাসের মধ্যে তারা বিয়ে করে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়।বিয়ে কোথায় হবে, কারা সাক্ষী থাকবে সে বিষয়েও কথাবার্তা হয়। বিয়ে হবে পালিয়ে,কাজী অফিসে।আর রাতুলের বন্ধুরা হবে বিয়ের সাক্ষী।
.
রাতুল একদিন নাহিদার কাছে একটা অন্যায় আবদার করে বসে।বিয়ে যেহেতু দু এক মাস পরে তারা করবেই তাই এই আবদারটা রাতুলের কাছে অন্যায় মনে হয় না। বরং এটা তার কাছে অধিকার মনে হয়।
এদিকে নাহিদা রাতুলের মন রাখার জন্য এই আবদারটা রাখতে বাধ্য হয়।
নির্দিষ্ট দিনে সে রাতুলের সাথে দেখা করে। রাতুল তাকে একটি হোটেলে নিয়ে যায়।সেখানে তারা একসাথে রাত কাটায়।
এই ঘটনার কয়েকদিন পরে রাতুল নাহিদার কাছ থেকে কিছু টাকা চায়।কিছু টাকা বলতে বেশি না।মাত্র দশ হাজার।সে সামনের মাসে টাকাটা নাহিদাকে ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
কিন্তু নাহিদার কাছে এত টাকা ছিল না।একটা মেয়ের কাছে এত টাকা থাকার কথাও না।সে মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে।মেসে থেকে পড়াশুনা করতেছে।যেখানে মেসের খরচ যোগাতেই তার বাবা হিমশিম খাচ্ছে সেখানে এত টাকা নাহিদার পক্ষে বাড়ি থেকে নেয়া সম্ভব নয়।কাজেই সে রাতুলকে টাকা দিতে পারবে না বলে জানায়।
টাকা না পেয়ে রাতুলের মনে প্রচন্ড ক্ষোভ জন্মে। সে অশ্লীল ভাষায় নাহিদাকে গালিগালাজ করে।তারপর একটি ভিডিও ক্লিপ নাহিদা কে দেখায়।
ভিডিও দেখে নাহিদার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।এই ভিডিওটা ছিল সেদিনের হোটেলের ভিডিও।সেদিন রাতুলের সাথে ওর শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল।আর রাতুল সেটাই গোপন ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করেছিল যা নাহিদা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি।
রাতুল নাহিদাকে এক সপ্তাহ সময় দেয়। এই সময়ের মধ্যে টাকা দিতে না পারলে সে ভিডিওটা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখায়।
.
নাহিদা কি করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারে না।এই লজ্জার কথা সে কারও সাথে শেয়ারও করতে পারে না। যাকে সে এতটা বিশ্বাস করত,এতটা ভালবাসত সে আজ তার বিশ্বাস নিয়ে খেলছে।তাকে ব্লাকমেইল করছে।
দেখতে দেখতে এক সপ্তাহ কেটে গেল।সে টাকা যোগাড় করতে পারল না।টাকা না পেয়ে রাতুল প্রচন্ড রেগে যায়।সে নাহিদার সামনেই ভিডিওটা ইন্টারনেটে আপলোড করে।
.
নাহিদার তখন কিছুই করার ছিল না।সে শুধু নিঃশব্দে চোখের জল ফেলছিল।আর রাতুল নামের কুলাঙ্গার ছেলেটাকে ঘৃণা নিয়ে দেখছিল।
.
উপরিউক্ত ঘটনা আমাদের সমাজে অহরহ ঘটছে।কত মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, কত মেয়ে এরুপ ঘটনার শিকার হয়ে সুইসাইড করছে তার হিসাব নেই।প্রেমের ফাঁদে ফেলে অশ্লীল ভিডিও তৈরী করে প্রেমিকার কাছ থেকে টাকা আদায় করা কিছু কিছু নিকৃষ্ট ছেলের নেশার মত হয়ে গেছে।মনে হয় টাকা উপার্জনের সবথেকে সহজ উপায় এটাই।
.
প্রেম করাটা অন্যায় কিছু না। কিন্তু প্রেমের নামে অবৈধ সম্পর্কে জড়ানোটাই অন্যায়।শুধু অন্যায় নয়,জঘন্য অপরাধ।তাই এধরনের অপরাধ থেকে দূরে থাকুন।ভালবাসলেই যে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে হবে এমন কোন বিধান আছে কি?বা শরীর দিয়ে আপনাকে ভালবাসার প্রমাণ করতে হবে?লাথি মারুন এমন ভালবাসার মুখে যে ভালবাসা শরীর ছাড়া আর কিছুই বুঝে না।
.
তাই মেয়েরা সাবধান! আপনি যাকে ভালবাসেন,প্রচন্ড বিশ্বাস করেন সে যদি আপনাকে শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেয়, তাহলে বুঝবেন সে আপনাকে চায় না।সে চায় আপনার দেহটাকে।তার কাছে আপনার প্রয়োজন নেই,প্রয়োজন শুধু দেহটার।
তাই প্রেমে পড়লে অবৈধ সম্পর্ক করা থেকে এড়িয়ে চলুন। নইলে সারাজীবন চোখের জলে বালিশ ভেজাতে হবে।আর দুর্বল মনের মেয়ে হলে সুইসাইড করা ছাড়া দ্বিতীয় কোন পথ খোলা থাকবে না।