- মামা চুরি চামারির কাজ আমাকে দিয়ে হবেনা । ( ইনি ক্লাস ফোর এ )
- আরে বেটা চুরি কোথায় দেখলি ? এটা হল প্রতিশোধ বুঝলি প্রতিশোধ । কত বড় সাহস ! আমার ভাইগ্নাকে অপমান করে ? ( ইনি ক্লাস সেভেন এ )
- না না , আমাকে কিসের অপমান করেছে ।
- চড় মেরে সব কটা দাঁত ফেলে দেব , তুই অপমানের বুঝিস কি ?
রিনা তোকে বরই দিয়ে তা আবার কেড়ে নেয় নি ?
পাশের বাড়ীর রিনাপুকে ঝনটূ মামা মনে মনে বড়ই ভালা পায়
। আমাকে দিয়ে রিনাপুর কাছে একটা লাভ লেটার পাঠিয়েছিলেন । আমাদের বাড়ী রিনাপুদের বাড়ী পাশাপাশি , যা প্রায় একই বাড়ীর মত । বিকালে সাইকেল রিং চালাতে চালাতে আপুদের বাড়ী গিয়ে হাজির হলাম । দেখলাম তিনি পুকুর ঘাঁটে বসে বসে বরই খাচ্ছেন । পাশে কলাপাতায় লবন আর গুড়ো মরিচের মিকচার ।
আমাকে দেখেই কাছে ডাকলেন , '' এই লিটু বরই খাবি ?
আমার উত্তরের প্রতিক্ষা না করেই আমার দিকে ৪/৫ টা বরই এগিয়ে ধরলেন । আমি সাইকেল রিঙটা ঘাঁটের সাথে ঠেশ দিয়ে রেখে বরই গুলি হাতে নিলাম । সেকেন্ড কয় পরেই হাফ পেন্টের কোমরে গুঁজে রাখা চিঠিখানা বের করে রিনাপুর হাতে দিলাম । এও বললাম , ঝনটূ মামা দিয়েছে ।
-- কোন ঝনটূ মামা ? ফেইল্লা ঝনটূ ? ঐযে বান্দরের মত চেহারা ?
-- হ্যাঁ বলার সাথে সাথেই ছাঁৎ করে চিঠিটা পায়ের নিচে দিয়ে ২/৩ টা লাথি মেরে ঝপাং করে আমার হাত থেকে বরই গুলি কেড়ে নিলেন ।
আর যদি কোন দিন এইসব চিঠি ফিঠি নিয়ে যাই তাহলে আমার ঠ্যাঙের কোন কোন ভৌগোলিক অবস্থানে বাড়ি দিয়ে ভাঙ্গবেন তারও এক ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন ।
ভাঙ্গা পা নিয়ে ক্রাচে ভর দিয়ে জলিল চাচার মত হাঁটতে পারবো কিনা তার একটা মানসিক মহড়া দিতে দিতে আমি বাড়ীর দিকে পা বাড়ালাম ।
সব ঘটনা বিতং করে বলার পর ঝনটূ মামার এই প্রতিশোধস্পৃহা , যার ফাইনাল ধকল রিনাপুদের নিরীহ ডাব গাছের উপর দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত ।
দুপুরে খাওয়ার পর আপুরা বিছানায় একটু গড়াগড়ি যায় । এই মোক্ষ সময়টাকেই অপারেশনের জন্য বেছে নিলেন দক্ষ সেনাপতি ঝনটূ মামা ।
পুকুর ঘাঁটের পাশের গাছটাই টার্গেট । ওটার ডাবের পানি নাকি গুড়ের পানির মত মিষ্টি ।
ডাবগুলি অত্যাধিক কচি , গাছ থেকে নিচে পড়লে ফেটে যেতে পারে , তাছাড়া পড়ার শব্দে কেউ টের পেয়ে যেতে পারে তাই গোটা চারেক ডাব লুঙ্গির কোঁচড়ে ভরে নামিয়ে আনার প্লান করে মামা তর তর করে গাছে উঠে গেলেন ।
কোঁচড়ে ডাব নিয়ে মামা সবে গাছের ওয়ান থার্ড নেমেছেন এমন সময় দেখি দু হাতে বরই নিয়ে রিনাপু ঘাঁটের দিকেই আসছেন । চক্ষের পলকে গাছের আড়ালে হিডেন ফাইল হয়ে গেলাম ।
মামাও দেখি মাঝ পথে হার্ড ব্রেক কষেছেন । তবে তিনার দুই পায়ের ঠকঠকানি দেখে বুঝলাম , পদদ্বয়ের নিয়ন্ত্রন এখন আর তাঁর হাতে নাই ।
পানির কাছাকাছি ঘাঁটে আসার পূর্বেই চোর দেখে মানুষ যেমন থমকে দাঁড়ায় তেমনি থমকে দাঁড়ালেন রিনাপু ।
তবে আমি নিশ্চিন্ত । কারন রিনাপু দাঁড়িয়ে তাকিয়ে আছেন পুকুরের দিকে । চোরের দিকে নয় ।( আসলে দিঘীর টলটলা জলে তিনি দেখছিলেন '' দীঘির জলে কার ছায়া গো '' যা পরে জেনেছিলাম )
তিন সেকেন্ডের ভিতর আপুর ভয়ার্ত চোখ গাছে ঠকঠকায়মান চোরের দিকে স্থির হল । চোর তাৎক্ষনিক পদযুগলের নিয়ন্ত্রন হারিয়ে শুধু হাত দিয়ে গাছের গলা জড়িয়ে ধরে রেখেছেন । গাছটা একটু বাঁকা হওয়ায় বেচারা ঘড়ির পেন্ডুলামের মত ঝুলছিলেন ।
আল্লার লিলা বুঝা বড় দায় । ডাবের ভারে লুঙ্গি বেটা বিদ্রোহ করে বসলো । ডাবের সাথে গলাগলি করে লুঙ্গি পুকুরে । ডাবের বিরহে নাকি লুঙ্গীর সাথে বিদ্রোহে হাত বেটারাও যোগ দেয়ায় নাঙ্গু বাবাও ঝপাৎ করে পানিতে ।
ওরে আল্লারে !!! !!!! বলে গগন বিদারী চিৎকার দিয়ে রিনাপু ছুটলেন বাড়ীর দিকে । উপরের সিঁড়িতে উঠা পর্যন্ত অবশ্য উনার তিন আছাড় হয়ে গিয়েছে ।
নিজে বাঁচলে মামার নাম । সুযোগ বুঝে ঝোপের আড়াল থেকে বেরিয়ে দিলাম দৌড় । নিরাপদ দুরত্যে গিয়ে পিছন ফিরে দেখি দিগম্বর মামাও প্রানপন দৌড়াচ্চেন । তবে পেটের বিঘত খানেক নিচে কি একটা যক্ষের ধন দুহাত দিয়ে ধরে রেখেছেন তা দূর থেকে ঠাওর করতে পারিনি ।
অ ট ; নিন্ম মানের লিখকদের কাছ থেকে লিখা আদায় করার কিছু তরিকা আছে , সব চেয়ে নিন্মমানের তরিকা হল গলায় গামচা বেঁধে লিখা আদায় করা ।
এই তরিকা প্রয়োগ করে যারা আমার কাছ থেকে লিখাটি আদায় করে নিয়েছেন ----
১/ রোেক্য়া ইসলাম
২/ সেলিম আনোয়ার
৩/ অদ্বিতীয়া আমি
৪/ অনীনদিতা
৫ / মেহেরুন
৬ / মাক্স
৭/ ফারজানা শিরিন
৮ / আশিক মাসুম
৯/ গ্রাম্যবালিকা
১০/ এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল স্বর্ণা
১১/ ইখতামিন
( প্রমান - Click This Link )
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:১৩